বন্ধুদের সাথে গ্রাম্য মেলায় জিলাপি খাওয়ার স্মৃতিময় গল্প//(পর্ব -১) [10% Beneficiary @shy-fox]

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

বন্ধুত্বের মধ্যে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, আর এই স্মৃতিময় দিনের গল্পগুলো ভাবতেও যেন খুবই ভালো লাগে।তাই আজকে আমি আপনাদের মাঝে স্মৃতির পাতায় থেকে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আজকের গল্পটি হল গ্রাম্য মেলাতে বন্ধুদের সাথে নিয়ে জিলাপি খাওয়ার মুহূর্তের গল্প। আসলে আমাদের গ্রামে প্রতিবছরের মেলা হত। আর এই গ্রাম্য মেলতে আমার বন্ধুদের দাওয়াত করতাম।তখন আমার বন্ধুরা আমাদের বাড়িতে থাকত এবং এই মেলাতে গিয়ে আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করতাম। তেমনি একটি গল্প আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। তো এই মেলাতে এসেছিলো আমার বন্ধু আদিত সোহাগ, মানিক আর আমি, এই চারজন বন্ধু আমাদের বাড়িতে মেলার রাতে ছিলাম এবং আমরা সেই মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি।তাই সেই গল্পটি শেয়ার করার আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

people-gebc549a71_1920.jpg

source

তো সময়টা ছিল ২০২০ সাল।২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আমাদের গ্রামের মেলার আয়োজন করা হয়। এই গ্রাম্য মেলা থেকে খুবই আনন্দময় উৎসব দেখতে পাওয়া যায়।বিশেষ করে মেলাতে নাগরদোলা থাকে এবং আরো অনেক রকমের আয়োজন থাকে।এখানে অনেক মানুষ আছে আর এই মেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের গ্রামে মেহমানরা আসে।তো আমার বন্ধুদের আমি দাওয়াত করলাম। আমার বন্ধু আমাদের বাড়িতে বিকেল বেলা আসলো এবং আমাদের বাড়িতে যখন আছো তখন খুবই ভালো লাগলো। বন্ধুদের নিয়ে মেলাতে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করবো ভাবতেই ভালো লাগছিলো।আমার বন্ধুরা যখন আমার বাড়িতে আসলো। তখন আমার আম্মা অনেক খুশী হল, কারণ আমার আম্মা আমার বন্ধুদেরও খুবই ভালবাসতো।আমরা বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমার রুমে আসলাম এবং রুমে এসে আমরা বললাম যে সন্ধ্যা সাতটার দিকে সবাই একসাথে মেলাতে যাব। তো বন্ধুরা অনেক খুশি হলো, আমাদের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। তাই আমরা খাবার খেয়ে যাবো কারণ আসতে অনেক রাত হবে। আমরা খাবার-দাবার খেয়ে মেলা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।


গ্রাম্য মেলাতে বন্ধুদের সাথে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করা যায়। আসলে মেলাতে যদি আপনি একা যান তাহলে সে ভাবে আনন্দ করতে পারবেন না। কিন্তু যখনই মেলাতে আপনার বন্ধুরা পাশে থাকবে তখন অনেক আনন্দ হবে। আমরা মেলার বিভিন্ন দোকানে গেলাম এবং দোকানদারের সাথে অনেক মজা করলাম। চার জন বন্ধু মিলে প্রত্যেকটা দোকানে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করলাম। আর বেশিরভাগ দোকানদারি আমাদের গ্রামের পরিচিত ছিল। যার কারণে তাদের সাথে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করলাম। আমরা নাগরদোলা দেখতে পেলাম এবং চার বন্ধু মিলে নাগরদোলাতে উঠলাম। আমার বন্ধু সোহান ছিল।আর সোহান নাগরদোলাতে উঠতে চায়লো না, কারণ সোহান ভয় পেতো।তো আমরা বললাম ভয় নাই, জোর করে নাগরদোলা উঠালাম।নাগরদোলা যখন নিচের দিকে নামে সোহান তখন অনেক জোরে চিৎকার করে কান্না করে দিল। কারণ সে খুব ভয় পেত আর এই মুহুর্তটা আমরা অনেক আনন্দ উপভোগ করতাম।আমিও ভয় পেতাম কিন্তু বুঝতে দিতাম না। সত্যি নগরদোলার মুহূর্তটা খুব মনে পড়ছে, অনেক আনন্দ উপভোগ করেছিলাম।


