"আক্ষেপ "নাটকের রিভিউ।
আজ - ৮ই, জ্যৈষ্ঠ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | গ্রীষ্ম-কাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্ল এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | আক্ষেপ। |
---|---|
পরিচালক | মাবরুর রশিদ বান্নাহ। |
অভিনয় | মুশফিক আর ফারহান, সামিরা খান মাহি, ফজলুর রহমান বাবু |
দৈর্ঘ্য | ৪৯.১৯ মিনিট। |
ধরন | সামাজিক । |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ২৫.০৪.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
পরবর্তীতে দেখা যায় এতক্ষণ ধরে সুখুর বাবা এসব কিছু স্বপ্ন ছিল। বাবার পাশে শুয়ে থাকা শুখুর আদো আদো ভাষায় "ব্বা" "ব্বা" ডাকে তার ঘুম ভাঙ্গে।
সুখুর বাবা শুকুর মুখে স্পষ্ট আব্বা আব্বা ডাক শোনার খুব ইচ্ছে। তাই সে সব সময় সুখুকে আব্বা ডাক শেখায়। কিন্তু সে কোন ভাবে স্পষ্ট আব্বা ডাকতে পারেনা।
সুখু একজন প্রতিবন্ধী। তার মা মারা গেছে অনেক আগে। কিন্তু তার বাবা কখনো তাকে অবহেলা করেনি। তার বাবা তাকে প্রচন্ড ভালোবাসে । সুখুর অবহেলা হবে এমন ভাবনায় সে কখনো দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য রাজি হয়নি।
সুখুর বাবার কাছে সুখুই সব। সুখু ভালো করে কথা বলতে পারে না হাঁটতে পারে না তা সত্ত্বেও সুখুর বাবা মনে করে সে অন্য সকলের থেকে ভালো এবং এবং তার মতে তার সন্তানই শ্রেষ্ঠ ।
পরিবার আত্মীয়-স্বজন অবহেলা করার কারণে শুকুর বাবা সুখুকে নিয়ে একা চড়ে বাসা বেধেছে। সেখানেই তারা থাকে এখন। সুখুর বাবার এক ভাই এমন এক বোন আছে। সুখুর বাবা তাদের সবার বড়। সে তার বাবার সকল সম্পত্তি গুলোকে যার যতটুকু প্রাপ্য কেউ অনুযায়ী সকলকে বুঝিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারপরও সুখুর চাচা এবং ফুফা সবসময় সুখুর বাবার পিছনে লেগে আছে তার সম্পত্তি গুলো তাদের নামে করে নেওয়ার জন্য। তাদের মতে সুখুর বাবার অবর্তমানে এই সম্পত্তিগুলো কে দেখাশোনা করবে কেননা সুখুত প্রতিবন্ধী। তাই সুখুর বাবার মৃত্যুর আগেই যেন সম্পত্তি গুলো তাদেরকে দলিল করে দিয়ে যাই। এছাড়া সে মারা গেলে সুখকে তো তাদেরই দেখাশোনা করতে হবে। কিন্তু সুখুর খুব ভালো করেই জানে তার অবর্তমানে তার সন্তানকে কেউ আদর যত্নে রাখবে না।
সুখুর এক ফুফাতো বোন আছে। সেই সুখুকে খুবই ভালবাসে। সেই সব সময় সুখুর সাথে ভালো ব্যবহার করে এবং তার ভালো চাই । কিন্তু সুখুর ফুফা তার মেয়ের সাথে সুখুরর মেলামেশার এই বিষয়টা কোনভাবে ভালো চোখে দেখেনা। এবং সব সময় নিষেধ করে সুখুর সাথে মেলামেশা করতে না করতে। কিন্তু সে কোনভাবে তার বাবার কথা মেনে নেয় না। সে শুধুমাত্র সুখুর জন্য ঢাকায় গিয়ে নার্সিং কোর্স করেছে। যাতে সে সুখুকে সুস্থ করে তুলতে পারে।
এদিকে দেখা যায় সুখুর বাবা ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে শুরু করেছে। সুখর বাবার মনে হতে থাকে সে আর বেশি দিন বাঁচবে না। কিন্তু তার একটাই চিন্তা তার অবর্তমানে তার সুখুকে কে দেখে রাখবে। এদিকে তার সম্পত্তি নিয়ে তার ভাই এবং বোনেরা যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছে তাতে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে তা আবর্তমানে সুখুর অবস্থা কেমন হতে পারে। তাই সে খুব চিন্তা ভাবনা করে তার সব সম্পত্তিগুলোকে তার বোনের মেয়েকে লিখে দিয়ে যাই। কেননা সে জানে তারপরে একমাত্র সেই সুখুকে দেখে শুনে রাখবে।
