প্রিয় মানুষদের হারানোর বেদনা খুবই কষ্টকর

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

আসলে মানুষ মরণশীল, কেউ কোনদিনই চিরকাল বেঁচে থাকবে না। প্রকৃতির নিয়মে এক সময় না একসময় আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে যাবে। আর হারিয়ে যাবে চিরতরে। কোথাও আর খুঁজে পাবো না। আসলে বয়সের সাথে সাথে মানুষ যেমন বৃদ্ধ হয়ে যায়, যেমন মানুষ আমাদের থেকে চলে যায়। আবার হঠাৎ করেও অনেকেই রয়েছে অল্প বয়সে চলে যায়। আর এই বিদায় যেন খুবই কষ্টকর। আসলে আমরা থাকতে কারো মর্ম বুঝি না। কিন্তু কেউ যখন চির বিদায় নিয়ে আমাদের মধ্যে থেকে চলে যায়। তার কথার মনে করতে পেরে খুবই খারাপ লাগে। তার অভাব যেন কখনোই পূরণ হয় না। আর এই বিদায় দেওয়ার মুহূর্তগুলো এত কষ্টের হয়ে থাকে যা বলার মতো না। বিশেষ করে প্রিয় মানুষগুলোর কথা।যে মানুষগুলো আমাদের বেশি ভালোবেসেছে, তাদের হারানোর কষ্ট যেন বারবার মনে পড়ে। বিশেষ করে ঈদ উৎসব বা অন্য কোন উৎসব, আসলেই তার কথা এবং তার সাথে কাটানো সেই দিনগুলোর কথা বেশি মনে পড়ে যার, কারণে অনেক বেশি কষ্ট লাগে।


man-5846064_1280.jpg

Source

আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার মনের কষ্টগুলো শেয়ার করতে আসলাম। আসলে আমার প্রিয় মানুষকে হারানোর বেদনার কষ্ট গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আমার দাদা আমাকে সবচাইতে বেশি ভালোবাসতো। আসলে পরিবারের সবার বড় নাতী ছিলাম আমি। যার কারণে বেশি আদর যত্ন পেতাম। আসলে পরিবারের যে বড় নাতি হয়ে থাকে, তাকে বেশি ভালোবাসে দাদা দাদি। আর এই দাদা দাদির ভালোবাসা যেন বেশি উপভোগ করা যায়। আর দাদা দাদির প্রতি যেন অন্যরকম একটা মায়া আসে। আসলে দাদা দাদির সাথে কাটানো দিনগুলো এত আনন্দের হয়ে থাকে একদম বন্ধুদের মত যেন দাদা দাদি আমাদের জীবনে জড়িয়ে থাকে। আর আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করে, বিশেষ করে আমার দাদা আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসতো এবং আমাকে ছাড়া সে একটা মুহূর্ত থাকতো না। যেখানেই যায় না কেন, আমাকে সাথে নিয়ে যেত।


বিশেষ করে বাড়িতে বা অন্য কোন জায়গায় কোন অনুষ্ঠান হলেই, আমি দাদার সাথে সেখানে যেতাম এবং আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করতাম। দাদার হাতের লাঠি যেন হয়েছিলাম আমি। আর দাদা আমাকে এত ভালোবাসতো যে আমাকে ছাড়া কিছু বুঝতোই না। আমাকে নিয়েই রাতে থাকতো, আর দাদার কাছে শুয়ে শুয়ে আমি গল্প শুনতাম। সেই ছোটবেলার গল্প বিশেষ করে আমার দাদা মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ করেছে। যার কারণে তার কাছ থেকে আমি যুদ্ধের গল্প গুলো শুনতাম, এত ভালো লাগতো যা বলার মত নয়। পুরনো দিনের কথা এবং পুরনো ইতিহাসগুলো দাদার কাছে শুয়ে শুয়ে আমি অনেক শুনেছি। আর এই মুহূর্তগুলো অনেক বেশি ভালো লাগতো। যার কারণে আমি দাদার কাছে শুয়ে অনেক আনন্দের সাথে সেই গল্পগুলো উপভোগ করতাম।


