শাহিন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

জীবনে চলার পথে অনেক ঘটনা আমাদের জীবনে ঘটে যায়। সেই ঘটনাগুলো আমাদের স্মৃতির পাতায় জমা হয়ে থাকে। কিছু কিছু ঘটনা রয়েছে যে ঘটনাগুলো আমরা ভুলতে চাইলেও কখনো ভুলতে পারিনা। এই ঘটনাগুলো যেন সবসময় মনে পড়ে। কোন একটা উদ্দেশ্য বা কোন একটা নতুন পরিস্থিতির মধ্যে পড়লেই সেই দিনের কথা মনে পড়ে যায়। আজকে তাই শাহিন ভাইয়ের দোকানের পুড়ে যাওয়ার সেই গল্পটি আমার মনে পড়ছে। কারণ আজকে আমাদের গ্রামে আরো একটি দোকানে আগুন লেগেছে এবং সেই দোকানে আগুন লাগানো হয়েছে। আর এই ঘটনাটি শুনেই যেন শাহীন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার স্মৃতিময় সেই গল্পটি মনে পড়ে গেল। তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে শাহিন ভাইয়ের দোকানে কিভাবে আগুন লেগেছিল, এই গল্পটি শেয়ার করতে আসলাম। আর এই গল্পটির প্রথম পর্ব পড়ে আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। তো স্মৃতির পাতা থেকে সেই গল্পটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করা শুরু করছি।

firefighters-115800_1280.jpg

Source

সময়টা ছিল ২০২০ সাল আর সেই সময় আমি গ্রামেই ছিলাম। আমি ঘুমিয়ে ছিলাম এবং ঘুমের মধ্যে চারদিকে অনেক আওয়াজ শুনতে পেলাম এবং ঘুম ভেঙে উঠিয়ে দেখি বাবা বাড়িতে নেই। মা বলছে যে শাহিনের দোকানে আগুন লেগেছে। সবাই সেই আগুন নিভানোর জন্য ওখানে চলে গেছে। আসলে ঘুম থেকে উঠে কি করবো বুঝতেই পারছিলাম না। তার উপরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মুখ ধুয়ে শাহীন ভাইয়ের দোকানের পাশে আসলাম। শাহিন ভাইয়ের দোকানের পাশে এসে দেখতে পেলাম হাজার হাজার মানুষ জমা হয়েছে। আসলে সেখানে কিভাবে আগুন লেগেছে এটা নিয়েই সকলে ভাবছে। আর অনেকেই রয়েছে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে আগুন নেভানোর জন্য।


শাহীন ভাইয়ের দোকানের পাশে একটি পুকুর ছিল। এই পুকুর থেকে সকলেই পানি নিয়ে এসে দোকানের আগুন নেভানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছিল। আসলে যতক্ষণ আগুন নেভানোর চেষ্টা করতেছিল ততক্ষণে শাহীন ভাইয়ের দোকানের মালামাল সব পুড়ে গেছে। আসলে শাহীন ভাইয়ের দোকানটি অনেক বড়। এই দোকানটি ছিল অনেক ধরনের মাল কারণ এই দোকানটিতে সকল কিছুই ছিল কাপড় এবং ডিজেল তেল ছিলো। যার কারণে এই দোকানে আগুনের পরিমান আরো বেশি লেগে গেছে। এই তেল থাকার কারণে। আর দোকানে অনেক মালামাল ছিল। আসলে গ্রামের ভিতরে শাহীন ভাইয়ের দোকানে ছিল সবচাইতে বড়। যার কারণে এই দোকানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শাহীন ভাইকে দেখতে পেলাম সে কিছুই বলছে না, সে যেন একদম মূর্তির মত হয়ে গেছে।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

আসলে শাহীন ভাইয়ের কি বলবে তার জীবনের সকল পরিশ্রম এবং স্বপ্ন ছিল এই দোকান নিয়ে। দোকানটা খুবই ভালো চলত, কারণ দোকানে অনেক মালামাল থাকতো। সকলেই শাহীন ভাইয়ের দোকান থেকে মালামাল কিনতো এবং তার ব্যবহার ছিল অনেক ভালো। আর শাহীন ভাইয়ের এই দোকানে আরেকটি ছিল,সমিতি সে সমিতির টাকা এই দোকানে রেখে দিত এবং সমিতির সকল খাতা কাগজ এই দোকানে রয়েছে। তাই সবগুলো পুড়ে গেছে এখন সবাইকে কিভাবে ম্যানেজ করবে। আর এই সমিতিতে আমাদেরও একটা অংশ ছিল। যার কারণে আমিও কিছু বলতে পারছিলাম না। বাবা দেখি দোকানের আগুন নেভানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আসলে আগুন নিভিয়ে আর কি হবে সকল কাগজপত্র এবং যেগুলো ইম্পরট্যান্ট ছিল সব পুড়ে গেছে। আর শাহীন ভাইয়ের দোকানে অনেক টাকা ছিল, আসলে সকলেই যেন শাহীন ভাইকে তখন শান্তনা দিতে লাগলো।


