"শরবত" নাটকের রিভিউ।
আজ - ৮ই শ্রাবণ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | বর্ষাকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্ল এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | শরবত |
---|---|
পরিচালক | মাবরুর রশিদ বান্নাহ। |
অভিনয় | তানজিন তিশা, মামুনুর রশিদ, সুদীপ বিশ্বাস দ্বীপ, আরফান মৃধা শিবলু, আলমগীর হোসেন |
দৈর্ঘ্য | ৫২ মিনিট। |
ধরন | শিক্ষামূলক। |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ৯.০৭.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
নাটকের প্রথম দৃশ্যে আমরা দেখতে পাই, সোনিয়ার ছোট্ট একটি শরবতের ভ্যান। যেখানে সে বিভিন্ন ধরনের শরবত বিক্রি করে। প্রচন্ড গরম থাকার কারণে তার ব্যবসা বেশ ভালো ভাবেই চলছে। সনিয়া প্রতিবাদী এবং চঞ্চল প্রকৃতির একটি মেয়ে। অন্যের বিপদে সে সব সময় ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেখা যায় রাস্তায় শরবত বিক্রি করার সময় একজন ছিনতাইকারী মোবাইল নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। আর এটি দেখে সে কোন কিছু না ভেবে দৌড়ে ছুটে গিয়ে ছিনতাইকারীকে ধরে এবং মোবাইলটি উদ্ধার করে নেয়।
সনিয়ার পরিবার বলতে শুধুমাত্র তার বাবা। বেশ অনেক বছর ধরেই তার এই শরবত বিক্রি ব্যবসা
। আগে তার বাবা এই ব্যবসা করত তবে এখন সে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সানিয়ায় তা সামলায়।
এদিকে দেখা যায় সোনিয়ার কাছে একজন লোক আসে শরবত খাওয়ার জন্য। লোকটির নাম হচ্ছে মজিদ। মজিদ শরবতের জন্য ১০ টাকে বিল দিতে গিয়ে ১০০০ টাকার একটি নোট দেয় । তবে সোনিয়ার কাছে ১০০০ টাকা ভাংতি ছিল না। তাই সে তার কর্মচারীকে পাঠায় এই ১০০০ টাকার নোট ভাংতি করে আনার জন্য। অন্যদিকে মাজিদের কাছে একজন লোক আসে এবং লোকটি খুব তারা দিচ্ছিল যে ইমারজেন্সি একটি কাজে তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য। কিন্তু এদিকে টাকা ভাংতি করার জন্য যে গিয়েছিল সে এখনো ফিরেনি। এমন অবস্থায় সোনিয়া তাকে জানাই যে টাকাগুলো সে পরে দিয়ে দিবে। প্রথম দিকে মজিদ এটিতে রাজি না হলে ও পরবর্তীতে দেরি হয়ে যাবে সে আসে রাজি হয়ে যায়।
পরের দিন মজিদ তার বকেয়া ৯৯০ আদায়ের টাকার জন্য সোনিয়ার বাসায় পৌঁছে যায়। যেটা দেখে সানিয়া খুবই অবাক হয়ে যায়। এবং সে জানাই যে, সেই এখন টাকাটা দিতে পারবে না কারণ ওই টাকা টা খরচ করে ফেলেছে। এবং অন্য আরেকদিন দোকানে এসে তার টাকাটা নিয়ে যেতে বলে।
এভাবে মসজিদ সোনিয়ের থেকে ৯৯০ টাকা আদায়ের জন্য সানিয়ার বাড়িতে যাওয়া আসা করতে থাকে। কিন্তু কোনভাবে সোনিয়া তার টাকা ফেরত দিতে পারে না। কেননা , সনিয়ার শরবতের এই বেচার বিক্রি অনেকটাই কমে যায়। গরমের সময় সকালেই তার কাছ থেকে শরবত খেতে আসে কিন্তু এই বৃষ্টি হওয়ার কারণে এখন আর তার ব্যবসা আগের মত চলে না।
এদিকে মসজিদ সোনিয়ার এমন পরিস্থিতি দেখে তাকে বলে বিদেশ যাওয়ার কথা। বিদেশ গেলে সে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবে । সানিয়া যদি ও বিদেশ যাওয়ার জন্য রাজি থাকে না তবে মজিদ আশ্বাস দেয় টাকা পয়সা নিয়ে তাকে ভাবতে হবে না কারণ তার এক পরিচিত লোক আছে।
প্রথমদিকে সোনিয়া তার বাবাকে রেখে একা বিদেশ যেতে না চাইলেও পরবর্তীতে তার বাবা তাকে বোঝাই এবং তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেই রাজি হয়ে যায়।
