অলক্ষী নাটকের রিভিউ।
আজ - ২৯ই, জ্যৈষ্ঠ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | গ্রীষ্ম-কাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্ল এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | অলক্ষী |
---|---|
পরিচালক | রাফসান সানি । |
অভিনয় | মুশফিক আর ফারহান, পারসা ইভানা,রাশেদ ইমরান,আরিয়ানা আরিত্রা,সাগর হুদা , নিপুন আহমেদ , জয়নাল জ্যাক, আফরিন আনিস রহমান। |
দৈর্ঘ্য | ৪৩ মিনিট। |
ধরন | শিক্ষামূলক। |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ১৮.০৫.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
এবং এবারের সেই যখন জানতে পেরেছে তার পুত্রবধূ আবারো এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে তাই সে আগের সিদ্ধান্তই গ্রহণ করে। তবে তার পুত্রবধূ কোনভাবেই চান না তার এই সন্তানকে মেরে ফেলতে। সে তার কাছে হাত জোড় করে তার এই কন্যা সন্তানের প্রাণ ভিক্ষা চাই। কিন্তু কোন ভাবে সেই বিষয়টিকে মেনে নেয় না। এবং সে তার ছেলেকে আদেশ দেয় তার এই পুত্রবধূ এবং সে কন্যা সন্তানকে পুড়িয়ে মারতে। আর তা না হলে এখনই তার বাসা থেকে বের হয়ে যেতে।
কোন ভাবে প্রাণ ভিক্ষা পেয়ে তার পুত্রবধূ সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। নাজির আহমেদ এর পুত্রবধূর নাম মালা। সদ্য জন্ম নেওয়া এই কুলের শিশুটিকে নিয়ে মালা চলে যায় তার মামা বাড়ি। মালার এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই। জন্মের কিছু মাস পরেই তার বাবা মারা যায় এরপর তার মা ও মারা যায়। এখন এই পৃথিবীতে আপন বলতে শুধুমাত্র তার মামা। কিন্তু তার মামি কোনভাবেই তাকে রাখতে চাই না। তাই মালা তার এই সন্তানকে নিয়ে শহরে চলে আসে। শহরে এসো তার কয়েকবার বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু সেই সকল বিপদ কাটিয়ে তার পরিচয় হয় বকুল চাচা সাথে।
বকুল চাচারও এই পৃথিবীতে কেউ নেই তার এক মেয়ে ছিল ঠিক মালার মত। কিন্তু কোন এক কারণে সে মেয়ে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে এই বকুল চাচা তার বাড়িতে একাই থাকে। তবে মালা ও তার শিশু কন্যাকে পেয়ে সে তার নিজের মেয়ে এবং নাতনির মত করে আদর যত্নে বড় হতে থাকে । এক সময় বকুল চাচা মারা যায়। মালা সেলাইয়ের কাজ করে বিভিন্নভাবে তাদের সংসার চালাই ।
এদিকে দেখা যায় মালার মেয়ে অনেক বড় হয়ে উঠেছে সে এখন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু এত বড় একটি খুশির খবর শুনেও তারমানে খুব একটা আনন্দ নেই কেননা মেডিকেলে পড়ার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এসব টাকাগুলো কোথা থেকে জোগাড় করবে সে । কিন্তু মালা বলে এসব নিয়ে তার চিন্তা করতে হবে না বকুল চাচা তার জন্য অনেকগুলো টাকা রেখে গিয়েছেন তা দিয়ে তার পড়াশোনা হবে।
এদিকে দেখা যাই মালার স্বামী বেশ অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। এবং তার দ্বিতীয় ঘরে একটি ছেলে সন্তানও হয়েছে। তবে তার সেই ছেলে সন্তান তার বাবার প্রতি খুব একটা যত্নশীল নয়। আর এই বিষয়গুলো নিয়ে নাজির আহমেদ খুবই দুঃখ প্রকাশ করে। নাজির আহমেদ ঠিক করে তার ছেলেকে শহরে গিয়ে বড় ডাক্তার দেখাবে।
এদিকে দেখা যায়, কিছুদিন পরেই দেখা যায় মালার মেয়ে নিলু ডক্টর হয়ে গিয়েছে। এবং নীলুর বাবা ও দাদা তার চেম্বারে আসে । তাকে দেখাতে স্বাভাবিকভাবে নীলু তার বাবা এবং দাদাকে চিনতে পারে না। তবে কেন জানি নীলুর বাবাকে দেখে তার মনে হচ্ছিল অনেক দিনের পরিচিত। তাই নিলু তার বাবার কাছে তার বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে তার বাবা স্বাভাবিকভাবে তাকে তার বাড়ির ঠিকানা বলে। আর এই ঠিকানা শুনে নীলুর কেন জানি মনে হতে থাকে তার দাদুর বাড়ির কথা।
নিলু ছোটবেলা থেকে তার মায়ের কাছে জেনে এসেছে তার বাবা বেঁচে নেই। তাই নিলু তার মা মালার কাছে জানতে চাই কেন তারা দাদুর বাড়িতে যায় না। বছরে ১-২ বার তো তারা চাইলে দাদা বাড়িতে যেতেই পারে। তারা হয়তো এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই তবে তাদের কবর তো রয়েছে।
