স্মৃতিচারণঃবন্ধুদের সাথে লিচু চুরি করার গল্প //পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

স্কুল জীবনে অনেক স্মৃতিময় গল্প রয়েছে আমাদের জীবনে। বিশেষ করে স্কুল জীবনে আমি অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি কারণ আমরা ১০ জন বন্ধু ছিলাম একটা গ্রুপে। আর এই গ্রুপের সকল বন্ধুরা মিলে থাকতাম। যেন স্কুলের মধ্যে আমরাই অন্যরকম একটা দাপটে ছিলাম। যার কারণ স্কুলের পড়াশোনার থেকে শুরু করে সকল কাজে আমরা এগিয়ে ছিলাম। আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি আর নাইনে আমার বন্ধুদের সাথে একটা অন্যরকম সম্পর্ক ছিল। যার কারণে আমরা এই গ্রুপে সবাই আগে আগে থাকতাম। কেউ আমাদের কিছু বলত না। এমনকি স্যাররা বলতো না। কারণ আমরা পড়াশোনার বিষয় ছিলাম সিরিয়াস। তাই স্কুলে মুহূর্তগুলো আমরা অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি।আমরা বন্ধুরা এতটাই মিলেমিশে থাকতাম। যার কারণে আমাদের দেখে বড় ভাইরাও কিছু বলতো না। কারণ আমরা সবাই এক জোট হয়ে থাকতাম। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে আসলাম। স্কুল জীবনে বন্ধুদের সাথে নিয়ে লিচু চুরি করার গল্প। এই গল্পটি আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।


hands-2847508_1280.jpg

Source

স্কুল জীবনে প্রতিটা মুহূর্ত আমার অনেক আনন্দের সাথে কেটেছে। কারণ সকল বন্ধুরা এত মিলেমিশে ইনজয় করেছি যে বিষয়গুলো সত্যি স্মৃতির পাতা জমা হয়ে রয়েছে। একদিন স্কুলে এক ক্লাস পরে ছুটি দেয়,কোন এক প্রোগ্রামের কারণে। যার কারণে আমরা বন্ধুরা মিলে স্কুল মাঠে খেলাধুলা শুরু করে দিলাম। আমরা ক্রিকেট খেলতেছিলাম ১০-১২ জন বন্ধু ছিলাম। আর সকলেই আমাদের এই ক্লাস নাইনয়ের ছিল। যার কারণে খেলাধুলার মুহূর্ত অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি এবং খেলাধুলার মাঝে যখন বিরোধী ছিল তখন আমার বন্ধু তিনজন গিয়ে পাশের একটি লিচুর বাগান থেকে কিছু নিয়ে আসে। আর এই লিচু নিয়ে আসা দেখে ওই বাড়ির একজন মানুষ। সে লিচু মালিকে বলে দেয়। আর সেই মালিক তো রেগে যায়।


আর মালিক তখন রেগে গিয়ে আমাদের মাঠে চলে আসে এবং মাঠে এসে চিল্লাপাল্লা শুরু করে দেয়। এসে ভদ্র ভাবে বলতে পারতো কারণ আমরা তিন বন্ধু যে লিচু নিয়ে এসেছে ওরা বেশি লুচি নিয়ে আসিনি। আমরা ১২ জন ছিলাম যার কারণে ও বারোটায় লিচু পেরে নিয়ে এসেছে। আর মালিক এসে তো আমাদের সবাইকে ডাক দিল। ডাক দিয়ে অনেক চিল্লাপাল্লা শুরু করে দিল এবং অনেক খারাপ খারাপ কথা বলল। আর আমাদের খেলা নষ্ট করে দিল। বললো আর যদি কোনদিন আশেপাশে দেখছি তোদের খবর আছে। তার কাছ থেকে লিচু পারা হয়েছিল তাই আমরা চুপচাপ সকল সহ্য করেছি। কিন্তু এত বাজে ভাবে কথাগুলো আমাদের মনের ভিতর আঘাত লেগেছে। আমরা তাকে বারবার বলতেছিলাম আমাদের ভুল হয়েছে, আপনার ছেলে হিসাবে মাফ করে দেন।কিন্তুু সে বলতেই ছিলো।আর আমাদের খেলা বন্ধ করে দেয়।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

