স্পেশাল কাচ্চি বিরানী রেসিপি।
আজ- ১৪ই পৌষ | ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | | হেমন্ত-কাল | বুধবার |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
প্রথমেই বলে রাখি আজকেরে এই কাচ্চি তৈরি রেসিপিটি আমার কাছে খুবই স্পেশাল। কেননা এ কাচ্চি তৈরির পিছনে অনেক অনেক সময় ব্যয় করা হয়েছে। আর এই কাচ্চির টেস্ট অন্য যেকোনো কাচ্চির থেকে হাজারগুনে বেশি। যদি কেউ কখনো এই কাচ্চিটি টেস্ট করে দেখতে পারে তাহলে বুঝতে পারবে এর স্বাদ কতখানি।
কিছুদিন আগে ঢাকায় আমরা মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। তখন মামাকে বললাম মামা আমরা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সে কাচ্চিটি খেতে চাই। তখন মামা বলল আমি তোদেরকে বানিয়ে খাওয়াবো। তো যেমন ভাবনা তেমন কাজ। মামা তার সিক্রেট রেসিপি দিয়ে আমাদের কাচ্চি তৈরি করে খাওয়ালো। মামার কাচ্চি তৈরীর সময় সঙ্গে আমরা ভাগিনার ও ছিলাম মামাকে সাহায্য করার জন্য।
যাইহোক মামার কাচ্চিটি এখনো আমার মুখে লাগিয়েছে। আপনারা বিশ্বাস করবেন নাকি জানিনা কাচ্চিটি খেতে অসম্ভব মজা হয়েছিল। তাই ভাবলাম এই মজাদার রেসিপি টা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- পেঁয়াজ কুচি।
- মরিচের গুঁড়া।
- লবণ।
- তেল।
- জিরা বাটা।
- আদা বাটা।
- রসুন বাটা।
- পস্তর দানা।
- কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, কিসমিস , আলুবোখরা।
- আলু।
- এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা, কালো গোলমরিচ, সাদা গোলমরিচ।
- টক দই, মাওয়া, শাহী জিরা, মৌরি।
- জায়ফল, জয়ত্রী, ফুড কালার, জাফরান, ঘি।
- খাসির মাংস।
- চিনিগুড়া চাল।
- গুড়া দুধ।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
ধাপ-১ঃ
- প্রথমে বড় বড় সাইজের আলুকে কেটে ভালোভাবে ধুয়ে ফুড কালার মিশিয়ে নিব।
ধাপ-২ঃ
- এরপর একটি পাত্রে বেশ অনেকগুলো তেল সাথে এলাচ দারুচিনি, তেজপাতা দিয়ে একটি ক্যারামেল তৈরি করে নিব এরপর তেলগুলোতে আলু গুলো দিয়ে ভেজে নিব। আলু ভাজার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে আলুগুলো যাতে পুড়ে না যায়।
ধাপ-৩ঃ
- বিভিন্ন ধরনের বাদাম, পোস্তদানা, এলাচ, দারুচিনি, জয়ত্রী, জায়ফল, শাহী জিরা, জিরা, আরো অন্যান্য সব গোটা মশলা গুলোকে অল্প পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিব।
ধাপ-৪ঃ
- ভিজানো মসলাগুলো কে খুব ভালোভাবে শিলে পিসে নিব।
ধাপ-৫ঃ
- এরপর দুধের মধ্যে জাফরান ভিজিয়ে নিব।
ধাপ-৬ঃ
- এরপর খাসি মাংস গুলোকে ধুয়ে লবণ দিয়ে মেখে রাখব।
ধাপ-৭ঃ
- এর পর বেশ বড় সাইজের একটি পাত্র নেব। পাত্রের মধ্যে প্রথমে টক দই গুলোকে ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। এরপর ফুড কালার, গোলাপজল, সরিষার তেল ও অন্যান্য কিছু মসলা এর মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে মেখে নেব।
ধাপ-৮ঃ
- এরপর এরমধ্যে লবণ দিয়ে মেখে রাখা মাটন গুলো দিয়ে দিব। এরপর এতে আদা বাটা, রসুন বাটা, এবং শিলে বেটে নেওয়া মসলাগুলো ও দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিব।
মেখে নেওয়ার পর, উপর থেকে টমেটো সস এবং গোলাপজল দিয়ে দিব।
ধাপ-৯ঃ
- এরপর পূর্বের ভেজে রাখা আলুগুলো তেলসহ গরম গরম মেখে রাখা মাংসের মধ্যে ঢেলে দিব।
- মাংস গুলোতে মাওয়া দিয়ে দিব।
- এরপর বেরেস্তা দিয়ে দিব।
সবশেষে মাংসগুলোকে ভালভাবে ঢেকে তিন ঘন্টার জন্য ম্যাগনেট করতে রেখে দিব।
ধাপ-১০ঃ
- এরপর চিনিগুড়া চাল ২৫% হালকা লবন দিয়ে সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নেব। এরপর ভাত গুলোকে মাংসের ওপর দিয়ে দিব ঠিক নিচের ছবির মত করে। ভাতের ওপরে কিসমিস, বেরেস্তা, দুধে জাফরান এ গোলা পানি গুলো দিয়ে দিব। এরপর পাত্রের মুখ ভালোভাবে আটা দিয়ে সিল করে নেব। যাতে কোনভাবে ভাপ বাহিরে যেতে না পারে। ৪০ মিনিট ধরে মিডিয়াম আচেঁ কাঁচি গুলোকে রান্না করবো।
ধাপ-১১ঃ
