ট্রেনের টিকিট নিয়ে এক তিক্ত অভিজ্ঞতা।
আজ - ৮ই অগ্রহায়ণ |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
![train-track-ga8a3438ad_1920.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbo2ziLimhQ1rUhA5Vns44kEHnmFqhf3v9PHpyoYwdAaD/train-track-ga8a3438ad_1920.jpg)
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
যাই হোক, নানা বিদেশ থেকে এসেছে মাসখানেক হতে চলল। প্রায় ৮ বছর পর এসেছে বাংলাদেশ। আর তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন। আর তাই আমরা ঢাকায় যাব নানাকে দেখতে সপরিবারে। অনেকদিন ধরে প্ল্যান রয়েছে ঢাকায় যাওয়ার তবে এই কাজে সে কাজে আর যাওয়া হয়ে উঠছিল না। একবার তো মাঝে ঢাকায় যাওয়ার এ বিষয়টি একেবারে ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছিল। আর এই পর্যন্ত কয়বার যে ঢাকায় যাওয়ার এই বিষয়টি ক্যানসেল হয়েছে তা আর হিসাব নেই। বিভিন্ন সময় একেকটি ঝামেলা চলে আসে সামনে। তাই তো এবারের ঢাকায় যাওয়া কিনবা না যাওয়া নিয়ে অনেক কনফিউশন ছিল। তবে অনেক ঝামেলার পর এবারে ঢাকায় যাওয়ার বিষয়টি কনফার্ম হয়েছে। এবং অবশেষে একটি নির্ধারিত ডেট ফিক্সট করা হয়েছে যাওয়ার জন্য।
যেহেতু সপরিবারে যাচ্ছি তাই বাসে যাওয়ার পরিকল্পনাটা বাদ দিয়ে দিয়েছি। সবাই মিলে একসাথে একই বাসে যাওয়াটা নিরাপদ বোধ করছিনা। তাই সকলে মিলে পরিকল্পনা করলাম ট্রেনে করে যাওয়ার। আর ট্রেন ভ্রমণের আলাদা একটা মজা রয়েছে। যারা ট্রেনে যাতায়াত করেছেন তারা নিশ্চয়ই সেটা জানেন। আর আমার কাছে বাস থেকে ট্রেনে যাতায়াত করাটা আনেকটা নিরাপদ মনে হয়।
তবে এখন আসল সমস্যা হচ্ছে ট্রেনের টিকিট পাওয়াটা। বাসের টিকিট যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে কাউন্টার থেকে কেটে নেওয়া যায়। তবে ট্রেনের টিকিট খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে অনেক আগে ট্রেনের টিকিট কাটলে সিট খালি পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই চেষ্টা করেছি সাপ্তাহ খানেক আগে ট্রেনের টিকিটটি কেটে রাখার। আর এখন যেহেতু অনলাইনের যুগ তাই ঘরে বসে যে কোন মুহূর্তে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট খুব সহজেই কেটে নেওয়া যায়।
আর তাই ট্রেনের টিকিট নেওয়ার জন্য "রেল সেবা " অ্যাপস টি ডাউনলোড করি। ওই অ্যাপসটিতে ছয়দিনের বেশি কোন টিকেট শো করছে না। তার মানে অনলাইন থেকে অগ্রিম ছয়দিনের বেশি টিকেট সংগ্রহ করা যায় না। তারা সর্বোচ্চ পাঁচ দিনে অগ্রিম টিকেট দিয়ে থাকে। তাই কি আর করার আমি অপেক্ষায় ছিলাম পরেরদিন টিকিটটা কাটার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় পরেরদিন দুপুরের দিকে আমি টিকিট চেক করছিলাম তখন দেখি সব টিকেট বুকিং হয়ে গেছে শুধুমাত্র দুই একটি সিট খালি আছে। আমি বিষয়টি দেখে বেশ অবাক হলাম। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সব টিকিট শেষ হয়ে গেল।
আসলে ব্যাপারটা হয়েছে অনেকে আমার মত বসেছিল ৫ দিন আগের টিকেট কাটবে বলে। এবং যখনই পাঁচদিনের অগ্রিম টিকিট টি খুলে দিয়েছে তখনই তারা টিকেট কেটে ফেলে সাথে সাথে । পরবর্তীতে আমি জানতে পারলাম রাত বারোটার পরে কিন্তু পাঁচদিনের ওই অগ্রিম টিকিটে খুলে ফেলেছিল।
আর যারা নিয়মিত অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটে তারা এ বিষয়টি খুব ভালোভাবে জানে। অনলাইনে টিকিট কাটার পূর্ব অভিজ্ঞতা আমার আছে তবে এরকম পরিস্থিতিতে কখনও পড়তে হয়নি। তাই আমার এসকল বিষয় খুব একটা জানা নেই। আর সব থেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমরা যেদিন এর টিকেট চাচ্ছিলাম ওই দিন পড়ছিল বৃহস্পতিবার। আর ওই দিন মূলত অন্যান্য দিন থেকে যাত্রীদের সংখ্যা বেশি থাকে।
