গল্প।। লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি। পর্ব ০৪।। 10% beneficiary to @shy-fox
শাহেদ কাজের প্রেশার এ দুপুর বেলা খাওয়ার সময় পেত না। একদিন গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে দেখে তার বেলকনিতে কে যেন বসে খাচ্ছে। সে লক্ষ্য করে দেখল এই ত সেই ব্লাড ডোনার। শাহেদ এর যেই টেম্পার তাতে সে রেগে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু কেন যেন শাহেদ না রেগে বরং লোপার আরাম করে খাওয়ার দৃশ্য দেখছিল। শাহেদের লোপার খাওয়ার দৃশ্য, মাঝে মাঝে চুলে হাত দেয়ার দৃশ্য ভাল লাগছিল।
পরদিন লাঞ্চ টাইমে শাহেদ মনের অজান্তে রুমের গ্লাসের পাশে এসে দাড়িয়ে আছে লোপার অপেক্ষায়। ঠিকই লোপা এসেছে এবং আগের মতোই খেয়ে যাচ্ছিল। শাহেদ গতকালের মত আজও লোপার খাওয়ার দৃশ্য উপভোগ করছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে গ্লাসের বাহির থেকে ভিতরে কিছুই দেখা যেত না কিন্তু ভিতর থেকে সব দেখা যেত। তবে ভিতরে পর্দাও ছিল। এভাবে শাহেদ প্রতিদিন লোপার অপেক্ষায় লাঞ্চ টাইমে বসে থাকত আর অপেক্ষা করত কখন লোপা আসবে। একদিন একাউন্টস ডিরেক্টর তারেক দেখে ফেলল এবং জিজ্ঞেস করল তুমি কি মেয়েটার প্রেমে পড়ে গিয়েছে নাকি? শাহেদ বলল মেয়েটা এখানে লুকিয়ে খাওয়া দাওয়া করে আর আমিও বাধা দেই না। তবে মেয়েটার মধ্যে কি যেন আকর্ষণ আছে। সে এত সুন্দর করে খায় তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।
একদিন শাহেদ পি এস মিমিকে বলল দুপুরে আমার খাবার ব্যবস্থা করবে। মিমি শুনে অবাক হয়ে গেল কারণ শাহেদ লাস্ট কবে অফিসে বসে খেয়েছে ভুলে গিয়েছে। শাহেদের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। লোপা খাওয়া শুরু করার সাথে সাথে শাহেদও দেখে খাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর শাহেদ দেখল লোপার খাওয়া শেষ। শাহেদ নিজের প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখে তার খাবারও শেষ। শাহেদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার খাবারের রুটিন ঠিক রাখতে হলে লোপাকে পাশে রেখে খেতে হবে। শাহেদ মিমি কে দিয়ে লোপার কাছে নোটিশ পাঠাল যে লোপা কাল থেকে শাহেদের সাথে খাবে।
পরদিন শাহেদ লোপা একসাথে খেতে বসেছে। লোপা শাহেদ কে ইট কাছ থেকে কার্যরত অবস্থায় দেখে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ১টা বাজার সাথে সাথে শাহেদ লোপার সাথে খেতে বসেছে। শাহেদ লোপা একে অন্যের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার চোখ ফিরিয়ে নিল। লোপা চিন্তা করল আকাশ কুসুম চিন্তা মাথায় আনা উচিৎ না এবং এই ভেবে খাবার খাওয়া শুরু করেছে। এভাবে প্রতিদিন শাহেদ আর লোপা একসাথে খেতে লাগল। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে সখ্যতা বাড়ল কিন্তু লোপা দূরত্ব রেখে বসের মতই ট্রিট করছিল।
