কেন আমাদের জীবনে রাগ, দুঃখ, অভিমান এই সবকিছুর প্রয়োজন আছে।

শীত প্রায় শেষের দিকে ঠান্ডাটা ও আগের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে আস্তে আস্তে প্রকৃতি যেন বসন্তের রূপে সেজে উঠছে। আর প্রকৃতির এই বসন্তের সাজ আমি আমার বারান্দায় বসে দূরের সে গাছগুলো দেখে বুঝতে পারি। গাছগুলো কিছুদিন আগেও রুক্ষ-শুস্ক পাতাবিহীন মরা কাঠের মত ছিল। কিন্তু এখন দেখছি গাছগুলোতে ছোট ছোট কচি কচি পাতা জন্মেছে। আর একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন আমগাছে কিন্তু মুকুল আসতে শুরু করে দিয়েছে। শীত পেরিয়ে বসন্ত এসে গেছে এটাই তার একমাত্র প্রমাণ। সাধেই কি কবিরা বসন্তের প্রেমে পড়ে বারবার। আসলে বসন্ত খুবই সুন্দর। উপভোগ করার মতো একটি মাস। শীত ও না গরম ও না আলাদা এক অনুভূতি। তাইতো বসন্তকে ঋতুর রাজা বলে।

আজ সকালে কিছুটা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেছি। কেননা আজ ভ্যাকসিন দিতে যাব। অনেকদিন ধরে ভ্যাকসিন দিব দিব করে ভাবছিলাম কিন্তু কিছুটা ভয় সংকোচ এবং আলসেমির কারণে দেওয়া হচ্ছিল না। সকল ভয় এবং সংকোচ কাটিয়ে অবশেষে দুইদিন আগে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে নিলাম। আমার মতো যারা এখনো পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেন না তাদেরকে বলছি তাড়াতাড়ি দিয়েদিন আলসেমি করবেন না। তা না হলে পরবর্তীতে যেকোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। যদিও ভ্যাকসিন দিতে দুপুরের দিকে যাওয়া হবে তবে তাড়াতাড়ি উঠেছি যাতে সকালের কাজ গুলো সেরে বেরোতে পারি। এছাড়াও পোস্ট লেখার কাজ আছে। যদিও গতকাল রাতেই চেয়েছিলাম পোস্টের কাজটি সেরে রাখতে কিন্তু সেটি করে রাখতে পারেনি। তাই আজ সকালেই পোস্ট লিখছি। আমি বারোটার মধ্যেই আমার পোস্টি পাবলিস্ট করে ভ্যাকসিন দিতে বেরিয়ে পড়বো। যাই হোক,আমি সাধারণত সকাল নয়টার পরে ঘুম থেকে উঠি। তাই আজ তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে গিয়ে অনেক কষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমার এ কষ্টটা তারাই বুঝবে যারা একদমই সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারে না। বিছানা থেকে একবার উঠছি আবার শুয়ে পড়ছি ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। এই রকম করতে-করতে প্রায় অনেক সময় ব্যয় হয়ে গেছে। যাইহোক ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এখন পোস্ট লেখার কাজে বসে পড়েছি।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

যাইহোক, অনেক কথা বলে ফেললাম এবার মুল টপিকে ফিরে আসি। আমার আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে - সুখ ,দুঃখ, অভিমান, জেদ এই সব কিছু কেন আমাদের জিবনে প্রয়োজন।

আমরা সবসময় চিন্তা করি আমাদের জীবন যদি সব সময়ের জন্য সুখময় হতো তবে কতইনা ভাল হতো। জীবনটা অনেক সুন্দর হতো। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। জীবনে যদি দুঃখ না থাকে তাহলে সুখের মর্ম আমরা কখনোই বুঝতে পারবো না। কিছুটা আলো এবং অন্ধকারের মতো। অন্ধকার আছে বলেই কিন্তু আলোর দিশা পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি জীবনে সুখ বুঝতে হলে দুঃখের প্রয়োজন। মানুষ যখন অনেক দুঃখে থাকে তখন তার জীবনের ছোট্ট সুখগুলো অনেক বড় সুখে পরিণত হয়। কিন্তু মানুষ যখন সবসময় সুখে থাকে তখন তার সুখে থাকাটার উপলব্ধিটা আর থাকবে না। তাই জীবনে সুখের পাশাপাশি দুঃখের প্রয়োজন।