যে লোক সোনিয়াকে বিদেশ নিয়ে যাবে তার নাম হচ্ছে জাফর। জাফর হচ্ছে মসজিদের পরিচিত। এই জাফর হচ্ছেন একজন দালাল। সে মানুষকে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে বিদেশ নিয়ে যাওয়া আশ্বাস দেয়। মজিদ আরো আগে তার বিদেশ যাওয়ার জন্য জাফরকে অনেক টাকা দিয়েছিল কিন্তু জাফর সেই টাকে ফেরত দেয়নি।
এদিকে জাফর সোনিয়াকে আশ্বাস দেয় যে বিদেশ যাওয়ার জন্য তার এখন কোন টাকা পয়সা লাগবে না। যখন সে বিদেশ যাবে তখন টাকা দিলে হবে। আর এমন সব কথা শুনে সোনিয়া বেশ ভরসা পায় এবং বিদেশ যাওয়ার জন্য রাজি হয়।
এদিকে সোনিয়া তার বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে থাকে। তার বিদেশ যাওয়ার পর তার বাবাকে সে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে এমনটাই পরিকল্পনা করে। অবশেষে সোনিয়ের বিদেশ যাওয়ার দিন উপস্থিত হয় এবং সে তার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসে ফেরার সময় তার বাবার সাথে কাটানো সেই সুন্দর দিনগুলোর কথা মনে পড়ে।
সে কোনভাবেই তার বাবাকে এভাবে রেখে আসতে পারবে না। তার দ্বারা সম্ভব না তার বাবাকে এভাবে একা রেখে বিদেশ যাওয়ার। তাই সে আবার ফিরে আসে। আর তখন সেই জানতে পারে যে জাফর তাকে নারী পাচারকারী হিসেবে বিদেশ পাঠাচ্ছে। সে বেশ অনেকগুলো টাকার বিনিময়ে তাকে বিদেশে বিক্রি করে দিতে চলেছে। আর এসব কিছু শুনতে পেরে অনেক অবাক হয়ে যায়। এত বড় একটি প্রতারণার হাত থেকে সে রক্ষা পেয়ে হাসি খুশি ভাবে তার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে আসে আর এখানেই নাটকটির সমাপ্তি ঘটে।
শিক্ষা
পুরো নাটকটি একটি বড় শিক্ষনীয় দিক রয়েছে। এবং সকলের জন্য একটি মেসেজ দিয়ে যায় এই নাটকটি। নাটকটিতে খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে একজন নারী কিভাবে অন্ধ বিশ্বাসের মধ্যে দিয়ে একজন দালালের চক্করে পড়ে। বিদেশের প্রলোভ দেখিয়ে একজন দরিদ্র শরবত ব্যবসায়ী নারীকে দালাল তার পাতা ফাঁদে ফেলে দেয় এবং সে বিষয়গুলো এই নাটকের খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে।
ব্যক্তিগত মতামত
ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। প্রথমে নাটকের নাম দেখে ভেবেছিলাম এটি হয়তো কোন ড্রামাটিকাল নাটক হবে। পরবর্তীতে দেখলাম এর গল্পটি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং বাস্তবমুখী। নাটকের মূল চরিত্রে অভিনয় করা তানজিন তিশার অভিনয় ছিল দুর্দান্ত সেইসাথে যারা যারা অভিনয় করেছেন তাদের অভিনয় খুব সুন্দর ছিল। সর্বশেষ বলতে গেলে নাটকটির মধ্যে অশ্লীল কোন কিছু নেই। ফ্যামিলি এবং পরিজন সহ সকলে মিলে একসাথে দেখার মত একটি নাটক এটি ।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকের লিংক
ধন্যবাদ সকলকে।
| | | | | |
------------------------------------------------- | --------------------------------------------------------------------------------------------------------- |
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বাংলাদেশ এরকম অনেক ঘটনাবলি নিউজ দেখতে পেয়েছি বিভিন্ন দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়। যাই হোক নাটকটা অনেক শিক্ষনীয় দিকটি সত্যি যেটা সতর্কতা বিষয়টি উপলব্ধি করায় নাটকটি দেখার চেষ্টা করব।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
