মুভিতে বিয়ের পর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সন্তান পছন্দ হওয়া সত্তেও পরপর ৪ টি মেয়ে হয়েছে। ছেলে না হওয়ায় আব্দুর রাজ্জাকের মন অনেক খারাপ এবং পরিবার বড় হওয়ার কারনে সংসার এর খরচ চালাতে আব্দুর রাজ্জাক দুবাই যায় আয় বাড়ানোর জন্য। দুবাই যাওয়ার কিছুদিন আগে আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ফাতিমা আবার গর্ভবতী হয় এবং তার কয়েক মাস পর আব্দুর রাজ্জাকের আরেকটি সন্তান জন্ম হয়, তবে এবার ছেলে সন্তান জন্ম হয়।ছেলের নাম রাজ্জাকের ইচ্ছামত রাখা হয় ফাইজি । ৫ম সন্তান জন্ম দেয়ার পর ফাইজির মা ফাতিমা মারা যায়। তারপর আব্দুর রাজ্জাক তার ৫ বাচ্চা নিয়ে দুবাই চলে যায়।
দুবাই গিয়ে ফাইজি তার বোনদের সাথে বড় হয়। সে তাদের সাথে রান্নাঘরে রান্নার কাজ করতে পছন্দ করত কিন্তু তার বাবার এই কাজ পছন্দ হত না। ফাইজি দেখতে দেখতে বড় হয়ে যায়। তার বাবা বোনদের এক এক করে বিয়ে দিয়ে দেয়। ফাইজি ঘরে একা একা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিল। পরে তার বাবার ইচ্ছামত সে সুইজারল্যান্ড থেকে ডিগ্রি নিয়ে লন্ডন সেটল হয়ে গেছে। পরে তার বোনেরা বুদ্ধি খাটিয়ে তাকে দুবাই নিয়ে আসে বাবার পছন্দ মত মেয়ে সাহানা কে বিয়ে করার জন্য। অন্যদিকে ফাইজি একজন ব্রিটিশ মেয়েকে পছন্দ করে। মেয়ে দেখতে গিয়ে বের হল ফাইজি হোটেল ব্যবসা করবে না সে বাবুর্চি (সেফ) হয়েছে। তাই শুনে তার বাবা রাগ করে তার সব কার্ড পাসপোর্ট নিয়ে যায়। উপায় না পেয়ে সে কিছুদিনের জন্য ইন্ডিয়াতে তার দাদার কাছে থাকতে যায় এই ভরসায় যে তার বোনেরা সব উদ্ধার করে দিবে। তার দাদা সমুদ্রের পাড়ে একটি ছোট হোটেল চালায় যার নাম উস্তাদ হোটেল।
পরদিন ফাইজি তার দাদার হোটেল এ নাস্তা খেতে গেলে তার দাদা তার সাথে হোটেল এর সব স্টাফ দের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।তারপর তার দাদা তাকে একটি গাড়ীর চাবি দিয়ে চালাতে বলে এবং একটি জায়গাতে নিয়ে যায়। সেখাবে তার দাদা তাকে চাউলের বস্তা পীঠে করে গাড়ীতে রাখতে বলে।
পরদিন থেকে তার দাদা তাকে হোটেল এর কাজে লাগিয়ে দেয় যেমন টেবিল মুছা। মাঝে তার বাবা হঠাৎ এসে দেখে টেবিল তার ছেলে টেবিল মুছে এবং খুব রেগে যায়। ফাইজি তার বাবা চলে যাওয়ার পর মন খারাপ করে সমুদ্রের পার বসে থাকে এবং তার দাদা এসে তাকে সান্তনা দেয়। পরদিন তার দাদা তাকে পাশের একটি ফাইভ স্টার হোটেলে চাকরির জন্য রেফার করে। ফাইভ স্টার হোটেল এর এক্সিকিউটিভ সেফ ফাইজির দাদা করিম চাচার রিকমেনডেসান দেখে খুব খুশি হয় এবং সাথে সাথে তার চাকরি হয়ে যায়। সে ফাইভ স্টার হোটেলের পরিবেশ দেখে খুব খুশি হয়। চাকরি পেয়ে সে দাদা কে মিষ্টি খাওয়াতে গিয়ে দেখে তার দাদা হোটেলের স্টাফদের বেতনের বাইরেও অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছে। তার পাশাপাশি করিম মাধুরাই (তামিল নাড়ুর একটি জেলা) তে প্রতি মাসে একটি ভাল পরিমানের টাকা পাঠায়। কথা বলতে বলতে ফাইজি কীভাবে তার এত বড় ফাইভ স্টার হোটেলে চাকরি হল জানতে চাইলে তার দাদা একটা রান্নার রেসিপির (মাল্ভারি বিরিয়ানি) কথা বলে যা ঐ ফাইভ স্টার হোটেলে খুবই পরিচিত। রেসিপিটি করিম ফাইজিকে গোপনে বলে।
