ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য নির্বাচন অফিসে আসা🌹By mohamad786 [10% Beneficiary @shy-fox]

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

আজকে আমি নির্বাচন অফিসে এসেছি আমার বাবার ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য। আসলে আমার বাবার নামের সাথে আমার ভোটার আইডি কার্ডের মিল নেই। আমার সার্টিফিকেট এর সাথে আমার ভোটার আইডি কার্ডের সাথে বাবার নাম মিল রয়েছে। তার পরেও আমার বাবার আইডি কার্ডের সাথে মিল করার জন্য আজকে আমি নির্বাচন অফিসে এসেছি। আর নির্বাচন অফিসে এসে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারপরে যেন কাজ শেষ হচ্ছিল না। অবশেষে আমার নির্বাচন অফিসে আমার আবেদনটি গ্রহণ করল। এই গ্রহণ করার সময়টুকু আমি নির্বাচন অফিসেই ছিলাম এবং নির্বাচন অফিসের কাজের গতি ধারণা করেছিলাম। আসলে নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা রয়েছেন তার সাথে কাজ করে, কিন্তু তারা অনেক সময ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক সময় পিছিয়ে দেয়, তো বন্ধুরা নির্বাচন অফিসের কাজের কিছু মুহূর্তের গল্প শেয়ার করা যাক।

IMG_20230228_164809.jpg

সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে এসে দেখতে পেলাম, নির্বাচন অফিসের উপরে জাতীয় পতাকা উড়তে ছিল এবং এই জাতীয় পতাকাসহ নির্বাচন অফিসের একটি ফটোগ্রাফি করলাম। নির্বাচন অফিসে বিশেষ করে সেখানে রয়েছে বড় করে লেখা রয়েছে কেউ ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া সমান অপরাধী। আপনারা কেউ গুষের আশ্রয় নেবেন না। এই লেখাগুলো বারবার দেখতেছিলাম ভালই লাগতেছিলো, তখন মনে হচ্ছিল নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা সাথে দায়িত্ব পালন করে। আমি যখন অফিসে ঢুকলাম তখন আমাকে দীর্ঘ একটা লাইন ধরিয়ে দিল। বললো আপনারা এই লাইনে আসবেন, আর মাঝেমধ্যে দেখলাম কেউ কেউ আগেই বেরিয়ে গিয়ে কাজ শেরে নিচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কিভাবে আগে যায়, মাঝখান থেকে কেউ একজন বলল এর আগে সিরিয়াল দিয়ে গিয়েছিল। আবার কেউ কেউ বলে এরা নির্বাচন কর্মকর্তাদের আত্মীয় হয়। আসলে প্রতিটা ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। আত্মীয়দের একটু বেশি প্রাধান্য দিতে হবে, না হলে আত্মীয়রা বাড়িতে গিয়ে বলবে ওখানে চাকরি করে ওর কোন দাম নেই। আমাদের একটু আগে কাজ করে দিতে পারে না, হাহাহা। যাই হোক কিছু করার নেই চুপ করে বড় একটা লাইনে দাঁড়িয়ে রইলাম।


