বন্ধুদের সাথে রাতের বেলা পিকনিক খাওয়ার গল্প//পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

স্মৃতিময় দিনের কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। আসলে আমাদের জীবনে ফেলে আসা দিনগুলো যেন আমাদের স্মৃতি হয়ে এখন জমা হয়ে রয়েছে। সেই দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম কতই না ভালো হতো। মনের ভিতর হাজারো কল্পনা জাগে বন্ধুদের সাথে কাটানো দিনগুলো যদি ফিরে পেতাম খুবই ভালো হতো। আসলে ছোটবেলা বন্ধুদের সাথে নিয়ে পিকনিক করার একটা আনন্দময় মুহূর্ত ছিল। আর এই পিকনিক করা নিয়ে অনেক বাঁধা এসেছে। বাবা বারবার না করার কারণে আমরা নৌকায় করে পিকনিক করিনি। তবে আমাদের স্কুল মাঠে পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম। আর সেখানে রাতের বেলা আমরা আগুনে পুড়িয়ে মুরগি খেয়েছিলাম। সেই স্মৃতিময় গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ছিলাম।আজকে সেই গল্পেরই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি আজকের গল্পের পর্বটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

tree-736877_1280.jpg

Source

আসলে আমাদের পিকনিক করার কথা ছিল নৌকায় করো, কিন্তু বড়রা কিছুদিন আগে নৌকায় করে পিকনিক করার কারণে তাদের নৌকা ডুবে সেখানে অনেকে আহত হয়েছিল। যার কারণে আমার বাবা এই নৌকাগুলো পিকনিক করতে দিল না। তাই আমাদের বলল যে স্কুল মাঠে পিকনিক করতে এবং যেকোনো সুবিধা বাবা করবে। তাই বাবা ১৫০০ টাকা দিল,আমাদের মুরগি কেনার জন্য। আমরা মুরগি আগুনে পুড়িয়ে খাব এই ধারণাটি বাবায় দিয়েছিলো,আসলে বাবা বলেছিল তোমরা বন্ধুরা যেন মিলে আনন্দ করো।আর আগুনে পুড়িয়ে মুরগি খাওয়ার মধ্যে অনেক আনন্দ রয়েছে।


তবে আমরা সবাই ছিলাম ছোট। কিভাবে আগুনে পুড়িয়ে মুরগি রেসিপি তৈরি করব, এই বিষয়টি ভালোভাবে আমরা জানতাম না। যার কারণে বাবা আমার মামা ও চাচাকে সাথে দিল, যে ওরা সবাই ছোট তোমরা ওদের পিকনিক সাহায্য করবে।তাই আর মামা ও চাচা আমাদের সাথে খুবই ফ্রি, তাই বন্ধুদের সাথে আমাদের স্কুল মাঠে রাতভর আমরা আনন্দ করবো, আমরা গান বাছার জন্য বক্স নিয়ে এসেছিলাম। তারপরে আমরা বন্ধুরা মিলে অনেক আনন্দের সাথে মাঠের ভিতরে মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে ছিলাম। আমার মামা খুবই ভালো রান্না করতে পারে। যার কারণে মামা রান্না শুরু করে দিল, আর মামার সাথে সাহায্য করতে ছিল আমার চাচা, যার কারণে খুবই ভালো লাগতেছিল। আর আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে রান্নার কাজে সাহায্য করতেছিলাম। তো প্রথমে ভুনা খিচুড়ি রান্না করলো, আর মামা বলল রাতের বেলায় এই মুরগি আমরা আগুনে পুড়ে খাব। আগে ভুনা খিচুড়ি তৈরি করি আর এই ভুনা খিচুড়ি আমরা বিকেল বেলায় খাব।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

তো মামা ভুনা খিচুড়ি রান্না করা শুরু করে দিল। আর আমরা সকল বন্ধুরা মিলে সাহায্য করতে ছিলাম, খিচুড়ি রান্না খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। খিচুড়ি ভিতরে মুরগির মাংস দেওয়া হয়েছিল। আর এই ভুনা খিচুড়ি খেতে সত্যি অসাধারণ মজাদার হয়েছিল। আমরা বন্ধুরা মিলে তখন একসাথে খিচুড়ি খাবো, মামা বলল যে কলার পাতা নিয়ে এসো। কলার পাতা কেটে এই কলার পাতাতে আমরা ভুনা খিচুড়ি খাবো।আর কলার পাতায় খেতে অনেক বেশি ভালো লাগবে। আসলে সেদিনই প্রথম আমি কলার পাতায় খিচুড়ি খেয়েছিলাম, কারণে আমি অনেক কৌতূহল ছিলাম। কলা পাতায় খাওয়ার সেই মুহূর্তটা সত্যি অসাধারণ ছিল।