একদিন শাহেদ লোপাকে পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে দিল তোমাকে আমার ভাল লেগেছে। লোপা ঝটকা দিয়ে শাহেদ কে ছাড়িয়ে দিয়ে বলল আপনি শাহেদ গ্রুপের চেয়ারম্যান আর আমি আপনার অফিসের সামান্য চাকরিজীবী, আপনার মোহ কাজ করতে পারে কিন্তু এই ধরনের মেয়ে নই। শাহেদ খুব সিরিয়াস হয়ে বলল তুমি ভুল বুঝছ। আমি হতে পারি বিলিয়ন টাকার মালিক কিন্তু আমারও সুন্দর একটি মন আছে। সব ধনীরা খারাপ হয় না। লোপা সেদিন লাঞ্চ না করেই বের হয়ে গেল এবং সোজা বাসায় চলে গেল। সে তার কাজিন কে সব ভেঙ্গে বলল। তার কাজিন ত মহা খুশি। বলল তুই ত বামন হয়ে চাদ পেয়েছিস। লোপা বলল সেজন্যই চাদ নিতে চাচ্ছি না। তার উপর আমার বাবা মা মেনে নিবে না। তার কাজিন বলল তুই অতিরিক্ত চিন্তা করিস, না ভেবে সোজা হ্যা বলে দে।
পরদিন অফিসে লোপা যায়নি। লোপা লাঞ্চ করতে না আসায় শাহেদ খোঁজ নিয়ে জানল লোপা আজ অফিসে আসেনি। শাহেদ দুপুরের লাঞ্চ বক্স নিয়ে লোপার বাসায় চলে গেল। বাসায় নক দেয়ার পর দরজা খুলতেই লোপা যেন আকাশ থেকে পড়ল। শাহেদ কিছু না বলে ঢুকে গেল। লোপার কাজিন অফিসে থাকায় লোপা বাসায় একা। শাহেদ বলল আমি লাঞ্চ করিনি চল একসাথে খাই। লোপা মনে মনে খুশি হল এই ভেবে শাহেদ তার কথা মনে করে বাসায় চলে এসেছে। তারা দুজন একসাথে লাঞ্চ করল। শাহেদ খাবারে মটর খেতে পারে না, লোপা খাওয়ার সময় মটর বেছে দিয়েছে। তারপর দুজন বেলকনিতে বসে কফি খাচ্ছিল। শাহেদ বলল আমার কথায় রাগ করে থাকলে আমি সরি। আমি জানিনা তুমি আমাকে কেমন জান কিন্তু আমি তোমাকে গ্যারান্টি দিতে পারি আমার মধ্যে এতটুকু নোংরামি নেই, আমি কেন জানি মন থেকে তোমাকে পছন্দ করেছি। তুমি না চাইলে আমি কন্টিনিউ করব না কিন্তু তুমি আমার সাথে একসাথে অফিসে লাঞ্চ করবে এটা আমার একটি আবদার। আর হ্যা তুমি আমার প্রপোজাল ভেবে দেখবে এটা আমার রিকুয়েস্ট। তুমি সময় নিয়ে আমাকে দেখতে পার, যেকোন পরীক্ষা নিতে চাইলে নিতে পার।
আশা করি আমার গল্পের চতুর্থ পর্ব ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।
লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি আজকের পর্ব বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। ভালোই লাগলো পড়ে। শাহেদ এবং লোপার মাঝে পরবর্তীতে কি সম্পর্ক তৈরি হয় তা জানার জন্য অধিক আগ্রহে অপেক্ষা করতেছি পরবর্তী পর্বের জন্য। ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
গল্পটি তো দেখছি আরো ইন্টারেস্টিংয়ের দিকে চলে যাচ্ছে। আমার কাছে কিন্তু এইটে যত করছি ততই ভালো লাগছে। আস্তে আস্তে শাহেদ লোপাকে ভালোবেসে ফেলেছে।যদিও লোপা এখন না করছে আমার মনে হয় পরবর্তীতে সে মেনে নেবে এই প্রস্তাব । আমি কিন্তু এই গল্পটির পরবর্তী পর্বের জন্য একটু বেশি আগ্রহে বসে আছি। চেষ্টা করবেন পরবর্তী পর্ব একটু তাড়াতাড়ি দেয়ার জন্য। চতুর্থ পর্ব খুবই দারুণ ছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ।
লোপা যত ই শাহেদ কে স্যার মনে করুক না কেন কিন্তু শাহেদ কিন্তু লোপাকে খুবই ভালোবেসে ফেলেছে। শাহেদ লোপার সাথে খাওয়ার জন্য অবশেষে তার বাড়িতে চলে এসেছে এটা কিন্তু লোপার বেশ ভালোই লেগেছে। সে মনে মনে অনেক খুশি হয়েছে তাহলে। আমার মনে হয় এবার প্রেমটা হয়েই যাবে। যাই হোক আমি শুধু ভাবছি পরবর্তী পর্বে কি হবে। পঞ্চম পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ।
যাক তাহলে দেখতে দেখতে গল্পের চতুর্থ পর্বে চলে আসলেন। আসলে আমি বুঝতে পারছি না লোপা কেন শাহেদের ভালবাসায় সারা দিচ্ছে না। আমার মনে তো হয় সবশেষে লোপা আর দূরে থাকতে পারবে না। দেখা যাক আগামী পর্বে কি হয়।