IMG_20230228_164757.jpg

দীর্ঘ লাইন শেষে যখন আমার ডাক আসলো, তখন আমি ভিতরে ঢুকলাম। ভেতরে ঢুকতেই আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি কাগজ পাতি গুলো ঠিকভাবে এনেছি কিনা। আমার কাগজপত্র সব ঠিকঠাক কারণ আমি অনলাইন থেকে আগেই জেনে নিয়েছিলাম নাম ঠিক করতে কি কি কাগজ লাগবে। আমাকে নিয়ে যেতে হবে সকল কাগজপত্র আমি নিয়েছি। আমার কাজগগুলো দেখে আমাকে বলল আপনি বাইরে দাড়ান আপনাকে আবারও ডাকা হবে। তো বললাম আমার বললাম আবারও বাইরে যাবো,তারা বললো আরেকটু বাইরে যান। আপনাকে ২০ মিনিট পর আবারও ডাকা হলো। তখন আমাকে বলল আপনার নাম ঠিক করতে হলো আমাদের সাত দিন সময় দিতে হবে। আমি বললাম সাতদিন সময়টা একটু বেশি হয়ে যায়। আমার খুব তাড়াতাড়ি ঠিক করতে হবে, কারণ এই নামটি ঠিক হলে আমি বাবার পাসপোর্ট করব। আমি তাদের বললাম যে আমার পাসপোর্ট করতে হবে,আমার কাজ একটু তাড়াতাড়ি করার ব্যবস্থা করা যায় না। তখন সেখান থেকে একজন পিয়ন আমাকে বলল আপনি আসুন আপনার আমাদের নিচে ম্যানেজার স্যারের সাথে কথা বলতে হবে সে যদি পারে।তাই তার সাথে কথা বলার জন্য আমি সেই ভাইয়ের সাথে নিচতলা আসলাম। স্যারের সাথে কথা বলার জন্য।


IMG_20230228_164820.jpg

নিচতলা পিয়ন ভাইয়ের সাথে আমি যখন আসলাম। দেখতে পেলাম আমার মত অনেকেই নিচতলায় এভাবে বসে রয়েছ।সেই ভাই আমাকে বলল দেখেন আপনি যদি কাজটা তাড়াতাড়ি করতে চান তাহলে স্যারকে দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাটা করেন। নাস্তার ব্যবস্থা করলেই হয়ে যাবে। আমি বললাম নাস্তা খাওয়ার টাকা আমি দেবো। সরকার থেকে কি নাস্তা খাওয়ার টাকা দেয় না।পিয়ন ভাই বললো এভাবে কথা বললে হবে না। এভাবে কথা বললে আপনার কাজটি অনেক পিছিয়ে যাবে। আপনি সিরাজগঞ্জের মানুষ আমিও সিরাজগঞ্জে, তাই আপনার কাজটি যত তাড়াতাড়ি হয় সেজন্য আপনাকে এই কথাটি বললাম।এখুন দেখেন কি করবেন। তার কথা শুনে বুঝতে পারলাম এখনে টাকা ছাড়া আর সম্ভব না। সাত দিনের কথা বলেছে যদি আমি টাকা না দেই সে কাজটি আমাকে সাত মাস লাগাবে।আসলে এরকমই হয় আমার এক বন্ধু তার নাম ঠিক করতে এসেছিল তার নাম ঠিক করতে লেগেছে নাকি সাত মাস ১০ দিন। আমাকে আমি ভ সাত দিনে কথা বলেছে, যদি টাকা না দেয় তাহলে তো আমার অবস্থা খারাপ করে দিবে। অন্যদিকে বাবার পাসপোর্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে।কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।যাই হোক ভাইকে বললাম ভাই খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা কি আমাকে করতে হবে। এটা না করলে হয় না। বললে হবে না আপনি কোন ব্যবস্থা করুন এবং সেই কাজটা আপনাকে করতে হবে। সে বললো একটি সাদা খামের ভিতর টাকাটা দিতে হবে, কারণ নির্বাচন অফিসে প্রতিটা ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যদি ধরা পড়ে যায় কি তাদের মেন্টালিটি। যাক তারা খুবই স্মার্ট ভাবে এই খাবারের টাকাগুলো আমার কাছ থেকে নিয়ে থাকে। যাইহোক আমি তাকে বললাম খাবারের জন্য কত দিতে হবে। সে বলল আপনি ১০০০ টাকা দিলেই হবে। বাপরে বাপ একটা অফিস সহায়ক কর্মকর্তার দুপুরে খাবার ১০০০ টাকা, যাই হোক সে হয়তো ২৫ হাজার টাকা বেতন পায়, কিন্তু সে দুপুরে খাবার খাই ১০০০ টাকার অবাক করার মত বিষয়। যাই হোক বাদ দিলাম সব টাকাটা আমাকে দিতে হলো একটা সাদা খামের মধ্যে। p


