রমজান নিয়ে ছোটবেলার কিছু মজার স্মৃতি৷

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আজ - ১৯ই, চৈত্র , ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | রবিবার | বসন্তকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আজ আমি আপনাদের সাথে রমজান নিয়ে ছোটবেলার কিছু স্মৃতি শেয়ার করব।




ramadan-g98e2509a6_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

সকলকে রমজানের শুভেচ্ছা। কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় ভাল আছেন। আমি সবসময় সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি সকলেই যেন ভালো থাকে সুস্থ থাকে। কেননা সুস্থ থাকাটাই হচ্ছে সবকিছুর উপরে।

যাইহোক আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেছি সাড়ে এগারোটা টার দিকে। আজ অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে ঘুম থেকে উঠতে। এমনিতে সাধারণত অন্য সময় গুলোতে আরো একটু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠি। তবে গতকাল রাতে সেহরি খেতে উঠায় ঠিকমতো ঘুম হয়নি। আর রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় দেড়টা দুটো বেজে গিয়েছিলো এরপর সেহরি খেতে আবার সাড়ে তিনটা বাজে উঠেছি এবং ঘুমিয়েছি ভোর পাঁচটার দিকে। সে হিসেবে আমার গড়ে ৫ ঘন্টার মতো ও ঠিকমতো ঘুম হয়নি। যেহেতু রাতে ঠিকমতো ঘুম হয়নি তাই সকালে ঘুম থেকে উঠেতে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। আর আমার আবার ঠিকমতো ঘুম না হলে আমার মাথা ব্যথা করে।

আজ রবিবার গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ আছে সেটি হচ্ছে heroism এর রেওয়ার্ড সেন্ড করা এবং পোস্ট পাবলিশ করা। প্রত্যেক সপ্তাহে রবিবারে এই কাজটি আমিই করে থাকি। যাইহোক তারাতারি বিছানা থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে বসে পড়ি কাজটি শেষ করতে। কাজ শেষ করতে মোটামুটি আমার এক-দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। এর পর আমি বসে পড়ি আমার পোস্ট লেখার কাজে।


ramadan-g84f72d0e5_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আসলে রমজান মাসটা অন্যান্য মাস থেকে একটু ভিন্ন। একটু বললে ভুল হবে অনেকটুকুই ভিন্ন। কেননা রমজান মাসে পুরো রুটিনটাই বদলে যায়। তবে যে যাই বলুক রমজান মাস হচ্ছে আমাদের মুসলিম সমাজের সর্বশেষ্ঠ একটি মাস। তাই আমাদের সকলেরই উচিত এই মাসটিতে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ করা।

রমজান মাসকে ঘিরে আমার ছোটবেলায় কিছু সুন্দর সুন্দর স্মৃতি রয়েছে। তো চলুন সেসব মজার কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করি-

ছোটবেলায় রমজান আসলেই আমি সবসময় বায়না করতাম রোজা রাখার। কিন্ত তখন ও আমার রোজা রেখার সেই বয়স হয়নি। তবুও বায়না করতাম রোজা রাখার। ছোটবেলায় সাধারণত সেহরি খাওয়ার সময় আমাকে কেউ ডাকতো না। আর এই জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রচুর কান্না করতাম কেন আমাকে সেহেরির সময় জাগিয়ে দেওয়া হয়নি আমি এখন কিভাবে রোজা রাখব। এমনকি বুদ্ধি করে রাতে ভাত খেতাম না যাতে আমাকে সেহরির সময় জাগানো হয়। তবে আম্মু আমাকে জাগাতো ঠিকই তবে আজানের একটু আগে। যাতে আমার খাবার শেষ করতে করতে আজান দিয়ে দেয়।


