পরিবার নিয়ে মাওয়া এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা(২০২৩) ভ্রমণ, (১ম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।

আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। ভ্রমণ করতে বরাবরই আমার ভীষণ ভালো লাগে, সেটা হোক পরিবার নিয়ে অথবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। তবে বন্ধুবান্ধব নিয়ে একটু বেশিই ঘুরা হয়, আর পরিবার নিয়ে মাঝেমধ্যে ঘুরা হয়। তাই ভাবলাম পুরো পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হব। তাই প্ল্যান করলাম যে, প্রথমে মাওয়া যাব এবং তারপর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় যাব। তো ড্রাইভারকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ফোন করে বললাম যে শনিবার সকালে গাড়ি নিয়ে বাসায় আসতে। আমার গাড়িটি রেন্ট এ কারে ভাড়া দেওয়া, তাই গাড়িটি ঢাকায় পার্কিং করা থাকে।

20230107_140212.jpg

20230107_140042.jpg

তবে মাসে দুই একবার প্রয়োজন হলে গাড়ি বাসায় আনা যায়। তো ড্রাইভার শনিবার সকাল ১০ টার দিকে গাড়ি নিয়ে বাসায় আসলো। তারপর আমরা পাঁচজন আমি,আমার ওয়াইফ, আমার বাবা-মা এবং আমার শাশুড়ি বেলা ১১টার দিকে বাসা থেকে রওনা দিলাম। প্রথমে একটি পেট্রোল পাম্পে গিয়ে গাড়িতে ৩০০০ টাকার তেল ভরে নিলাম এবং তারপর গাড়ি তার আপন গতিতে চলতে শুরু করল। তবে একটা জিনিস বেশি ভালো লেগেছিল, আর সেটা হচ্ছে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম খুব কম ছিল। কারণ সচরাচর শনিবারে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম খুব কমই থাকে।

20230107_125230.jpg

20230107_125753.jpg

এরই মধ্যে আমরা যাত্রাবাড়ী ক্রস করে কেরানীগঞ্জের রোডে ঢুকে পড়লাম এবং আরো কিছুক্ষণ পর টোল প্লাজার সামনে চলে গেলাম। তারপর ১৩০ টাকা টোল দিয়ে মাওয়া রোডে প্রবেশ করলাম। ফাঁকে ফাঁকে আমি কিছু ফটোগ্রাফিও করে নিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। তবে একটা জিনিস খেয়াল করলাম দুপুর হয়ে এলো, তবুও আশেপাশের কুয়াশা কাটেনি। আশেপাশে যেদিকেই তাকাই চারিদিকে শুধু ঘন কুয়াশা দেখতে পাই। এতো কুয়াশা থাকলে গাড়ি খুব সাবধানে চালাতে হয়, নয়তোবা যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই ড্রাইভারকে বললাম গাড়ি সাবধানে চালাতে।

20230107_125609.jpg

20230107_132252.jpg

যাইহোক দুপুর ১টার দিকে আমরা পদ্মা সেতুর সামনে পৌঁছে গেলাম। এই প্রথম আমি পদ্মা সেতু সরাসরি দেখলাম একেবারে সামনে থেকে। ড্রাইভারকে বললাম হাতে সময় কম থাকার কারণে পদ্মা সেতুতে না উঠে, পদ্মা সেতুর আশেপাশের একটি জায়গায় গাড়ি পার্কিং করতে। গাড়ি পার্কিং করার পর আমরা গাড়ি থেকে নেমে পদ্মা সেতুর সৌন্দর্য্য অবলোকন করলাম এবং কয়েকটি ফটোগ্রাফি করলাম। এই প্রথম পদ্মা সেতু দেখে আমারও খুব ভালো লাগলো। তারপর আমরা সবাই হাঁটতে হাঁটতে পদ্মা সেতুর আশেপাশে থাকা বাড়িঘরগুলো দেখতে লাগলাম। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে আশেপাশের এলাকা ভীষণ জমজমাট হয়ে গিয়েছে।

