দীর্ঘদিন পর নিউমার্কেটে শপিং এর অভিজ্ঞতা
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে, নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। গতকাল সকালে আমার ওয়াইফ হঠাৎ করে বললো,তার নাকি শীতের জন্য কিছু কেনাকাটা করা দরকার। আমি গত কালকে মোটামুটি ফ্রি ছিলাম, তাই আমিও রাজি হয়ে গেলাম। আমরা নাস্তা খেয়ে রেডি হয়ে বেলা ১১টার দিকে, বাসা থেকে বের হলাম নিউমার্কেটের উদ্দেশ্যে। প্রথমে আমরা মদনপুর থেকে স্বদেশ বাসে চড়ে গুলিস্তান চলে গেলাম। তারপর গুলিস্তান থেকে রিকশা নিয়ে, সোজা নিউ মার্কেটে চলে গেলাম। বেলা ১২টার দিকে আমরা নিউমার্কেটে পৌঁছলাম। আমরা নিউমার্কেটের ১ নম্বর গেইট দিয়ে প্রবেশ করলাম।
প্রথমে আমরা হট কফি পান করে, শরীরটাকে চাঙ্গা করে নিলাম, যাতে করে শপিং করতে সুবিধা হয়। এরপর আমরা চলে গেলাম, নিউমার্কেটের দক্ষিণ ভবনের নিচতলায় শাল কেনার জন্য। কয়েকটা দোকান ঘুরে, অনেক দামাদামি করার পর ২২০০ টাকা দিয়ে, একটি কাশ্মীরি শাল কিনলাম এবং একটি ভেলভেটের শাল কিনলাম ৫০০ টাকা দিয়ে। তারপর আমরা জুতার দোকানে ঢুকে, আমার আম্মুর জন্য এবং ওয়াইফ এর জন্য জুতা কিনলাম, বাসার ভিতরে পরার জন্য। শপিং এর ফাঁকে ফাঁকে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করে নিলাম। তারপর আমরা চলে গেলাম সেই ভবনের ৩য় তলায়। সেখানে গিয়ে আমি একটি বোম্বার জ্যাকেট কিনলাম ১৮০০ টাকা দিয়ে।
তারপর আমার ওয়াইফের জন্য, লং স্লিভের দুটি টি শার্ট কিনলাম। এরপর আমার ওয়াইফ বললো, বাসায় পড়ার জন্য থ্রি পিস কিনবে। সে নাকি ইউটিউবে ভিডিও দেখেছে, বিশ্বাস বিল্ডার্সের ২য় এবং ৩য় তলায় খুব ভালো টু পিস এবং থ্রি পিস পাওয়া যায়। তারপর আমরা চলে গেলাম নিউমার্কেটের কাঁচা বাজার সংলগ্ন, বিশ্বাস বিল্ডার্স এর ভবনে। সেখানে গিয়ে কয়েকটি দোকান ঘুরে ড্রেস দেখলাম, কিন্তু আমার কাছে তেমন একটা পছন্দ হয়নি। আমার ওয়াইফ যেই ড্রেসগুলো দেখেছিল সেগুলো নাকি বিক্রি হয়ে গেছে, কারণ সে একমাস আগে ভিডিও দেখেছিল। তারপর কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করার পর, একটা ড্রেস মোটামুটি পছন্দ হয়েছে। তারপর সেই ড্রেসটা আমরা ১ হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম।
এরপর আমরা সেই ভবন থেকে বের হয়ে চলে গেলাম, নিউমার্কেটের ২ নম্বর গেটের দিকে। সেখানে গিয়ে আমরা একটা পরিচিত কসমেটিকস এর দোকানে ঢুকে, কিছু কসমেটিকস কিনে সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। আমাদের প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছিল, তাই আমরা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম লাঞ্চ করার জন্য। আমাদের দুজনের তেহারী খুব পছন্দ,তাই আমরা তেহারী এবং মুরগির রোস্ট অর্ডার করলাম। খাবারের মান মোটামুটি ভালো ছিল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর, বোরহানি খেয়ে বিল দিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেলাম। তারপর আমরা চলে গেলাম চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সে। চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সের দোতলায়, মেয়েদের খুব ভালো মানের ইন্ডিয়ান এবং পাকিস্তানি ড্রেস পাওয়া যায়।
সেখানে আমরা প্রথমে ঘুরে ঘুরে কয়েকটি দোকানের ড্রেস দেখলাম। এরপর একটি দোকানে আমাদের দুটো ড্রেস পছন্দ হল,একটি পাকিস্তানি এবং একটি ইন্ডিয়ান থ্রি পিস। পাকিস্তানি ড্রেসটা বেশি গর্জিয়াস এবং ইন্ডিয়ান ড্রেসটা মোটামুটি গর্জিয়াস। এই দোকান থেকে এর আগেও আমরা ড্রেস কিনেছিলাম। যাইহোক দোকানদারকে দাম জিজ্ঞেস করলাম এবং সে বললো যেহেতু পরিচিত কাস্টমার,তাই বেশি দাম নিবে না। সে দুটো ড্রেস ৬৮০০ টাকা বললো,তারপর আমি দামাদামি করার পর ৫৫০০ টাকা দিয়ে নিলাম।
ড্রেস দুটো আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে, তাই ঘোরাফেরা না করে ড্রেস দুটো নিয়ে, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্স থেকে বের হয়ে গেলাম। এরপর নিচে নেমে আমার ওয়াইফ চুলের কয়েকটি কাটা এবং ক্লিপ কিনলো। তারপর বিকেল ৪টার দিকে রিকশা নিলাম গুলিস্তান যাওয়ার জন্য। বিকেলবেলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিয়া এবং টিএসসি এর দিকে রিকশা দিয়ে ঘুরতে, আমার ভীষণ ভালো লাগে অনেক আগে থেকেই। আমরা রিকশা দিয়ে যেতে লাগলাম এবং মাঝে মাঝে কিছু ফটোগ্রাফিও করে নিলাম। এরই মধ্যে আমরা গুলিস্তান পৌঁছে গেলাম এবং সেখান থেকে স্বদেশ বাসে চড়ে, বিকেল ৫টার দিকে আমরা বাসায় চলে আসলাম।
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই।আমি আমার কিছু ভালো লাগার মুহূর্ত এবং অনুভূতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না এবং কোনো ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ও ধরিয়ে দিবেন সেই আশা করছি।আপনাদের সাপোর্ট পেলে, আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
ক্যাটাগরি | ভ্রমণ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
তারিখ | ৯.১২.২০২২ |
স্থান | w3w |
বেশ অনেক কিছুই কেনাকাটা করেছেন দেখছি। আসলে শীত আসলেই কিছু না কিছু কেনাকাটা করাই লাগে। দুটো শাল কিনেছেন শুনে ভালো লাগলো। আবার আপনার মা এবং স্ত্রীর জন্য জুতা। আসলে ভিডিওতে আমরা অনেক সময় এরকম থ্রিপিস দেখে থাকি। যদি এক মাস পরে যাওয়াতে আপনার স্ত্রী থ্রিপিস গুলো পায়নি। কিন্তু বেশ ভালই ড্রেস কিনেছে দেখছি। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট একটা কেনাকাটা হয়েছে।
জি আপু শীত আসলে, কিছু না কিছু কেনাকাটা করাই লাগে। সব মিলিয়ে মোটামুটি শপিং করা হয়েছে। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে, সুন্দর মন্তব্য করার জন্য, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।