তিন বন্ধু মিলে বন্ধু জিহাদের গ্রামের বাড়ি ভ্রমণ [পর্ব-২]

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

গত সপ্তাহে আমার বন্ধু জিহাদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার অনুভূতি এবং সেখানে গিয়ে ওর ছোট বোনের সাথে কিভাবে মজা করেছি এবং দুপুরে খাওয়া দাওয়া করার পর আমরা চার বন্ধু একসাথে ঘুমানোর কিছু মুহূর্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম।এবং সেখানে বলেছিলাম দ্বিতীয় পর্বে জিহাদের গ্রামের ভিতর ঘোরার কিছু মুহূর্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।আর জিহাদের গ্রামের বাড়ি ভ্রমণ পর্ব-২ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।এটি মূলত জিহাদের গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার শেষ পর্ব।আশাকরি আজকের এই পর্বটি পড়ে আপনাদের আরো অনেক ভালো লাগবে।তো চলুন তাহলে আর বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।

mountains-615428_1280.jpg

Source

জিহাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জিহাদের মায়ের হাতের মজাদার মজাদার সব খাবার পেট ভরে খেয়ে আমরা চার বন্ধু একই বিছানায় একটু ঘুমালাম।ঘুম থেকে উঠে জিহাদ বলল চল তাহলে এখন আমার গ্রামের ভেতর দিয়ে একটু ঘোরাফেরা করে আসি।তারপর আমরা চার বন্ধু হাত মুখ ধুয়ে রেডি হয়ে গেলাম।গ্রামের মেঠো পথগুলো এমনিতে আমার অনেক ভালো লাগে। জিয়াদের গ্রামটি এত সুন্দর যা বলার মতো না।গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে সুরু মাটির রাস্তা।রাস্তার দুই পাশ দিয়ে সারিসারি গাছ আর গাছ।গ্রামে এরকম সুন্দর রাস্তার মধ্যে দিয়ে আমরা চার বন্ধু মজা করতে করতে হাঁটলাম।রাস্তার ধার দিয়েছিল অনেক ধরনের ফলের গাছ।জিহাদকে বললাম জিহাদ তুই আম গাছে ওঠ কয়েকটি আম পাড়। তারপর আম গাছে উঠে জিহাদ আমাদের জন্য কয়েকটি আম পাড়ল।আমরা চার বন্ধু মিলে কাঁচা আম খুব মজা করে খেলাম।কিন্তু আদিত একটু খাওয়ার পরে আম ফেলে দিল।কারণ আদিত বেশি চুকা খেতে পারে না।গ্রামের সুন্দর রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আরও একটু সামনে গিয়ে দেখি সুন্দর একটি পুকুর।সেই পুকুরে একটি ছেলে বরশি দিয়ে মাছ ধরছে।মাছ ধরার দৃশ্য দেখে আমি আর দূরে থাকতে পারলাম না।তাড়াতাড়ি করে তাদের কাছে গেলাম।কারণ মাছ ধরা দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কাছে গিয়ে ২০ মিনিট আমরা বসে থাকলাম এবং তাদের সাথে কিছু সময় মজা করলাম।আসলে বন্ধুরা মিলে কোথাও ঘুরতে গেলে সেখানে অবশ্যই মজা ফাইজলামি এসব হবেই।পুকুর পাড়ে বসে আমরা চার বন্ধু মজা করতে থাকলাম।আর এই ফাঁকে ওই ছেলেগুলো কয়েকটি মাছ ধরলো।তাদের মাছ ধরা দেখে আমাদের অনেক ভালো লাগলো।তারপর আমরা আবার হাঁটা শুরু করলাম।


agriculture-2824943_1280.jpg

Source

জিহাদের গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা চড়ের মধ্যে গেলাম।পুরো চড়া জুড়ে ধান আর ধান।এরকম দৃশ্য দেখে মনে হলো পুরো গ্রামটি ধান গাছে ভরে গেছে।ধানগুলো এখনো পাকেনি তাই ধান গাছগুলো সবুজে আছে।চারপাশে একদম সবুজে ছুঁয়ে গেছে।আসলে গ্রামের এইসব দৃশ্য গুলো আমাদেরকে বেশি করে আকৃষ্ট করে।আই বার বার ছুটে যেতে ইচ্ছে হয় গ্রামের এরকম মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্যে।আমরা চার বন্ধু ধান ক্ষেতের আইল দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।আমার বন্ধু সাদি অনেক মোটা।তাই আমার মনে হচ্ছিল সাদি যেকোনো সময় পড়ে যেতে পারে।যা ভাবলাম ঠিক তাই হলো।একটু পরেই দেখি সাদি ধান ক্ষেতের মধ্যে পড়ে গেছে।এরকম দৃশ্য দেখে আমরা আমরা চার বন্ধু খুব হাসাহাসি করলাম।সাদির এমন অবস্থা দেখে আমরা ওর সাথে ফাজলামি শুরু করলাম।ধান ক্ষেতের আইল দিয়ে সাদির সাথে ফাইজলামি করতে করতে আমরা গ্রামের একদম মাঝখানে চলে আসলাম।

