❝২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য❞ By mohamad786 [10% Beneficiary @shy-fox]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে স্বাধীনতার দিবসের শুভেচ্ছা।আজ এই বিশেষ দিনে আমি আপনাদের সামনে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের কিছু তাৎপর্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।

🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩


bangladesh-6098099_1280.webp

Source Link


বাঙালির ইতিহাস হাজার বছরের ইতিহাস। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির দুটি রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। একটির নাম পাকিস্তান অন্যটি ভারত।পাকিস্তানের আবার দুইটি ভাগ ছিল একটি পশ্চিম পাকিস্তান একটি পূর্ব পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে আমাদের এই বাংলাদেশ।পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে এ নিয়ে মতবিরোধ শুরু হয় ১৯৪৭ সালের শুরু থেকেই।এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৮ সালে, ১৯৪৯সালে,১৯৫০ সালে নানান আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল।সর্বশেষ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ আরো নাম না জানা অনেকে রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি রাষ্ট্রভাষা বাংলা।মূলত এ ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালি জাতি মুক্তির জন্য উদ্বুদ্ধ হয়।


পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতন, অত্যাচার-নিপীড়নে বাঙালি জাতিকে আরো কয়েকবার রক্ত দিতে হয়েছে।আমরা বাঙালি জাতি রক্ত দিয়েছি১৯৫৪ সালে, রক্ত দিয়েছি ১৯৬৬ সালে, রক্ত দিয়েছি ১৯৬৯ সালে।তার পরেও আমরা লড়াই করে চলেছি।এরপর ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেও ক্ষমতায় বসতে দেওয়া হয়নি। এরকম আরো অনেক বৈষম্য, নির্যাতন-অত্যাচার, নিপীড়ন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ পেশ করেন। যা স্বাধীনতার ভাষণ নামে পরিচিত।১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণ এর ফলে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করে এবং নিজেরা উজ্জীবিত হতে শুরু করে।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ ই মার্চের ১৯ মিনিট ধরে এই স্বাধীনতার ভাষণ দেন।আরে ভাষণ এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য লাইন হচ্ছে-

তোমরা ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল।
তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও।
মনে রাখবে রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব
তবে দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।
"জয় বাংলা"

এই মহান ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে বাঙালি জাতি মুক্তির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে।


প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৫ই মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনার ভান করে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য, যুদ্ধ সরঞ্জাম ঢাকায় নিয়ে আসার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন।এর পর বাঙ্গালীদের হত্যা করার হুকুম জারি করে ইয়াহিয়া খান ২৫শে মার্চ ঢাকা ত্যাগ করেন।এরপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু করে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে, শুরু হয় বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ।বিভিন্ন ছাত্রাবাস এবং বিভিন্ন এলাকায় ঘুমন্ত মানুষের উপর এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এ অপারেশনের নাম ছিল "অপারেশন সার্চলাইট"।ইতিহাসে এই রাতটি "কাল রাত" নামে পরিচিত।২৫ মার্চ রাতে এই হত্যাযঙ্গ শুরু হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা প্রধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।২৫শে মার্চ রাত দেড়টার পর (অর্থাৎ ২৬ মার্চ) পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে বন্দী হবার পূর্বেই বঙ্গবন্ধু বি.জি.বি এর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ স্বাধীনতার ঘোষণা পৌঁছে দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ ভাষণটি দেন ইংরেজিতে, পরে এই ভাষণটি বাংলায় অনুবাদ করা হয়।ভাষনটি ছিল এরকম-

“ ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা , আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন । আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে , যে যেখানে আছে , যাহার যা কিছু আছে , তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও , সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো । পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও । ”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ভাষণ শুনে বাঙালি জাতি মুক্তির জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ।দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর প্রায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করে আমাদের এই বাংলাদেশ। সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ নামক এক স্বাধীন রাষ্ট্রের।

borders-2099198_1280.webp

Source Link

New_Benner_ABB.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 2 years ago 

প্রথমে আপনাকে বাংলার মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। আপনি খুব সুন্দর ভাবে বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। আপনার ইতিহাস তুলে ধরা দেখে মনে হল আপনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক পড়ালেখা করেছেন। আমাদের অবশ্যই নিজেদের দেশের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস জানা উচিত কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ মানুষকে দেখা যাচ্ছে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া যা সমীচীন নয়। আপনি এত সুন্দর ভাবে ধারাবাহিকভাবে ইতিহাস গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এত সুন্দর একটি ইতিহাস আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য আমরা অনেকেই জানি । তবুও আপনি আমাদের সেই কথাগুলো আবার মনে করিয়ে দিলেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া নতুন একটি বিষয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

আপনাকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই
সকল শহীদদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা। তাদের আত্মদান কখনো ভুলবো না।
আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আপনি যথার্থ লিখেছেন। খুব সুন্দর ভাবে ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

স্বাধীনতা মানেই আমাদের কাছে খুশির দিন ভালোবাসার দিন । আমাদের 26 শে মার্চ নিয়ে আপনি দারুন একটা পোস্ট করেছেন ভাইয়া পোস্টটি পড়ে সত্যি অনেক শান্তি পেলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।

 2 years ago 

বাঙালি জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। সত্যিই এই দিনটি প্রতিটা বাঙালির হৃদয়ে সারাজীবন বেঁচে থাকবে।মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা লিখেছেন। এই কথাগুলো পড়ে আমার খুবই ভাল লাগল। বিজয় দিবসের গুরুত্বপূর্ণ কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

অনেক তথ্যবহুল ছিল আপনার পোস্ট। আগামী প্রজন্ম এবং যারা নতুন করে জন্মগ্রহণ করবে তাদের এই 25 শে মার্চ কালরাত্রি এবং 26 শে মার্চের স্বাধীনতার সম্পূর্ণ বিষয়টি জানা দরকার দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা জন্মানোর জন্য।

ধন্যবাদ দেশাত্মবোধক এবং দেশপ্রেম নিয়ে এত সুন্দর ব্লগ তৈরি করার জন্য।

 2 years ago 

২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বের। এই দিনে বাঙ্গালী জাতির মুক্তির পথ উন্মোচিত হয়েছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

26 শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস যেটা আমাদের অতীতের স্মৃতি বিজড়িত অনেক বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয়। যা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক তথ্য জানতে পারলাম আগেও এই সম্পর্কে অনেক জানা ছিল ।যেটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে সামনে নিয়ে এসেছেন। তবে তখনকার সময়ে আওয়ামী লীগ নাম ছিল না তখন ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। যাই হোক দিন শেষে এই দেশের মানুষ অনেক রক্ত দিয়েছে আমাদেরকে একটি সুন্দর সকাল উপহার দেয়ার জন্য তাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল এবং সেই কালোরাতে যাদের জীবন গিয়েছে তাদের জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদাউসে পরিণত করে দেন।

 2 years ago 

ভাইয়া ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামকরন করা হয়।তো ১৯৫৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যে দলটি দেখতে পাচ্ছি এটি আওয়ামী লীগ নামেই আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া❤️

স্বাধীনতার ইতিহাস পটভূমি আমাদের মাঝে আপনি যেভাবে শেয়ার করলেন, তা ব্লকচাইন এর পাতায় আরও হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থাকুক।সময়োপযোগী পোস্ট করার আগ্রহ কে স্বাগত জানাচ্ছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 57645.95
ETH 2389.92
USDT 1.00
SBD 2.43