যারা আমাদেরকে কষ্ট দিয়েছে অথবা যাদের কারণে আমরা কষ্ট পেয়েছি অভিমানের কারণে সে সকল মানুষদের থেকে আমাদেরকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।তাই আমি মনে করি আমাদের জীবনে অভিমান থাকার ও প্রয়োজন আছে।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আমরা সব সময় বলি যে জেদ, রাগ মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু সেটি সবসময়ের জন্য নয়। কিছু কিছু রাগ, জেদ মানুষকে পরিবর্তিত হতে শেখায়। রাগ জেদের কারণে মানুষের মনে কোন কিছু করার প্রবল ইচ্ছা মনের মধ্যে জাগ্রত করতে পারে। সে রাগ এবং জেদকে কাজে লাগিয়ে কিন্তু মানুষ জীবনের সফলতা আনতে পারে।

তো চলুন রাগের কারণে একজন সফল হওয়া মানুষের গল্প আপনাদেরকে বলি। এ গল্পটি বানানো কোন গল্প নয় বরং আমার চোখে দেখা একটি সত্য ঘটনা। খুবই সংক্ষিপ্ত ভাবে গল্পটির মূল কাহিনী আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

৮ বছর বয়সী একটি ছেলে রেখে তার মা মারা যায়। তার কিছু বছর পর ছেলেকে দেখাশোনার করার জন্য তার বাবার একটি বিয়ে করে। এবং সে ঘরে তার একটি ছেলে হয়। সাধারণ ব্যাপার সৎমা কখনো নিজের মার মত হয় না। তার বাবা বিদেশে থাকে সেই হিসেবে ছেলের তেমন খোঁজখবর রাখতে পারেনা। কিন্তু সৎ মায়ের অমানবিক অত্যাচার দিন দিন বাড়তেই থাকে। ভালোমতো খেতে দেয়না ভালোভাবে পড়াশোনা করতে দেয় না। অথচ তার সৎ ভাইকে তার চোখের সামনে কত আদর যত্নে বড় করছে। আর এই সবকিছু দেখে সেই নিজের মধ্যে একটি জেদ তৈরি করে। সে ভালোভাবে পড়াশোনা করবে নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াবে এবং তার সৎমার এই অমানবিক অত্যাচার এর প্রতিশোধ নেবে। ছেলেটি কলেজে ওঠা পর্যন্ত তার সৎ মায়ের অত্যাচার অবিচার সহ্য করে সেখানে ছিল। এরপরে সে যখন কলেজে উঠে তখন যে হোস্টেলে চলে যায় প্রাইভেট টিউশনি করে নিজের খরচ নিজে চালাই এবং ভালোভাবে পড়াশোনা করে একসময় ভালো রেজাল্ট করে স্কলার্শিপ নিয়ে বিদেশে চলে যায়। আর সে এখন প্রতিষ্ঠিত। সমাজে তার ব্যাপক সুনাম অর্জিত হয়েছে। অথচ তার সৎ ভাই যাকে তার চোখের সামনে আদর-যত্নে বড় করেছে সে আজ বেকার।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আমি মনে করি ছেলেটি এতদূর আসতে পেরেছি তার জেদ এবং রাগের কারণে। সে যদি নিজে কিছু করার জেদ তৈরি না করতো তাহলে এত কষ্ট সহ্য করে জীবনে এতটা সফল হতে পারত না। তাই বলছি আমাদের জীবনের রাগ, জেদ এর প্রয়োজন আছে কিন্তু সেটা অবশ্য ভাল কাজে ব্যবহার করতে হবে।

তো বন্ধুরা তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছো কেন আমাদের জীবনে রাগ, অভিমান, দুঃখ কষ্ট সব কিছু প্রয়োজন আছে।

তো আজ এই পর্যন্তই সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||