গল্প।। লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি। পর্ব ০৩।। 10% beneficiary to @shy-fox
দুদিন পর লোপা অফিস জয়েন করল। অফিসে ঢুকার পর তারেক এসে লোপাকে একাউন্ট ম্যানেজার এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। একাউন্ট ম্যানেজার লোপাকে দেখে অবাক হয়ে গেল কারণ একাউন্ট ম্যানেজার জানত লোপা রিজেক্ট হয়েছে।
তৃতীয় পর্ব
একাউন্ট ম্যানেজার একটু গম্ভীর হয়ে দাড়িয়ে একবার লোপার দিকে তাকায় আরেকবার একাউন্টস ডিরেক্টরের দিকে তাকায়। একাউন্টস ডিরেক্টর ম্যানেজারের এক্সপ্রেশন বুঝতে পেরে বলল আমরা তার ইন্টারভিউ নিয়ে রিক্রুট করেছি এবং ইন্টারভিউ তে অনেক ভাল করেছে। একাউন্ট ম্যানেজার ডিপার্টমেন্টে নিয়ে লোপাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। লোপার ডিপার্টমেন্ট এ আরো কিছু মেয়ে আছে। সবাই লোপার সাথে হ্যান্ড শেক করে গিয়েছে শুধু একজন ছাড়া। পরে জানতে পেরেছে এই মেয়ের নাম লিনা। সে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং খুব ভাল একাডেমিক রেজাল্ট। তাই লিনার ভাব একটু বেশি। লোপা অফিসে তার কাজে লেগে গেল।
বেশ কিছুদিন হল লোপা যথারীতি কাজ করে যাচ্ছিল । এর মধ্যে লোপার বাকি কলিগদের সাথে সখ্যতা তৈরী হয়েছে। এরা সবাই একসাথে লাঞ্চ করে, একসাথে টি ব্রেকে আড্ডা দেয় এবং একসাথে অফিস থেকে বের হয়। শুধু লিনা তাদের কারো সাথে মিশে না। একদিন হঠাৎ লাঞ্চ টাইম এ চেয়ারম্যান অফিস থেকে চেয়ারম্যানের সুন্দরী এবং স্মার্ট পি এস মিমি একটি লাঞ্চ বক্স নিয়ে আসে এবং লোপা কে দিয়ে বলে চেয়ারম্যান অফিস থেকে খাবার পাঠিয়েছে। লোপা রীতিমত অবাক এই ভেবে চেয়ারম্যান অফিস থেকে কেন আমাকে খাবার দিবে? বাকি কলিগরা শুনে খুবই জেলাস ফিল করছিল। লাঞ্চ টাইমে যখন একসাথে খেতে বসল সবার চোখ লোপার টিফিন বক্সের দিকে। লোপা টিফিন বক্স খুলতেই দেখে একটি বাটিতে কলিজা ভুনা, একটি বাটিতে শিং মাছ রান্না করা। যাই হোক মজার খাবার দেখে লোপা এবং বাকিরা উচ্ছসিত। সেদিন লোপা মন ভরে খেল এবং তার কাছে অনেক সুস্বাদু মনে হয়েছে। সে বাকিদের সাথেও শেয়ার করেছে।
পরদিন লাঞ্চ টাইমে লোপা বাকিদের সাথে লাঞ্চ এ যাবে এমন সময় পি এস মিমি লাঞ্চ বক্স নিয়ে হাজির। লোপা বলল আমি ত গতকাল খেয়েছি। মিমি বলল আজও চেয়ারম্যান অফিস থেকে এসেছে। লোপা আর কি বলবে বক্স নিয়ে বাকিদের সাথে লাঞ্চ করতে গেল। সবাই আবার অধীর আগ্রহে লোপার বক্সের দিকে তাকিয়ে আছে। বক্স খুলতেই দেখে গতকালের একই মেন্যু আজও দিয়েছে। সবাই চিন্তা করল একই মেন্যু আজও? পরে ভাবল হয়ত বেশি বাজার করেছে তাই আজও দিয়েছে। কি আর করা সবাই মিলে আজও খেল তবে রান্না খুব মজার।
পরদিন একই সময়ে আবার লাঞ্চ বক্স এসে হাজির । এবার লোপা পি এস মিমি কে জিজ্ঞেস করল এই খাবার কে পাঠাচ্ছে আর কেনই বা পাঠাচ্ছে। আমি ত দুদিন খেয়েছি । আমার অনেক ভাল লেগেছে, আজ আমি আর খাব না আপনি নিয়ে যান এবং স্যার কে বলুন আমি খুশি হয়েছি আর খাবার দিতে হবে না। মিমি বলল এটা আসলে স্যার পাঠাচ্ছে না এটা স্যারের বোন যাকে আপনি ব্লাড দিয়েছেন সে পাঠাচ্ছে। লোপা বলল তাহলে স্যারের বোনকে বলবেন আমি খুশি হয়েছি আর যেন খাবার না পাঠায়। বক্স নিয়ে মিমি চলে গিয়েছে এবং লোপা হাফ ছেড়ে বাচল। সে কলিগদের সাথে গিয়ে তার আনা খাবার নিয়ে বসল। কিছুক্ষণ পর মিমি আবার ফিরে এসেছে বক্স নিয়ে। বলল স্যারের আদেশ স্যারের বোন যতদিন খাবার পাঠাবে খেতে হবে । বক্স খুলে দেখে আজও একই মেন্যু। আজ আর বাকিরা একই মেন্যু দেখে খায়নি। লোপা মন খারাপ করে খেয়ে নিল। বিকেলে লোপা একাউন্টস ডিরেক্টরের সাথে কথা বলার জন্য তার রুমে যায়। ডিরেক্টর সব শুনে বলে আসলে চেয়ারম্যানের বোন তোমার রক্ত দানের কথা শুনে তোমার যেন রক্ত বারে তাই কলিজা ভুনা আর শিং মাছ রান্না করে পাঠায়। লোপা বলল আমি বুঝতে পেরেছি কিন্তু আমি এখন ভাল আছি তাই আমি আর খেতে চাচ্ছি না। ডিরেক্টর বলল চেয়ারম্যানের বোন যতদিন পর্যন্ত পাঠাবে তোমাকে কষ্ট করে খেয়ে যান। সে অনেক ভাল মানুষ এবং আন্তরিক তাই তোমার সাস্থ্যের কথা চিন্তা করে খাবার পাঠায়।
