পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছের রেসিপি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি রেসিপি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনারা অনেকেই জানেন যে আমি দীর্ঘদিন দক্ষিণ কোরিয়াতে থাকার ফলে, মাঝেমধ্যে বাসায় রান্না করে বাংলাদেশী খাবার খেতাম। কারণ প্রতিদিন অফিসের রেস্টুরেন্টে কোরিয়ান খাবার খেতে তেমন ভালো লাগতো না। আর যত সুস্বাদু খাবারই হোক না কেন, বাঙালী খাবারের চেয়ে সুস্বাদু খাবার পৃথিবীতে আছে বলে আমার মনে হয় না। কারণ একটাই সেটা হল আমি মনেপ্রাণে একজন বাঙালী। বাংলাদেশে চলে আসার পরও আমি মাঝে মধ্যে রান্না করার ট্রাই করি,যদি হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সময় থাকে। যাইহোক সেদিন মাছের বাজারে গিয়ে দুটি শোল মাছ কিনেছিলাম।
দুটি মাছের ওজন দুই কেজি হয়েছিল এবং দাম নিয়েছিল ১৮০০ টাকা। শীতকালে শোল মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা। যদিও এবারের শীতে বড় সাইজের শোল মাছ তেমন একটা পাইনি বাজারে এর আগে। তাইতো সেদিন বড় সাইজের শোল মাছ পাওয়ার সাথে সাথে দুটি কিনে ফেলি। ২/৩ দিন আগে আমার স্ত্রীকে বললাম পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছ রান্না করব। তারপর সে আমাকে রান্নার জন্য সবকিছু রেডি করে দিল। এরপর আমি রান্না শুরু করলাম। খাওয়ার পর সবাই বলছিল যে রান্না খুব সুস্বাদু হয়েছে। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে রেসিপিটা শেয়ার করব। যাইহোক আমি ধাপে ধাপে রেসিপিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে। তো কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহঃ
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
শোল মাছ | ৫০০ গ্রাম |
টমেটো | ২টা |
পেঁয়াজ | ৪টা |
কাঁচামরিচ | ৩টা |
ধনিয়া পাতা | পরিমাণ মতো |
ধনিয়ার গুঁড়ো | পরিমাণ মতো |
হলুদের গুঁড়ো | পরিমাণ মতো |
মরিচের গুঁড়ো | পরিমাণ মতো |
জিরার গুঁড়ো | পরিমাণ মতো |
রসুন বাটা | পরিমাণ মতো |
লবণ | পরিমাণ মতো |
সয়াবিন তেল | পরিমাণ মতো |
প্রধান উপকরণ
প্রথমে শোল মাছের টুকরো গুলোতে অল্প পরিমাণে হলুদ-মরিচের গুঁড়ো এবং লবণ মাখিয়ে রেখে দিলাম।
একটু পর চুলার উপরে একটি ফ্রাই প্যান বসিয়ে দিলাম। ফ্রাই প্যানটি একটু গরম হওয়ার পর পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল ঢেলে দিলাম। তেল হালকা গরম হওয়ার পর, শোল মাছের টুকরো গুলো দিয়ে দিলাম। শোল মাছের টুকরো গুলো ভেজে, আলাদা পাত্রে উঠিয়ে রাখলাম।
প্রথমে চুলার উপরে একটি কড়াই বসিয়ে দিলাম। একটু পর কড়াই গরম হলে, পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল ঢেলে দিলাম।
তেল একটু গরম হওয়ার পর আগে থেকে কেটে রাখা পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচামরিচ দিয়ে দিলাম।
একটু পর পেঁয়াজ হালকা বাদামি কালার হওয়ার পর পরিমাণ মতো হলুদ-মরিচের গুঁড়ো, জিরার গুঁড়ো,ধনিয়ার গুঁড়ো এবং রসুন বাটা দিয়ে দিলাম।
সবগুলো মসলা একসাথে কিছুক্ষণ কষিয়ে আগে থেকে কেটে রাখা টমেটো গুলো দিয়ে দিলাম এবং মসলা গুলোর সাথে টমেটো আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিলাম।
তারপর ভেজে রাখা শোল মাছের টুকরো গুলো দিয়ে দিলাম এবং প্রয়োজন মতো পানি দিয়ে, ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম কিছুক্ষণের জন্য। একটু পর ঢাকনা খুলে দেখলাম পানিতে বলক চলে এসেছে। এরপর ঢাকনা দিয়ে আবারও ঢেকে দিলাম ৫/৬ মিনিটের জন্য।
৫/৬ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখলাম ঝোল অনেকটা শুকিয়ে গিয়েছে। তারপর আগে থেকে কেটে রাখা ধনিয়া পাতা গুলো দিয়ে দিলাম। এরপর ২ মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে আবারও ঢেকে দিলাম।
২ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখলাম রান্না হয়ে গিয়েছে।
তারপর লাঞ্চের সময় পরিবেশন করলাম।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | রেসিপি |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২৬.২.২০২৩ |
স্থান | মদনপুর,নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া আমি গান গাইতে, ফটোগ্রাফি করতে এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
বিদেশিদের খাবার গুলো দেখতে যতই সুন্দর হোক না কেনো তা আমাদের খাবারের সাথে কোনোভাবেই তুলনা হবে না।বাঙ্গালি খাবারের স্বাদ সবসময়ই অতুলনীয়।শীতকালে শোল মাছের টেস্ট অনেক গুণ বেড়ে যায় আর বড় বড় সাইজে পাওয়া যায়। এখন এতো বেশি দাম বেড়ে গেছে তা বলার মতো না এজন্য ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই কিনতে পারে না। ভাইয়া আপনি শোল মাছের রেসিপি টি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন যা দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। লোভনীয় রেসিপি টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