শরবত নাটকটি দেখা হয়নি, তবে আপনার পোস্টের সুন্দর বর্ননার মাধ্যমে পুরোটা দেখে নিলাম মনে হলো। নাটকটির অনেক বড় শিক্ষনীয় দিক রয়েছে, এখানে অল্পের জন্য মেয়েটি বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে। যাই হোক সুন্দর লিখনীর মাধ্যমে পোস্টটি উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
নাটকের মধ্যে আসলেই শিক্ষণীয় বিষয় আছে।এটা সমাজের খুবই বাস্তম ময় একটি কাহিনী কে তুলে ধরেছে।নাটকটি খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে।আপনাকে ধন্যবাদ নাটকটির রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
তানজিন তিশা বরাবরই দুর্দান্ত অভিনয় করে থাকে। এমন দালাল চক্র প্রায়ই নারী এবং শিশু পাচার করে থাকে। তাই বিদেশ যাওয়ার লোভে, কাউকে অন্ধ বিশ্বাস করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। জীবন একটাই, তাই যেকোনো কাজ করার আগে শতবার ভাবতে হবে এবং যাচাই করতে হবে। যাইহোক এতো সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
প্রথমেই বলে রাখি ভাই নাটকের নামটি পড়ে একটু হেসে পড়েছিলাম। শরবত, গুড়ে শরবত না বেলের শরবত ভাই। যাই হোক শরবত নাটকটির রিভিউ করে বেশ ভালো লাগলো। গল্পটি পড়ে বসলাম গল্পটি বাস্তব মুখী। বাস্তবে এ ধরনের ঘটনাগুলো আমাদের দেশে অহরহ ঘটে চলেছে। এসব নাটক গুলো মানুষের মধ্যে জাগ্রত করে তোলে। সব ঘটকনাগুলো কিভাবে ঘটে সেসব জিনিসগুলো এর মধ্য দিয়ে আমাদেরকে সতর্ক করাই। বর্তমানে নারীরা খুব বেশি দালাল চক্রের হাতে পড়ছে এবং তারা বিদেশে যাওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছে এবং তাদেরকে সর্বস্বান্ত করছে। সব মিলিয়ে নাটকটি দারুন কিছু আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছে। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
হি হি হি নাটকের নামটি শুনেই কিন্তু বেশ হাসলাম কিছুক্ষন। শরবত এ আবার কেমন নাম। অবশ্য তানজিন তিশার নাটকগুলো কিন্তু বেশ ভালোই লাগে। পারিবারিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত নাটকটির বেশ সুন্দর রিভিউ করেছেন দেখছি। বেশ ভালো লাগলো নাটকটি। একবার দেখবো তো।
শরবত নাটকটি এখনো আমার দেখা হয়নি। তবে নাটকের রিভিউ পড়ে নাটকটি দেখার ইচ্ছে হচ্ছে। তানজিন তিশার নাটকগুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর এই নাটকে তো দেখছি, তানজিন তিশ া একজন সহজ সরল মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। যে কিনা অন্ধের মত মজিদকে বিশ্বাস করে জাফরের কথা অনুযায়ী বিদেশ যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গিয়েছিল। তবে ভাগ্যের জোরে সোনিয়া অর্থাৎ তানজিন তিশা বিপদের হাত থেকে বড্ড বাঁচা বেঁচে গেছে। তা না হলে তাকে নারী পাচারকারীদের চক্করে পড়ে জীবনটাই বরবাদ করে দিতে হতো। যাক অবশেষে বাবা ও মেয়ে একসাথে থেকে জীবন পাড়ি দিবে এটা দেখে বেশ ভালো লাগলো। নাটকের সমাপ্তিটুকু খুব সুন্দর ছিল। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ দেয়ার জন্য।
তানজিন তিশার নাটকগুলো আমার অনেক ভালো লাগে। তবে শরবত নাটকটি এখনো দেখা হয়নি।আপনার পোষ্টের মাধ্যমে পুরো নাটকটি পড়ে নাটকটির সম্পর্কে বুঝতে পারলাম নাটকটি বাস্তবমুখী। চেষ্টা করবো নাটকটি দেখার জন্য। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।