লেভেল ওয়ান হতে আমার অর্জন - by @miratek

আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আমি মীর আতিক আল ফারুক (steemit id: @miratek) abb-school এর ২১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আমি “আমার বাংলা ব্লগের“ সকল সদস্য, শিক্ষকগন ও এডমিন প্যানেল এ যারা আছেন তাদের শুভকামনা জানাই। একজন ব্লগার কে অনেক নিয়ম মেনে ব্লগ লিখতে হয়। কি কি নিয়ম ও বিষয় মাথায় রেখে ব্লগ লিখতে হবে বিশেষ করে “আমার বাংলা ব্লগ” কমিউনিটিতে তা @abb-school এর শিক্ষকগণ লেভেল ওয়ান এর ক্লাস এ অত্যন্ত সুন্দরভাবে এবং গুছিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন।তারা আমাকে এই কমিউনিটি সম্পর্কে অনেক সুন্দর ধারণা দিয়েছেন তার জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। ক্লাস চলাকালীন আমার একটি বিষয় খুব ভাল লেগেছিল তা হল শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষকমন্ডলীদের সাবলীল আচরণ ও কথা । লেভেল ওয়ান এ আমি যেসব বিষয় শিখতে পেরেছি তার কিছু ধারণা আমি নিচে ধারাবাহিক ভাবে উপস্থাপন করছি।

প্রশ্ন ১। স্টিমিট কি এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার থেকে কেন এটি বৈশিষ্ট্যসূচক?

উত্তরঃ স্টিমিট একটি রিওয়ার্ড ভিত্তিক ব্লগিং প্লাটফর্ম যেখানে একজন ব্লগার তার সময় ও ক্রিয়েটিভিটির যথাযথ মূল্যায়ন পেয়ে থাকেন। অন্য সোশ্যাল মিডিয়া গুলো জনপ্রিয়তা অর্জন করে ব্লগার দের মাধ্যমে এবং যা ভ্যালু যুক্ত হয় তা নিজেরা নিয়ে সমৃদ্ধ হয়। অন্যদিকে স্টিমিট ব্লগার দের প্রতিটি পোস্ট, লাইক, কমেন্ট এর মূল্যায়ন করে এবং তার প্রাপ্য টা টোকেন হিসেবে বন্টন করে।

প্রশ্ন ২। ব্লগ চেইনের কিছু প্রাথমিক ধারনা

উত্তরঃ আমরা স্টিমিটে যে সকল কাজ করে থাকি অর্থাৎ লাইক , কমেন্ট ,শেয়ার ,পোস্ট এবং ট্রান্সফার এই সবগুলো কাজ বিন্যস্ত অংশে সংরক্ষণ করে রাখা হয়, কারো হাতে বা কেন্দ্রীযে কোন জায়গায় না।এগুলো যে লেজারের মাধ্যমে জমা হয় ,তাকেই ব্লক চেইন বলে ।উদাহরণ দিয়ে যদি বলি, স্টিমিটে প্রতি তিন সেকেন্ড পর পর একটি করে পোস্ট জমা হয় এবং প্রতিটি পোস্ট এ ৪০ টি করে লাইক ,কমেন্ট পরে। এই পোস্ট, লাইক, কমেন্ট গুচ্ছ আকারে জমা হয় এবং প্রত্যেকটি গুচ্ছ কে একেকটি ব্লক বলে। । ধাপে ধাপে এসব ব্লক একটির সাথে আরেকটি জমা হয়ে একটি চেইন তৈরি করে ,তাই একে বলে ব্লক চেইন ।

প্রশ্ন ৩। কোন ধরনের কার্যক্রম স্প্যামিং বলে গন্য হয়?

উত্তরঃ কোন অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে অনৈতিকভাবে বার বার পোস্ট করাকে স্প্যামিং বলা হয়ে থাকে । স্প্যামিং বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। নিচে কিছু উদাহরণ দেয়া হল-
১। একই ঘটনা বিভিন্ন ভাবে বার বার বলা বা দেখানো। যেমন কেউ যদি বিভিন্ন
রেসিপি এর পোস্ট দেয় কিন্তু সেই পোস্টসমূহে একই ছবি বার বার দেখায়
সেটি স্প্যামিং।
২। পোস্ট এ কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বার বার মেনশন দিয়ে যাওয়া স্প্যামিং এবং
এই বেপারটি কে স্প্যামিংয়ের সবচেয়ে খারাপ দিক বলে গণ্য করা হয়।
৩। প্রাসঙ্গিক পোস্ট এর সাথে প্রাসঙ্গিক ট্যাগ ব্যাবহার না করাকেও স্প্যামিং
বলে। ধরুন আপনি হিল্ ট্র্যাভেল এর বেপারে পোস্ট করবেন কিন্তু আপনি
ট্যাগ দিচ্ছেন রেসিপি নিয়ে সেক্ষেত্রে ইহা স্প্যামিং।
৪। একই কমেন্ট বার বার বিভিন্ন পোস্ট এ দেখানো ও স্প্যামিং হিসেবে ধরা হয়।

প্রশ্ন ৪। ফটো কপিরাইট সম্পর্কে ধারনা কি ?

