কৈশোরের স্মৃতি।
আজ- ১৫ই পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, শীতকাল
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
যাই হোক যেটা বলছিলাম, আমার আব্বু ছিলেন একজন আর্মি তিনি ছিলেন খুবই বিচক্ষণ একজন মানুষ। আমি সত্যি বলতে আমার ওই কৈশোর বয়সটাতে আব্বুর ভালোবাসাটা থেকে শাসন টাই বেশি পেয়েছি। আমরা আব্বুকে খুবই ভয় পেতাম, বিশেষ করে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে আব্বু কখনোই কম্প্রোমাইজ করত না। আমার ওই কিশোর বয়সটাতে বাইরে খেলাধুলা, ভিডিও গেমস খেলা, আড্ডা দেওয়া ওই অভ্যাসগুলো তেমন একটা ছিল না। ওই উঠতি বয়স্টাতে আব্বু আমাদেরকে খুব ডিসিপ্লিন এর মধ্যে দিয়ে চালাত। তখন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসতে হতো, রাতে খাওয়ার পর প্রতিদিন নিয়ম করে ম্যাথ করা, এরপর মাঝেমধ্যেই আব্বু নিজেই আমাদের পড়াতেন, এরপর টিচার প্রতিদিন স্কুল যাওয়া এসব কিছুর মধ্যেই থাকতে হতো সবসময়। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির সচরাচর যেমন চিত্রটা হয় আরকি। আমাদের বেলায়ও ঠিক তেমনটাই ছিল। আব্বু একাই উপার্জন করতেন এবং আমাদের লেখাপড়ার খরচ এবং পুরো সংসারটাই এক হাতে চালাতেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়তো পাইনি তবে কখনো আমাদের কোন কিছুতে কমতি দেয়নি।
আমাদের বাসায় একটা ছোট্ট টিভি ছিল কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষার কয়েক মাস আগে আব্বু ডিস লাইনটা কেটে দিতেন । আবার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে বছরের শুরুর দিকে ডিশ লাগাতো। তবে একবার আমার পরীক্ষার সময় ছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপ আর ওই সময়টা ডিস লাইনটা কেটে দিয়েছে আব্বু। কিন্তু আমার ক্রিকেট অনেক প্রিয়। আব্বু ডিসটা কেটে দেওয়াই কিভাবে আমি ফাইনাল ক্রিকেট খেলা দেখব এ নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লাম। চিন্তা করতে থাকলাম কিভাবে কি করা যায়। এভাবে ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মাথার মধ্যে আসলো আমাদের জানালার পাশ দিয়ে তো একটি ডিসের লাইন গেছে ওই ডিসিশন লাইনটার মাধ্যমে এন্টেনার দিয়ে দেখা যাক ডিসটা কানেক্ট করা যায় কিনা। যেই ভাবা সেই কাজ, ছোট কিছু সূক্ষ্ম লম্বা তার ছিল বাসায় ওগুলো দিয়ে এরপর স্টিলের একটা ঢাকনা দিয়ে এন্টেনা তৈরি করে কিছু চ্যানেল কানেক্ট করতে পেরেছিলাম টিভিতে। জাস্ট কোনমতে দেখার জন্য আর কি।
আব্বু যখন অফিস যেতে তখনই একমাত্র দেখার সুযোগ পেতাম। এভাবে করে ওইবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপটা আমি দেখেছিলাম। কলিং বেলটা বেজে উঠলেই দৌড়ে গিয়ে টিভির লাইন খুলে সবকিছু ঠিকঠাক করে আবার বই খুলে বসে যেতাম। আসলে ওই সময়টা না অন্যরকম একটা ছিল। এখন সত্যিই জীবনের ওই শাসন টাই যেন খুব বেশি করে মিস করছি। দেখবেন জীবনে যারা আপনাকে বেশি শাসন করবে তারাই আপনাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসে।
আজ এই পর্যন্তই, এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সকলে সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী দিন আবারও ভিন্ন কোনো আলোচনা নিয়ে। আল্লাহাফেজ।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ছোটবেলার কিছু স্মৃতি সবসময়ই স্মরণীয় হয়ে থাকে যা কখনো ভোলা যায় না।আর্মি পারসন রা খুবই ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকেন এবং পরিবারের সবাইকে রাখার চেষ্টা করেন।আঙ্কেল এর শাসন ছিলো বলেই আজ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছেন ভাইয়া।আপনার কৈশোরের স্মৃতিময় গল্প টি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।আগের দিনগুলো কতই না সুন্দর ছিলো!আর এখনকার দিনের বাচ্চারা কখনোই এই দিনগুলো দেখতে পায়না আর এই ইন্টারনেট এর কারনে তাদের ম্যামোরিতে ভালো কোনো স্মৃতি থাকবে বলে আমার মনে হয় না।অনেক সুন্দর গল্প টি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি শৈশবের স্মৃতির গল্প লিখে শেয়ার করেছেন । আপনার ফাইনাল পরীক্ষার আগে বাসা থেকে টিভির ডিশ লাইন কেটে দিতে আপনার আব্বু জানতে পারলাম। কিন্তু আপনার ফাইনাল পরীক্ষার আগে ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলছিল তখন আপনার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল কিন্তু ক্রিকেট খেলা আপনার বেশ ভালো লাগতো জানতে পারলাম। ঢাকনার সাহায্যে আপনি এন্টিনিয়ার তৈরি করেছিলেন জানতে পারলাম এই পোষ্টের মাধ্যমে। আপনার আব্বু যখন অফিসে যেত তখনই আপনি এন্টিনিয়ার দিয়ে টিভি কানেক্ট করে খেলা দেখতেন জানতে পারলাম। ধন্যবাদ ভাই শৈশবের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কৈশরে আপনার মতোই আমিও খেলাপ্রেমী ছিলাম, এখনও আছি। বাড়ি থেকে পালিয়ে কতো খেলা দেখতে চলে গিয়েছি অন্যের বাড়িতে। আমাদের টিভিটাও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তখন, সাদাকালো ১৪ ইঞ্চরি টিভিটা! এখন টিভি নেই, ফোনেই খেলা দেখা হয়। আগের আব্বার শাসনটা আমিও মিস করি
একেবারে ঠিক বলেছেন ভাই, এটা আমিও প্রায় সময় ভেবে থাকি। যাইহোক আপনি তো কৈশোরেই অনেক বুদ্ধিমান ছিলেন ভাই। ক্রিকেট বিশ্বকাপ দেখার জন্য দারুণ বুদ্ধি এপ্লাই করেছিলেন এবং সফলও হয়েছিলেন। আমি মনে করি সন্তান যখন ছোট থাকে, তখন থেকেই বাবার শাসন করা উচিত। কারণ বাবার শাসনটা, মায়ের শাসনের চেয়েও বেশি কার্যকর। যাইহোক কৈশোরের এতো চমৎকার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।