নাটক রিভিউ || সারাজীবনের সুখ
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে সারাজীবনের সুখ। এই নাটকটি কিছুদিন আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে জিয়াউল ফারুক অপূর্ব এবং মেহজাবিন চৌধুরী। এই জুটির অসংখ্য নাটক আমি দেখেছি এবং এই দুজনের জুটি সবসময়ই খুব ভালো লাগে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | সারাজীবনের সুখ |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | সোহেল আরমান |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, মেহজাবিন চৌধুরী এবং আরও অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ৭ ই জানুয়ারি ২০২৪ |
দৈর্ঘ্য | ৩৭ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের নায়ক অপূর্ব হচ্ছে একজন ডাক্তার। সে বাংলাদেশের টপ লেভেলের একজন কার্ডিওলজিস্ট। নাটকের নায়িকা মেহজাবিন চৌধুরী হার্টের অসুখে ভুগছে অনেকদিন ধরে। কিন্তু মেহজাবিনের কাছে মনে হয়, তাকে যদি হসপিটালে ট্রিটমেন্ট করা হয় তাহলে সে মারা যাবে। তাই সে কিছুতেই হসপিটালে আসতে চায় না। মেহজাবিনের বাবা অপূর্বর সাথে এসব কিছু শেয়ার করতে হসপিটালে আসে। কিন্তু হসপিটালের অন্যান্য ডাক্তার এবং স্টাফরা বুঝায়, এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া অপূর্বর সাথে দেখা করা যাবে না কোনো ভাবেই। একপর্যায়ে মেহজাবিনের বাবার সাথে অপূর্বর দেখা হয়ে যায় হসপিটালে। তারপর মেহজাবিনের বাবা সবকিছু শেয়ার করে অপূর্বর সাথে এবং অপূর্ব বলে যে মেহজাবিনকে হসপিটালে নিয়ে আসার জন্য। তারপর অপূর্ব মেহজাবিনকে কনভিন্স করে চিকিৎসা শুরু করবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
যাইহোক মেহজাবিনকে হসপিটালে ভর্তি করার পর, অপূর্ব মেহজাবিনকে দেখে অবাক হয়ে যায় এবং নাটকটি ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যায়। মূলত একসময় অপূর্ব এবং মেহজাবিনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক ছিলো। তারা দুজন দুজনকে প্রচন্ড ভালোবাসতো। মেহজাবিনের মা অনেক আগেই মারা যায় এবং মারা যাওয়ার আগে মেহজাবিনের মা, তার বোনের ছেলের সাথে মেহজাবিনের বিয়ে ঠিক করে রেখে যায়। তাই মেহজাবিনের বাবা চেয়েছিল, মেহজাবিনের মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে। কিন্তু মেহজাবিন তার খালাতো ভাইকে বিয়ে করার জন্য রাজি ছিলো না। কারণ সে অপূর্বকে ভালোবাসতো। সেজন্য মেহজাবিন অপূর্বকে বলে বিয়ে করার কথা। কিন্তু অপূর্ব স্কলারশিপ পেয়েছিল তখন এবং কিছুদিনের মধ্যেই লন্ডন চলে যাবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
লন্ডন থেকে ডাক্তারি পাশ করে বাংলাদেশে আসতে অপূর্বর ৫ বছর লেগে যাবে। সেজন্য মেহজাবিন অপূর্বকে বলে লন্ডন যাওয়ার আগে বিয়ে করে রেখে যেতে। কিন্তু অপূর্ব কিছুতেই রাজি হয় না। সেজন্য তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং তারপর থেকে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাদের মধ্যে। এতো বছর পর হসপিটালে দুজনের দেখা হওয়ার পর,তারা দুজনেই একে অপরের ভুল স্বীকার করে। কিন্তু অপূর্ব লন্ডন চলে যাওয়ার পর, মেহজাবিন তার খালাতো ভাইকেও বিয়ে করেনি। তাই মেহজাবিনের ধারণা, সে তার বাবাকে এবং অপূর্বকে কষ্ট দিয়েছে বলে তার হার্টের অসুখ হয়েছে। এদিকে অপূর্ব বলে যে ক্যারিয়ারের জন্য, তার ভালোবাসাকে তুচ্ছ করা মোটেই উচিত হয়নি। এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে, অবশ্যই আপনাদেরকে নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
আমরা অনেক সময় নিজেদের ক্যারিয়ারকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে ফেলি। এতটাই প্রাধান্য দেই যে, ভালোবাসার মানুষটিকে ফেলে অনেক দূরে চলে যাই। আসলে এটা মোটেই ঠিক না। কারণ ক্যারিয়ারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে আমাদের জীবনে, তেমনি ভালোবাসার মানুষেরও গুরুত্ব থাকা উচিত। এই নাটকে অপূর্ব মেহজাবিনকে পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে। মেহজাবিনকে একনজর দেখার জন্য সারাদিন তার বাসার আশেপাশে ঘুরঘুর করে। এমনকি এলাকার মানুষের হাতে মার পর্যন্ত খায়। তবুও অপূর্ব পিছপা হয় না। তার একটাই উদ্দেশ্য ছিলো মেহজাবিনকে আপন করে পাওয়া। পরবর্তীতে মেহজাবিনের যখন বিয়ে ঠিক হয় অন্য কোথাও, তখন মেহজাবিন অপূর্বর কাছ থেকে তেমন কোনো সাড়া পায়নি। বাস্তবেও কিন্তু এমনটা অহরহ ঘটছে। মেহজাবিন অপূর্বকে বলেছিল লন্ডন যাওয়ার আগে তাকে যেন বিয়ে করে রেখে যায়। অপূর্ব সেটাতেও রাজি হয়নি। আসলে সত্যিকার অর্থে, কেউ কাউকে প্রকৃতভাবে ভালবাসলে যে কোনো বিনিময়ে তাকে নিজের করে নেওয়া উচিত। নয়তো সারা জীবন আফসোস করে যেতে হয়। তাই আমাদের উচিত নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি ,ভালোবাসার মানুষকেও গুরুত্ব দেওয়া। এই নাটকটি একেবারে শিক্ষামূলক একটি নাটক। সব মিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি। সবাই দুর্দান্ত অভিনয় করেছে এই নাটকে।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১৮.১.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