hunger-gcd0eafcde_1920.jpg

source

তারপর আমরা নাগরদোলায় থেকে নামলাম। নাগরতলা থেকে নেমে সোহান বসে পরলো।বলল যে আমার খুবই খারাপ লাগছে, ওর মাথাটা ঘুরতেছে। তো কিছুক্ষণ বসে থাকার পরে ঠিক হল। তারপরে আমরা আবার মেলার ভিতরে গেলাম। ভিতর গিয়ে দেখি গরম গরম জিলাপি তৈরি করছে। আর এই গরম গুড়ের জিলাপি অনেকদিন হলো খাওয়া হয় না।তাই আমরা সেখানে গেলাম।আমি বললাম যে গরম গরম জিলাপি খেতে খুবই মজা লাগে। চল আমরা এক সাথে গরম গরম জিলাপি খাবো।এই গুড়ের জেলাপি আমার খুবই প্রিয়, আর সোহান বললো আমার এক চাচা রয়েছে।সেই চাচা একাই ১ কেজি গুড়ের জেলাপি খেয়ে ফেলে। এই কথা শুনে আতিত বললো তোর কিসের চাচা ১ কেজি জেলাপি খায় এটা বলতে এসেছিস।১ কেজি জেলাপি তো আমি একাই খেয়ে ফেলতে পারবো।এই কথা শুনে সোহানের রাগ হলো বললো সব জায়গায় চাপা মারা বাদদেহ।১ কেজি গুড়ের জেলাপি একা খাওয়া সোজা কাজ না।সোহাগের কথা শুনে আমি আদিতকে বললাম আদিত চাপা আর মারিস না, এক কেজি জিলাপি খাওয়া সোজা কাজ না।আর গুড়ের জিলাপি ১ কেজি কখনোই সম্ভব না. তখন আদিত বললো ঠিক আছে আমি খাব, তোলাবাজির ধর। আমি আদিতকে বললাম জামেলা করিস সা সম্ভপ না এটা।আদিত বললো বাজি ধর।তখন আমি বললাম আচ্ছা আদিত তুই যদি এক কেজি জেলাপি না খেতে পারিস তাহলে এই জিলাপির টাকাপুরা আমরা দেব এবং তোকে আরো ৫০০ টাকা দেবো মিষ্টি খাবার জন্য। আর যদি তুই না পারিস তাহলে এই জিলাপির পুরো টাকা তুই দিবি এবং সাথে আজকে আমাদের সবাইকে জিলাপি খাওয়াবব তারপরও সাথে তোর জরিমানা আমাদের আরো ৫০০ টাকা দিবি মিষ্টি খাওয়ার জন্য। তুই কিন্তু এই মিষ্টি খেতে পারবি না। তখন আদিত বলল ঠিক আছে, আমি এই বাজিতে রাজি।


তারপর আদিত রাজি হয়ে গেল। তাই আমি এক কেজি গুড়ের গরম গরম জিলাপি কিনে মেলার পাশে মাঠ ফাঁকা জায়গা আসলাম আমরা গোল হয়ে বসলাম এবং আদিতকে বললাম তুই খাওয়া শুরু কর।আদিত খাওয়া শুরু করে দিল এবং আমরা দেখতে লাগলাম।আজকের পর্ব এখানেই শেষ করলাম।২য় পর্বের আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আদিতি জেলাপি একাই সম্পন্ন শেষ করতে পারেছিলো কি না।তো বন্ধুরা আজকের পর্ব এখানে শেষ করছি। আগামী পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আদিতি শেষ পর্যন্ত খেতে পেরেছো কিনা।তো বন্ধুরা আপনাদের কি মনে হয়। আদিত কি সম্পূর্ণ জেলাপি একাই খেতে পেরে ছিল কিনা, সেটা কমেন্ট করে জানাবেন।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবারো অন্য কোনদিন ভিন্ন কোনো কন্টেট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইল। আল্লাহ হাফেজ।🙏🤲🙏