যাইহোক, ঐদিনের জন্য অনলাইনে ট্রেনের টিকেট পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই ছিল না। তবে ট্রেনে যে প্রতিটি সিটি বুকিং ছিল তা কিন্তু নয় মাঝে কয়েকটি সিট ফাঁকা ছিল। তবে আমরা মানুষ হচ্ছি সাতজন। তাই আমাদের মাত্র এই কয়েকটি টিকিট দিয়ে কোন কাজেই আসবে না।
তবে এখানে একটি বিষয় রয়েছে তা হচ্ছে। অনলাইন এবং অফলাইনে অর্থাৎ কাউন্টারের টিকিটের সংখ্যা সমান সমান থাকে। অর্থাৎ ট্রেনে যদি ১০০টা সিট থাকে তার মধ্যে পঞ্চাশটি অনলাইনে থাকবে আর পঞ্চাশটা কাউন্টারে থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি সিট অনলাইন শো করা হয় না কিছু সিট কাউন্টারে রেখে দেওয়া হয়। রাত হয়ে গিয়েছিল তখন প্রায়ই তাই আর ঐদিন কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটা হয়নি। সকালে যাব কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে। তবে অনেকটাই আশঙ্কায় ছিলাম যে আদো টিকিট পাব কিনা। কারণ যেখানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে অনলাইনে সব টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছে আর সেখানে একদিনের ব্যবধানে কাউন্টার টিকিট শেষ হবেনা তা কে বলতে পারে।
তবে কাউন্টারে গিয়ে ঘটলো আরেক ঘটনা। একজনের কাছে টিকেট চাইলাম তিনি বললেন তাঁর কাছে টিকেট নেই অন্য আরেকজনের কাছে যেতে। অন্যজনের কাছে গিয়ে দেখি একই অবস্থা তিনি পাঠাচ্ছে আবার ঐ লোকটার কাছে। আর ওনাদের এসব কর্মকাণ্ডে দেখে আমি খুবই ভালভাবে বুঝতে পেরেছি ওনারা চাচ্ছে। ওনাদের কাছে টিকেট আছে অবশ্যই। তবে তারা এভাবে টিকিট দিবে না। ওনাদের হাত খরচা লাগবে। যদিও তারা সরাসরি সেটি বলছে না তবে ঘুরিয়ে পেচিয়ে তাই বোঝানোর চেষ্টা করছে । তাই কি আর করার টিকিটের দাম থেকে আরো কিছু টাকা বেশি দিয়ে আমি টিকেট কেটে নিই। যেহেতু টিকিটগুলো খুবই প্রয়োজন ছিল। এছাড়াও এখানে আরেকটি ঘটনা ঘটে সেটি হচ্ছে। তারা একজনকে চারটের বেশি টিকিট দিবে না। কিন্তু আমার টিকেট প্রয়োজন ছিল ৬ টির। আর তাই তাদেরকে এ বিষয়টির জন্য এক্সট্রা পেমেন্ট করতে হয়। আমি মনে করি প্রত্যেকটি যাত্রীর ক্ষেত্রে তারা একই কাজ করে। প্রথমে তারা যেকোনো যাত্রীকে বলবে টিকিট নেই শেষ হয়ে গেছে তবে পরবর্তীতে কিছু এক্সট্রা পেমেন্ট করলে তাদের থেকে ঠিকই টিকিট বের হয়ে যায়।
তো এই ছিল আমার ট্রেনের টিকিট কাটা নিয়ে মজার একটি অভিজ্ঞতা। সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহাফেজ। পরবর্তীতে অন্য কোন বিষয় নিয়ে হাজির হব।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/asa.png)
![](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmfRETShxA5EQdPmpF6ChkQd5MkXJPifATT3TZdvk5sEC1/standard_Discord_Zip.gif)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
টিকিট কাটা নিয়ে এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতা আমারও রয়েছে। রেলওয়ে ডিপার্টমেন্ট দূর্নীতিতে আগা গোড়া ঠাসা। সাধারণ মানুষ টিকিট সহজে পায় না তবে টাকা দিলে ঠিকই টিকিট পাওয়া যায়। যাক শেষ পর্যন্ত টিকিট পেয়েছেন এটাই সবথেকে বড় বিষয়। ধন্যবাদ ভাই অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।
আসলে একটা দিন নির্ধারণ করে বারবার বাতিল করলে সেখানে যেন যাওয়া হয়েই ওঠে না।কিন্তু ট্রেন ভ্রমন আসলেই বেশ মজার।সত্যিই খুবই ঝামেলার অনলাইনে টিকিট কাটা ।আর মানুষগুলো টাকা ছাড়া কিছুই করতে চায় না এটা আসলেই ঠিক নয়।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ট্রেনে গেলে বুঝা যায় আসলে দুর্নীতি কত প্রকার ও কিকি? আমি যেহেতু ট্রেন দিয়েই যাতায়াত করি এ ব্যাপারটা আমাট ভালো করেই জানা! আপনি বিষয়টি আগে থেকে জানলে হয়তো এমনটা হতো না। আর অনলাইনে সর্বোচ্চ চারটা টিকেট কাটা যায় এক ফোন দিয়ে। সেটাও আবার পাচঁদিন আগে। যাক, আমি মনে করি এরকম অভিজ্ঞতারও দরকার আছে। পরবর্তী সময়ে বুঝতে পারবেন বিষয়টা!