সান্তনা দিতেছিল তখন দেখতে পেলাম শাহিন ভাই মাটিতে শুয়ে পরলো। আসলে সে অজ্ঞান হয়ে গেছে এবং যে কিছুই বলতে পারছে না। সকলেই তখন ভয় আমরা ধরাধরি করে শাহীন ভাইকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেলাম এবং মাথায় পানি ঢালতে লাগলাম। আর সবাই বলতো যে জীবন তো বেঁচে গেছে। যদি তুমি দোকানে থাকতে তাহলে আজকে তুমিও এই আগুনে পুড়িয়ে মারা যেতে। আসলে শাহিন ভাই বেশিরভাগ সময় তার দোকানে থাকতো। আজকে হঠাৎ করে তাদের বাড়িতে একটা প্রোগ্রাম ছিল। যার কারণে আজকে সে দোকানে থাকেনি। আর আজকে দোকানে থাকলে সে হয়তো এই আগুনে পুড়ে মারা যেত, এটা ভেবে আল্লাহ তাআলার কাছে শুকরিয়া আদায় করল শাহিন ভাইয়ের মা।


সকল সম্পদের চাইতেও উত্তম সম্পদ হলো মায়ের কাছে তার সন্তান। আসলে শাহীন ভাইয়ের মা সেদিন তারও প্রমাণ দিয়েছে। হাজার হাজার লাখ লাখ টাকা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে, তারপরেও শাহিন ভাই বেঁচে গেছে এটা জানতে পেরে সে যেন আল্লাহ তায়ালার কাছে চিৎকার করে শুকরিয়া আদায় করতে ছিলো। আসলে মায়ের ভালোবাসা অন্য কারো সাথেই পরে না। সেদিনই সকলেই প্রমাণ পেয়েছে। আর প্রত্যেকটা মা তার সন্তানদেরকে জীবনের চাইতে বেশি ভালোবাসে এবং আগলে রাখে চায় জীবন দিয়ে। তাই শাহিন ভাইকে আমরা বুঝাচ্ছিলাম এবং তার মা বার বার বুঝাছিলো, আর কিভাবে আগুন লেগেছে এটা যেন সকলেই খোঁজ করতে ছিল। তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্ত, আগামী পর্বে শেয়ার করবে গল্পের বাকি অংশ ইনশাআল্লাহ।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 6 months ago 

আসলে এ ধরনের ঘটনা গুলো পড়লে বেশ খারাপ লাগে এবং যাদের ক্ষতি হয় অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যায়। কারণ কথায় আছে চোরে নিলে কতটুকুই আর নিতে পারে কিন্তু আগুনে পোড়া গেলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। যাইহোক আপনার শাহিন ভাই দোকানে থাকলে তারও অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। যাইহোক ভাগ্য ভালো তিনি দোকানে ছিলেন না। পরবর্তীতে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 6 months ago 

একটা দোকানে আগুন লাগা মানে একটা সংসারে আগুন লাগা। কারণ একটা ফ্যামিলি সেই দোকানের ইনকাম থেকেই চলতে থাকে। যার ক্ষতি হয় সেই বুঝে কতটা হারানোর বেদনা। তবে দোয়া করি এই দুঃখ দশা কাটিয়ে উঠুক এবং আল্লাহ আবারও তাকে সুন্দর ইনকামের সুব্যবস্থা করে দিক পুনরায় যেন আগের মত সুন্দর হাসিখুশি হবে চলার সুযোগ পেয়ে যায়। আর দোকানের পাশে পুকুর থাকলে একটা সুবিধা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার।

 6 months ago 

শাহিন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগানোর ঘটনাটি জানতে পেরে খুবই খারাপ লাগছে। আসলে একটি মানুষের জীবিকা নির্বাহের সেই জায়গাটি যদি আগুন লেগে যায় সকল কিছু পুড়ে যায় তাহলে তার আর কিছু থাকে না। তবে শাহীন ভাইয়ের মায়ের আল্লাহতালা অনেক ধৈর্য দিয়েছে। সে তার সন্তানের কথা ভাবছে।আসলে মায়েরা সবসময় সন্তানের কথা চিন্তা করে।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

আগুন ভয়ানক একটি জিনিস৷ এর ফলে সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যায়। যেখানে একবার আগুন লেগে যায় তা নেভানো একেবারেই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়৷ আপনার শাহিন ভাইয়ের দোকানে আগুন লেগে গিয়েছিল এবং তার দোকানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ তবে তিনি দোকানে না থাকার কারণে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন৷ তিনি যদি সে দোকানে অবস্থান করতেন হয়তো তাকেও দোকানের সাথে সাথে পুড়ে যেতে হতো৷ অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম৷

 6 months ago 

একটা বাড়িতে কিংবা একটা দোকানে আগুন লাগা মানে পুরো ওই পরিবারে আগুন লেগে যাওয়া। এখন আমি চিন্তা করছি আপনার শাহিন ভাই এত বড় বিপদের পর সোজা হয়ে দাঁড়াবে কি করে! শুধুমাত্র যে তার টাকা-পয়সা কিংবা জিনিস পুড়ে নষ্ট হয়েছে তা তো নয়, তার সাথে সাথে অন্যান্য মানুষের সমিতির হিসাব কিতাবের খাতাও পুড়ে গেছে। এদিক থেকে বিবেচনা করলে কিন্তু অনেক চাপের ব্যাপার হয়ে যাবে সবকিছু ম্যানেজ করা। যাইহোক, মানুষটা শুধু বেঁচে আছে এইটুকুই আর কি।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 57983.67
ETH 2465.71
USDT 1.00
SBD 2.41