ট্রেন জার্নি।
আজ - ৯ই অগ্রহায়ণ |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmUU4tb3ks4EpKp5aJAs8dPkhDXTNfdU1RhWjSxfLZADs9/IMG_20221124_064256.jpg)
যাইহোক আজ আমি প্রথমবারের মতো আপনাদের সাথে একটি ট্রাভেল ব্লগ শেয়ার করতে চলে এলাম। আজ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার সময় পুরো জার্নিটা কেমন কেটেছে সেটিই শেয়ার করব আপনাদের সাথে।
যাইহোক আগের দিন রাতে লাগেজ গুছিয়ে রাখা হয়েছিল। কেননা খুব ভোরে বেরিয়ে পড়তে হবে। আমাদের ট্রেন ছাড়ার সময় হচ্ছে সকাল সাতটা। তাই সকালে উঠে তাড়াহুড়া করে আসলে এতকিছু গুছিয়ে নাওয়া সম্ভব নয়। তাই রাতেই সবকিছু গুছিয়ে নেয়া হয়েছে। সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে উঠি। চোখে প্রচন্ড ঘুম বিছানা ছেড়ে একদমই উঠতে মন চাইছে না। ইচ্ছে করছিলো আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিতে। তবে সেটির আর উপায় নেই। ইতিমধ্যেই সকলেই ডাকাডাকি শুরু করে দিয়েছে তাড়াতাড়ি উঠার জন্য। তাই কিছুক্ষণ বিছানায় গড়িয়ে দ্রুত উঠে পড়ি। কেননা হাতে বেশি সময় নেই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিতে হবে। এত সকাল লাস্ট কখন যে ঘুম থেকে উঠেছি সত্যিই আমার মনে পড়ছে না। এই সময়টা সাধারণত ঘুমের ঘোরেই কাটিয়ে দিই আমি।
যেহেতু আত এত সকালে ঘুম থেকে উঠেছি তাই একদমই খেতে ইচ্ছা করছিল না। তাই কোনো নাস্তা না করেই শুধুমাত্র এক কাপ রঙ চা খেয়ে বেরিয়ে পড়ি সকাল ছয়টা বাজার ১৫ মিনিট আগে। আমাদের বাসা থেকে স্টেশন মোটামুটি অনেকটাই দূরে। সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ মিনিটের মত সময় লাগে যেতে।
বাসা থেকে বেরিয়ে বেশকিছুক্ষণ রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে কেননা একদমই গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে কিছুক্ষণ হাঁটার পর মেইন রোড থেকে আমরা গাড়ি পেয়ে যাই । আজ রোড গুলো একদম ফাঁকা ফাঁকা হয়ে আছে। রাস্তাঘাটের এমন স্বচ্ছ পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে এই যেন অন্য এক শহরে চলে এসেছি। চেনা জানা সে যানজট ও কোলাহল যুক্ত সেই শহর টা যেন এক নিস্থব্দ , শান্ত, নিরিবিলি শহরে পরিণত হয়েছে। সত্যি সকালটা অসম্ভব সুন্দর যা আমি আরো একবার উপলব্ধি করতে পেরেছি।
গাড়িগুলো ছুটছে যেন এক রকেটের গতিতে। রাস্তাগুলো একদম পরিষ্কার, গাড়ি-ঘোড়া খুব একটা বেশি নেই। মাঝেমধ্যে দুই একটা গাড়ি চলছে রাস্তার মধ্যে। তাই ৩০থেকে ৩৫ মিনিটে রাস্তাটা আমরা ২০ মিনিটে পার করে ফেলেছি।
যাই হোক, আমরা সাড়ে ছয়টার মধ্যে স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছি। এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে সিটগুলো খুঁজে নিয়েছি। আমাদের বগিটা অনেকটাই সামনের দিকে ছিল যার কারণে খুব বেশি হাঁটতে হয়নি । যাইহোক সিটগুলো খুঁজে নেওয়ার পর পাশের ফেরিওয়ালা থেকে কিছু স্নাক্স আইটেম কিনে নিয়েছিলাম যাতে ট্রেনে যেতে যেতে খেতে পারি। ট্রেন ছাড়তে আরো কিছু সময় বাকি আছে। তাই বসে বসে এই ব্লগের শুরুর দিকটা লিখছি। ইতিমধ্যে আমাদের সামনে যে সকল সিট গুলো খালি ছিল তার মধ্যে যাত্রী আসতে শুরু করেছে। যাইহোক যথাসময়ে অর্থাৎ ঠিক ৭ টা ৫ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। এরপর ঝিকঝিক শব্দ ট্রেনটি চলতে শুরু করে।
