গল্প।। লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি। পর্ব ০৫।। 10% beneficiary to @shy-fox
পঞ্চম পর্ব
লোপা অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিল সে শাহেদের সাথে ভালবাসায় আবদ্ধ চায়। যদিও তার বাবা মেনে নিবে না কিন্তু কেন যেন সেও শাহেদের প্রেমে পড়েছে। পরদিন লোপা অফিসে গিয়ে চুপচাপ বসে কাজ করছে। এর মধ্যে একজন কলিগ এসে লোপাকে জিজ্ঞেস করল তুমি কি শাহেদ স্যার কে পছন্দ কর? লোপা চিন্তা করল মাত্র গতকাল রাতে ডিসিশন নিলাম তাও আমি নিজেই এখনো সিউর না এরা কোথা থেকে জানল। যাই হোক লোপা অস্বীকার করে না বলে দিয়েছে। যথারীতি লাঞ্চ টাইমে লোপার ডাক এসেছে। লোপা এবং শাহেদ দুজনে লাঞ্চ করছে। কিন্তু লোপা কেমন যেন আনমনে বসে আছে। শাহেদ জিজ্ঞেস করাতে বলল আচ্ছা আমরা যদি প্রেম করি তাহলে কি এই অফিসের সবাই আমাকে লোভী মনে করবে? শাহেদ মনে হয় বিশ্বাস করতে পারছে না। শাহেদ খাওয়া থেকে উঠে লোপাকে জড়িয়ে ধরে বলল তাহলে তুমি রাজি? লোপা বলল আমারও আপনাকে সেই প্রথম দিন থেকেই ভাল লেগেছে। তবে হ্যা আপনাকে আমার কাছে কোন পরীক্ষা দিতে হবে না কিন্তু আমার বাবার কাছে আপনাকে পরীক্ষা দিতে হবে। শাহেদ জিজ্ঞেস করল কি ধরনের পরীক্ষা? লোপা বলল আমার বাবা খুব সহজ সরল মানুষ কিন্তু খুব স্ট্রিক্ট এবং রুলস্ রেগুলেটেড। আপনাকে আমার বাবার কাছে পছন্দের হতে হবে এবং সেটা আমার বাবা আপনার সাথে কথা বলেই বুঝতে পারবেন। শাহেদ বলল ঠিক আছে আশা করছি আমি পাশ করে যাব।
লোপা শাহেদ কে বলল অফিসে কিন্তু জানাজানি করা যাবে না। আর হ্যা আমি ভাল কোন জব পেলে বা বিজনেস করতে পারলে এখানে আর জব করব না । শাহেদ বলল এজ ইউর উইশ। লোপাকে শাহেদ বলল গাজীপুরে আমাদের একটি বাংলো বাড়ি আছে। সেখানে নেক্সট ফ্রাইডে আমাদের পারিবারিক গেট টুগেদার আছে। যেহেতু আমার বাবা মা নেই সেহেতু আমার বোন সব আয়োজন করবে। আর আমার বোন লিমা তোমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছে। লোপা বলল আমি যাব না আমার খুব নার্ভাস লাগছে শুনে। শাহেদ বলল আরে না সে খুব মাটির মানুষ, তোমাকে ঠিকই আপন করে নিবে।
শুক্রবার সকালে শাহেদ তার মার্সিডিজ গাড়ি নিয়ে লোপার বাসার সামনে হাজির। লোপাকে ফোন দিয়ে বলতেই লোপা ব্যাগ নিয়ে নিচে চলে এসেছে। ব্যাগ নিয়েছে কারণ সেখানে পিকনিকের মত হবে। শাহেদ লোপাকে নিয়ে চলে এল তাদের বাংলো বাড়ির ভিতরে। বাড়িতে ঢুকতেই একজন সুন্দরী মেয়ে এসে শাহেদ কে জড়িয়ে ধরল এবং এবং হাতে ধরে ভিতরে নিয়ে গেল। লোপা কিছুই বুঝল না। সে চিন্তা করল শাহেদ বলল বোন খুব মাটির মানুষ কিন্তু ভদ্রতাই ত দেখাল না। আমাকে রেখেই ভাই কে নিয়ে ভিতরে চলে গেল? এই কথা ভাবতে ভাবতেই কেউ একজন এসে লোপার হাত ধরে বলল তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আমার জীবন বাঁচানোর জন্য। লোপা দেখল আরেকজন সুন্দরী মেয়ে এসে কথা বলতে বলতে লোপাকে হাত ধরে ভিতরে নিয়ে যাচ্ছে। লোপা বুঝেছে এটাই শাহেদের বোন। লোপা কথা থেকে বেশি শাহেদের দিকে নজর। লিমা জানে শাহেদ লোপাকে পছন্দ করে তাই বলল সে হচ্ছে লিথি। সে শাহেদের ছোট বেলার বন্ধু। সে আমেরিকায় থাকে এবং তার বাবার ব্যবসা দেখে। তবে তোমার চিন্তার কারণ নেই। লিমা শাহেদকে পছন্দ করলেও শাহেদ লিমাকে ছোটবেলার বন্ধু হিসেবেই জানে। লোপা কিছুটা স্বস্তি পেলেও মেয়েদের মন বলে কথা। অন্য একটি মেয়ে এসে শাহেদকে জড়িয়ে ধরবে, হাত ধরে হাটবে এটা কি মানতে পারে? কিছুক্ষণ পর শাহেদ গ্রুপের ডিরেক্টর এবং একাউন্টস ডিরেক্টর ও এসেছে। শাহেদ লোপাকে লিথির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। লোপা হাসিমুখে কথা বলার চেষ্টা করল কিন্তু লিথি খুব একটা পাত্তা দিল না।