এরপর দেখা যায় কিছুদিনের মধ্যেই সুখুর বাবা মারা যায়। আর এখানে এই নাটকের সমাপ্তি ঘটে। এই নাটকটি সম্প্রতি সময়ের ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবং দর্শকের মানে ও বেশ ভালোভাবে জায়গা করে নিয়েছে। তাই দর্শকরা চাই এ নাটকের দ্বিতীয় পর্ব আসুক। তাই হয়তো পরবর্তীতে এই নাটকের দ্বিতীয় পাঠ বের হতে পারে। এখন আমি অপেক্ষায় আছি এই নাটকের দ্বিতীয় পর্ব দেখার জন্য। কেননা নাটকটা আমার খুবই ভালো লেগেছে।
শিক্ষা
একজন বাবা তার প্রতিবন্ধী সন্তানের ভালোবাসা কতটা মধুর হতে পারে এ নাটকে তা খুব সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে। এছাড়াও সমাজের চোখে একজন প্রতিবন্ধী সন্তানের বাবা হিসেবে কতটা লাঞ্চিত বঞ্চিত অপমানিত হতে হয় এ বিষয়টিও এখানে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা আশেপাশে বিশেষ কিছু শিশু আছে যারা অন্য আর চার-পাঁচটা শিশুদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং আলাদা। সেই শিশুদের আমাদের সমাজ কখনোই ভালোভাবে মেনে নিতে চাই না। এই সমাজ ঐ সকল সন্তানদের সাথে সাথে তার বাবা মা দেরকেও খুব একটা ভালো চোখে দেখেনা। কিন্তু সমাজ কখনো এটা মেনে নিতে চাইনা যে তার তো একটি জীবন আছে তাদের ভবিষ্যৎ আছে তাদের সমাজে স্থান আছে।
ব্যক্তিগত মতামত
এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবথেকে সুন্দর কিছু নাটকের মধ্যে এই নাটক রয়েছে। নাটকটি দেখতে দেখতে কখন যে নিজের অজান্তে চোখ ভিজে আসে তা বুঝতেই পারা যায় না। নাটকটিতে দেখানো হয়েছে একজন ভালো বাবা ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানের প্রতি এক অসাধারণ মায়া মমতা । যেখানে বাবার আক্ষেপ ছিল তার প্রতিবন্ধী সন্তানের কাছ থেকে আব্বা ডাকটি শোনার।
সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটি নাটক এটি। নাটকের গল্পটা যেমন অসাধারণ ঠিক তেমনি নাটকের প্রত্যেকটা আর্টিস্টের অভিনয় মন ছুয়ে যাওয়ার মত। প্রত্যেককে একেবারে নাটকের চরিত্রের সাথে মিশে গিয়েছে। আর ফারহান ও ফয়জুল হকের অভিনয়ের কথার কি বলবো। তাদের অভিনয়ের কথা যতই বলা হোক না কেন তাতে কম হবে। সর্বশেষ বলতে গেলে পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে বসে দেখার মত একটি নাটক এটি।
আক্ষেপ নাটকটি তে ফারহান এর অভিনয় মুগ্ধ করেছে। নাটকটি আমি দেখেছি আসলে মানুষ নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝে না। নাটকটিতে বাবা ছেলের ভালোবাসা আমার মন কেড়েছে। সত্যি এধরনের অভিনয়ের জন্য প্রশংসার দাবিদার। চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করেছেন। ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
