ডেঙ্গু জ্বর।steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ - ২রা শ্রাবণ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | বর্ষা-কাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




mosquito-gbfedb0fe8_640.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

কেমন আছেন সকলে? আশা করছি ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এখন চারিদিকে বেশ বাজে পরিস্থিতি, মোটামুটি কমবেশি সকলেই জ্বরে আক্রান্ত। আসলে সিজনের শুরুর দিকে এবং শেষের দিকে এই ভাইরাস জনিত জ্বর বেড়ে যায়। একজন কোন ভাবে জ্বরে আক্রান্ত হলে দেখা যায় পুরো ফ্যামিলিতে ছড়িয়ে পড়ে । এছাড়াও এখন ডেঙ্গুর প্রভাব তো রয়েছেই। কালকেও খবরে দেখলাম এক মায়ের আর্তনাদ তার সন্তানকে ডেঙ্গু জ্বরে হারিয়ে ফেলার সেই দুঃখে। আরেক মা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতাল অনিশ্চিত সম্ভাবনার মাঝে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। আসলে আমরা হয়তো এই খাবর গুলোতে মাত্র দুই মায়ের অবস্থা জানতে পেরেছি অথচ এমন হাজার হাজার মা তাদের দিন নেই রাত নেই ছুটে চলছে তাদের সন্তানের জীবনের আশায়। আসলে এই সকল নিউজগুলো এক দুই মায়ের নয় অনেক মায়ের একটি চিত্র বহন করে। আমরা ঘরে থেকে হয়তো এই জিনিসগুলো বুঝতে পারছি না। তবে একটি বারের জন্য মেডিকেল গিয়ে দেখলেই বুঝা যাবে কি খারাপ অবস্থা । মেডিকেলগুলোতে যেন জায়গায় নেই রোগীর কারণে।

আসলে আমরা ডেঙ্গু জ্বরটাকে যতটা হালকাভাবে দেখি এটি কিন্তু অতটা হালকা নয়। ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা আমি নিজ চোখে দেখেছি। আরো কয়েক বছর আগে এইরকম একটি সিজনে যখন কিনা ডেঙ্গু জ্বরের ছড়াছড়ি পুরো দেশে। ঠিক ওই সময়টাতে আমার এক খুব কাছে আত্মীয় ডেঙ্গুজ্বরে একান্ত হয়। ওই সময়টা ডেঙ্গু জ্বর এতোটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে আইসি গুলোতে পর্যন্ত জায়গা ছিল না।

আমার ওই আত্মীয়র জ্বর ওঠার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই দেখা যায় লাগামহীনভাবে জ্বর বেড়ে যাচ্ছে । সেই সাথে প্রচন্ড হাত পা ব্যথা এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে যার কারণে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ডাক্তার সঙ্গে সঙ্গে ইমারজেন্সি ভাবে টেস্ট করায়। ডাক্তার যা আশঙ্কা করছিল ঠিক তাই ঘটেছে , ইমারজেন্সি রিপোর্ট বের হলে জানা যায় রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে অর্থাৎ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত সে। তাই ডাক্তার সঙ্গে সঙ্গে জানাই এই রোগীকে বাসায় না রাখাই ভালো। মেডিকেলে ভর্তি করা উচিত।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায় এদিকে বাসায় আনানো হয়নি সঙ্গে সঙ্গে ডক্টরের চেম্বার থেকে মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। এরপর সব কিছু স্বাভাবিক ছিল জ্বর ও অনেকটাই কমে গিয়েছিল। সাঙ্গে ওষুধ পত্র তো চলছে আর প্রচন্ড পরিমাণে পানি, ডাব স্যালাইন খাওয়ার কথা বলে রোগীকে। বিকেলের দিকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক চলে তবে রাতের দিকে রক্তে প্লাটিলেট কমতে শুরু করে, প্রেসার একেবারেই লো হয়ে যায় এবং রোগের অবস্থা খুবই সিরিয়াস হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই বন্ডসই দিয়ে ওই রাতেই আইসিটি ভর্তি করানো হয় এই মুহূর্তে। আর রোগীকে রক্ত দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে এমনটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল আমাদেরকে। অবস্থা যেন খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যেতে থাকলো। রোগের এই এমন সিরিয়াস অবস্থা দেখে একেবারে আশা ছেড়ে দিয়েছে ডাক্তার, বলে দিয়েছে যে কোন মুহূর্তে যেকোনো খবর শুনতে হতে পারে আপনাদের। কারন এই সিরিয়াস অবস্থায় রোগীর বাঁচার আশঙ্কা অনেক কম থাকে। দুদিন আগেও তারা এই ধরনের রোগীরর পরবর্তীতে তারা আর রোগীকে বাঁচাতে পারেনি।

ওই মুহূর্তে এরকম একটি সংবাদ পাওয়ার পর সকলের মনের অবস্থা কিরকম হতে পারে তা নিশ্চয় আপনারে বুঝতে পারছেন। এদিকে যখন আইসিওতে নিয়ে যাওয়া হয় হয় তখন রাত প্রচুর প্রায় তিনটা কিংবা চারটা বাজে। আমিও বাসা থেকে ওই রাতেই দৌড়ে ছুটে যায় হসপিটালে । এবং আশেপাশে যারা ছিল সবাই ও রাতেই হসপিটালে চলে গিয়েছিল আর যারা দূরে ছিল তারা তো আসতে পারেনি। আসলে ডেঙ্গু রোগীদের কোন চিকিৎসা হয় না তাদের চিকিৎসা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, স্যালাইন এসব খাওয়ানো। এখানে ডাক্তারদের কোন কিছু করার থাকে না।