বিশেষ করে ঈদ উৎসব আসলে আরো বেশি ভালো লাগতো। ঈদ উৎসব আসলে দাদার সাথে আমি মার্কেটে যেতাম এবং দাদা আমাকে তার পছন্দের কাপড়-চোপড় কিনে দিত। আর যখন আমি বড় হয়েছি তখন আমিও যখন মার্কেটে আসতাম দাদার জন্য আমি টুপি আতর কিনে দিতাম। আজ যখন আমি মার্কেটে এসেছি মার্কেটে এসে সেই টুপি আতর কিনতে গিয়ে আমার অনেক খারাপ লাগলো। আর দোকানদার বলল যে তুমি তো টুপি আর আতর নাও না। তখন বললাম যে আমার দাদা তো প্রায় সাত মাস আগে মারা গিয়েছে, যার কারণে আর টুপি নেওয়া হচ্ছে নাম এই কথাটা শুনে দোকানদার অনেক আফসোস করলো। তখন যেন দাদার কথা মনে করতে পেরে আমার অনেক খারাপ লাগলো। আর সেই পুরনো দিনগুলো ভাবতেছিলাম আর চোখে দিয়ে যেন পানি আসতে ছিলো।


গত বছর এই ঈদ উৎসবে দাদার সাথে ঈদ পালন করেছি। দাদার সাথে কত হাসি আনন্দের সাথে মুহূর্তগুলো উপভোগ করেছি। দাদার সাথে মাঠে গিয়েছি, পাশাপাশি বসে নামাজ পড়েছি। এই দিনের কথা মনে করতে পেরে খুবই খারাপ লাগছে। কিন্তু মানুষ এভাবে হারিয়ে যাবে কেউ কখনো কল্পনা করতে পারেনি। আমি কি ভেবেছিলাম যে এই ঈদের নামাজ দাদার সাথে শেষ নামাজ পড়া হচ্ছে। আগামীতে আর পড়তে পারব না। আসলে এভাবেই কেউ আমরা জানি না, কখন আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে যাবে প্রিয় মানুষগুলো। সেই দিনের কথা আজ মনে করতে পেরে খুবই খারাপ লাগছে আজকে।



দাদার মতো অনেক প্রিয় মানুষগুলোই আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে গেছে। কারো বাবা কারো মা, কারো ভাই, কারো বোন কারো সন্তান, গত বছর একসাথে ঈদ পালন করেছে। এবছর আর একসাথে ঈদ পালন করা হচ্ছে না। আসলে এই জিনিসগুলো মেনে নেওয়া খুবই কষ্টকর। তারপরেও আমাদের মেনে নিতে হবে। এটাই যেন প্রকৃতির নিয়ম। তবে আমরা তাদের জন্য অনেক দোয়া করব। যেন তারা ওপারে ভালো থাকে। আসলে প্রিয় মানুষদের হারিয়ে এভাবে ঈদ পালন করার মুহূর্তটা অনেক কষ্টকর। তাদের সাথে কাটানো দিনগুলোর কথা যেন বারবার মনে পড়ে যায়। যদি তাদের সাথে আমাদের আবারও কোনদিন দেখা হতো তাহলে কতই ভালো হতো। কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে আর সম্ভব নয়। তবে তাদের জন্য আমরা দোয়া করব এবং তারা যেন ওপারে ভালো থাকে। আর যারা আমাদের সাথে রয়েছে, মা-বাবা ভাই বোন তাদেরকে সাথে নিয়ে আমরা আনন্দের সাথে ঈদ পালন করব। তাদের মনে যেন আমরা কখনো কষ্ট না দেই এই দিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।আর প্রত্যেকটা পরিবারে ঈদের আনন্দ ফুটে উঠুক সর্বোচ্চ হয়ে এটাই কামনা করি