কিন্তু নিলুর মা মালা এ বিষয়টিকে এড়িয়ে যাই। এরপর নিলু একদিন চুপিচুপি তার মায়ের ব্যাগ থেকে তার বাবা ছবিটি বের করে নেয়।
এদিকে নীলুর বাবার অসুস্থতার কারণ ধরা পড়ে। নীলের বাবার দুটি কিডনি ও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই তাকে সুস্থ করতে হলে কিডনি জোগাড় করতে হবে। আর এই কিডনি ম্যাচ করার জন্য রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কাউকে প্রয়োজন। এই কথা শুনে নাজির আহমেদ বলে তার ছেলের জন্য কিডনি সেই দিবে। কিন্তু নিলু জানাই তার যেহেতু অনেক বয়স হয়েছে তাই চাইলে তা ছেলেকে সে কিডনি দিতে পারে না। রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কারো থেকে তার কিডনি জোগাড় করতে হবে। কিছুদিন তাদেরকে কিডনি জোকারের জন্য সময় দেওয়া হয়। নাজির আহমেদ তার নাতনি কে তার বাবার এই অসুস্থতার কথা জানাই। এবং সে অনুরোধ করে তার বাবাকে বাঁচানোর জন্য তার একটি কিডনি দিয়ে দিতে। কিন্তু ছেলে কোনভাবেই তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে তার বাবাকে বাঁচাতে চাই না। আর এমন কথা শুনে নাজির আহমেদ আফসোস করে যে এতদিন ধরে একটি নাতির জন্য সে কি না করেছে । অবশেষে কিনা তা নাতি এই প্রতিদান দিচ্ছে ।
এদিকে দেখা যায় নিলুর বাবা যখন তার কাছে চেকআপের জন্য আসে তখন নিলু বিষয়টি বুঝে যায় যে এ লোকটি তার বাবা। এবং শেষ খুবই রাগ করে তার মা তার সাথে এত বড় একটি মিথ্যে কথা বলার জন্য। তবে নিলুর ফ্রেন্ড শাওন তাকে সান্ত্বনা দেয়। এরপর নিলু সিদ্ধান্ত নেয় তার বাবাকে সে যে করে হোক বাচাবে প্রয়োজনে তার একটি কিডনি তার বাবাকে সে দিয়ে দিবে।
এরপর দেখা যায় বেশ অনেক বছর পর মালা তার শশুরের বাড়িতে আসে। শ্বাভাবিকভাবে মালাকে এত বছর পর তার শ্বশুর দেখে আবারও সে আগের মত রাগারাগি করে এ বাড়িতে আসার জন্য । কিন্তু এত বছর পর নীলর স্বামী মালা কে দেখে বেশ অবাক ও খুশি হয়। এরপর যখন তারা জানতে পারে এই সেই নিলু যাকে কিনা তারা একসময় মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু আজ সেই কন্যাই তার বাবার জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে। যেখানে তার পুত্র তার স্বার্থের কথা চিন্তা করেছিল। নাজির আহমেদ তার ভুলটি বুঝতে পারে। এবং সে তার পুত্রবধূর কাছে ক্ষমা চায়। এবং সে এটাও বুঝতে পারে ছেলে এবং মেয়ে দুটোই সমান। আর এখানে সকলের মান অভিমান ভুলে একত্র হওয়ার মধ্যেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
শিক্ষা
এটি একটি শিক্ষনীয় নাটক। কেননা এই নাটকে খুব সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে একটি মেয়ে হয়ে কিভাবে বাবাকে সাহায্য করেছে । আসলে প্রায় সময় আমরা সমাজে এমন কিছু চরিত্র দেখতে পায় যারা কিনা সব সময় বংশ রক্ষার ক্ষেত্রে একটি ছেলেকে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাদের চিন্তা ধারণা অনুযায়ী একটি ছেলে সব । সব সময় সমাজে ছেলেদেরকে তারা প্রাধান্য দিয়ে থাকে। একটি মেয়েও যে একটি ছেলের মতোই ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়টি তারা ধারণা করতে পারে না।
ব্যক্তিগত মতামত
ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে নাটকটি আমার কাছে মোটামুটি ভালো লেগেছে। খুব যে বেশি ভালো লেগেছে তা বলবো না। নাটকের কাহিনী আর খুবই সাধারণ ছিল এই নাটকের নতুনত্ব তেমন খুব একটা ছিল না। আর সব থেকে যে জিনিসটি কম ভালো লেগেছে সেটি হচ্ছে নাটকের সময়টা খুব দ্রুত কাটিয়ে দেয়া হয়। তবে নাটকের মিউজিকটি ছিল খুব সুন্দর। সর্বশেষ বলতে গেলে নাটকটি নাটকটা আমার কাছে এভারেস্ট লেগেছে আপনারা চাইলে দেখতে পারেন নাটকটি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
ভাইয়া, আপনার এই নাটক রিভিউতে বকুল চাচার মেয়েরা আত্মহত্যার বিষয়টি জেনে বেশ মন খারাপ হয়ে গেল আমার। তবে মালা ও তার মেয়েকে নিজের নাতনি বকুল চাচার দেখাশোনা করার কাজটি আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।