তারা সবাই মিলে ব্যাডমিন্টন খেলেছে, কেরম খেলেছে, জমি থেকে সবজি পেরেছে, দুপুরে সুইমিং পুলে গোসল করেছে। সবাই ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। শাহেদ লোপার পাশে বসেছে কিন্তু লিথী এসে শাহেদ কে অন্য চেয়ারে পাঠিয়ে লোপা আর শাহেদের মাঝে বসেছে। লোপা আসার পর থেকেই খেয়াল করেছে লীথি লোপার সাথে খুব একটা ফ্রেন্ডলী না। শাহেদও এই ব্যাপারটা খেয়াল করেছে। লিমা লোপাকে অনেক আপ্যায়ন করে খাইয়েছে। লিমা যখন লোপাকে শিং মাছ তুলে দিচ্ছিল তখন শাহেদ এবং লোপা দুজনেই হেসে দিয়েছে। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে তারেক এবং তুহিনও হেসে ফেলেছে। লিমা মন খারাপ করার আগেই তুহিন মানে লিমার হাসবেন্ড লোপাকে প্রতিদিন শিং মাছ খাইয়ে খাইয়ে বিরক্ত করে ফেলার কথা বলাতে লিমাও হেসে দিয়েছে।
বিকেলে শাহেদ আর লোপা বাংলোর বাহিরে ছাউনির নিচে চেয়ারে বসে কফি খাচ্ছিল। বাকিরা সব বার বি কিউ এর প্রিপারেশন নিচ্ছিল। হঠাৎ লীথী এসে লোপা আর শাহেদের মাঝে একটি চেয়ার পেতে বসে পড়েছে। এইবার শাহেদ লিথিকে স্পষ্ট করে বলল যে তুই সেই সকাল থেকে লোপার সাথে ঠিকমত কথা বলছিস না, লোপা একদিকে থাকলে তুই আরেকদিকে থাকিস, খাবারের টেবিলে আমার আর লোপার মাঝে বসেছিস, আবার এখানেও একই কাজ করেছিস। কেন এমনটা করছিস? লিথি বলেই বসল শাহেদ তুই জানিস না আমি তোকে কত ভালবাসি? শাহেদ এবার রেগে গিয়ে বলল তুই ছোটবেলা থেকেই আমার বন্ধু এবং আমি তোকে লিমার মতই বোনের মত দেখি। আর আমি জীবনে একজনকেই ভালবেসেছি সেটা হচ্ছে লোপা। এই বলে শাহেদ উঠে লোপার হাত ধরল। লিথি তখন রেগে কেঁদে সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা বাসায় চলে গেল। রাতে আর বার বি কিউ হয়নি। শাহেদ লোপাকে তার বাসায় পৌছে দিল এবং নামার সময় বলল লিথির মধ্যে অনেক ছেলেমানুষী আছে তুমি কিছু মনে করবে না। এবার শাহেদের লোপার বাবার সাথে দেখা করার পালা।
চলবে...
আশা করছি আমার গল্প লোপার ভালোবাসা প্রাপ্তি এর পঞ্চম পর্ব আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।
চলবে মানে খুবই সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। লোপার বাবার সাথে দেখা করার পর কি হবে আর লিথী বা পরবর্তীতে কি করবে জানার অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু আমার গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
লিথির এই ব্যবহারের কারণে লোপা হয়তো কিছু না বলতে পারে কিন্তু লোপার মনে অনেক কষ্ট জেগে গিয়েছে। লিথি সকাল থেকে তাদের দুজনের মাঝে এভাবে ব্যবহার করছে এটার জন্য লোপার কষ্ট হওয়ারই কথা। যদিও সে কাউকে বলেনি। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তার খুবই খারাপ লেগেছে। পরের পর্বে কি হবে তা দেখার অপেক্ষায় থাকবো কারণ শাহেদ লোপার বাবার সাথে দেখা করবে। অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ আপু পুরো গল্প পড়ে খুব ভাল মন্তব্য করার জন্য।
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। লোপা ও শাহেদের ভালোবাসার মধ্যে লিথি আবার কোন ঝামেলা না করে। লোপা কেনো আমার মনে হয় কোন মেয়েই লিথির পাগলামি মেনে নিতে নারাজ। দেখা যাক পরবর্তী লোপার বাবা কি বলে ও লিথির কি হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
লোপা তাহলে শাহেদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল। এটা শুনে আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। লোপা মনে মনে শাহিদ কে ভালোবাসতো শুরু থেকে। খুবই ইন্টারেস্টিং হচ্ছে যত পর্ব পড়ছি। এর পরের পর্বে লোপার বাবার সাথে দেখা করতে আসবে শাহেদ তা পড়ার জন্য একটু বেশি আগ্রহী। খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব শেয়ার করবেন আশা করছি। ভালো থাকবেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।