আপেক্ষ নাটকটি আমি দুইবার দেখেছি ভাইয়া।আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে তবে অনেক বেশি কান্না করেছি।আসলেই বাস্তব জীবনেও বাবা নামক মানুষ সব সময় সেরা হয়ে থাকেন।আর সন্তানের জন্য নিজের সবটা বিলিয়ে দেয়😭😭😭।
আপেক্ষ রিভিউ দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছে ভাইয়া।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
আক্ষেপ নাটকটা আমি দেখেছিলাম। এই নাটকটির মধ্যে তার বাবার আক্ষেপ ছিল সন্তানের মুখ থেকে বাবা ডাক টা শোনার। আসলে ফারহানের নাটক গুলো আমি ভীষণ পছন্দ করি। তার অভিনয় আমাকে সবসময় মুক্ত করে। আসলেই আমাদের সমাজে বেশ কিছু মানুষ রয়েছে যারা আলাদা শিশুদেরকে অর্থাৎ অন্য শিশুদের থেকে কিছুটা আলাদা শিশুদেরকে একেবারে সহ্য করতে পারেনা এবং তাদের মা-বাবাকেও ভিন্ন চোখে দেখে। তারা মনে করে এরকম সন্তান এবং পরিবার সমাজে না থাকাই ভালো। সত্যি এরকম নাটক গুলো দেখলে অজরে কান্না চলে আসে। চোখ দিয়ে জল পড়ে। খুবই সুন্দরভাবে নাটকটার রিভিউ তুলে ধরলেন। সম্পূর্ণটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।
মাঝেমধ্যে নাটক দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর ফারহানের নাটকগুলো আমার বেশ পছন্দের। এ নাটকটি আমার এখনো দেখা হয়নি। তবে আপনি খুব সুন্দর নাটকের রিভিউ দিয়েছেন তা পুরোটা পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সময় করে নাটকটি দেখব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ফারহানের নাটক দেখতে বরাবরই আমার ভীষণ ভালো লাগে। এই নাটকের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে ফারহান দুর্দান্ত অভিনয় করেছে। আসলে সন্তান যেমন ই হোক না কেন,প্রতিটি বাবা মা সন্তানদের খুব ভালোবাসে। নাটকটি সময় করে দেখতে হবে। নাটকের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ফারহানের নাটক দেখতে আমি বরাবরই ভীষণ পছন্দ করি। ফারহানের অভিনয় খুবই সুন্দর হয়। আক্ষেপ নাটকটার রিভিউ আপনি বেশ সুন্দরভাবে লিখেছেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাজিয়ে গুছিয়ে। একজন ভালো বাবা ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানের প্রতি মায়া মমতা এই নাটকটিতে খুবই সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে এবং কি তার বাবার আক্ষেপ ছিল সন্তানের মুখ থেকে বাবা ডাকটি শোনার। আসলে বাবা এমন একজন ব্যক্তি যার গুরুত্ব সবার আগে। সত্যিই বাবারা এরকমই হয়। এই নাটকটার মূল কাহিনী বাস্তবের সাথে অনেকটাই মিলিত। ভালো লাগলো সম্পূর্ণ নাটকটির রিভিউ। নাটকটা আমার কাছেও ভীষণ ভালো লেগেছে তাই আমিও দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
নাটকের নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পুরো নাটকের দুঃখের বিষয়বস্তু।আপনি সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন ভাইয়া,বাংলাদেশের নাটক বরাবরই আমার কাছে ভালো লাগে।তাছাড়া প্রতিবন্ধী সন্তান সমাজের বোঝা হয় এটাই সকল মানুষের চিন্তাধারা।যার ফলে তার বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে।খুবই ভালো নাটকটি,বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।