আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা- ২২ “শেয়ার করো তোমার জীবনে প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি”
আমার বাংলা ব্লগ কর্তৃক প্রতিবারের ন্যায় এবারেও খুবই সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আমরা দেখতে দেখতে ২২ তম প্রতিযোগিতায় এসে পৌছালাম।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির ২২ তম প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু “শেয়ার করো তোমার জীবনে প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি”।যিনি এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করেছেন তিনি হলেন আমাদের সকলের প্রিয়, ভালোবাসার মানুষ, প্রাণপ্রিয় শুভ ভাইয়া।জীবনের প্রথম ফোন কেনার অনুভূতি নিয়ে এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য শুভ ভাইয়াকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।তার সাথে সাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের সকলের প্রিয় দাদা এবং এ কমিউনিটির প্রত্যেক এডমিন এবং মডারেটরকে।আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আজ আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি।আমার জীবনের প্রথম মোবাইল কেনার অনুভূতিগুলো এখন আপনাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। আশা করি আপনাদের সবার অনেক ভাল লাগবে।
Source
জীবনের প্রথম পাওয়াটা যে কত আনন্দের তা শুধু যে পায় সেই জানে।আমি শুধু করতে চাই আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকে।আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি তখন আমার কাছের কয়েকটি বন্ধুর স্মার্টফোন ছিল কিন্তু আমার ছিলনা।এমনকি তখন আমার কাছে কোন ধরনেরই ফোন ছিল না।আমার বন্ধুরা যখন আমার সামনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করত তখন আমার মনে মনে একটু খারাপই লাগত। কিন্তু আমি তা প্রকাশ করতাম না। আমি পড়াশোনার প্রতি বেশি মনোযোগ দিতাম।এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিলাম যে আমার বন্ধুরা তার বাপের টাকা দিয়ে ফুটানি দেখাচ্ছে কিন্তু আমি আমার নিজের গোছানো টাকা দিয়ে নিজে একটা ভালো ফোন কিনবো। তো অনেক অভিমান এবং কষ্ট নিয়ে আমি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে টাকা গোছানো শুরু করলাম।আমার বন্ধুদের ফোন দেখে যে আমার খারাপ লাগত এটি আমি আব্বু এবং আম্মুকে বুঝতে দিতাম না।ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় মার্চ মাসের দিক আমি একটি মাটির ব্যাংক কিনেছিলাম।মাটির ব্যাংকে প্রথম আমি ৫০০ টাকার একটি নোট রেখেছিলাম।৫০০ টাকার নোট রাখা দিয়ে শুরু হয় আমার টাকা জমানো।তখন তো আব্বু আম্মু আমাকে বেশি টাকা দিত না। যে টাকা দিত ঐ গুলোই গোছানোর চেষ্টা করতাম।এভাবে আমি দশম শ্রেণী পর্যন্ত টাকা গুছিয়েছিলাম।চারবছর টাকা জমানোর পর আমার মনে হলো এখন ভালো একটি স্মার্টফোন কেনার টাকা আমার কাছে আছে। তাই আমি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাটির ব্যাংকটি ভেঙে ফেললাম।মাটির ব্যাংকে যখন আমি ভাঙলাম তখন আমার নিজের মধ্যে অন্যরকম একটি এক্সাইটমেন্ট কাজ করতে ছিল।দীর্ঘ চার বছর আমি মাটির ব্যাংকের মোট ২২ হাজার ৫৩০ টাকা গুছিয়েছিলাম।তখন আব্বু আম্মুকে বললাম আমি এই সবগুলো টাকা দিয়েই ভালো একটি স্মার্ট ফোন কিনবো।যেহেতু টাকাগুলো আমি নিজে গুছিয়ে সেহেতু আব্বু আম্মু আমাকে এই সম্পূর্ণ টাকা দিয়েই ভালো একটি স্মার্টফোন কেনার অনুমতি দিল।তারপর আমি এই বাজেটের মধ্যে ভালো একটি স্মার্টফোন খোঁজাখুঁজি শুরু করলাম।অনেক ভেবেচিন্তে এবং বড় ভাইদের থেকে পরামর্শ নেওয়ার পর আমি Samsung ফোন কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম।এ বাজেটে ২০১৯ সালের সবচেয়ে লেটেস্ট মডেল ছিল Samsung M30 ফোন।অবশেষে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে আমি, আমার আব্বু এবং আমার ছোট মামা সিরাজগঞ্জের স্যামসাং শোরুমে গিয়ে ফোনটি কিনলাম।আমার মনের মধ্যে তখন অন্যরকম একটা আনন্দ এবং অনুভূতি কাজ করতেছিল, কারণ আমি এই ছোট বয়সে আমার তিলে তিলে গোছানোর টাকা দিয়ে একটি স্মার্টফোন কিনেছি।নিজের টাকা দিয়ে ফোন কিনেছি এরকম একটি ভাব আমার ভিতর জাগ্রত হল।এভাবে টাকা গুছিয়ে নিজের টাকা দিয়ে ফোন কেনার বলে আব্বু আম্মু দুজনই আমার প্রতি খুবই খুশি হলো।আপু আম্মু যে খুশি হয়েছিল এটিই ছিল আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।
এই ছিল আমার জীবনের প্রথম ফোন হাতে পাওয়ার ইতিহাস এবং অপূর্ব আবেগময় কিছু অনুভূতি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি আজ এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন না করলে জীবনের প্রথম ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতিটা এভাবে প্রকাশ করতে পারতাম না। জীবনের প্রথম ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতি আমাদেরকে প্রকাশ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে, বিশেষ করে আমাদের শুভ ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমার পরিচয়
ধন্যবাদ সবাইকে🌷🌹
আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
Twitter Link
আপনার জীবনের প্রথম মোবাইল চালানো অনুভূতি পড়লাম বেশ ভালো লেগেছে। বেশ ভালো লেগেছে অল্প অল্প করে টাকা জমানোর টাকা দিয়ে আপনি আপনার বাবার অনুমতি নিয়ে মোবাইল নিয়েছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা এবং ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
প্রথমেই শুভেচ্ছা জানাই আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। দারুন ছিল আপনার প্রথম মোবাইল কেনার অনুভূতি। আমিও আপনার মত টাকা জমিয়ে মোবাইল কেনার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু বরাবর ব্যর্থ হয়েছি 😁
আপনার প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতি পড়লাম আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে আপনি খুবই শান্ত শিষ্ট একটি ছেলের মত অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে আপনার বাবার অনুমতির নিয়ে আপনার মোবাইলটি কিনেছিলেন। আমিও অনেকবার টাকা জমিয়ে ছিলাম কিনা হয়নি। আপনি তো কিনতে পেরেছেন এটাই আপনার সার্থকতা।
প্রথমে শুভেচ্ছা জানায় আপনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার প্রথম ফোন কেনার অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে আপনি অনেক দিন অপেক্ষা করে এবং টাকা গুছিয়ে ফোন কিনেছেন এটি জেনে খুবই ভালো লাগলো।