ramadan-g83147bbe1_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

মাঝে মধ্যে সবাই যখন সেহরির জন্য উঠে তখন টের পেয়ে যেতাম। আর গভীর ঘুম ভেঙে উঠে যেতাম সেহরি খাওয়ার জন্য। আর সকালে ঘুম থেকে উঠে সকলকে বলতাম যে আমি রোজা রেখেছি। কিছুতেই রোজা ভাঙতে চাইতাম না। আর আম্মু অনেক চেষ্টা করেও আমাকে কিছুই খাওয়াতে পারতো না। তাই আম্মু আমাকে বলতো ছোটদের বারোটা আগে খেয়ে নিলে একটা রোজা হয়ে যায়। আর আমি সেটাই বিশ্বাস করতাম। আর বন্ধুদের বলতাম আমার একটা রোজা হয়ে গেছে। আজ আমি দুইটি রোজা রেখেছি। আমি মনে করতাম দিনে দুইবার খেলে দুইটা রোজা হয়ে যাবে। অর্থাৎ সকালে একবার এখন দুপুরে একবার।

আর ইফতারের সময় হলে তো সবার আগে বসে পড়তাম টেবিলে। কিছু খায় কিনবেন না খায় সবকিছুই আমার প্লেটে থাকতে হবে। প্লেট সাজিয়ে বসে থাকতাম আযান দেওয়ার জন্য। যদিও সব সময় আযান দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতাম না এর আগে চুপিচুপি খাওয়া শুরু করতাম। আর ছোটবেলায় ইফতারের সবথেকে পছন্দের আইটেম ছিল জিলাপি এবং ট্যাং। আর ইফতারে ট্যাং এর শরবত বানানোর সময় ট্যাং এর গুড়া হাতের তালুতে নিয়ে খেতাম। আর পুরো জিব্বা লাল করে ফেলতাম।

আর আমার মতো কে কে হাতের তালুতে ট্যাং খেয়েছেন তা কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

যদিও ছোটবেলার সেসব ঘটনা গুলো এখন হাস্যকর। তবুও ভালো লাগে ওই সকল অবুঝ সময়ের কথা ভাবতে।

আসলে তখন রোজা না রাখতে দেওয়ার একটাই কারন সেটি হচ্ছে, আমার তখন ও রোজা রাখার মত সেই বয়স হয়নি। আর যখন সময়ের সাথে সাথে বড় হতে লাগলাম তখন রোজা রাখা শুরু করলাম।

তো এই ছিল আমার আজকের আলোচনা। সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

হাহাহা, দিনে দুইটা রোজা করার অভিজ্ঞতা আমারও আছে। আবার অনেক সময় প্রথম রোজা করতাম আবার শেষের রোজা করে মাঝখানের গুলো আটকাইতাম 🤣

আর ভাই হাতুর তালুতে ট্যাং খাওয়ার মজাই আলাদা। আরেকটা জিনিস খেয়েছি ড্যানিশ কৌটা দুধ। হাতের তালুতে নিয়ে। অনেক ধন্যবাদ ভাই, রমজানের পুরোনো অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

হাহাহা, আসলে বাচ্চারা এ ধরনের হয়ে থাকে। এখনো আমাদের বোনের ছেলে মেয়ে গুলো রোজা রাখার জন্য অস্থির হয়ে থাকে। না খেয়ে রোজা রাখার জন্য প্রস্তুত। তবে ভাইয়া আপনার ছোটবেলার কাহিনী পড়ে সত্যিই খুব হাসলাম। দিনে একটার জায়গায় দুইটা রোজা রেখে দিতেন। বাহ দারুন নিয়ম।

 2 years ago 

আমি হাতের তালুতে ট‍্যাং খেয়েছি ভাই হা হা। সত্যি রমজান আসলে যেন আমাদের জীবন যাপন পাল্টে যায়। শুধু আপনি না ভাই এমনটা ছোটবেলা আমরা সবাই করতাম। বাড়ির লোক না ডাকলে সেহরির সময় কথা শুনে উঠে পড়তাম। এবং ইফতারির সময় আমি সবচেয়ে বড় রোজা দার হাহা। স্মৃতিটা মনে করিয়ে দিলেন।।

