স্মৃতিচারণঃ বর্ষাকালে বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় গল্প// শেষ-পর্ব-
তারপরে আমরা তিন বন্ধু মিলে যখন ভেলা নিয়ে সকালবেলা ভ্রমণ করতে আসলাম, সেই মুহূর্তটা অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি এবং আমাদের গ্রামের রাস্তার পাশে একটি বট গাছ ছিল, আর ওই বট গাছের পাশেই ছিল একটি ব্রিজ আর আমরা ভেলা বানিয়ে এই ব্রিজের কাছে আসলাম। ভিলা বট গাছের সাথে বেঁধে রেখে আমরা ব্রিজের উপরে বসে থাকলাম। ব্রিজের উপর থেকে বর্ষার এই সৌন্দর্যময় দৃশ্যগুলো উপভোগ করতেছিলাম। অনেকেই মাছ ধরার জন্য নানারকম ব্যবস্থা করছে, তবে আমরা তিন বন্ধু দেখতে পেলাম ব্রিজ সাথেই মাছ ধরার দুটিটি খাঁচার মতো জমা হয়ে আছে। তাই আমরা বন্ধুরা এটি তোলার জন্য চেষ্টা করতে ছিলাম।
তারপরে আমরা তিন বন্ধু মিলে যখন সেই মাছ ধরার খাঁচাটির পানি থেকে তুললাম, আসলে এটি ব্রিজের পাশেই যেন আটকে গিয়েছিল, আর এগুলো বাঁশ দিয়ে তৈরি করা। এর মুখ বন্ধ শুধু মাছ ঢোকার জন্য দুইপাশে দুটি ছিদ্র এবং পরবর্তীতে পাশে একটি ছিদ্র থাকে। এটাকে দিয়াল বলা হয় আমাদের এলাকায়। এই দিয়াল যখন এখানে জমা হয়ে ছিলো আমরা তিন বন্ধু মিলে সেগুলো আস্তে আস্তে তুললাম। তুলেই দেখতে পেলাম এই দেয়ালে অনেক মাছ ধরা পড়েছে, আসলে ছোট ছোট মাছ ধরা পড়েছে টেংরা থেকে শুরু করে জিয়াল এবং একটি বাইম মাছ ধরা পরেছে। এটি দেখতে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত হলাম, ব্রিজের উপরে উঠে নিয়ে আসলাম। আর বন্ধু রফিককে বললাম আর একটি দিয়াল যেন ধরে থাকে ওটা যেন স্রোতে ভাসিয়ে না যায়।
তারপরে রফিক আরেকটি দেয়াল ধরে থাকলো। আমরা এই দিয়ালটি ব্রিজের উপর রেখে, আবারো আরেকটি তোলার জন্য গেলাম মসেটি তুলতে গিয়ে আমি পানিতে পড়ে গিয়েছিলাম। তারপরে কষ্ট করে রফিক আমাকে উঠালো এবং ওই দেয়ালটিকে উঠালাম, ওই দিয়ালটি উঠিয়ে দেখতে পেলাম এই দিয়ালে তিনটি বড় বড় বাইম মাছ ধরা পড়েছে। সত্যিই দিয়ালটি অনেক ভারী ছিল। আমরা কষ্ট করে এই দিয়ালটি ব্রিজ এর উপরে উঠিয়ে নিয়ে আসলাম। আর এই দেয়ালে এতগুলো মাছ দেখতে পেয়ে যেন আনন্দে আমরা আত্মহারা হয়ে গেলাম। আসলে এভাবে দেয়াল ও মাছ ধরা পড়বে আমাদের সাথে সেটা ভাবতেই পারিনি। তাই দিয়াল গুলোসহ আমরা কিভাবে নিয়ে যাব এটাই যেন পরিকল্পনা করতেছিলাম।
তারপরে এই দিয়াল থেকে কিভাবে মাছ বের করে নিয়ে যাব সেটা যেন ভাবতেছিলাম এবং রফিক বলল এই দেয়াল থেকে যদি আমরা মাছ বের করি তাহলে মাছ আমরা কিভাবে নিয়ে যাব। আমাদের তো মাছ রাখার কোন পাত্র নেই। তাই আমি বললাম যে এই দেয়ালসহ আমরা বাসায় নিয়ে যাই। দিয়াল গুলো আমাদের ভেলায় তুলে বাসা নিয়ে যাবো।আর সুজন বলল যে দিয়ারসহ নিয়ে গেলে যতাহলে সবাই বলবে আমরা চুরি করে এনেছি। তখন আমি বললাম যে সকল ঘটনা তাদেরকে বলতে হবে, কারণ আমরা কোন অন্যায় করিনি। এই দিয়ালগুলো আমরা পেয়েছি। এই ঘটনা সবাইকে বললে আশা করছি বিশ্বাস করবে, কারণ বর্ষার স্রোতে অনেক কিছুই যেন ভেসে আসতেছে। আর এই দিয়াল তো আসার কথা। তাই কেউ কিছু বলবে না। তখন রফিক বললো ঠিক আছে তাহলে তাই করা হোক।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
আপনার বর্ষাকালের বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। বর্ষাকালে আমরাও কলা গাছ দিয়ে ভেলা তৈরি করতাম।যখন প্রচুর বৃষ্টি হতো তখন কলা গাছ দিয়ে ভেলা তৈরি করে ভ্রমণ করতাম।আপনার এই পোস্ট পড়ে ছোট বেলার কথা গুলো মনে পরলো।যাইহোক আপনারা মাছ ধরে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করছেন শুনে খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার নিজের অনুভূতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
বর্ষাকালে ভেলা বানিয়ে ভ্রমণের মুহূর্তগুলো সত্যি অনেক আনন্দের। আপনারা বন্ধুরা মিলে দিয়াল পেয়েছিলেন তার ভিতর অনেকগুলো মাছ পেয়েছেন। অনেক আনন্দের সাথে সবাই মিলে মাছ খেয়েছেন। সত্যি আমরাও বর্ষাকালে স্রোতে অনেক কিছুই পেতাম। আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।