আজকের ঈদের সকালটা আমার যেভাবে কেটেছে।

আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেছি একটু তাড়াতাড়ি। কেননা ঈদের দিন বলে কথা। যদিও সকাল সকালে ঘুম থেকে উঠা আমার জন্য একটু কষ্টকর। এছাড়াও এই রমজানের এক মাস প্রতিদিন দেরিতে ঘুম থেকে উঠায় এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যাইহোক ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে বসে পড়ি। অনেক কিছু রান্না হয়েছে আজ। আম্মু সারারাত ধরে অনেক রকমের নাস্তা বানিয়েছে যেমন, পুডিং, পাস্তা, সেমাই দিয়ে বিভিন্ন আইটেম, চিকেন রোল, ফালুদা আরো অনেক কিছু। তবে আমরা ঈদের দিন সকালে সাধারণত মিষ্টিমুখ করে থাকি। তাই সবার আগে সেমাই দিয়েই নাস্তা শুরু করলাম। আসলে এত সকাল সকাল তেমন একটা খেতে ইচ্ছে করছিল না কেননা টানা ৩০ দিন রোজা রাখার পর সকালের খাওয়াটাতে একটা অরুচি এসেছে।

আমাদের মসজিদে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে আটটায় । তাই নাস্তা সেরে গোসল করে প্রস্তুত হয়ে নি মসজিদে যাওয়ার জন্য। জামায়াতের সামনের কাতারে বসার জন্য অবশ্য তাড়াতাড়ি যেতে হবে তা না হলে একদমই জায়গা পাওয়া যাবে না। তাই বেরিয়ে পড়ি মসজিদে যাওয়ার জন্য। আসলে ঈদের দিনে সবথেকে আনন্দদায়ক একটি বিষয় হয়েছে পরিবারের সদস্যদের সাথে নতুন পাঞ্জাবি, টুপি ও সুগন্ধি লাগিয়ে ঈদের সালাত আদায় করতে যাওয়া। আর এই ঈদের সালাত আদায় করতে যাওয়ার কত যে আনন্দ তা নিশ্চয়ই আমরা সকলে জানি।

যাই হোক ঈদের নামাজ শেষে এলাকার কিছু বন্ধু এবং বড় ভাইদের সাথে কুশল বিনিময় করেই আর একটুও সময় অপচয় না করে চলে যায় আমার জিবনের আদর্শ এবং প্রিয় মানুষটির কাছে। আজ দীর্ঘ পাঁচটি বছর ধরে তাকে ছাড়া আমাদের ঈদ কাটছে । তাকে ছাড়া হাজার আনন্দ-বিনোদনের মধ্যেও কেন যেন শূন্যতার গিরে থাকে আমাদের মধ্যে। অন্যান্য সাধারণ দিনগুলোতে ভুলে থাকা গেলেও এই সব বিশেষ আনন্দ দিনগুলোতে যেন আরও বেশি করে মনে পড়ে তাকে । তাকে ছাড়া প্রত্যেকটা ঈদেই যেন আমাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। আমি যখন আমার প্রিয় মানুষটিকে দেখতে যায় তখন নিজেকে শক্ত রাখাটা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ে। তবে বহু কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়। কেননা আমি যদি ভেঙে পড়ি আমার পরিবারও ভেঙে পড়বে।

ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

যাই হোক ঈদের দিন তাই রাস্তাঘাটে তেমন যানবাহন নেই তাই হেঁটে হেঁটে বাড়ি আসতে হয়েছে । এরপর বাসায় এসে পরিবারের আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবদের সাথে মোবাইলে কিছুক্ষণ কথা বলি। অন্যান্য দিনগুলোতে ব্যস্ত থাকার কারণে আমাদের সবসময় সকল আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলা হয়ে উঠেনা তাই আমাদের উচিত ঈদের এই বিশেষ দিনটিতে হলেও খোজ খবর নেওয়ার।

সকলের সাথে কথা বলার শেষে কিছুক্ষান টিভি দেখি। আগে ছোটবেলায় ঈদের সময় টিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো আর সে সব কিছু দেখার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকতাম। টিভির চ্যানেলগুলোতে সাত দিনব্যাপী ঈদ আয়োজন চলত। আগে বিভিন্ন চ্যানেলে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ নাটক মুভি দেখানো হতো। এবং ঈদ উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান " ইত্যাদি " যেটা আমি এখনও দেখি। আমার খুবই ভালো লাগে কে কে আমার মত অপেক্ষা করছেন এবারের ঈদের "ইত্যাদি " অনুষ্ঠান টি দেখার জন্য। এছাড়াও " রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ " এই গানটি শুনলে যেন ঈদ ঈদ একটি ভাব আসে।

এই তো এভাবেই কেটেছে আমার আজকের ঈদের সকালটা। যদিও এখনো কোথাও যাওয়া হয়নি তবে বিকেলে হয়তো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে যাব। এবং কিছু আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতেও যাওয়া লাগবে। আসলে ঈদের দিনটিতে আত্মীয়-স্বজন পরিবার-পরিজন ছাড়া একদমই জমে ওঠে না।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।

|| Join the Discord Server for more Details ||