লোপা বুঝেছে এখানে চাকরি করতে হলে আমাকে খেয়ে যেতে হবে। পরদিন যখন মিমি আবার লাঞ্চ বক্স নিয়ে আসে তখন লোপা বাকিদের বলে আমাকে উপরে যেয়ে খেতে বলেছে, এই বলে সে অন্য জায়গায় গিয়ে লুকিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করল। লোপা একটি একদম নিরিবিলি বিশাল বেলকনিতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করল । সেখানে গোল টেবিল এবং দুটি চেয়ার পাতা ছিল। কিন্তু লোপা জানত না যে এই বেলকনি চেয়াম্যান শাহেদের প্রাইভেট বেলকনি এবং এখানে সবার আসা নিষেধ।
শাহেদ কাজের প্রেশার এ দুপুর বেলা খাওয়ার সময় পেত না। একদিন গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে দেখে তার বেলকনিতে কে যেন বসে খাচ্ছে। সে লক্ষ্য করে দেখল এই ত সেই ব্লাড ডোনার। শাহেদ এর যেই টেম্পার তাতে সে রেগে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু কেন যেন শাহেদ না রেগে বরং লোপার আরাম করে খাওয়ার দৃশ্য দেখছিল। শাহেদের লোপার খাওয়ার দৃশ্য, মাঝে মাঝে চুলে হাত দেয়ার দৃশ্য ভাল লাগছিল।
চলবে...
আশা করি আমার গল্প লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি পর্ব ০৩ পড়ে আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।
গল্পটা আমার বেশ ভালো লেগেছে ভাইয়া। গত পর্ব পড়েছিলাম। সত্যি বলতে দারুণ লিখেছেন। আর এরকম গল্প গুলো আমি আগে থেকেও পড়তাম। যখন ফেসবুকে নিউজফিড দেখতাম তখন একটা আপু গল্প লিখত দারুণ করে। সেগুলো পড়তাম। আজকে এই গল্পটি পড়ে সত্যিই ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে যেন আমি নিজেই সবকিছু চোখে দেখছি। যাই হোক পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ আপু গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাই খাবার ছাড়া কিছু দেখেন না🤣🤣,গল্পে ও খাবার নিয়ে আসলেন।পারলাম না আপনারে নিয়ে।কলিজা ভুনা কথা পড়ে, আমারও খেতে ইচ্ছে করছে🤣🤣।বাকি পর্ব গুলো পড়িনি তাই হয়ত পুরোপুরি বুঝিনি,তবে এই পর্বটা ভালোই ছিলো।বেশি বড় করিয়েন না।ধন্যবাদ
আমার চোখে খাবার বেশি ভাসে আমি কি করব বলেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
যতক্ষণ পড়াটা পড়ছিলাম ততক্ষণ খাবারের বক্স আর বক্স।গল্পটা পড়ে যতটুকু মনে হয়েছে পরের ব্যাপারটা কিন্তু এতো সুবিধার হবে না।যাক একজনকে রক্ত দিয়েছেন উনি তার কৃতজ্ঞতা হিসেবে খাবার দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছেন।মনে হচ্ছে উনাকে আবার রক্ত দিতে হবে সেইজন্য বেশি বেশি খাওয়াচ্ছে।পরের ঘটনাটি পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
লেখা হাত তো বেশ ভালো ভাইয়া। অনেক সুন্দর করে গল্পটি তুলে ধরেছেন আপনি। গল্পটির মধ্যে বেশ রোমান্টিকতাও আছে বলে মনে হচ্ছে। লোপা আর শাহেদের গল্পটি আগামী পর্বে কোন দিকে যাবে সেটাই ভাবছি।
আশা করছি সামনের পর্ব ভাল লাগবে ।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
লোপার ভালবাসা প্রাপ্তি আজকের পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। আসলে আপনার লেখা বেশি দারুণ ছিল। আসলে রক্ত দেওয়া অনেক মহৎ কাজ। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম। এত সুন্দর রোমান্টিক গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। লোপার সাথে অফিসে সবাই ফ্রেন্ডশিপ করলো কিন্তু একটি লোক ছাড়া। নিলা ভালো একাউন্টমেন্ট আবার কিছু কিছু লোক একটু অহংকার দেখায় থাকে। লাঞ্চের সময় শুধু বক্স আর বক্স। আপনার দ্বিতীয় পর্বটি আমি পড়িনি তাই মন্তব্য করতে পারলাম না সুন্দর করে। প্রথম পর্ব এবং আজকের পর্বটি পড়েছি। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে।