স্মৃতিচারণঃবন্ধুদের সাথে লিচু চুরি করার গল্প //পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

স্কুল জীবনে বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে স্কুল জীবনটা আমার আনন্দময় ছিল, কারণ আমরা এমন একটা গ্রুপ ছিলাম। যে গ্রুপটা পুরো স্কুলে যেন শাসন করতাম। কেউ কিছু বলতো না এমনকি স্যারাও বলত না। কারণ আমরা পড়াশোনায় যেমন ভালো ছিলাম তেমনি দুষ্টুর দিক দিয়েও। আমাদের একটা গ্রুপ ছিল এই গ্রুপের বন্ধুরা সব সময় এক জায়গায় থাকতাম এবং একই মিলেমিশে কাজ করতাম। যার কারণে আমাদের মধ্যে কখনো মারামারি হতো না এবং আমরা আনন্দের সাথে হাসি নিয়ে এই স্কুলের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি। তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে বন্ধুদের সাথে নিয়ে লিচু চুরির একটি গল্প শেয়ার করতেছিলাম।আজকে সেই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করি এই পর্বটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


hands-2847508_1280.jpg

Source

তো রাত এক একটার দিকে আমরা সকল বন্ধুরা মিলে যখন সেই লিচু বাগানে আসলাম, লিচু চুরি করার জন্য। আমরা একটি বস্তা নিয়ে এসেছি। এই লিচু চুরি করার জন্য, আমরা এসেছিলাম পাঁচজন আর এই লিচু গাছ থেকে হাত দিয়ে লিচু পারা যায়। যার কারণে আমরা যার যার মত লিচুগুলো পারতে লাগলাম এবং ডালসহ ভেঙ্গে নিয়ে বস্তার ভিতরে তুলতে লাগলাম। আমাদের অনেক রাগছিল এই লিচু গাছের মালিকের ওপরে কারণ সে আমাদের অনেক বকেছে , যার কারণে আমরা রাগ করলেই বেশি করে লিচু চুরি করতে ছিলাম। এই লিচুগুলো পারা শেষে আমরা বন্ধুর বাসার দিকে রওনা দিলাম। এই লিচুগুলো নিয়ে আমরা প্রথমে বন্ধুর বাসায় আসলাম এবং বন্ধুর বাসায় এসে গুলো খুব সাবধানে রাখলাম। আর আমরা রাতে বন্ধুরা ডাল ভালোভাবে পরিষ্কার করতে নিলাম।


লিচু গাছের যত পাতা ও ঢাল ছিল এইগুলো আমরা একটি বস্তার ভিতর তুলে আমাদের প্রত্যেকেরই স্কুল ব্যাগের ভিতর নিলাম। কারণ এগুলো এই এলাকাতে ভাঙানো যাবে না। ফেললে ধরা খাব, যার কারণে লিচুগুলো খুব সাবধানে বন্ধুদের বাড়ির একটি বাক্সর ভিতরে আমরা রেখে দিলাম। আর এই ডালগুলো আমাদের ব্যাগের ভিতর রেখে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম এবং ঘুমানোর আগে যে যার মত কতগুলো লিচু খেতে পারে খেয়ে নিলাম। আসলে আমরা চুরি করার পরে খাবার ইচ্ছা ছিল যার কারণে আমরা ওই রাতে কিছু লিচু খেয়েছি এবং বেশিরভাগ আমরা রেখে দিয়েছি আর সকাল বেলার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

খুব সকালে, মানে ফজরের নামাজ পড়ে আমাদের পাইভেট রয়েছে। যার কারণে আমরা এই প্রাইভেট জন্য রওনা দিলাম। যার কারণে এলাকায় কেউ তখন দেখল না। ফজরের আজানের সময় আমরা উঠে এসেছি এবং আমরা যে স্কুলে প্রাইভেট পড়ি সেই স্কুলের মসজিদে এসে আমরা নামাজ পড়েছি। নামাজ পড়ে আমরা প্রাইভেট পড়া শুরু করে দেয়। এলাকার কেউই জানে না আমরা রাতে ওখানে থেকেছি বন্ধুর মা-বাবা তো তার মামা বাড়ি গিয়েছে। সকলে অন্যরা ভেবেছে বন্ধু তার মামাবাড়িতে গিয়েছে বুঝতেই পারেনি এবং আমরা সকালবেলা মসজিদে নামাজ পড়ার আগেই আমাদের ব্যাগে যে লিচু পাতা ছিলো সেগুলো একটি পুকুরের পাড়ে আমরা ফেলে দিয়ে আসলাম। যাদের কেউ না বুঝে। তারপরে আমরা নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে ঢুকলাম এবং নামাজ পড়ে স্যারের সাথে কথা বলে আমরা প্রাইভেট পড়া শুরু করে দিলাম।