তখন আমরা কিছু না বলে খেলা বন্ধ করে বাইরে চলে আসি এবং আমরা স্কুলের পাশে বট গাছের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম এবং আমার বন্ধু সুজন বলতেছিল যেভাবেই হোক এর প্রতিশোধ নিতে হবে। এভাবেই অপমান সহ্য করার যায় না। আমরা এত অপমান সহ্য করতাম না।শুধু তোর জন্যই চুপ করে থাকলাম। আমরা কি করেছি হয়তো না বলে লিচু পেরেছি। তারপর তো আমরা সবকিছু বললাম মাপও চায়লাম।আর আমাদের এভাবে বকাঝকা করল। আবার খেলা অফ করে দিয়ে চলে আসতে হলো। আজকে আমাদের একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। আর ওর গাছ থেকে লিছু কিভাবে খেতে হয়। সেটার ব্যবস্থা করতে হবে। ওই গ্রামের আমাদের দুজন বন্ধু ছিল। ওরা বলল কোন সমস্যা নেই। আজকে রাতেই ওর লিচু সব শেষ করবো আমরা।


১০-১২ জন বন্ধু মিলে একসাথে চুরি করা অনেক রিক্স হয়ে যায়।তাই আমরা সকলে একসাথে সবাই না এসে ওই গ্রামের দুই বন্ধু আর আমি এবং আমরা আরো তিন বন্ধু, মোট পাঁচ জন মিলে লিচু চুরি করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তাই আমরা ওই গ্রামের বন্ধুর বাসায় রাতে থেকেছি। এবং রাতে থেকে এই পরিকল্পনা করেছি। কিভাবে লিচু চুরি করা যায়।অন্য সব বন্ধুদের বললাম আমরা লিচু চুরি করে একটি ব্যাগের ভিতর নিয়ে আসব। পরের দিন বিকেলবেলা আমরা এই লিচুগুলো নিয়ে যমুনা নদীর চরে গিয়ে এই লিচুগুলো বসে সবাই মিলে খাব। তোরা কোন চিন্তা করিস না। ওরা বলল ঠিক আছে তাহলে তোরা আজকে অপারেশনটা করে ফেল। অনেক সাবধানে করিস আমরা বললাম ঠিক আছে বন্ধু।


আমরা যে বন্ধুর বাড়িতে ছিলাম, সেই বন্ধুর বাড়িতে তার বাবা-মা ছিল না।তার বাবা-মা তার মামা বাড়িতে গিয়েছিল। যার কারণে অনেক ভালোভাবে আমরা এই রাতের অপারেশনটা করতে পেরেছি। মানে চুরির অপারেশন। রাত ১:০০ টার দিকে আমরা সেই লিচু বাগানে আসলাম। আর লিচু গাছগুলো অনেক নিচে ছিল হাত দিয়েই পারা যায়। যার কারণে ইচ্ছামত লিচু পেরে ব্যাগ ও বস্তার ভিতরে ভরতে লাগলাম। এভাবে আমরা লিচু পেরে নিয়ে বন্ধুর বাড়িতে আসলাম। তো বন্ধুরা বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে দ্বিতীয় পর্বের মাধ্যমে শেয়ার করব।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 6 months ago 

আসলে স্কুল জীবনের অনেক ঘটনা জড়িয়ে থাকে কম বেশি সবার জিবনে।সেরকম আপনার জিবনেও লিচু চুরি করে খওয়ার ঘটনা আছে।আপনাদের কে ভালোই অপমানিত হতে হয়েছিলো।যেহেতু আপনারা ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছিলেন উনার উচিত ছিল ক্ষমা করে দেয়া খারাপ খারাপ কথা না বলে আপনাদেরকে উস্কে দেয়া উচিত হয়নি। পরবর্তীতে আবার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য লিচু চুরি করতে সিদ্ধান্ত নিলেন সিদ্ধান্তটা যদিও বা ভুল তবে ছেলেমানুষী যাইহোক পরে কি হলো জানতে পারলাম না। পরবর্তী পোস্টে হয়তো বা জানতে পারবো ধন্যবাদ সুন্দর ছেলে বেলার লিচু চুরি করে খাওয়ার স্মৃতিচারণ গুলো শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে আপনার শৈশবের একটি গল্প লিখে শেয়ার করেছেন। আপনারা তিনজন বন্ধু মিলে লিচু চুরি করতে গিয়েছিলেন জানতে পারলাম কিন্তু একজন দেখে ফেলেছি। কিন্তু সে লিচুর মালিকে বলে দিয়েছিল পরে সেই লোক অনেক রেগে গিয়েছিল। আসলে ভাই এরকম ঘটনা আমার সাথে অনেক ঘটেছে। ঠিক বলেছেন ভাই স্কুল জীবনের মুহূর্ত গুলো সব থেকে বেশি উপভোগ করেছি আমরা সবাই। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

স্কুল জীবনের ঘটনাগুলো অনেক বেশি মজার হয় পরবর্তী সময়ে এই কথাগুলোই বেশি মনে পড়ে। লিচু চুরি ব্যাপারটা বেশ ভালোই লেগেছে ছোটবেলায় আমরাও অনেক ফাজলামো করেছি। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58679.35
ETH 3155.04
USDT 1.00
SBD 2.44