তারপরে সাদা খামের ভিতর লাঞ্চ করার জন্য কর্মকর্তা বাবুকে খাবারটা দিলাম হাহাহা। সেটা জমা দেওয়ার পরেই পিয়ন ভাই আমাকে জানালো আপনার কাজটা হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। কালকে না হলে পরশু দিনে আপনার কাজটা কমপ্লিট হবে। যাই হোকখাবার যেহেতু খাইয়ে দিয়েছি, যেহেতু খাবারটা পেটে ডুকবে দেখাযাক মানবতার ক্ষেত্রে কাজটা করে কিনা। এই খাবারের টাকাটা বাধ্য হয়ে দিলাম।কারণ পাসপোর্ট করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যাই হোক পরবর্তীতে কি হয় সেটা নিয়ে আপনাদের মাঝে আবার আলোচনা করব এবং শেয়ার করবো ইনশা-আল্লাহ।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবারো অন্য কোনদিন ভিন্ন কোনো কন্টেট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইল। আল্লাহ হাফেজ।🙏🤲🙏

banner-abbVD.png

আমার পরিচয়

IMG_20220525_014109.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 last year (edited)

এটাই আমাদের দেশের নিয়ম,যত বড় করে লেখা থাকুক না কেন ঘুষ দেওয়া নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন ততই তারা ভেতর থেকে ঘুষ নিয়ে চলেছে ।প্রতিনিয়ত তারা এভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নিচ্ছে ।এরা আসলে সরকারের কর্মকর্তা নামে আমাদের দেশের কলংক ।তারা সাধারণ জনগণের কাছ থেকে এভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ।সরকারি অফিস,কাজ ,মানেই হচ্ছে টাকা খাওয়ার আরেক ক্ষুধার্ত রাক্ষস। সামান্য একটা ভুল তারা এক সপ্তাহ লাগাবে ঠিক করতে। সরকার মনে হয় ওদেরকে নাস্তা খাওয়ার টাকা দেয় না, আর যাই ইনকাম করে তা মনে হয় মানুষকে দান করতে করতে নিজেদের খাওয়ার টাকা টুকু রাখে না ।তাই মানুষের কাছে ভিক্ষার মতো হাতপাতে টাকার জন্য। রাস্তার ফকিরদের কে টাকা দিতে এত খারাপ লাগে না যতটা ঘৃণা লাগে এসব মানুষদেরকে টাকা দিতে। সরকারি ভাবে বেতন তো তারা নিয়ে চলেছে ,তারপর মানুষের কাছ থেকে ভিক্ষা করে যাচ্ছে। ওরা শিক্ষিত ফকির তাই খামের ভিতরে লুকিয়ে টাকা নেয়।

 last year 

কী বলবো ভাই নিজের দেশের বদনাম করতে খারাপ লাগে। অফিসে কোন কাজ করতে গেলে টাকা ছাড়া কিছুই হয় না।আর তাদের যে ব্যবহার।কী বলবো ভাই তারা যেন মানুষ রুপি জানোয়ার।আমি কিছু দিন আগে এমন এমন ভোগান্তির শিকার হয়েছিলাম। তাদের প্রতি এখনো অনেক রাগ আছে।

 last year 

আমরা কম বেশি আমার সবাই প্রতি দিন এই ধরণের সময়ে পার করছি,কি আর বলবো,আর পাসপোর্ট অফিসে আর দুর্নীতি হবে ভাই।ঔটা আমি ভোগান্তিতে পরেছিলাম।

 last year 

ভোটার আইডি কার্ডের নিজের নাম সংশোধন করা বড় কঠিন ব্যাপার আমাদের দেশে। কারণ এতে অনেক বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় পাশাপাশি কথা শুনতে হয় অনেক। এছাড়াও আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। আপনি আপনার এই অনুভূতিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো এবং অনেকেই জানতে পারলো বিস্তারিত এ বিষয়ে।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 66407.66
ETH 3025.92
USDT 1.00
SBD 3.69