তখন সকাল সাতটা তাই আকাশে ঠিকমত রোদ উঠেনি। হালকা হালকা কুয়াশা তখনো পর্যন্ত ছিল। দূরের জিনিস গুলো খুব একটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। তবে সময়ে পেরোতে কুয়াশা কাটিয়ে পূর্ব দিকে সূর্য উঁকি মারছেন। আর আমার সিটটি ছিল পূর্বদিকে ঠিক জানালার পাশে তাই সূর্য ওঠা মাত্রই রোদ টুকু আমার গায়ে এসে পড়ছিল। শুরুর দিকে রোদটা ভালো লাগলেও পরবর্তীতে বেশ গরম লাগা শুরু করছিল ওই রোদের কারণে। যদিও বাতাস ছিল প্রচণ্ড বেগে তারপরও ওই রোদ টুকু আর সহ্য হচ্ছিলো না। এছাড়া গায়ে ছিল গরম জামা। শরীরটা যেহেতু একটু অসুস্থ এবং সকালে যেহেতু ঠান্ডা লাগছিল তাই ফুলহাতা একটি মোটা গেঞ্জি পড়ে ছিলাম। রোদ থেকে বাঁচতে জানালার পর্দা মেলে দিয়েছি কিন্তু প্রচন্ড বাতাসের কারণে বারবার পর্দাটা সরে যাচ্ছিল আর রোদটা আবার গায়ে পড়ছিলো। এরপর একপ্রকার বিরক্ত হয়ে হয়ে জানালাটা বন্ধ করে দিয়েছি।
যাইহোক ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে ঘণ্টাখানেকের বেশি হতে চলল। ইতিমধ্যেই শহরের গণ্ডি পেরিয়ে গ্রামের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলছে ট্রেনটি। সারি সারি কলাগাছ, সবজির ক্ষেত, ট্রেনে বসে জানলা দিয়ে উঁকি মারে দেখছিলাম এই সকল দৃশ্যগুলো। আর আমি মনে করি ট্রেন জার্নি সবথেকে ভালো লাগার কারণ হচ্ছে এই সকল সুন্দর দৃশ্য গুলো দেখতে পাওয়া। যাইহোক ট্রেন চলার পথে মাঝে কয়েকবার কয়েক মিনিটের জন্য থেমেছে এরপর আবার চলতে শুরু করেছে।
এভাবে পর হয়ে যায় ৫ ঘন্টা। এবং দুপুর ১২:৩০ টাই এসে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন থামে। তাড়াহুড়া না করে বেশিরভাগ যাত্রী নামার পরে আমরা ট্রেন থেকে নেমে পরি। মামা নিতে এসেছে আমাদেরকে তাই ট্রেন থামার সাথে সাথে মামা এসে হাজির আমাদের বগির সামনে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলো একদম ঘিরে ধরেছে মালপত্র গুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে তাদেরকে খুব একটা পাত্তা না দিয়ে আমরা হেঁটে চললাম সামনের দিকে।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/asa.png)
![](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmfRETShxA5EQdPmpF6ChkQd5MkXJPifATT3TZdvk5sEC1/standard_Discord_Zip.gif)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
আসলে ভাই এই সিজন বদলে যাওয়াতে সবাই কমবেশি অসুস্থ ৷ যা হোক খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান ৷ আর ভালো ভাবে পৌছেন সেটা অনেক ভালো লাগলো ৷ তার সাথে গ্রামের প্রকৃতির দৃশ্য গুলো সত্যি অসাধারণ ৷ নিশ্চয়ই গ্রামের প্রকৃতির সানিধ্য অনেক ভালো লেগেছে ৷জানালা মেলে কি সুন্দর আকাশ তার সাথে এই শীতের সময় প্রকৃতি অনেকটা পরিবর্তন ৷