উত্তরঃ ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি বা কোন ডিজিটাল প্রপার্টি নকল থেকে রক্ষা করার জন্য যে আইন বা নীতি তাকে কপিরাইট বলে। ফটো কপিরাইট হলো, কারো তোলা ছবি ব্যবহারের আইন। স্টিমিট যেহেতু আমাকে যথাযথ মূল্য দিচ্ছে, তাই অন্যের কপিরাইট করা কোনো ছবি বা আর্ট ব্যবহার করলে তা ফটো কপিরাইট আইন এর বিপরীতে যাওয়া হবে। তবে অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখান থেকে বিশেষ প্রয়োজনে কপিরাই ফ্রি ছবি ডাউনলোড করে পোস্ট এ ব্যাবহার করা যায়, কিন্তু সেটাতে অবশ্যই সোর্স ব্যবহার করতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে কোন প্রকার জলছাপ যুক্ত ছবি ব্যবহার করা যাবে না।

প্রশ্ন ৫। তিনটি ওয়েবসাইটের নাম লিখুন, যেখান থেকে কপিরাইট ফ্রি ফটো সংগ্রহ করা যায় ।

উত্তরঃ নীচে তিনটি কপিরাইট ফ্রি ছবি ডাউনলোড করার সাইট এর নাম দেয়া হলোঃ
https://pixabay.com
https://www.pexels.com/
https://unsplash.com

প্রশ্ন ৬। পোস্ট করার সময় ট্যাগ কেন ব্যবহার করতে হয় এবং কিসের ভিত্তিতে ট্যাগ নির্বাচন করতে হয়?

উত্তরঃ পোস্ট করার সময় আমাদের ট্যাগ ব্যবহার করতে হয়। স্টিমিট বা আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করার সময় একেবারে শেষ দিকে যে ঘরটা আসে সেটি হচ্ছে ট্যাগ অংশ যেখানে ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে। আমরা যেমন ফেইসবুক এ ট্যাগ ব্যবহার করি এটি অনেকটা এরকমই। কোন ব্লগ পোস্ট করার সময় যে বিষয় সম্বন্ধে লিখা হচ্ছে তার বিশেষ কিছু মূল শব্দ উল্লেখ করতে হয় যাকে ট্যাগ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ কেউ যদি ভ্রমনের পোস্ট করেন, সেখানে travel, tour ,bangladesh,visit ইত্যাদি শব্দ ট্যাগ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যখন ট্রাভেল শব্দটি ট্যাগ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন এটাতে ক্লিক করলে যারাই ট্রাভেল বিষয়ে পোস্ট করেছে তাদের সবার পোস্ট এক সাথে দেখা যাবে। স্টিমিটে কিছু ট্যাগ লেখার নিয়ম কানুন আছে ,যেমন -
• এখানে কোন বড় হাতের অক্ষর লিখা যাবে না
• মেইন বডিতে ট্যাগ ব্যবহার করলে # চিহ্ন দিতে হবে।
• নিউমেরিক্যাল সংখ্যা ১, ২, ৩ ইত্যাদি লিখতে পারবেন না।
• ট্যাগ লেখার ঘরে # চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে না।
• কোনো নগ্ন ছবি, প্রাণী হত্যা, শুকর ও গরুর মাংসের রেসিপি ও দুর্ঘটনা বা মুমুর্ষ অবস্থার
ছবি ব্যবহার করলে nsfw ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে।

প্রশ্নঃ ৭। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কি কি বিষয়ের উপর পোস্ট লেখা নিষিদ্ধ?

উত্তরঃ
• আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে ধর্ম, রাজনীতি ও নারী বিদ্বেশ মূলক অথবা নারী নির্যাতন সমর্থন করে এরকম পোস্ট করা
নিষিদ্ধ।
• পশু পাখি নির্যাতনমূলক কোন ছবি বা ভিডিও শেয়ার করা যাবে না।
• অবৈজ্ঞানিক মিথ্যা গুজব কুসংস্কার এসব ধরণের পোষ্ট কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
• কবুতর এর মাংসের, গরুর মাংসের, শুকর এর মাংসের রেসিপি নিয়ে পোস্ট দেয়া নিষিদ্ধ।
• শুধুমাত্র বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় এখানে লেখা যাবে না ।
• রোমান হরফে বাংলা লেখা এখানে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ।
• আমার বাংলা ব্লগে প্রকাশিত কোনো পোস্ট পুনরায় অন্য কোথাও শেয়ার করা যাবে না।
• চাইল্ড পর্নোগ্রাফিক যে কোনো কনটেন্ট শেয়ার করা যাবে না।

প্রশ্নঃ ৮। রি রাইট আর্টিকেল কাকে বলে? রি রাইট আর্টিকেল এ কি কি উল্লেখ থাকতে হবে?