 2 years ago 

আসলেই ছোটবেলার স্মৃতিগুলো অনেকর একসাথে মিলে যাই।

 2 years ago 

☺☺☺💖

 2 years ago 

হাহাহা একদম ভাই আমাদের ছোট বেলার গল্প গুলো দারুন ছিল আসলেই।দিনে ৫ বার ইফতারি করেও বলতাম আমরা রোজা রেখেছি হাহাহা খুহ সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন ভাইয়া ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ভাই আমিও ছোটবেলা হাতে করে ট্যাং খেয়েছি। ভাইয়া আসলে ছোটবেলা সবার মনে হয় এমনি হয়।আপনার পোষ্টটি পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ছোটবেলায় আপনি যে কাজ করেছেন আমরাও সেম কাজ করেছি ।ছোটবেলায় রোজা থাকার অনেক জিদ ধরতাম কিন্তু আম্মু থাকতে দিত না কিন্তু আমি থাকবো এই নিয়ে অনেক কান্নাকাটি করেছিলাম। রমজান মাসে যখন ছোট ছিলাম তখন দিনে তিন চারটা করে রোজা করতাম এবং সবাইকে বলে বেরাতাম আজকে আমার ৩ টা হয়েছে, আজকে আমার ৪ টা হয়েছে এরকম ভাবে। আম্মু আমাকে এরকম বলে দিত তখন তো বুঝতাম না । আপনার গল্পটি পড়ে সেই সময়ে কথাগুলা মনে পরে গেল।ছোটবেলায় কেন এখনো আমার জিলাপি অনেক পছন্দের।ছোট বেলার এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আর আমার মতো কে কে হাতের তালুতে ট্যাং খেয়েছেন তা কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

ভাইয়া আপনার ছেলেবেলার এই কথাগুলো যখন পড়েছিলাম তখন বারবার নিজের ছেলে বেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছিল। আসলে সেই সময় গুলো অনেক ভালো ছিল। আমিও আপনার মত হাতের তালুতে ট্যাং ঢেলে নিয়ে এরপর খেয়েছি। আমার কাছে খুবই মজা লাগতো। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি আপনার পুরনো দিনের স্মৃতিগুলো ও ছোটবেলার স্মৃতিগুলো উপস্থাপন করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া।

ঠিক আপনার মতোই হাতের তালুতে ট্যাং নিয়ে খাওয়া আমি হাহা।সত্যি ভাইয়া ছোট বেলার গল্প গুলো অসাধারণ। ছোটো বেলায় আমি ও ঠিক এই কাজটি করতাম।২ বার খেয়ে বলতাম দুটি রোজা হয়ে গেছে। আপনার ছোটো বেলার গল্প টি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে আমাদের স্মৃতিগুলো একই সূত্রে গাঁথা। আমাদের শৈশবের সেই রমজানের স্মৃতি গুলো যেন একই রকমের। আপনার রমজান মাসের সেই মধুর স্মৃতিগুলো আপনি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার এই লেখা পড়ছিলাম তখন বারবার নিজের শৈশবের রমজান মাসের স্মৃতি গুলো মনে পড়ছিল। আসলে আমিও আপনার মত হাতে নিয়ে চেটে চেটে গুঁড়া ট্যাং খেতাম। আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো। আমি এভাবে গুঁড়া ট্যাং খেতাম ও মাঝে মাঝে গুড়া দুধ খেতাম। আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো। অনেক সুন্দর করে আপনি আপনার শৈশবের রমজানের স্মৃতি গুলো উপস্থাপন করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।

Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Please consider to approve our witness 👇

Come and visit Italy Community

Coin Marketplace

STEEM 0.14
TRX 0.12
JST 0.026
BTC 54691.22
ETH 2323.26
USDT 1.00
SBD 2.12