banner-abbVD.png

আমার পরিচয়

IMG_20220525_014109.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 

ছোট বেলায় মেলায় বন্ধুদের সাথে আমিও ঘুরেছি, আপনার পোস্ট পরে সেই পুরনো দিনের কথা মনে পরে গেলো। তবে নাগর দোলায় আমি তেমন চড়তে পারতাম না, মাথা ঘোরাতে। তবে আপনার বন্ধুর জিলাপি খাওয়া সবেমাত্র জমে উঠেছে এই সময় পর্ব শেষ 😃
যাক তবে আমার মনে হয় সে এক কেজি জিলাপি একাই খেয়ে ফেলবে কারন তার আত্মবিশ্বাস প্রচুর।
দেখা যাক সামনে কি হয়।

 2 years ago 

ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে কয়েকজন বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে মেলায় গেলে মনে হয় বেশ আনন্দই হয় ।আপনাদের কয়েক বন্ধুদের একসঙ্গে মেলায় যাওয়ার গল্পটি পড়ে আমার কাছে তাই মনে হয়েছে । কয়েকজন মিলে নাগরদোলায় খুবই চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন ।আপনার ওই বন্ধুটির মত আমারও নাগরদোলায় চড়তে ভীষণ ভয় লাগে । তবে আপনার বন্ধু টি সত্যিই এক কেজি জিলাপি খেয়েছিল কিনা এ প্রশ্ন টি মাথার মধ্যে ঘুরছে । তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় পর্ব চাই ।ধন্যবাদ ।

 2 years ago 
বন্ধুদের সাথে মেলায় ঘুরার অনেক স্মৃতি আছে আমারো। আপনার বন্ধুদের সাথে গ্রাম্য মেলায় জিলাপি খাওয়ার স্মৃতিময় গল্প পড়ে অনেক ভাল লেগেছে। আপনার বন্ধু সোহান ত নাগরদোলা চড়তে অনেক ভয় পায়। আপনার আরেক বন্ধু আদিত ত জিলাপি খাওয়া নিয়ে দুঃসাহস দেখিয়েছে। ১ কেজি জিলাপি একা একজন খাওয়া অসম্ভব ব্যপার। পরবর্তী পর্বে বুঝতে পারব আসলেই আদিত ভাই খেতে পেরেছিল কিনা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
 2 years ago 

বন্ধুরা একসাথে মেলাতে গেলে অনেক মজা হয়। ছোটকালে আমিও বড় ভাই ও আমার বোনের সাথে মেলা যেতে খুব পছন্দ করতাম। আপনার পোস্ট দেখে মেলার কথা মনে পড়ে গেল। আর আপনার এক বন্ধু এক কেজি জিলাপি খেতে পারবে বলে বাজি ধরলেন।আদিত সাহেব পারবে কিনা জিলাপি খেতে তার অপেক্ষায় আছি পরের পর্বের জন্য। অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনতা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এবং অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

আসলে ভাই বন্ধুদের সাথে নিয়ে মেলায় যাওয়ার মুহূর্তের সত্যি অসাধারণ এবং এ জিলাপি খাওয়ার বাজিটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আমার মনে হচ্ছে আদিতি জিলাপি খেতে পারবে, দেখা যাক ২য় পর্বে কি হয়।

 2 years ago 

এই জিলাপি খাওয়া নিয়ে বন্ধুদের সাথে অনেক ধরনের কাহিনী রয়েছে ভাই। তাছাড়া আপনাদের বন্ধুদের জেলাপি বাজি গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। তবে দ্বিতীয় পর্ব ের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দ্বিতীয় পর্বে জানব কে বাজিটা জিতল।
শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65