অনেক ভালো লাগলো ট্রেন জার্নি টি পড়ে ৷
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া কোন ঝামেলা হয়নি খুব সুন্দরভাবে ঢাকা এসে পৌঁছে গেলেন।যদিও আপনি কিছুটা অসুস্থ। অনেক ভোরে উঠতে হল আপনাকে, শীতের সকালে বিছানা ছেড়ে ওঠা সত্যি ই খুব কষ্টের।আপনি বেশ কিছু গ্রামের দিকের গাছ, প্রকৃতির ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন, বেশ ভাল লাগলো। সুস্থতা দান করুক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনার, আমিন।অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ভালোভাবে পৌছেছেন জেনে ভালো লাগলো।
সকাল বেলার রাস্তা তথা পরিবেশ আসলেই অচেনা লাগে।কারন,সারাদিনের মতো সে সময়টায় ওতো জ্যাম থাকেনা।মনে হয় রাস্তাও ঘুমিয়ে আছে।
জার্নির গল্প পড়ে ভালো লাগলো।শুভ কামনা রইলো।
ট্রেন জার্নি গুলো প্রায়ই সকাল সকাল হয়।যার জন্য ঘুম থেকো উঠা তারপর স্টেশনে পৌছানো অনেক কষ্ট হয়ে যায়।আমাদের ও সকালে ট্রেন জার্নি হলে রাতে ব্যগ গুছিয়ে রাখি।আর সকালের রোদ টা ভালোই লাগে,তারপর ১০ টার পর থেকে রোদ আর ভালো লাগে না।যাই হোক ৫ ঘন্টা জার্নি শেষ করে মামার সাথে গন্তব্য জায়গায় ঠিকঠাক পৌছিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
খুব সকালে ট্রেন বা বাস ধরার থাকলে, এই হয় আরেক সমস্যা যে কিছু গাড়ি ঘোড়া পাওয়আ যায় না। যদি স্টেশন বাড়ি থেকে দূরে হয়।আমরা তো যদিও অটো বা টোটোকে বলে রাখি। যে একবার এসে যেন স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে যায়।আপনাদের ওখানে এ ধরনের ব্যবস্থা থাকলে,সেটাও করতে পারেন। ট্রেন জার্নিটা বেশ ভালই লাগলো পড়ে।আর ট্রেনে বসে শহরতলীর মধ্যে দিয়ে যখন গ্রামে প্রবেশ করে,যেন মনে হয় একটা আলাদা প্রাণ ফিরে পেলাম। ছবিগুলো দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। নিজের মামা বাড়ি যাওয়ার কথা গুলো মনে পড়ল। আমার মামা বাড়িতে যেতে হয় ট্রেনে প্রায় ১৮ ঘণ্টার মতো জার্নি করতে হয়। আপনার এই শেয়ার করা অভিজ্ঞতা আমারও অনেক স্মৃতিকে নাড়িয়ে দিল।
ট্রেন জার্নি আমার বেশ পছন্দের। আর চারদিক দেখা যায় বলেই বেশি ভাল লাগে। যাই হোক আপনি নিরাপদে ঢাকায় পৌছাতে পেরেছেন । অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
আপনি একটি দ্রুত পুনরুদ্ধার কামনা করি এবং আপনি বারবার অনেক জায়গা পরিদর্শন করতে চান
প্রথমেই দাদা আমি আপনার সুস্থতা কামনা করছি। ওয়েদার চেঞ্জ এর কারণে এই সময় সবাই কম বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এই অসুস্থতার মাঝে সকালে ঘুম থেকে ওঠা শুধু কষ্টকর কাজ নয় ,নিজের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ। আপনার ট্রেন জার্নি সুস্থ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং নিরাপদে আপনি আপনার গন্তব্যে পৌঁছে গেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। ট্রেন জার্নি করার সময় জানলা দিয়ে বাইরের সবুজ প্রকৃতি দেখতে সবারই খুব ভালো লাগে ।ট্রেন জার্নির বেস্ট পার্ট এটি।