তারপর আমাদের খিচুড়ি খাওয়া শেষে আমরা মাঠের ভিতরে অনেক আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তটা পার করতেছিলাম। তারপরে সন্ধ্যা নেমে আসলো। আর সন্ধ্যার সময় মামা বলল যে এখুন আমরা মুরগির মাংস গুলো এই আগুনে পুড়বো।যার কারণে আমরা আগুনের ব্যবস্থা করলাম এবং ছোট ছোট লোহার সিক নিয়ে এসেছে আমার চাচা। সিকের সাথে মাংস লাগিয়ে আগুনে হয়।আর আমার বন্ধু বলল যে আমাদের গ্রামে যেহেতু ইটের ভাটা রয়েছে, আর ওখানে কয়লা রয়েছে। আর এই কয়লা দিয়ে পোড়ানো হলে নাকি অনেক ভালো হয়। বন্ধু তার বড় ভাইদের দেখেছে আগুনে পুড়িয়ে খাওয়ার সেই মুহূর্তগুলো।


রাত হয়ে গিয়েছিল, তাই আমি মানিক ও চাচা আমাদের গ্রামের সেই ইটের ভাটায় আসলাম। সেখানে আমরা কয়লা নেওয়ার জন্য এসেছি। তো রাতের বেলা ইটের ভাটার পাশে এসে একটু ভয়ে ভয়ে লাগতেছিল। তবে চাচা গিয়ে ইটের ভাটার অফিসে রয়েছে, সেই অফিসের লোককে ডাক দিলো,তারপর বললো আমরা কিছু কয়লা লাগবে।আসলে চাচার সাথে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিলো।তারা অনেকগুলো কয়লা আমাদের একটা পলিথিনের ভেতরে দিয়ে দিল। আমরা সেই কয়লা নিয়ে আসলাম। মামা বলল যে খুবই ভালো হয়েছে।
তারপরে মুরগি পোড়ানোর জন্য কয়লাতে আগুন ধরানো হলো।মামা বলল যে কয়লা দিয়ে মাংস পোড়ালে খেতে মজাদার হয়। তাই আমরা বন্ধুরা মিলে সেখানে বসে থাকলাম। মামা আর চাচা মিলে মুরগির মাংস গুলো ভালোভাবে মসলা দিয়ে মাখিয়ে পোড়ানো শুরু করে দিল। তো বন্ধুরা আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। আশা করছি আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন। সেই পর্বে আপনাদের মাঝে বাকি অংশটুকু শেয়ার করবে ইনশাআল্লাহ।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 last month 

ভাই আমার লাইফে আমি অনেকবার বন্ধুদের সাথে রাতে এভাবে পিকনিক করেছি। সেই সাথে খুব সুন্দর একটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি। আজকে সেই মুহূর্তগুলো খুব মিস করি। আপনার পোস্ট দেখে সেই পুরনো কথা মনে পড়ে গেল। তবে আপনিও দেখছি বন্ধুদের সাথে এভাবে রাতে পিকনিক করে বেশ আনন্দঘন একটা মুহূর্ত পার করেছেন। আপনারা দেখছি দ্রুত খাওয়ার জন্য মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলেন। শুনেই তো খিদে লাগছে । কারণ মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলে খেতে খুবই সুস্বাদু লাগে‌ । অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য। আপনার পরবর্তি পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 last month 

আগুনে পুড়িয়ে পিকনিক ভীষন চমৎকার খাবার।আসলে পিকনিক খেতে খুব ভালো লাগে আর পিকনিকের রান্না যেমনি হোক না কেন ভীষণ মজা হয়।আপনার দেখছি মজা করে কলার পাতায় মাংস দিয়ে ভুনা খিচুড়ি খেয়েছেও মুরগী পুড়িয়ে খেয়েছেন ভালো লাগলো আপার পিকনিকের স্মৃতিচারণ পোস্ট টি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 last month 

বন্ধুদের সাথে মাঠের ভিতর পিকনিক করার একটা আলাদা মজা রয়েছে। তবে যদি নৌকায় পিকনিক করতে পারতেন, তাহলে আরো বেশি মজা হত। এক্ষেত্রে আপনার বাবা যদি অনুমতি দিত তাহলে হয়তো আর সমস্যা হতো না। যাইহোক, আমি যতবার পিকনিক করেছি কখনো ভুনা খিচুড়ি খাইনি। আমরা সবসময় তান্দুরি চিকেন এবং বিরিয়ানি করতাম। আপনাদের সেই আনন্দঘন মুহূর্তের কথাগুলো পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64689.90
ETH 3450.92
USDT 1.00
SBD 2.50