- ঠিক চল্লিশ মিনিট পর পাতিলের ঢাকনা খুলে নেব। আপ খুলে সাথে সাথে একটি সুন্দর মিষ্টি ঘ্রাণে সারা বাড়ি ভরে যাবে।
ব্যাস এভাবে তৈরী হয়ে গেল অসম্ভব মজার একটি কাচ্ছি।
সকলকে ধন্যবাদ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরানি নামটা শুনে জিভে জল চলে এসেছে। কি বলবো আমার সবচেয়ে প্রিয় একটি কাচ্চি বিরানী। পুরান ঢাকার কাচ্চি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। কোথায় আছে মামা ভাগিনা যেখানে সমস্যা নেই সেখানে। আপনার কাচ্চি খেতে মন চাইছে আর আপনার মামা তার সিক্রেট কাচ্চি বিরানি তৈরি করে আপনাদেরকে খাওয়ালো। এবং কি আপনারা সাথে থেকে অনেক সহযোগিতা করেছেন আসলে ব্যাপারটা খুবই মজার ছিল। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই কাচ্চি বিরানি টা সেই লেভেলের মজা হয়েছে নিশ্চয়ই। আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এবং কি খেতে খুব ইচ্ছে করছে লোবনীয় একটি খাবার। আমাদের সাথে পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরানি ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ভাইয়া কি বলবো দেখেই জানি জিভে পানি চলে আসলো। এগুলো হচ্ছে সত্যি লোভনীয় রেসিপি। ভাইয়া প্রত্যেকটা ধাপ অনেক সহজ ভাবে তৈরি করে শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। রেসিপির কালার দেখে মনে হচ্ছে অনেক টেস্টি হয়েছিল খেতে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটা রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
কাচ্চির স্বাদ যে কতো মজা তা খেলে বোঝা যায় না।আমাদের এখানে কাচ্চি অনেক খেয়েছি।কিন্তু ঢাকায় গিয়ে কাচ্চি খাওয়া কখনো হয় নি।নিজের হাতে যে এতো সুন্দর ও লোভনীয় ভাবে কাচ্চি বানানো যায় তা আপনার পোস্ট না দেখলে বুঝতে পারতাম না।ধন্যবাদ ভাইয়া কাচ্চির স্বাদ মুখে ফিরিয়ে আনার জন্য।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Please consider to approve our witness 👇
Come and visit Italy Community
ভাইয়া কিছুদিন আগে আমার ফ্যামিলিকে নিয়ে লালবাগের কেল্লায় ঘুরতে গেছিলাম এবং তখন পুরান ঢাকার কাচ্চি মিস করি নাই। যখনই যাই তখনই খাওয়া হয়। আজকে আপনার এই কাচ্চি দেখে খুবই লোভনীয় মনে হচ্ছে এবং দেখতে অনেক ভালো লাগছে। প্রতিটা স্টেপ অনেক সুন্দর করে সাজিয়েছেন এবং অনেক কষ্ট করেছেন বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য এই স্পেশাল রেসিপি।
পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানি সকলের কাছে জনপ্রিয়। আপনার মামা অনেক দক্ষতার সাথে কাচ্চি বিরিয়ানি রেসিপি তৈরি করেছে ভাইয়া। দুপুর বেলায় এত মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করলেন দেখে খিদা লেগে গেল ভাইয়া। মন চাচ্ছে এখনই কাচ্চি বিরিয়ানি তৈরি করি। তবে একটাই আফসোস আমি কাচ্চি বিরিয়ানি তৈরি করতে পারিনা। অনেক সুন্দর করে প্রতিটি ধাপ উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই রেসিপি দেখে দেখে আমি অবশ্যই চেষ্টা করব মজাদার কাচ্চি বিরিয়ানি রেসিপি তৈরি করার। ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
ওয়াও ভাইয়া দেখে তো লোভ সামলাতে কষ্ট হচ্ছে 😛😛
আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন যা দেখে আমরা সবাই এটি সহজেই তৈরি করতে পারব। এটি তৈরি করতে অনেক সময় এর প্রয়োজন হয়, তাই খেতে ভারি মজা হয় 🙂
কাচ্চিতে সব সময় আমি পাগল। এত্তো বেশি মজা লাগে কাচ্চি বলার বাহিরে। আমার তো আপনার পোস্ট এর ছবি গুলো দেখেই খাইতে মন চাচ্ছে। কি যে করি। দোকান থেকে খাইতে হবে আরকি। ধন্যবাদ এতো সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য ।
সজীবের মুখে এই পুরান ঢাকার কাচ্চির যে কত গল্প শুনেছি। খাওয়া তো কখনো হয় নি। তবে আজ একটা স্পেশাল ধন্যবাদ দাদা আপনার জন্য। এই গোপন রেসিপি শেখার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। অনেক্ষন ধরে দখেলাম আর অনেক কিছু নোট করে নিলাম । দেখা যাক রায় বাবুকে খুশি করতে পারি কিনা 🤪🤪