আপনি তো দেখছি একদম আমার প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীর একটি নাটক নিয়ে আসলেন। আসলে আমি এদের দুজনের নাটক দেখতে খুবই পছন্দ করি। তবে অনেকদিন হয়েছে ব্যস্ততার কারণে নাটক দেখতে পারিনা। এই নাটকটি আমি এমনিতে দেখেছিলাম ইউটিউবে। কিন্তু সময়ের জন্য পুরো নাটকটা দেখতে পারিনি। আপনার কাছ থেকে রিভিউ এর ভীষণ ভালো লাগলো। পরবর্তীতে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিব।
অপূর্ব এবং মেহজাবিনের নাটক দেখতে বরাবরই আমার ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক রিভিউ পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার নাটক রিভিউ এর নাটকের নামটাই আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। তবে নাটকটি আসলে আমার এখনো পর্যন্ত দেখা হয়নি। এখন তো কাজের প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতে হয় তাই নাটক দেখা হয় না। তবে মাঝেমধ্যে সময় পেলে চেষ্টা করি নাটক দেখতে। যেহেতু আপনি আজকে নাটকের রিভিউ করেছেন, তাই ভাবলাম এই নাটকটি সময় পেলে অবশ্যই দেখে নিব।
হ্যাঁ ভাই সময় পেলে নাটকটি অবশ্যই দেখে নিবেন। একেবারে শিক্ষামূলক একটি নাটক। যাইহোক রিভিউ পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Twitter Link
নাটক দেখতে ভালই লাগে। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। যদিও নাটকটি দেখা হয়নি তবে আমার কাছে নাটকটির রিভিউ পড়ে বেশ ভালো লেগেছে। ভাবছি সময় করে নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার মতো আমারও ভীষণ ভালো লাগে নাটক দেখতে। যাইহোক এই নাটকের রিভিউ পড়ে, আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন৷ মেহজাবিনের নাটক আমি অনেক পছন্দ করি৷ তার নাটক আমি সব সময় দেখার চেষ্টা করি৷ আজকে আপনার কাছ থেকে এই নাটক এর রিভিউ দেখে খুব ভালো লাগলো। এই নাটকের সবগুলো বিষয় আপনি খুব সুন্দরভাবেই এখানে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ আমি এই নাটকটি দেখেছিলাম৷ তবে আজকে আবার এই নাটকের রিভিউ থেকে আরও অনেকটা ধারণা পেয়ে গেলাম৷
আপনার মতো আমিও মেহজাবিনের নাটক দেখতে ভীষণ পছন্দ করি। যাইহোক রিভিউ পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার নাটকটির পোস্ট পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো। অপূর্ব এবং মেহজাবিন আমার খুব পছন্দের অভিনেতা। আমি এই দুইজনের নাটক অনেক দেখেছি। তবে এটি ঠিক অনেকে অসুখ হলে হাসপাতালে যেতে চায় না মনে করে ওখানে গেলে মারা যাবে। তবে অনেক আছে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে প্রেমের মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়। তবে জীবনে ভালোবাসার মানুষকে দূরে ঠেলে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ ভালোবাসার মানুষের জন্য একসময় নিজের মনের জায়গাটি শূন্য থাকে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে সারাজীবনের সুখ নাটকটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই পোস্ট করার সার্থকতা আপু। যাইহোক রিভিউ পড়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সারাজীবনের সুখ নাটকটি আমার দেখা হয়নি। তবে অপূর্ব এবং মেহজাবিন এর নাটক আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। বলতে গেলে আমার দুটো প্রিয় অভিনেতা এবং অভিনেত্রী। তবে অনেক সময় মানুষ নিজের স্বার্থের জন্য ভালোবাসা মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়। আর ভালোবাসার মানুষ যখন পাশে থাকে না অনেক লোক তখন বুঝে ভালবাসা কি জিনিস। আপনার নাটকের কাহিনী পড়ে বেশ ভালই লাগলো। সময় পেলেই এই নাটকটি দেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দরকে নাটকটি আমাদের মাঝে রিভিউ করার জন্য।
আমি মনে করি ভালোবাসা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তবে ক্যারিয়ারও নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক সময় পেলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবেন ভাই। গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
অপূর্ব আর মেহজেবিনের জুটি যেমন ভালো লাগে তেমনি তাদের নাটক দেখতেও খুব পছন্দ করি। তারজন্য সময় পেলেই নাটক দেখা শুরু করি। আপনি আজ অপূর্বর খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। যদিও এই নাটক এখনো দেখা হয়নি তবে আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সুন্দর সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
এই জুটির কোনো নাটক আমি সহজে মিস করি না। রিলিজ হওয়ার পরপরই দেখার চেষ্টা করি সবসময়। যাইহোক রিভিউ পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।