গল্প।। লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি। পর্ব ০১।। 10% beneficiary to @shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। গত সপ্তাহে আমার একটি চলমান গল্পের শেষ পর্ব শেয়ার করেছি। আপনারা অনেকেই খুব ধৈর্য সহকারে আমার সবগুলো পর্ব পড়েছেন। গল্প লিখতে লিখতে আমার এখন মাথায় গল্প ঘুরে। তাই এই সপ্তাহে আরেকটি গল্প লেখা শুরু করেছি। আমি সেই গল্পের প্রথম পর্ব আজ শেয়ার করছি। আমার আজকের গল্পের নাম লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি।


north-sea-7504745_1920.jpg

সোর্স pixabay

পর্ব ০১

লোপা কিছুদিন হল অনার্স পাশ করেছে। সে এখন বেকার। লোপা খুব সাদাসিধে মেয়ে। পরিবারে ছোট এক ভাই আছে যে হাই স্কুলে পড়ে । লোপা পরিবারের বড় মেয়ে। লোপার বাবা একজন টেইলার এবং উনার নিজস্ব টেইলার্স আছে। লোপা অনার্স পাশ করার পর ঢাকা এসেছে চাকরির খোঁজে। লোপা তার বাবা মা ভাই কে ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্ট দিতে চায়। সে পড়াশোনায় ভাল কিন্তু একটু বেশি সহজ সরল। সরলতার কথা যদি বলি সে স্কুল কলেজে থাকতে তার টিফিন নিয়ে অন্যরা খেয়ে ফেলত কিন্তু সে কিছু বলত না। তার নোটস নিয়ে অন্যরা পড়ত সে কিছু বলত না । যাই হোক ঢাকায় এসেছে প্রায় ৬ মাস হয়েছে। কিন্তু এখনও জব হয়নি। লোপা তার এক কাজিন মিম এর সাথে উঠেছে। একদিন লোপার কাজিন পেপারে এড দেখে লোপাকে বলল সাহেদ গ্রুপে একাউন্ট ডিপার্টমেন্ট এ লোক নিবে। তোর একাডেমিক রেজাল্ট ভাল, তুই আবেদন কর। লোপা বলল কোন সাহেদ গ্রুপ? যারা বাংলাদেশের টপ ৩ গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির মালিক? মিম উত্তরে বলল হ্যা সেই সাহেদ গ্রুপ। মিম বলল জানিস এই গ্রুপের চেয়ারম্যানের নাম শাহেদ এবং সে খুব ইয়াং এন্ড হ্যান্ডসাম। লোপা বলল ছোট ছোট কোম্পানি আমাকে নিচ্ছে না আর জায়ান্ট শাহেদ গ্রুপ আমাকে নিয়োগ দিবে? শুধু শুধু সিভি প্রিন্ট করার টাকা নষ্ট করে লাভ নেই। মিম বলল এত জায়গায় সি ভি দিচ্ছিস এইখানে একটি সিভি দিলে সমস্যা কোথায়? আমার মনে হচ্ছে তোর হয়ে যেতে পারে। লোপা মাথা ঝাকিয়ে না করল। মিম বলল তুই না দিলেও আমার কাছে তোর সাইন করা সিভি আছে সেটা সাবমিট করে দিব। লোপা উত্তরে বলল তোর যা ইচ্ছা কর। পরদিন মিম সত্যি সত্যি লোপার সিভি সাবমিট করে দিল।

love-7003314_1920.jpg

সোর্স pixabay

রাত এগারোটা বাজে। লোপার বাসার কলিংবেল ভেজে উঠলো। মিম দরজা খুলতেই দেখল দুজন লোক স্যুট পড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের একজন জিজ্ঞেস করল আপনি কি মিস লোপা? মিম বলল না লোপা আমার কাজিন, সে ভিতরে আছে। এর মধ্যে লোপা এসে শুনল এবং বলল আমি তো আপনাদেরকে চিনি না। ভদ্রলোকদের একজন বললেন আমি শাহেদ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর তুহিন। আমরা আপনাকে অ্যাকাউন্ট ডিপার্টমেন্টে নিয়োগ দিয়েছি। লোপা এবং মিম যেন আকাশ থেকে পড়ল। তারপর অন্যজন বললেন আমি শাহেদ গ্রুপের একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর তারেক। বলেই তিনি তার আইডেন্টিটি কার্ড দেখালেন যেন লোপা বিশ্বাস করে। তারেক লোপাকে বলল আপনার ব্লাড গ্রুপ এবি নেগেটিভ তাই না? লোপা বলল জী এবি নেগেটিভ, তাতে কি হয়েছে? তারেক বলল আপনি ভাগ্যবতী যে আপনার রেয়ার ব্লাড গ্রুপের জন্য আপনাকে আমরা ইন্টারভিউ ছাড়াই নিয়োগ দিয়েছি। তুহিন বলল দেখুন আমার স্ত্রী মানে শাহেদ গ্রুপের চেয়ারম্যানের একমাত্র বোন বাচ্চা ডেলিভারি দিতে গিয়ে অনেক ব্লিডিং হয়েছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে ব্লাড দিতে হবে। যেহেতু তার রক্তের গ্রুপ এবি নেগেটিভ এবং আপনি হয়ত জানেন এই গ্রুপের রক্ত অনেক রেয়ার। তাই কোম্পানির প্রায় ৩ হাজার স্টাফের মধ্যে এবং ব্লাড ব্যাংকে এই ব্লাড না পেয়ে পরে সিভি দেখে আপনাকে পেয়েছি। দেখুন একজন মানুষের জীবন মরণের প্রশ্ন, আপনি যদি ব্লাড দিতে রাজি না হন তাহলে হয়ত একটি প্রাণ চলে যেতে পারে। লোপা তার কাজিন মিম কে সাথে নিয়ে হাসপাতালে গেল। গিয়ে দেখল সত্যিই একজন মহিলার এবি নেগেটিভ ব্লাড দরকার। লোপা ব্লাড ডোনেট করে বাসায় চলে যাবে তখন শাহেদের সাথে দেখা।