জি আপু আমি আপনার সাথে একমত পোষণ করছি, বাঙালি খাবারের স্বাদ সবসময় অতুলনীয়। আসলে এই জাতীয় মাছের দাম এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে,মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। যাইহোক রেসিপিটার এত প্রশংসা করার জন্য, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু।
জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন, শোল মাছ খেতেও যেমন সুস্বাদু, তেমনি মানবদেহের জন্যও অনেক উপকারী। বরাবরের মতো গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আশা করি সব সময় এমন সুন্দর সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে সাপোর্ট করে যাবেন।
পিয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছ রান্নার দারুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখে মনে হচ্ছে এভাবে রান্না করলে খেতেও বেশ সুস্বাদু লাগবে। আমার কাছে রেসিপিটা ভালোই লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর রেসিপিটা আমাদের মাঝে ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া এভাবে রান্না করে খেয়ে দেখবেন। আশা করি খুব সুস্বাদু লাগবে খেতে। প্রশংসনীয় মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে সাপোর্ট করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনার রান্নার হাত অনেক ভালো। আমি শোল মাছ খাই না, তাও কেমন যেন আপনার রান্না করা মাছ দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। কবে খায়াবেন আমাদের?
রান্না মোটামুটি পারি ভাইয়া,যেকোন সময় চলে আসবেন। যখন আসবেন তখনই খাওয়াবো ভাইয়া। হা হা হা, ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে।
পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছের রেসিপি দেখে খেতে ইচ্ছা করছে। আপনার মজাদার রেসিপি দেখে খুবি সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া রেসিপিটা খুব সুস্বাদু হয়েছিল। প্রশংসনীয় মন্তব্যের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছের রেসিপি দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আসলে শোল মাছ আমার খুবি প্রিয়।তাই রেসিপিটা দেখে খুবি ভালো লেগেছে।
শোল মাছ আমারও খুব পছন্দ ভাইয়া। চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছের অসাধারণ একটি রেসিপি প্রস্তুত করেছেন এই মাছ খেতে খুবই সুস্বাদু আমার তো খুবই ফেভারেট তারপরে অনেক পুষ্টিকর।।
বিশেষ করে বেশি করে টমেটো এবং বেশি করে পেঁয়াজ কুচি দেওয়াতে মনে হচ্ছে খেতে একটু বেশি মজা হয়েছিল।।
দেখতে খুবই লোভনীয় দেখাচ্ছে দেখেই জিভে জল চলে আসলো।।
জি ভাইয়া টমেটো এবং পেঁয়াজ কুঁচি একটু বেশি দিলে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে। সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
পেয়াজ ও টমেটো দিয়ে শোল মাছ রান্না করেছেন রেসিপিটা দেখতে অসাধারণ লাগছে। আপনি দক্ষিণ কোরিয়াতে ছিলেন আগে সেটা জেনে খুবই ভালো লাগলো । একটা সময় আমার স্বপ্ন ছিল আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে যাব এখন আর সেটা নেই। যাই হোক ২ কেজি শোল মাছ কিনেছেন দাম তো প্রায় অনেক। আপনার রান্না করার পদ্ধতিটা খুবই সুন্দর ছিল। খুবই সুন্দরভাবে আপনি আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন প্রতিটি ধাপ ।ধন্যবাদ আমাদের সাথে এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য
জি আপু আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বাংলাদেশে এসেছি এক বছরের বেশি হয়েছে। যেহেতু আপনার স্বপ্ন ছিল দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার, ভাগ্য সহায় হলে কখনও ঘুরতে যাবেন। অনেক সুন্দর এবং গুছানো একটা দেশ। যাইহোক রেসিপিটার এতো প্রশংসা করার জন্য, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি একদম সত্য কথা বলেছেন ভাইয়া বাঙালি যে খাবারগুলো খায় সে খাবার গুলো অনেক বেশি সুস্বাদু এবং লোভনীয় হয়ে থাকে যেমনটা আপনি কোরিয়া থাকাকালীন সময়ে বুঝতে পেরেছেন। যাইহোক সেখানে থাকার পরেও আপনি মাঝে মাঝে বাঙালি খাবার রান্না করে খেতেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে শোল মাছের এই রেসিপিটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি সুস্বাদু এবং লোভনীয় ছিল। মজাদার এই রেসিপিটি আমাদের সকলের মাঝে চমৎকারভাবে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জি ভাইয়া বাঙালি খাবারের মজাই আলাদা। রেসিপিটা খেতে সত্যিই খুব সুস্বাদু লেগেছিল। গঠনমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহ প্রদান করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।