শাহিন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার গল্প//পর্ব-৩

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

শাহিন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার এই স্মৃতিময় গল্পটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আসলে স্মৃতির সেই দিনটির কথা খুবই মনে পড়ছে। কারণ শাহিন ভাইয়ের সাথে কয়েকদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। এখন দেখতে পেলাম শাহীন ভাই আগের চাইতে অনেক ভালো আছে। সে আরও দুইটা ব্যবসা করেছে। সে শহরের একটা দোকান নিয়ে, যার কারণে তার সাথে ঘটে যাওয়া সেই স্মৃতিময় দিনের কথা মনে করতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। আর আপনাদের সাথে তাই গল্পটি শেয়ার করতেছিলাম। আজকে এই গল্পে শেষ করবো নিয়ে এসেছি।


আসলে সময় পরিবর্তনশীল। কখনো সময় পরিবর্তন হয়ে যায় সেটা বলা যায় না। কার জীবন কখনো খুলে যায় সেটাও বলা যায় না। অনেক সময় বিপদ আসে আর এই বিপদ দেখে আমরা অস্থির হয়ে যায়। কিন্তু এই বিপদ কাটিয়ে যেন আরো সফলতার মুখ আমরা দেখতে থাকি। তাই যেকোন বিপদ আসলেই আমাদের ধৈর্য হারা হওয়া যাবে না। এর পিছনে ভালো দিক আমাদের ভাবতেই হবে, যেমনটা শাহীন ভাইয়ের ক্ষেত্রে হয়েছিল।

firefighters-115800_1280.jpg

Source

শাহিন ভাইয়ের দোকানে যখন আগুন লাগল তখন চেয়ারম্যান এসে বলল, যে এই আগুনকে লাগিয়েছে। সেটা তদন্ত করা হবে। আসলে অনেক খোঁজখবর নেওয়া হল। আসলে এই আগুন কারেন্টে থেকে লেগেছিল। যার কারণে কাউকে কোন দোষ দেওয়া হলো না। আর শাহিন ভাইরে আগুনে কারেন্ট থেকে লাগার কারণে তার দোকানের সবকিছু পুড়ে যায়। সে একদম নিঃস্ব হয়ে যায়। তাই তাকে সাহায্য করার জন্য চেয়ারম্যান একটা পরিকল্পনা করে।


চেয়ারম্যানের এই পরিকল্পনাটি খুবই ভাল ছিল। সেই পরিকল্পনা করেছিল গ্রামের মধ্যে যারা একটু মধ্যবিত্ত তাদের একটা অ্যামাউন্ট নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর যারা ধনী তাদের একটা করা হয়েছিল। আর গরিব-দুঃখীদের বলা হয়েছিল আপনারা ইচ্ছামত দান করতে পারেন। আরও অনেক টাকা হয়েছিল বিশেষ করে আমাদের গ্রামে অনেক বিদেশী লোক রয়েছে। তারা ভিন্ন দেশে বসবাস করে। আর এই বিদেশীরা শাহীন ভাইয়ের কথা শুনে তারাও অনেক টাকা দান করেছিল। এমন একটা এমাউন্ট হয়েছিল যে টাকা দিয়ে শাহীন ভাইয়ের দোকান ভালো করে তৈরি করা যাবে।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

গ্রামবাসী অনেকেই সাহায্য সহযোগিতা করে শাহীন ভাইয়ের জন্য বাজারে একটিও ভালো দোকানের ব্যবস্থা করা হয়। আর এই দোকানে জামানা টাকা দিতে হয় নাই, কারণ শাহিন ভাইকে তারা সহযোগিতা করেছে। যার কারণে শাহিন ভাই সেই টাকা দিয়ে খুবই সুন্দর একটি দোকান ও দোকানের অনেক মালামাল তুলতে পেরেছিল। আর শাহিন ভাইয়ের জীবন তখন অনেক সুন্দর ভাবে চলতে শুরু করে। আসলে শাহীন ভাই তখন গ্রামের সকলের সাথে খুবই ভালো ব্যবহার করল। কারণ বিপদে পড়লে গ্রামবাসীরা তাকে সাহায্য করে।


তারপরে শাহিন ভাই এবং শাহিন ভাইয়ের মা আমাদের গ্রামবাসী ও চেয়ারম্যানকে অনেক দোয়া করলো। এভাবেই শাহীন ভাই আস্তে আস্তে ব্যবসা দাঁড় করালে এবং সে অনেক ভালো একটা পজিশনে চলে আসলো। চেয়ারম্যান বলল যে গ্রাম দুখিমানুষের জন্য একটা ফান্ড তৈরি করবে। সেখানে প্রত্যেকে কিছু কিছু অর্থ দান করবে আর এখান থেকে কেউ যদি বিপদে পরলে তাকে সাহায্য করবে। এই উদ্যোগটি বলার পরে সকলেই সহমত প্রকাশ করল আর বিদেশ থেকে যারা বিদেশীরা ছিল তারা এখানে সাহায্য করার জন্য একমত প্রকাশ করল।



সেখান থেকে শাহীন ভাইয়ের জীবন শুরু, শাহিন ভাই এখন অনেকগুলো ব্যবসায়ের সাথে জড়িত এবং শহরের একটি দোকান নিয়েছে। আর গ্রামবাসীদের জন্য চেয়ারম্যানের উদ্যোগটি এখনো রয়েছে। গ্রামে কোন গরিব দুঃখীর বিয়ে কিংবা তাদের ছেলে মেয়ে পড়াশুনার যদি অর্থ লাগে তাহলে সেই ফান্ড থেকে কিছু অর্থ সাহায্য করা হয়। আসলে প্রত্যেকটা গ্রামে এরকম একটা ফান্ড করা উচিত বলে আমি মনে করি।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 4 months ago 

শাহিন ভাইয়ের দোকানে কারেন্ট থেকে আগুন লেগেছিল। অনেক গ্রামবাসী এবং চেয়ারম্যান এর উদ্যোগে তাকে সাহায্য করে নতুন একটি দোকান দেওয়া হয়। আর সেই দোকান থেকে এসে ভালো একটা ব্যবসায়ী এখন হতে পেরেছে। আসলে গ্রামের গরিব দুংখিদের জন্য উদ্যোগটি খুবই ভালো হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে অনেক সাহায্য পাবে গরিব মানুষ গুলো।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

এই গল্পের প্রথম দুটি পর্ব আমার পড়া হয়েছিল৷ আজকে এর এই পর্বটি পড়েও খুব ভালো লাগছে৷ এই শাহীন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার পরে এলাকার অনেকে মিলেই তাকে ব্যবসা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন যা খুবই ভালো একটি উদ্যোগ৷ পরবর্তীতে তিনি তার নতুন একটি ব্যবসা নিয়ে এগিয়ে গেলেন৷ এর থেকে তার জীবন আবারও শুরু হল৷ আসলে এরকম ভালো মানুষ সকল জায়গায় দেখাও যায় না৷ যখন তার দোকানে আগুন লেগে যায় পরে সকালে উদ্যোগ গ্রহণ করে তার জন্য নতুন একটি দোকান দিয়ে দিল তার থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 67310.11
ETH 3522.28
USDT 1.00
SBD 2.71