20230107_132300.jpg

20230107_132555.jpg

20230107_134937.jpg

একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে, সেখানে টিন এবং কাঠ দ্বারা তৈরি দোতলা ঘর রয়েছে। আশেপাশে হাঁটাহাঁটি করে খুব ভালো একটা অভিজ্ঞতা হলো। এমন দোতলা টিন এবং কাঠের ঘর এর আগে আমি কখনো দেখিনি। হাটাহাটির ফাঁকে ফাঁকে আমি কয়েকটি ফটোগ্রাফিও করে নিলাম। হাঁটতে হাঁটতে দুপুর প্রায় ২টা বেজে গেল, তারপর সবাইকে বললাম গাড়িতে উঠে মাওয়া ঘাটের দিকে যাব লাঞ্চ করার জন্য। সবাই গাড়িতে ওঠার পর ড্রাইভারকে বললাম প্রজেক্ট হিলসা রেস্টুরেন্টের দিকে যেতে। একটু পরেই আমরা প্রজেক্ট হিলসা রেস্টুরেন্টের সামনে পৌঁছে গেলাম।

20230107_133116.jpg

20230107_134406.jpg

20230107_134550.jpg

ড্রাইভারকে বললাম গাড়ি কিছুক্ষণের জন্য পার্কিং করতে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করব সেজন্য। কারণ হিলসা রেস্টুরেন্টটি বাহির এবং ভিতরে দেখতে খুব সুন্দর, কিন্তু এখানে খাবারের দাম প্রায় ডাবল এর চেয়েও বেশি এবং সার্ভিসও আশানুরূপ নয়। তাই ভাবলাম এখানে কিছু ফটোগ্রাফি করার পর আমরা মাওয়া ঘাটের দিকে অবস্থিত কয়েকটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেখানে গিয়ে লাঞ্চ করব। হিলসা রেস্টুরেন্টের সামনে কিছুক্ষণ থাকার পর আমরা গাড়িতে উঠে চলে গেলাম মাওয়া ঘাটের দিকে। সেগুলো আপনাদের সাথে পরের পর্বে শেয়ার করব ইনশাল্লাহ।

20230107_135856.jpg

20230107_135853.jpg

Location

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে পরের পর্বে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

ক্যাটাগরিভ্রমণ
ফটোগ্রাফার@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy Note 20 Ultra 5g
তারিখ৯.১.২০২৩
স্থানw3w
Sort:  
 2 years ago 

পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ ভালই ঘোরাফেরা করেছেন দেখছি। ঠিকই বলেছেন ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তাঘাটে অনেক বেশি অ্যাক্সিডেন্ট হয়। পদ্মা সেতুর ওই দিকটায় এত বেশি জ্যাম হয় না বেশ ফাঁকাই থাকে। ভালই লাগে এ রাস্তার দিয়ে যেতে । আপনারা অবশ্য ভালো করেছেন যে শুধু শুধু পদ্মা সেতুতে উঠে টোল না দিয়ে নিচ দিয়েই ঘুরেফিরে দেখেছেন। সবথেকে ভালো কাজ করেছেন যে হিলসা রেস্টুরেন্টে না খেয়ে অন্য জায়গায় খেয়েছেন। কারণ এই রেস্টুরেন্টের দামের তুলনায় খাবারের মান আসলেই খারাপ। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