গত তিন মাস আগে আমি ও আমার অর্ধাঙ্গিনী ঢাকা গিয়েছিলাম। ঢাকা থেকে ফেরার পথে আমার অর্ধাঙ্গিনী কিছুটা অসুস্থ হওয়ার কারণে বাসে করে আসতে চাইলো না। তাই আমি ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে যেয়ে দেখি কোন প্রকার টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে দুই একজন বলছিল তাদের কাছে টিকিট আছে। কিন্তু চরা মূল্যে টিকিটগুলো কিনে নিতে হবে। যেহেতু আমার টিকিটটা লাগবেই তাই আমিও চড়ামূল্যে টিকিট কিনেছিলাম। তবে টিকিটগুলো দেওয়ার সময় তারাও আমাকে বেশ ভোগান্তিতেই ফেলেছিল। ভাইয়া, আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতা টুকু শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
আমরা যেখানেই যাই না কেন ভোগান্তির শেষ নেই। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদেরকে। অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়েও ঝামেলায় পড়েছিলেন আবার কাউন্টারে গিয়েও ঝামেলায় পড়েছিলেন। আসলে তাদের কাছে টিকিট থাকা সত্ত্বেও দিতে চায় না। ঘুরিয়ে পেচিয়ে তাদের হাত খরচের জন্য টাকা চায়। এই ঘুষ বাণিজ্য কবে যে বন্ধ হবে কে জানে। যাই হোক ভাইয়া অবশেষে টিকিট পেয়েছেন এটাই অনেক বড় বিষয়।
আমরা রাজশাহী টু ঢাকা আর ঢাকা টু রাজশাহী প্রায়ই যাতায়াত করি।যদিও এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি এখনও।আমরাও পাঁচ দিন টিকেট কেটে রাখি,ছুটির ছাড়া তা না হলে টিকেট পাওয়া অনেক মুশকিল।আর সিট নিয়ে ঝামেলা পরতে হয়,হয়ত জানালার পাশে পাওয়া যায় না,পেলেও উল্টো পরে।তারপরও বাস থেকে ট্রেন জার্নি টা বেশ ভালো।
দেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে এই ধরনের অব্যবস্থাপনা বিরাজমান। দায়িত্ব প্রত্যেকটা ব্যক্তির প্রধান উদ্দেশ্য থাকে কিভাবে মানুষকে বেকায়দায় ফেলে দু পয়সা বাড়তি ইনকাম করা যায়। এইসব দুর্নীতিবাজ লোকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত। আপনার কাছে হয়তো বাড়তি টাকা আছে তাদেরকে দেয়ার মত। কিন্তু অনেকেই আছে যাদের বাড়তি টাকা দেয়ার সামর্থ্য নাই। তাদের অবস্থাটা কি হয় একবার ভাবুন তো ? ট্রেনের টিকিট নিয়ে এই ধরনের ধান্দাবাজি ব্যবসা তারা দীর্ঘদিন থেকে চালিয়ে আসছে। জনগণ এদের কাছে পুরোপুরি জিম্মি। আপনার পোস্টটা পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ঘুষ ব্যাপারটা জাতির একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সরকারি কর্মচারী নামক জাতির।তারা ঘুষ ছাড়া কোন কাজই করতে চায় না। এটা শুধু বাংলাদেশ বলে নয় ভারতেও একই অবস্থা। তবে ভারতে টিকিট কাটার জন্য আপনি যেটা বললেন হাফ হাফ টিকিট থাকে, যেমন হাফ অনলাইন হাফ অফলাইন সেটা কিন্তু নয়।এখানে আপনি চাইলে অফলাইনেও কাটতে পারবেনা,অনলাইনেও কাটতে পারবেন।দুটোই অ্যাভেলেবেল। তবে টিকিট কাটার ভোগান্তি দেখলাম একই। কারণ ব্যাঙ্গালোর থেকে ভাই বাড়ি আসবে বলে ভেবেছিল কালীপুজোর সময়। অনেকবার চেষ্টা করল,অনেক দালাল দিয়ে চেষ্টা করা হলো,কোনোভাবেই টিকিট পেলাম না। একদম সঠিক একটা সমস্যা আপনি তুলে ধরেছেন জানিনা এটা আদৌ ঠিক হবে নাকি। সব দেশেই এই ধরনের মানুষগুলো রয়েছে। সরকারি চাকরি করলেই যেন এদের গায়ে একটা আলাদা চর্বি জন্মায়। কিসের চর্বি জানিনা।হয়তো চাকরি কোনদিন যাবে না সেই চর্বি।