❝স্মৃতিজাগানো বন্ধুত্বের অভিযান❞
অবশেষে দীর্ঘ ৪-৫ বছর পর আমরা চারজন আবার একত্রে হলাম।এ যেন আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম।রাহাতকে দেখে আমি বুকে টেনে নিলাম।আমরা দুজন ছোটবেলায় সব সময় একসাথেই থাকতাম।কোথাও গেলে দুজনে একসাথে যেতাম।তাই অনেকদিন পর রাহাতকে দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো।এরপর আমরা চার বন্ধু বিলে নদীর পাড় দিয়ে হাঁটলাম ফাজলামি করলাম।অনেকদিন পর একসাথে হওয়ায় মনের মধ্যে জমানো সব কথাগুলো আমরা একে অপরের সাথে বলতে থাকলাম।নদীর পাড়ে বসে বসে আমরা গল্প করলাম।এরপর আমরা একটি ফুচকা দোকানে গেলাম।সেখানে আমরা সবাই মিলে ফুচকা খেলাম।বন্ধুবান্ধব নিয়ে নদীর পাড়ে বসে বসে ফুচকা খাওয়ার মজাই যেন অন্যরকম।যমুনা নদীর পাড়ে আমরা প্রথম দিন দেখা করে অনেক মজার মধ্যে দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করলাম।
চারজন মিলে প্রথম দিন ঘোরাফেরা করার পর সন্ধ্যার সময় বাসায় ফিরে আসলাম।বাসায় ফিরে আসার পর আবার মেসেঞ্জার গ্রুপে আরো একটি পরিকল্পনা করা হলো।পরদিন আমরা চারজন মিলে চায়না বাঁধে যাব এই সিদ্ধান্তে আমরা উপনীত হলাম।বিকেল ৫ টার দিকে আমাদের চায়না বাঁধে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমার আর আঁখির একটু সমস্যা থাকার কারণে আমরা একটু দেরিতে এগিয়েছিলাম। রাহাত এবং সামান্তা আগেই সেখানে গিয়েছিল।তারপর ৫ টা ৩০ এর দিক আমি আর আঁখি একসাথে চাইনা বাঁধে গিয়েছিলাম।চায়না বাঁধে গিয়ে আমরা চারজন মিলে অনেক খানি পথ হাঁটলাম। হাঁটতে হাঁটতে আমরা অনেক মজা করলাম,গল্প করলাম,ফাজলামি করলাম,মারামারি করলাম,আরো কত কি।যেহেতু অনেকদিন হলো আমাদের চারজনের দেখা হয় না,সেহেতু আমাদের মজা করার মাত্রা অনেক বেশি ছিল।
চায়না বাঁধে নদীর পাড় দিয়ে আমরা হাঁটতে থাকলাম।অনেকক্ষণ হাঁটার পর আমরা চার বন্ধু নদীর পাড়ে ঘাসের উপর বসলাম।ঘাসের উপর বসে বসে আমরা ছোটবেলার সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলো একে অপরের সাথে বলতে থাকলাম।ছোটবেলায় আমরা চার বন্ধু মিলে অনেক মজা করেছি,অনেক জায়গায় ঘুরতে গিয়েছি,স্কুলে গিয়ে একসাথে একসাথে পড়াশোনা করেছি।অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতি ছিল আমাদের।কিছুই আমরা নদীর পাড়ে ঘাসের উপর বসে মনে করতে থাকলাম।তখন এক মুহূর্তের জন্য আমাদের মনে হলো যেন শৈশবের দিনগুলোতে আবার ফিরে গিয়েছি।গল্প করতে করতে হঠাৎ আকাশে মেঘ দেখা দিল এবং প্রচন্ড বাতাস বইল।পরিবেশটা একদম ঠান্ডা হয়ে গেল এবং অন্যরকম একটি সৌন্দর্যময় রূপ ধারণ করল।তখন আমরা চার বন্ধু মিলে একটি নাগরদোলায় উঠলাম।নাগরদোলায় ওঠার পর আমরা চার বন্ধু যেন ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম।আমরা অনেক অনেক মজা করলাম।
নাগরদোলায় থাকা অবস্থায় হঠাৎ প্রচন্ড জোরে বৃষ্টি নেমে আসলো।বৃষ্টি নামার কারণে আমাদের আনন্দের মাত্রা যেন আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেল।চার বন্ধু মিলে ডিসিশন নিলাম যে আমরা আজকে বৃষ্টিতে ভিজবো।আমাদের সবার ফোনগুলো সামান্তার ব্যাগের মধ্যে রেখে দিলাম।তারপর আমরা বৃষ্টিতে ভেজা শুরু করে দিলাম।ছোট বাচ্চারা যেমন ভাবে বৃষ্টিতে ভিজে মজা করে আমরা ঠিক সেভাবেই মজা করলাম।যমুনা নদীর প্রবল ঢেউ যে অভূতপূর্ব পরিবেশের সৃষ্টি করেছে তার সাথে সংমিশ্রণ হিসেবে চায়না বাঁধের সেই বৃষ্টির স্নিগ্ধতা অজান্তেই আমাদেরকে এক ঐশ্বরিক পরিবেশের অংশ করে নিয়েছে।এরই অংশ হিসেবে আমরা নিজেদের জানার বিভিন্ন বৃষ্টির গান গেয়ে এই সময়টিকে এক অবিস্মরণীয় মুহূর্তে পরিণত করলাম।অভূতপূর্ব এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমরা চার বন্ধু একসাথে মিলে আগে কখনোই উপভোগ করিনি।তাই মহান স্রষ্টার কাছে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদেরকে এই অবিস্মরণীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মুহূর্তের অংশ করে নেওয়ার জন্য।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | রেডমি পোকো x2 |
---|---|
ধরণ | ❝স্মৃতিজাগানো বন্ধুত্বের অভিযান❞ |
ক্যমেরা মডেল | Poco X2 |
ক্যাপচার | @mohamad786 |
অবস্থান | সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ |
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
দীর্ঘ চার পাঁচ বছর পর আপনারা চার বন্ধু একত্রিত হয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। মেসেঞ্জারে গ্রুপ খুলে তারপর সেখান থেকে যোগাযোগ করে যমুনা নদীর তীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন এটা সত্যি দারুন একটি ব্যাপার। সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আর সেগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এ জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Twitter Link