সেফ ফিলিপ নামে একজন ইউরোপিয়ান সেফ এসে ফাইজির রান্নায় খুব মুগ্ধ হয়। এর মদ্ধে ক্রিস্টিনার সাথে ফাইজির ব্রেক আপ হয়। একদিন বন্ধুদের সাথে পার্টি তে গিয়ে আবার সাহানার সাথে দেখা হয়ে যায় এবং তাদের দুজনের সক্ষতা তৈরি হয়। করিম চাচা খুব চিন্তায় পরে যায় কারন তার হোটেলের নামে তোলা বড় পরিমাণের একটি লোণ পরিশোধের তারিখ শেষের দিকে চলে আসে। ফাইজি এবং তার দাদা সমুদ্রের পাড়ে বসে চা খেতে খেতে হোটেলের লোণ সহ জীবনের আরও অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করে। পরদিন সাহানা করিম চাচার হোটেল এ এসে করিম চাচার সাথে সখ্যতা বাড়ায় ফাইজির সাথে ভাব বাড়ানোর জন্য এবং দুজনের ভালবাসা আরও গভীর হয়।
ফাইজি খুজে বের করে তারই হোটেল মালিক তার দাদার উস্তাদ হোটেলের প্রপার্টি দখল করার জন্য জাল দলিল বানায় এবং তা নিয়ে সে তার হোটেল মালিকের সাথে আলাপ করে কোন সমাধান না পেয়ে হট টক করে বেরিয়ে যায়। তারপর ফাইভ স্টার হোটেল মালিক চক্রান্ত করে উস্তাদ হোটেলে মরা বিরাল রেখে ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিন এর লোক দিয়ে বন্ধ করে দেয়। পরে করিম ফাইজিকে নিয়ে বিচের পাশে খোলা আকাশের নিচে উস্তাদ হোটেল নামে হোটেল খোলে। এর মধ্যে সেফ ফিলিপ ফ্রান্স এ ফাইজিকে একটি ভাল সেফের অফার দেয় এবং ফাইজি খুব খুশি হয় এবং যাওয়ার তৈরি করে।
করিম চাচা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে হসপিটাল এ ভর্তি হয়। করিম চাচা ফাইজি কে মাধুরাই গিয়ে তার বন্ধুকে মাসের টাকাটা দিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করে এবং সাথে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে করিম চাচা বন্ধুকে তার নাতিকে খাবার কাদের জন্য বানানো হয় তা শিখাতে বলে। করিম চাচার বন্ধু ফাইজিকে নিয়ে যাদের জন্য খাবার বানায় সেখানে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে ফাইজির ধারনাই পালটে যায়। ফাইজি গরিব মানুষের জন্য খাবার বানিয়ে তাদেরকে নিজের হাতে খাওয়াতে গিয়ে সেফের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারে। ফাইজি দাদার কাছে এসে এবং শুনে তার দাদা না বলে দূরে কোথাও চলে গেছে। তারপর তার বাবা এসে তাকে সান্তনা দেয়। মুভির লাস্ট মোমেন্টে দেখা যায় ফাইজি ফ্রান্স না গিয়ে তার দাদার উস্তাদ হোটেল খুব ভালভাবে চালাচ্ছে।
দুলকার সালমান পুরো ছবিতে খুব ভাল অভিনয় করেছে। ছবিটি দেখে আমার রেটিং যদি দেই তাহলে আমি দিব ১০ এ ৯।
আজকে আপনি আমাদের মাঝে যে মুভি রিভিউটি শেয়ার করেছে যে মুভিটি আমি বেশ কিছুদিন আগে দেখেছিলাম। খুবই সুন্দর একটা মুভি এটা। এই মুভিটা থেকে আমি একটা জিনিস শিক্ষা নিতে পেরেছি সেটি হচ্ছে মানুষ যতই শিক্ষিত হোক না কেন তার পছন্দের কর্মটা করা অনেক আনন্দের। যা আমরা এই সিনেমার নায়ক চরিত্রের কাছ থেকে দেখতে পেয়েছি।
এই ছবিটি আমার কাছে অনেক ভাল লেগছে, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। শুধু সাক্সেস এর পিছনে ছুটলেই হবে না, মানুষের চাহিদার কথাও ভাবতে হবে।