আসলে সেদিন আর আমাদের প্রাইভেট পড়তে কারওই মন ছিল না কারণ আমাদের মনের ভিতর অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করতেছিল। কখন আমরা এই লিচুগুলো বন্ধুর বাড়ি থেকে নিয়ে একদম চলে যেতে পারবো, তারপরে আমরা প্রাইভেট পড়া শেষে অন্যান্য বন্ধুরা আসলো। সেই ১০ জন বন্ধু একসাথে গল্প করতে লাগলাম কিভাবে বন্ধুর বাড়ি থেকে গিয়ে আমরা ওই লিচুগুলো নিয়ে আসবো। আসলে বন্ধু বলল এখনই যাস না বিকালবেলা আমরা যাব তাহলে কেউ বুঝতে পারবে না। যা হবার সকালবেলা হয়ে যাবে এখন আমরা যখন বিকেলবেলা যাব তখন আমরা বুঝতে পারবো যে কাদের দোষ দিয়েছে। আসলে এই নিয়ে গ্রামের ভিতরে অন্যরকম একটা অনুভূতি হবে। কারণ লিচু বাগান থেকে অনেকগুলো লিচু এক বস্তু কম না এটা। সেই মালিক হয়তোবা অনেক কিছু করবে। তাই আমরা বিকালের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।


স্কুল ছুটি ছিল যার কারণে আমরা স্কুলে যাইনি আমরা বন্ধুরা মিলে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। খেলা দেখার শেষে বন্ধু এবং আর দুজন বন্ধুকে আমি বন্ধুদের গ্রামে পাঠালাম। ওই লিচুগুলো নিয়ে আসতে। ব্যাগের ভিতর করে ওই গ্রামগুলো থেকে নিয়ে আসবে। ওরা গিয়েছিল এবং গিয়ে দেখতে পেল গ্রামের মানুষ শুধু বলাবলি করছে কিভাবে এই বাগান থেকে লিচু চুরি হলো এটা ছোটদের কাজ না। এটা হয়তো বড়দের কাজ। তা না হলে এই ভাবে লিচু চুরি করতে পারে না। কোন বড় চোর এসেছিল এই বাগানে।বন্ধুরা কোন কথা না বলে বাড়ি থেকে লিচু গুলো নিয়ে ব্যাগের মধ্যে নিয়ে সজা স্টেডিয়ামে দিকে আসলো। এখান থেকে সোজা নদীর পাড়ে দিকে রওনা দিলাম।তো বন্ধুরা গল্পের বাকি অংশটুকু পরবর্তী পর আপনাদের সাথে শেয়ার করবেন ইনশাআল্লাহ।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 6 months ago 

ভাইয়া আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন বন্ধুদের সাথে লিচু চুরি করার দ্বিতীয় পর্ব। আপনার এই গল্পটি পড়ে আমার একটি কথা মনে পড়ে গেল সেটা হচ্ছে বন্ধুদের সাথে ডাব চুরি করে খাওয়ার গল্প। গল্পটা দারুন ছিল ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

লিচু চুরির গল্পের শেষটা তো অসমাপ্ত রইল ভাই! পরে নদীর পাড়ে গিয়ে কি করলেন সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গেলো। এরকম লিচু চুরির ঘটনা আমি যদিও ছোটবেলায় ঘটাই নি, তবে আমার বন্ধুরা এমন করতো। স্কুল জীবনে সবারই কমবেশি এমন বন্ধুদের গ্রুপ থাকে যারা এসব কাজ করে। যাইহোক, বস্তা নিয়ে লিচু চুরি করতে গেছেন! তার মানে তো বড় ধরনের চুরির প্ল্যান আগে থেকেই ছিল। হিহি 🤣

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58833.91
ETH 3155.94
USDT 1.00
SBD 2.44