জি আপু মাওয়ার দিকে জ্যাম হয় না ঠিকই, কিন্তু যাত্রাবাড়ীতে অনেক জ্যাম থাকে সচরাচর। পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করব ইনশাল্লাহ। এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে কার না ভালো লাগে। সবাই একত্রিত কোন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা। সবাই মিলে সেখানে গিয়ে কিছু সময় পার করাটা একটা খুবই সুন্দর মুহূর্ত। যেহেতু এখন শীতকালে আর এই সময় অনেক ঘন কুয়াশা আর এই কুয়াশায় একসিডেন্টের হওয়ার সম্ভাবনা টাই বেশি। আপনারা পদ্মা সেতুতে বেশ ভালো সময় পার করেছেন। যদিও পদ্মা সেতুতে আমি কখনো যাইনি।ওনারা খাওয়ার জন্য হিলশা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে অনেক দাম দেখে অন্য কোন রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। যাহোক পরিবারকে নিয়ে অনেক সুন্দর সময় কাটেছেন এবং আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি ভাইয়া প্রজেক্ট হিলশা রেস্টুরেন্টে খাবারের মানের তুলনায় দাম অনেকটাই বেশি। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলেই পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরি করার মজাই আলাদা।গাড়ি ভাড়া দেওয়া তারপরও পরিবারের সাথে ঘুরতে যাওয়ার জন্য মাঝে মাঝে আনেন এটা বেশ ভালো।যাই হোক মাওয়া গিয়েছিলাম অনেক আগে এখনও পদ্মা সেতু দেখা হয়নি। গাড়ি পার্কিং করে বেশ ভালোই ছবি তোলেছেন।এবার বানিজ্য মেলার ছবি দেখার পালা।আসলে ঢাকাতে সব সময়ই জ্যাম থাকে সে দিন হয়ত ছিলো না।😉

 2 years ago 

জি আপু বাণিজ্য মেলার ছবি তো অবশ্যই দেখবেন, তবে তার আগে মাওয়াতে একেবারে তাজা ইলিশ মাছ ভাজি, ইলিশের লেজ ভর্তা, চিংড়ি মাছ ভাজি এবং বেগুন ভাজি খাওয়ার ছবি তো আগে দেখতে হবে 🤣। সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন শীতের সময় কুয়াশার মধ্যে গাড়ি খুব সাবধানে চালাতে হয়। না হলে এক্সিডেন্ট হওয়ার ভয় থাকে। পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার মজাটাই আলাদা। সবাই মিলে কোথাও বেড়াতে গেলে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। পদ্মা সেতু আমিও সরাসরি কখনো দেখিনি আপনার ফটোগ্রাফিতে দেখে খুবই ভালো লেগেছে এবং দোতালা টিন ও কাঠের বাড়িগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। যাই হোক পরিবার নিয়ে অনেক আনন্দের সময় কাটিয়েছেন । এবার বাণিজ্য মেলার ফটোগ্রাফি গুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

আপু আমার কাছেও দোতলা টিন এবং কাঠের বাড়িগুলো দেখতে খুব ভালো লেগেছিল। সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

মাঝে মাঝে সময় বের করে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে ঘুরতে গেলে খুব ভালো লাগে। আমারও সামনাসামনি পদ্মা সেতু দেখা হয়ে ওঠেনি। তবে দোতলা টিনের ঘর দেখেছি। আমার নানা বাড়ি দোতলা টিনের ঘর ছিল। আপনার পরবর্তী পোস্টের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

ইনশাল্লাহ ভাইয়া পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করব। গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

পরিবারের সবাই কে নিয়ে ঘুরতে গেলে বেশ ভালোই লাগে। তবে ঘন কুয়াশার কারনে গাড়ি খুব সাবধানে না চালালে দূর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।পদ্মা সেতু কমপ্লিট হওয়ার পর দেখা হয়ে উঠেনি।সেখানে ভিড় তেমন হয়না৷ টোল দিতে হয় ব্রীজে উঠতে গেলে।আপনারা নীচ থেকেই দেখলেন বেশ ভাল করেছেন।হিলসা রেস্টুরেন্টে না খেয়ে বাইরে খেয়ে ভালো ই করেছেন।আপনার অনুভুতি পড়ে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

 2 years ago 

জি আপু সেদিন সকাল থেকে কুয়াশা অনেক বেশি ছিল, এমনকি দুপুর বেলাও অনেক কুয়াশা ছিল। আমার অনুভূতি পড়ে আপনার কাছে ভালো লেগেছে, জেনে খুব ভালো লাগলো আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58067.54
ETH 2469.39
USDT 1.00
SBD 2.40