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 last month 

আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হলো আপনি একজন অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ মানুষ। আপনার দাদার সাথে কাটানো সেই সব মূল্যবান মুহূর্তগুলোর কথা আপনি যেভাবে বর্ণনা করেছেন, তা পাঠকের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। আপনার লেখায় প্রকৃত অনুভূতির প্রকাশ পাওয়া যায়, যা পাঠককে নিজের প্রিয়জনদের কথা মনে করিয়ে দেয়। আপনার লেখনীতে আপনার দাদার প্রতি আপনার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি মর্মস্পর্শী পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last month 

আসলে আমাদের কাছের মানুষগুলোকে হারানোর কষ্টটা কত বেশি, এটা আমরা তখনই বুঝতে পারি, যখন আমাদের সব থেকে কাছের মানুষগুলো আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায়। আসলে সেই মানুষগুলোকে হারানোর কষ্টটা আমরা মেনে নিতে পারি না সহজে। আপনার দাদার সাথে আপনি গত বছর এই ঈদ পালন করেছেন। কিন্তু এই বছর আর আপনার দাদা আপনার সাথে নেই, এটা ভাবতেই খারাপ লাগতেছে। আপনার কষ্টটা বুঝতে পারছি ভাইয়া। সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে এটা মেনে নিতেই হবে।

 last month 

আসলে আমরা কেউই চাই না আমাদের প্রিয় মানুষগুলোকে হারাতে। কিন্তু একদিন না একদিন তো তাদেরকে অবশ্যই চলে যেতে হবে। প্রিয় মানুষগুলোকে হারানোর কষ্ট টা অনেক বেশি হয়ে থাকে। আপনি আপনার দাদাকে অনেক বেশি ভালোবাসতেন বুঝতেই পারছেন। তাদের সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমাদের অনেক বেশি মনে পড়ে তখনই যখন ওই সব জায়গা গুলোতে আমরা যাই। আপনার দাদা চলে যাওয়াতে আপনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন এটা বুঝতে তো পারছি। আসলে কাছের মানুষগুলো চলে গেলে কষ্ট হতো হবেই, কিন্তু মানিয়ে নিতে হবে আমাদেরকে।

 last month 

আপনার লেখাটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো।আদলে নিজের লোক মারা গেলে তার দুঃখ কখনোই ভুলে যাওয়া সম্ভব না।হয়তো সময়ের প্রবর্তনে কমে দুঃখ কিন্তু ভোলা যায়না।আর দাদার সাথে সবারই একটি বিশেষ আলাদা ভালোবাসা রয়েছে।আপনার দাদার সাথে এই ঈদ পালন করতে পারবেন না তাই খুব খারাপ লাগছে আপনার বুঝলাম।ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last month 

একদিন মানুষগুলোকে কোন না কোন ভাবে হারাতেই হয়। প্রিয়জন হারানোর বেদনা খুবই কষ্টকর। আমাদের সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে এই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে। আপনার লেখাটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আমার। আপনি সঠিক বলেছেন বড় নাতি-নাতনিদের দাদা-দাদীরা অনেক বেশি ভালবাসেন। ছোটবেলার দাদার হাত ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। আবার সেই প্রিয়জনদেরকে হারিয়ে পেল্লেন। খুবই কষ্টকর বিষয়গুলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

খুব সুন্দর আবেগঘন পোস্ট করেছেন ভাইয়া। আসলে দাদা,দাদি যে কি, কতোটা ভালোবাসার ও কতোটা মূল্যবান তা হারানোর পর তিলে তিলে ক্ষনে ক্ষনে অনুভব করি।আপনি আপনার দাদিও দাদার সাথে কাটানো সময় গুলো খুব মিস করছেন তা আপনার পোস্টে ফুৃঁটে উঠেছে। দাদা,দাদী যেন গল্পের ঝুড়ি হয়ে থাকে সুন্দর সুন্দর গল্প বলে সময় কাটিয়ে দিতেন ঘুম পাড়িয়ে দিতেন। আপনি আপনার দাদার কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64573.45
ETH 3441.06
USDT 1.00
SBD 2.51