মাটির ব্যাংক।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ- ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




1000039123.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আরো কয়দিন আগে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ চোখে পড়লো একটি ভ্যান যেখানে কিনা মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করছে। এই যেমন, মাটির ব্যাংক, মাটির পাতিল, মাটির ঢাকনা,মাটির গ্লাস জগ এই সব। অনেকদিন ধরে একটা পরিকল্পনা করছিলাম মাটির একটি ব্যাংক নেওয়ার। তবে নেওয়া হচ্ছিল না। আসলে মনেই থাকে না তেমন একটা। তাছাড়া মনে থাকলেও দেখা যায় সুযোগও থাকে না। কেননা যাতায়াতের পথে এই ধরনের মাটির জিনিসপত্রগুলো নিয়ে লোকালে ওঠাটা অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ কেননা একটু এদিক সেদিক হলেই দেখা যায় এটা ভেঙে যায়। আর ঐদিন যেহেতু বাসার নিচেই ছিল তাই ব্যাংকটি কিনে সরাসরি উপরে বাসায় গিয়ে রেখে আসি। বর্তমানে প্লাস্টিকের ব্যাংকেও টাকা জমানো যায় তবে কেন জানি মাটির ব্যাংকে টাকা জমানোর আলাদা এক মজা আছে। টাকা জমানো শেষে এসে ব্যাংকটি কে ভাঙার আলাদা একটি মজা আছে।

ছোটবেলায় মাটির ব্যাংক নিয়ে অনেক অনেক মজার মজার ঘটনা আছে। আজ যেহেতু মাটির ব্যাংক নিয়ে কথা উঠেছে তো সেরকমই মজার কিছু অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।

ছোটবেলা থেকে কয়েনের প্রতি আমার বেশ দুর্বলতা ছিল। কয়েন জমাতে খুবই ভালো লাগতো। আসলে পায়ের জমানোর প্রতি এই এই ভালোলাগাটা বলতে গেলে আমি আমার আব্বুর কাছ থেকেই পেয়েছি। আব্বুকে দেখতাম কখনো খুচরা পয়সা খরচ করতে না। তিনি সবসময় খুচরো পয়সাগুলোকে এক জায়গায় জমা রাখতেন। আব্বু হয়তো আমাদের মত ব্যাংকে জামাতে না তবে দেখতাম বিভিন্ন বৈয়ামে পয়সা গুলো রেখে দিতেন । একবার তো আব্বু প্রায় আড়াই হাজার টাকারও বেশি পয়সা জমিয়েছে। আসলে ঘটনাটা অনেক পুরনো তখন কিন্তু আড়াই হাজার টাকা মানে অনেকটাই। তাছাড়া এই টাকাটা যদি পয়সা তে কনভার্ট করা হয় তাহলে বুঝতেই পারছেন সেটার পরিমাণ কতটুকু। আমাদেরও অনেকক্ষণ লেগেছে তো সেগুলোর গুনতে। এক টাকা দুই টাকা, পাঁচ টাকা এরকম করে আলাদা আলাদা অনেকগুলো বৈয়ামে আব্বু পয়সাগুলো জমিয়েছিলেন। যখন ওই সকল পয়সাগুলো একসাথে ঢেলে ছিল তখন যেন পয়সার একটা স্তুপে পরিণত হয়েছে। ওই বয়সটাতে এতগুলো পয়সা একসাথে দেখা অনেকটা বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল। অনেক আনন্দ পাচ্ছিলাম এবং ভালোলাগা ও কাজ করছিল। যাই হোক ওই পয়সা গুলো দেখা যেত বেশিরভাগ সময় নিজের কাছে রাখতাম এবং এক দুই টাকা করে খরচ করতাম। বিশেষ করে স্কুলের টিফিনে সেগুলো নিয়ে যেতাম।

আব্বুর পয়সা জমানোর অত ধৈর্যের থাকলেও আমাদের কিন্তু অতটা ধরে কখনোই ছিল না। তবে মাটির ছোট ছোট ব্যাংক কেনার প্রতি অনেকটা ভালো লাগা কাজ করতে। আর তখন প্রায় দেখা যেত মাটির ব্যাংক কেনার জন্য অস্থির হয়ে উঠতাম। বিশেষ করে মেলাতে গেলে মাটির ব্যাংক তো অবশ্যই কেনা হতো। আমার এখনো মনে আছে সর্বোচ্চ এক কিংবা দুই মাস ধরে পয়সা জামাতে পেরেছিলাম এর বেশি সময় ধরে ব্যাংকে টাকা রাখার ধৈর্যটা ছিল না । তাছাড়া মাঝে মাঝেই দেখা যেত যে টাকা বা পয়সা ব্যাংকের রেখেছি সে সেগুলো আবার খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বের করে ফেলতাম।

পয়সার ব্যাংকে রাখলে অস্থিরতা কাজ করতো ব্যাংকে কত টাকা হয়েছে সেটা দেখার। এখনো যদিও ব্যাংকে টাকা জমালে কত টাকা হয়েছে সেটি দেখার জন্য কৌতুহল থাকে তবে আগের মতো সেরকমটা নয়। তবে এখন যে মাটির ব্যাংকে নিয়েছে সেটা বেশ বড়। দেখা যাক এই ব্যাংকটি কতদিন পর্যন্ত না ভেঙ্গে রাখতে পারি। তবে পরিকল্পনা হয়েছে অন্তত কয়েক বছর ধরে টাকা জমানোর।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

এক সময় এরকম মাটির ব্যাংকে আমরাও পয়সার জমিয়েছি। কিন্তু সেই ব্যাংকের স্থায়িত্ব খুব বেশিদিন হতো না। কত টাকা জমেছে সেই আগ্রহে ভেঙে ফেলতাম। এখনকার বাচ্চারা তো এসব পয়সার কোনো দামই দেয় না। তারা এখন টাকা জমায় পিগি ব্যাংকে। যাই হোক ভাইয়া আপনি আপনার আব্বুর কাছ থেকে এই পয়সার জমানো শিখেছেন জেনে ভালো লাগলো।

 last year 

ছোটবেলায় আমিও মাটির ব্যাংকে টাকা জমিয়েছি। তবে অল্প কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর, মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে ক্রিকেট খেলার ব্যাট কিনে ফেলতাম। তাছাড়া মেলা আসলে তো মাটির ব্যাংক ভেঙ্গে, সেই টাকা দিয়ে মেলা থেকে পিস্তল কিনতাম। সেই দিনগুলো আসলেই বেশ মজার ছিলো। যাইহোক মাটির ব্যাংক কিনেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। আশা করি দীর্ঘদিন সেই মাটির ব্যাংকে পয়সা জমাবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাই।

 last year 

কথা ঠিক বলেছেন ভাই মাটির ব‍্যাংকে একটা আলাদা শান্তি কাজ করে যেটা ঐ প্লাস্টিকের ব‍্যাংকে পাওয়া যায় না। আপনি তো একমাস দুইমাস জমাতেন। আমি একসপ্তাহ বা ১৫ জমিয়ে বের করে ফেলতাম। আমার ধৈর্য একেবারেই ছিল না। তবে এখন মাটির ব‍্যাংকের ব‍্যবহার দেখা যায় না বললেই চলে।

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.29
JST 0.036
BTC 102442.31
ETH 3456.31
USDT 1.00
SBD 0.54