cricket-166930_1280.jpg

Source

চার বন্ধু মিলে জিহাদের গ্রামের একদম মাঝখানে আসার পর দেখি অনেক বড় একটা খোলা মাঠ এবং সেই খোলা মাঠে গ্রামের অনেক পোলাপান ক্রিকেট খেলছে।আমরা চার বন্ধ ছিলাম ক্রিকেট পাগল মানুষ।তাই এত সুন্দর একটি খোলা জায়গায় ক্রিকেট খেলা দেখে আমরা আর চুপ থাকতে পারলাম না।তাই আমরা তাদের কাছে গিয়ে বললাম আমরাও ক্রিকেট খেলব,আমাদের ক্রিকেট খেলাও নাও।সেখানে জিয়াদের এক বড় ভাই ছিল।জিহাদের বড় ভাই আমাদের বলল, হ্যাঁ অবশ্যই খেলবা।তারপর আমি সেই বড় ভাইকে বললাম তাহলে চলেন একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলি।আমরা চায়ের বন্ধু সাথে গ্রামের আরও তিনজনকে নিয়ে আমরা মোট সাতজন মিলে একটি দল গঠন করলাম।আর সেই বড় ভাই অন্য সাতজন নিয়ে একটি দল গঠন করল।শুরু হয়ে গেল আমাদের ক্রিকেট ম্যাচ।১০ ওভারের এই ম্যাচে আমরা প্রথমে ব্যাট করতে নামলামআমরা ১০ ওভারে ৮০ রান করেছিলাম।এবার আমাদের বোলিংয়ের পালা। প্রথমে আমি বল করতে নামলাম। প্রথম ওভারে আমি চার রান দিয়ে কোন উইকেট পায়নি।তারপর আদিত বল করল।আদিতের বল অনেক ভালো তাই সে ৬ রান দিয়ে একটি উইকেটে নিল।তারপর আমি আবার বল করতে গেলাম সেই ওভারে আমি এক রান দিয়ে দুইটি উইকেট নিয়েছিলাম।এভাবে আমরা ১০ ওভার সম্পূর্ণ করলাম এবং তোরা ৬০ রান করতে পেরেছিল।আর আমরা ২০ রানে জয়লাভ করেছিলাম সেই ম্যাচটিতে।জিহাদের গ্রামে গিয়ে এই ক্রিকেট ম্যাচের কথা এখনো আমার অনেক মনে পড়ে। আবার ইচ্ছা হয় যে গ্রামে গিয়ে বন্ধুরা মিলে এরকম একটি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করব।কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রিকেট খেলার পর আমরা আবার জিহাদের বাড়িতে ফিরে আসি।জিহাদের বাড়িতে এসে আমরা ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করি।তারপর রাত দশটার দিকে আমরা রাতের খাবার খাই এবং রাতভর অনেক মজা করি চার বন্ধু মিলে। তারপরের দিন সকালে আমরা তিনজন আবার সিরাজগঞ্জে ফিরে আসি।এভাবেই জিহাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করলাম।

team-4529717_1280.jpg

Source

আজ থেকে প্রায় চার পাঁচ বছর আগে জিহাদের গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার অনুভূতিগুলো আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে।সেই সকল স্মৃতিগুলো আবার মনে পড়ে গেল।সেই সুন্দর সময় গুলোতে বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছা করে।আসলে বন্ধুদের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তই মনে রাখার মতো। এইসব মুহূর্ত সারা জীবন আমাদের স্মৃতি হয়ে থাকবে।এবং এই স্মৃতিগুলোই আমাদেরকে আবার একসাথে করবে ইনশাআল্লাহ।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 9 months ago 

আপনার বন্ধুর বাড়িতে ঘুরতে যাওয়া এবং সেখানে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। গ্রামের ব্যাপারটা শহর থেকে পুরোই আলাদা। রাস্তার পাশের গাছের সারি, যেখানে সেখানে ফলের গাছ, পুকুরে মাছ ধরা বা মাঠে ক্রিকেট খেলার দৃশ্য -- সবই যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম। তবে ভাইয়া, আপনি অন্য সোর্স থেকে ইমেজ না নিয়ে, বন্ধুর গ্রামে আপনার তোলা ছবি ব্যবহার করলে বিষয়টি আরোও জমে যেতো কিন্তু!!

 9 months ago 

আসলে আপু ঘটনাটি আজ থেকে চার পাঁচ বছর আগের।তখন আমি নতুন নতুন ক্লাস নাইনে উঠি।তাই ওই সময় আমাদের কারো কাছে ফোন ছিল না দেখে ওই সুন্দর মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে পারিনি।ঐ সময় নিজের একটা স্মার্ট ফোন থাকলে খুব ভালো হতো। 🥹

 9 months ago 

ওহ আচ্ছা! আমি তাহলে প্রথম পর্ব মিস করে যাওয়ায় এই তথ্য টি খেয়াল করি নি ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 71152.89
ETH 3805.51
USDT 1.00
SBD 3.49