উত্তরঃ কিছু বিষয় আছে যার উপর লেখালেখি করতে গেলে অন্য কোন মাধ্যম বা সাইট থেকে তথ্য নিতে হবে। সেই মাধ্যম বা সাইট থেকে তথ্য নিয়ে নিজের মত করে সাজিয়ে লিখাকে রিরাইট বলে ।
কেউ যদি মহাকাশ নিয়ে লেখতে চায় তাহলে তথ্যগুলো অবশ্যই কোন না কোন অথেন্টিক সোর্স থেকে নিতে হবে। রি রাইট এর ক্ষেত্রে আপনার নিজের লেখা হতে অন্তত ৭৫ শতাংশ থাকতে হবে এবং বাকি অংশ সোর্স থেকে নিতে হবে। রেফারেন্স সোর্স অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে। আর্টিকেল এর সাথে জড়িত কোন ইমেজ ব্যাবহার করলে তা ফটো কপিরাইট ফ্রী ইমেজ হতে হবে এবং সোর্স উল্লেখ করতে হবে।

প্রশ্নঃ ৯। প্লাগিয়ারিজম সম্পর্কে ধারনা কি

উত্তরঃ অন্যের কোন লেখাকে নিজের বলে চালিয়ে দেয়া অথবা কিছুটা পরিবর্তন করে নিজের লেখা বলে চালিয়ে দেওয়াকে প্লাগিয়ারিজম বলে। প্লাগিয়ারিজম লেখার ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রযোজ্য হয়। কেউ একজন তার মেধা ও শ্রম দিয়ে পোস্ট তৈরি করল আর আমরা কোন পরিশ্রম না করে তার সেই পোস্ট শেয়ার করে লাভবান হচ্ছি। কারো জিনিস না বলে নেওয়া যেমন চুরি তেমন অন্যের লেখা না বলে নেওয়া চুরি। এই চুরির ডিজিটাল নাম হলো প্লাগিয়ারিজম । কারো লেখা যদি আপনার পছন্দ হয় সেক্ষেত্রে তার লেখা থেকে ৩০ শতাংশ নিয়ে বাকিটা আপনি নিজের ধারনা থেকে লিখতে পারেন এবং সেই ৩০ শতাংশের সোর্স উল্লেখ করতে হবে। প্লাগিয়ারিজম আর কপিরাইট ইনফ্রিঞ্জমেনএকই না। কারো লেখা চুরি করা হচ্ছে প্লাগিয়ারিজম আর সেই লেখা পোস্ট করে যদি কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হয় তখন তা কপিরাইট আইন এর মধ্যে পরে।

প্রশ্নঃ ১০। একটি পোস্ট কখন ম্যাক্রো পোস্ট হিসেবে গণ্য করা হয়?

উত্তরঃ একটি পোস্টে কমপক্ষে ২৫০ শব্দ থাকা প্রয়োজন। কোন পোস্ট এ যদি ১০০ শব্দের নিচে থাকে এবং একটা বা দুটি ছবি দিয়ে পোস্ট করা হয় তাহলে তা ম্যাক্রো পোস্ট হিসেবে গণ্য হবে। যারা বার বার ম্যাক্রো পোস্ট করবে তাদের spammer হিসেবে গণ্য হবে।

প্রশ্নঃ ১১। প্রতি ২৪ ঘন্টায় একজন ব্লগার সর্বোচ্চ কতটি পোস্ট করতে পারবে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে ?
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতি ২৪ ঘন্টায় একজন ব্লগার সর্বোচ্চ ৩ টি পোস্ট করতে পারবে।

প্রশ্নঃ ১২। আপভোট,ডাউনভোট ও রিস্টিম কি ?

উত্তরঃ কারো পোস্ট ভাল লাগলে যে ভোট দেয়া হয়, একেই আপভোট বলে । যদি পোস্ট ভাল না লাগে তবে ডাউনভোট দেয়া হয়। যদি অতিরক্ত না হয়ে যায় আমার বাংলা কমিউনিটি ডাউনভোট পছন্দ করে না । কারো কাছে কোন পোস্ট ভাল লাগলে, তা রিস্টিম করে দেয়ালে রাখা যেতে পারে।

প্রশ্নঃ ১৩। রিওয়ার্ড পুল ও পে-আউট কি?

উত্তরঃ যখন আপনি কোন একটা পোস্ট করেন কিংবা কমেন্ট করেন সেটিতে যে লাইক পড়ে সেটার রিওয়ার্ড আপনি সাথে সাথে পাবেন না। যতটুকু লাইক পড়ে ততটুকু রিওয়ার্ড পুলে জমা থাকে। যতক্ষণ না পর্যন্ত এটা আপনার ওয়ালেট এ আসছে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি এটার মালিক নন। কোন একটা পোষ্ট এবং কমেন্ট করার ঠিক ৭ দিন পর সেটি পেআউট হয়। আর পেআউট হয়ে গেলে সেটি সাতদিন পরে আপনার ওয়ালেট এ জমা হয়ে যাবে আর পে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত সেটি আপনার নয় এবং তার রিওয়ার্ড পুলে ভার্চুয়ালি আপনার নামে বুক হয়ে জমা থাকবে।