সে সময়ের বর্ষাকালটা।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আজ- ২৫শে জ্যৈষ্ঠ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




1000034041.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

কেমন আছেন সকলে? আশা করছি ভাল আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এই কয়েকদিনের ওয়েদারটা বেশ সুন্দর। এখন প্রায় সময় আকাশে মেঘ থাকছে আর মাঝে মাঝে বৃষ্টি ও পড়ছে। এই জ্যৈষ্ঠের গরমে এরকম একটা ওয়েদার আসলেই প্রশান্তিময়। এখনো মাঝে মাঝে যখন আকাশে মেঘ ডাকে, ঘন বর্ষা নামে তখন ছোটবেলার অনেক মজার স্মৃতি ভেসে উঠে। ওই সময়টাতে বর্ষকাল ছিল অন্যরকম। এবং তখন ভিন্ন এক অনুভূতি বিরাজ করতো। এখনকার বর্ষাকাল এবং সেই সময়ের বর্ষাকালের জীবনধারণের অনেকটাই তফাৎ ছিল।

আমার শৈশবটা গ্রামে কেটেছে তাই প্রকৃতির কিছুটা কাছাকাছি থাকার সেই সুযোগটা হয়েছে। আর আমাদের যাদের ৯০ দশকের জন্ম তারা জানি তখনকার গ্রামের সাথে এখনকার গ্রামের কতটা তফাৎ রয়েছে। গ্রাম এখন অনেকটাই পরিবর্তিত হয়ে উঠেছে। আধুনিকতার ছোঁয়া গ্রামগুলো এখন অন্য রূপে রূপান্তরিত হয়েছে। আগে এই বর্ষা ঋতুতে গ্রামগুলো হয়ে ওঠে অন্যরকম। বৃষ্টিতে কাঁচা রাস্তা গুলো কাদা হয়ে থাকতো । আর ওই সময় যাতায়াতের ভারী অসুবিধা হয়। এখন যদিও কালের পরিবর্তনে রাস্তাগুলো পাকা হয়ে উঠেছে এবং রাস্তাগুলো আগের থেকে অনেকটাই প্রসারিত ও বড় হয়ে উঠেছে তবে একসময় কিন্তু গ্রামের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি রাস্তা কাঁচায় ছিল। এবং এই কাঁচা রাস্তা গুলোতে মানুষ অভ্যস্ত ছিল। আর এই কাদাযুক্ত রাস্তাগুলোতে অত্যন্ত সাবধানতার সাথে পা টিপে টিপে হাতে হতে তা না হলে পা পিছলে আলুর দম হয়ে যেতে হতো। বড় বড় গর্ত হয়ে যেত রাস্তার মধ্যে। এত অসুবিধা থাকার পরেও বর্ষাকালটা ছিল অন্যরকম এক ভালো লাগার ।

বর্ষার পানিতে পুকুরগুলো ফুলে ফেঁপে উঠত । মাঠে-ঘাটে পানি জমে থাকতে এবং বেশ জংলা একটি পরিবেশ তৈরি হতো। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনো। বিকেলে গরম চায়ের সাথে বাদাম , চাল ভাজা, খাওয়া। সকলে মিলে বসে লুডু খেলা এসব কিছু করেই বিকেলটা পার করা হতো। কেননা এই বৃষ্টি বাদলের দিনে অতটা বাহিরে বের হওয়ার সুযোগ ছিল না।

আর যারা নিম্নবিত্ত তাদের ক্ষেত্রে বর্ষাকালটা মানেই অভাব অনটন। বাহিরের ছোট্ট রান্নাঘরটাতে টিনের চালের ফুটো দিয়ে পানি বেয়ে বেয়ে পড়া। চারপাশটা ভিজেও ভিজেও স্যতস্যাঁতে পরিবেশ হয়ে ঢাকা । যখন তখন বাহিরে বের হওয়া সেই সুযোগ না থাকা। আবার মাঝে মধ্যে বৃষ্টির মধ্যে মাঠে ফুটবল খেলা। স্বচ্ছ ঠাণ্ডা পানিতে সাঁতার কাটা। বরশি দিয়ে ছোট ছোট ডোবা গুলোতে মাছ ধরা। আবার ঝড় উঠলে গাছের নিচে আম পড়েছে কিনা সেটা দৌড়ে গিয়ে দেখতে যাওয়া। আর সেই সবকিছু যেন এখনো চোখে ভাসছে। বর্ষার এতসব বিরক্ততার মধ্যে দিয়েও যেন একটা প্রশান্তিটা ছিল আর সেটা যেন এখন আর খুঁজে পায় না।

এখন আর বৃষ্টি হলে কাদা রাস্তায় হাঁটতে হয় না। স্যাঁতসেতে পরিবেশ আর তৈরি হয় না। বৃষ্টি হলেই ঘরে বন্দী হয়ে থাকতে হয় না । কতই না সুবিধা। ঘরে বসে চাইলে বাহিরে বৃষ্টিগুলো উপভোগ করা যায়। কিন্তু এত কিছুর পরেও যেন সে সময়ের বর্ষাকালটা খুব প্রিয় ছিল।

আজ তাহলে এ পর্যন্তই সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী দিন আবার অভিনয় কোন বিষয় নিয়ে আল্লাহ হাফেজ।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 last month 

