কেন আমরা অন্যের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করি?

আমাদের সমাজে একটা প্রবণতা খুব বেশি চোখে পড়ে। আমরা প্রায়ই অন্যের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করি। কে কী করছে, কার জীবনে কী ঘটছে, কে কোথায় যাচ্ছে বা কীভাবে জীবন কাটাচ্ছে, এসব জানার আগ্রহ যেন অনেক বেশি। অথচ প্রশ্ন হলো আমরা কেন এমন করি

মানুষের ভেতরে কৌতূহল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। জন্ম থেকেই আমরা জানতে চাই অন্যরা কী করছে। এই কৌতূহল থেকে অনেক সময় আমরা অকারণে অন্যের জীবনে নাক গলাই। প্রথমে এটি কেবল জানতে চাওয়া হলেও ধীরে ধীরে এটি সমালোচনা বা বাড়াবাড়িতে পরিণত হয়।

এছাড়া আমাদের ভেতরে সব সময় তুলনা করার প্রবণতা কাজ করে। আমরা অন্যকে নিজেদের সাথে মেলাতে চাই। অন্য কেউ সাফল্য পেলে আমরা ভেতরে ভেতরে হিংসা বোধ করি, আর কেউ ব্যর্থ হলে অজান্তেই স্বস্তি পাই। এ ধরনের মানসিকতা আমাদের অকারণে অন্যের ব্যাপারে মাথা ঘামাতে বাধ্য করে।

অনেক সময় অবসরও একটি কারণ। যখন নিজের জীবনে করার মতো কিছু থাকে না, তখন অন্যের জীবন নিয়ে আলোচনা যেন বিনোদন হয়ে দাঁড়ায়। বন্ধুদের আড্ডা হোক বা সামাজিক পরিসর, প্রায়শই কথার শুরু হয় অন্যকে নিয়ে। এভাবেই গসিপ সংস্কৃতি আমাদের জীবনে জায়গা করে নেয়।

আত্মবিশ্বাসের অভাবও আরেকটি বড় কারণ। যারা নিজেদের জীবনে সন্তুষ্ট নয়, তারা প্রায়ই অন্যের ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে মাথা ঘামায়। এতে তাদের মনে হয় তারা অন্তত অন্যের চেয়ে ভালো আছে। কিন্তু বাস্তবে এতে নিজের উন্নতি হয় না, বরং সময় নষ্ট হয়।

পরিবার এবং সমাজের প্রভাবও অস্বীকার করার মতো নয়। অনেক সময় আমরা ছোটবেলা থেকেই অন্যকে নিয়ে মন্তব্য শুনতে শুনতে বড় হই। ফলে এটি অভ্যাসে পরিণত হয়।

অন্যের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করার এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হলে নিজের জীবনের দিকে মনোযোগ দেওয়া সবচেয়ে জরুরি। নিজের লক্ষ্য, স্বপ্ন আর কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে অন্যকে নিয়ে বাড়তি চিন্তা করার সুযোগই থাকে না। আমাদের বোঝা উচিত অন্যের জীবন নিয়ে বাড়াবাড়ি করে আমরা কিছুই অর্জন করতে পারি না, বরং নিজের সময় আর শক্তি নষ্ট করি।