এভাবেই পুরো রাতটা কাটে। এরপর সময় যেতে থাকে এবং রোগীর অবস্থা ডাক্তাররা জানাই কিছুটা সুস্থ এবং রক্তের প্লাটিলেট কিছুটা আগে তুলনায় বেড়েছে। তারপর এখনো বলা যায়না ডেঙ্গু রোগীর সাধারণত তিন দিনের জন্য আশঙ্কা থাকে। এবার যত সময় যাতে থাকে সকলের দোয়ায় ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। এমন পর একদিন আই সি ইউ থেকে কেবিনের শিফট করা হয়। এবং তিন দিনের দিন বাসায় নিয়ে আসা হয়।

আসলে এই প্রথমবারের মতোই আমাদের ফ্যামিলিতে কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং তারা সিরিয়াস অবস্থা হয় এরপর থেকে আমরা বেশ সচেতন। আজও ঐ সকল দিনের কথা মনে পড়লে সত্যিই খুব ভয় লাগে। যাইহোক, সকালে একটু সচেতন থাকবেন এই ডেঙ্গু মশার কামড় থেকে।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

ঠিক বলেছেন ভাই, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর একটি ভয়াবহ মহামারীতে পরিণত হয়েছে। আমরা ডেঙ্গু জ্বরকে একটু হালকা ভাবেই দেখি কিন্তু আসলেই মোটেও হালকাভাবে দেখা ঠিক নয়। কারণ এই ডেঙ্গু জ্বরের কারণেই মানুষ খুব অল্প সময় মারা যাচ্ছে।

 last year 

আপনার আত্মীয়র অসুস্থতার কথা শুনে প্রথমে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ভাইয়া। আল্লাহ উনাকে আবারও সুস্থ হওয়ার তৌফিক দান করেছেন এটা সত্যি অনেক আনন্দের। আসলে এরকম পরিস্থিতিতে হয়তো কখনো পরিনি তাই বুঝতে পারছি না। তবে ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা সত্যিই অনেক মারাত্মক।

 last year 

বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা সত্যিই অনেক মারাত্মক। এই ডেঙ্গু জ্বর যখন প্রথম দিকে হয় তখন সেটাকে অতো সিরিয়াস পর্যায়ে নেইনি কিন্তু বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু জ্বর আমার মনে হয় করোনার থেকেও অনেক ভয়াবহ। আমাদের সবাইকে অনেক সতর্কতার সাথে থাকতে হবে। অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বর্ষাকাল আসলেই ডেঙ্গুর উপদ্রব বেড়ে যায়। এই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকায় সেখান থেকে ডেঙ্গু মশার জন্ম হয়। আমরা ঘরে থাকার জন্য এখনো তেমন বেশি বাহিরের পরিস্থিতি টের পাচ্ছি না। কিন্তু হাসপাতালে গেলে বুঝা যায় মানুষের অবস্থা কতটা খারাপ। সবার উচিত এই সময়ে খুব সাবধানে থাকা। এই রোগের তেমন কোনো ঔষধ আর চিকিৎসা নেই। আপনার আত্নীয়ের কথা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। হয়তো ওনার হায়াত আছে আল্লাহর রহমত আছে বলে এমন পরিস্থিতি থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পেরেছে।

 last year 

প্রতিবছর এই সিজনে অনেক আতঙ্কে থাকি। ঠিক এই সময় গত বছর আমার মেয়ের স্কুলের একটা ছাত্র মারা গিয়েছিল। তখন থেকে মেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে ডেঙ্গু কি অসুখ মা কিভাবে হয়? আমি যখন মেয়েকে বোঝায় দিলাম এটা অনেক ভয়ংকর মশার কামড়ে হয়। তখন থেকে তো মশারি ছাড়া একদম থাকতে চাইনা। তবে অসাবধানতার কারণেই এমন হয়ে থাকে। সুতরাং আমাদের সকলের উচিত অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে এবং প্রতিবেশীদেরকে সচেতন করে তুলতে হবে।

 last year 

বর্তমানে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা খুব বেড়ে যাচ্ছে।ভয় লাগে চারিদিকের খবরে।আপনার আত্নীয়ের খবর পড়ে তো ভয়ই লাগছিলো।যাক আল্লাহ তাকে শিফা দান করেছেন।এজন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া।আসলে আমাদের সকলের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।তবেই হয়তো মুক্তি মিলবে।ধন্যবাদ ভাইয়া খুব প্রয়োজনীয় একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ডেঙ্গু জ্বর খুবই মারাত্মক একটি জ্বর।যেটা শরীরের রক্তকে দূষিত করে ফেলে।আপনার আত্মীয় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল জেনে খারাপ লাগলো।সত্যিই কাছের মানুষ অসুস্থ হলে মন ভালো লাগে না।তাই সকলকে সচেতন হওয়া উচিত বেশি বেশি।ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56325.56
ETH 2374.82
USDT 1.00
SBD 2.33