বর্তমান গ্রাম গুলো উন্নত হয়ে যাচ্ছে। কাঁচা রাস্তা গুলো দিন দিন পাকা হয়ে যাচ্ছে। থাকছে না সেই অতীতের ঝামেলা। এখন আর রাস্তাগুলোতে ঘোড়ার গাড়িও দেখা যায় না আবার সেই সকল কাঁচা রাস্তাগুলো দেখা যায় না যেগুলোতে হাঁটু পর্যন্ত কাদা থাকতো। এখন সেই সব ঝামেলা থেকে অনেকটাই রেহাই পেয়েছি। কিন্তু এখন পাওয়া যায় না সেই অতীতের মতো প্রশান্তি। আর এটার কারণ হতে পারে অতীতে আমরা বর্ষাকাল থাকে অন্যরকম ভাবে উপভোগ করতে পারতাম। আর উপভোগ করার মত ছিল অনেক অপশন। এখন আর সেগুলো হয় না অর্থাৎ ঘর থেকেই যতটুকু সম্ভব উপভোগ করা হয় নয়তো বাইরে গিয়ে হালকা একটু বৃষ্টিতে ভিজে উপভোগ করা হয়। আর এর জন্য হয়তো ইচ্ছে করে সেই অতীতের বর্ষাকাল গুলোর মজা গুলো আবার ফিরে পেতে। তবে সবশেষে অতীতের অনেক অনেক ঝামেলা থেকে বের হতে পেরেছি এটাই অনেক। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

সময়ের সাথে যখন একটি মানুষের জীবনের ক্ষেত্র বদল হয়ে যেতে থাকে তখন দেখা যায় শৈশব কৈশোর কিংবা প্রথম যৌবনের অনেক কিছুই পরবর্তীতে করা হয়ে ওঠে না ; কখনো ইচ্ছা উবে যায়, কখনো দৃশ্যপট ভিন্ন হয় - সেই দিনগুলো অবশিষ্ট থাকে না।

তারপরেও গ্রামবাংলার প্রকৃতি ততটা বদল হয়নি যতটা আমরা ধারণা করি। কারণ নগরায়ন যেমন হচ্ছে তা সত্য, তার চেয়েও বেশি যেটা চোখে পড়ে তা হলো প্রকৃতির কিছু জিনিস এখনো আছে। বর্ষা আসলে সন্ধ্যায় এখনো কদম ফুলের গায়ে ঝরা জলের সৌন্দর্য্য কিংবা পাখিদের নীড়ে ফিরে যাওয়া দেখে অবাক হতে হয় বিস্ময়ে আর সৌন্দর্যে।

যা হোক, আশা রাখি চিরকাল বাংলাার রূপ এমনই থাকুক, হয়তো কোনদিন সোনালী সে অতীতের কথা মনে পড়ে যাবে আর সে সাথে স্মৃতিপটে ভেসে উঠবে সেই দিনগুলির কথা।
ভালো থাকবেন, অনেক সাধারণ জিনিস উঠে এলো যা পড়ে বেশ দারুন লেগেছে। ধন্যবাদ৷

 last month 

ইস! আপনি অনেক সুন্দর স্মৃতি শেয়ার করলেন ভাইয়া ক্ষণিকের জন্যই অতীতে হারিয়ে গেছিলাম। সত্যিই গ্রামের সেই বর্ষাকাল এখনের বর্ষাকালের মত অনেক তফাৎ। এখন মনে হয় এইগুলো আসলেই বর্ষাকাল নয়। কাঁচা রাস্তা দিয়ে পা টিপে টিপে হাঁটতাম অনেক সময় পড়ে যেতাম রাস্তাতে। যখন পড়ে যেতাম একদম পুরো গায়ে কাঁদা মেখে উঠতাম বেশ মজার কিছু গল্প আছে। অনেক ভালো লাগলো আপনার সেই ছোটবেলার শৈশবের অনুভূতি শেয়ার করলেন বর্ষাকালের। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

ভাই আমরা যতই আধুনিক হয়ে যাচ্ছি, জীবন থেকে আনন্দ ততটাই কমে যাচ্ছে। ছোটবেলার বর্ষাকালের কথা মনে পরলে এখনও মনটা আনন্দে ভরে যায়। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলতে যে কি ভালো লাগতো,সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তাছাড়া বর্ষাকালে বাসায় বসে লুডু তো প্রায়ই খেলতাম। মাঝেমধ্যে সাপ লুডু খেলতেও ভীষণ ভালো লাগতো। আপনার পোস্টটি পড়ে কিছুক্ষণের জন্য ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

আমাদের গ্রামের মাঝের রাস্তা টা তো এখন পিচঢালায় করা। কিন্তু আমি যখন ছোট ছিলাম তখনকার কথা মনে আছে। বৃষ্টি হলে ঐ মাটির রাস্তায় প্রচুর কাঁদা হয়ে যেত। আমার একটা ছোট কেরাম বোর্ড ছিল এখনও আছে। বর্ষার সময়ে যখন সারাদিন বৃষ্টি হতো আমি এবং আমার কয়েক বন্ধু সারাদিন ক‍্যারামবোর্ড খেলতাম। পুকুর মাঠঘাঠ বৃষ্টির পানিতে একেবারে থৈ থৈ করত আহ কী সেই দিনগুলো। চমৎকার লিখেছেন ভাই।

 last month 

আপনার পোস্ট পড়ছিলাম দাদা আর মনে হচ্ছিল, আমিও সেই ছোটবেলার বর্ষাকালে ফিরে গেছি। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন গ্রামেই বড় হয়েছি। বর্ষার সময়ে বিলে মাছ ধরা, পুকুরে স্নান করা, কাদা মাটিতে ফুটবল খেলা, এগুলো আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল। সব থেকে ভালো লাগতো সবাই মিলে একসাথে ঘরে বসে বর্ষার দিনে লুডু খেলতে। আর রাতের বেলা টিনের চালে যখন বর্ষা পড়ার আওয়াজ হতো, তখন ঘুমটাও খুব সুন্দর হতো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64689.90
ETH 3450.92
USDT 1.00
SBD 2.50