আজ এই পর্যন্তই। আবার আসব পরবর্তী পর্ব নিয়ে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

গল্পটা অনেক ইস্টারি ইন্টারেস্টিং পর্যায়ে চলে এসেছে। আপনি প্রতিনিয়তই অনেক গল্প শেয়ার করেন আপনার গল্প মাঝেমাঝে পড়া হয়। লোপা ও মিমের পরবর্তীতে কি হবে এটা জানার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছি। তবে আমার জানামতে রেয়ার ব্লাড গ্রুপ ও পজেটিভ, ও ও নেগেটিভ।

 2 years ago 

আমি গুগল থেকে দেখেছি AB নেগেটিভ ব্লাড রেয়ার ব্লাড। আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনি সুন্দর একটি গল্প লেখা শুরু করেছেন লোপাকে নিয়ে আশা করি গল্পের মোড ভালো হবে।কিছু কিছু মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ভাগ্যের মুডটা একদম বদলে যায়।আবার কিছু কিছু মানুষ আছে ভাগ্যের ছলে অনেক বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয়।কিন্তু এখানে শেষ পর্যন্ত লোপার ভাগ্যে কি জুটে সেটা জানিনা তবে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

গল্প পড়তে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আগে যখন ফেসবুকে নিউজফিড দেখতাম তখন বিভিন্ন ধরনের গল্প থাকতো। আমি সেগুলো পড়তাম আর পরবর্তী পর্বগুলোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম। ইচ্ছে করতো তখনই পুরো গল্পটা পড়ে ফেলি। আর ঠিক তেমনি আজকে আপনার লিখা গল্পটি পড়ে এতই ভালো লাগছে যে আমার ইচ্ছে করছে পরবর্তী পর্বগুলো পড়তে। খুব তাড়াতাড়ি আপনার পোস্টে গল্পের পর্বগুলো দেখতে চাই। সত্যি খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আমার গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। খুব শীগ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসব।

 2 years ago 

গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল।আসলে লোপা যেহেতু পড়ালেখা শেষ করেছে, এখন তার বাবা মার পাশে দাঁড়াতে চাই। তবে আমার মনে হচ্ছে একাউন্ট ডিপার্টমেন্ট এর লোক জন লোপাকে ভালো একটি পজিসনে দাঁড় করাবে।আসলে এটা ঠিক শুধু চাকরির জন্য নয়, একজন মানুষের জীবন বাঁচাতে পারলে তার চেয়ে বড় কিছুই নেই। যাইহোক লোপা তো ব্লাড দিয়েছে, দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়?

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আমার কাছে লোপার গল্পটি ভীষণ ভালো লেগেছে। সত্যিই লোপা কোন ইন্টারভিউ ছাড়াই জব পেয়ে গেল এটা শুনে একটু খুশি হলাম আর সে একটি মানুষকে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়েছে এটা জেনেও খুশি হলাম। পরের পর্বে শাহেদের সাথে দেখা হওয়ার কথা আপনি শেয়ার করবেন। পরের পূর্বে আর কি কি আসবে তা দেখার অপেক্ষায় থাকবো। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

লোপার গল্পটি তো খুবই ভালো ছিল। আসলে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম লোপা খুবই সহজ সরল একটি মেয়ে। তার টিফিন অন্যরা খেয়ে নিতো তবুও কিছু বলতো না সে। তার পড়ালেখা ও মনে হয় খুবই ভালো ছিল। লোপার গল্পটি মনে হয় শেষের দিকে খুবই ভালো লাগবে পড়তে প্রথমে যে রকম ভালো লেগেছে। আমি তো শুধু ভাবছি শাহেদের সাথে দেখা হওয়ার পর কি হয়েছে। ও একজন মহিলাকে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়েছে সত্যি এরকম বিষয়গুলো ভালো লাগে। তার মনে হয় চাকরি হয়ে গেছে তাই না।

 2 years ago 

আমার লেখা গল্প আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল আপু । ধন্যবাদ।

 2 years ago 

গ্রামের সহজ সরল লোপা শহরে তার কাজিন এর কাছে আসলেন। তার গল্পটি পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। একটি কোম্পানিতে জব করার চিন্তাভাবনা করতে লাগলো। অথচ সেই কোম্পানির দুটি লোক এসে বলতে লাগলো আপনি কি লোপা। এরপর তার রক্তের গ্রুপ নিয়ে কথা বললেন এবং তুহিন সাহেবের স্ত্রীর রক্ত লাগবে কারণ লোপার রক্তের সাথে মিল আছে। শেষ পর্যন্ত সাইদ সাহেবের সাথে দেখা হল দেখি আগামী পর্বে কি ঘটে। আশা করি আগামী পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। সুন্দর গল্প উপস্থাপনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

একেই বলে ভাগ‍্য। শেষ পযর্ন্ত ব্লাডগ্রুপ মিলে যাওয়ায় চাকরি পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে লোপা। গল্পটার মধ্যে বেশ রোমান্টিক একটা ভাব পাচ্ছি। আপনার পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাই।।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62613.64
ETH 2438.01
USDT 1.00
SBD 2.67