||শাওনের জীবনের গল্প||১০%@shy-fox এর জন্য
আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে।আজ শনিবার, মে ১১/২০২৪
হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি আজকে আমি আপনাদের সাথে শাওনের জীবনের গল্প শেয়ার করব।শাওন মধ্যবিত পরিবারের সন্তান ।পড়াশোনায় সে অনেক ভালো ।পড়াশোনায় যেমন অনেক ভালো তেমন মানুষের সাথে অনেক সুন্দর ব্যবহার করে সে। অনেক শান্তশিষ্ট সবসময় বাড়িতেই থাকে আর পড়াশোনা করে। বাইরে যাওয়ার সময় হলে বাইরে যায়। তেমন একটা হইচই পছন্দ করে না। পড়াশোনার পাশাপাশি শাওন টিউশনি করায়।কিছু ছেলে বাড়িতে পড়তে আসে ।আর কয়েকজনকে বাসায় যেয়ে পুড়িয়ে আসে শাওন। টিউশনি করে যা টাকা পাই সেই দিয়ে তার হাত খরচ ও পড়াশোনার খরচ হয়ে যায়। বাড়ি থেকে সে তেমন একটা টাকা-পয়সা নেয় না। টাকা পয়সা নিলেও প্রয়োজন লাগলে তখন। শাওনের এমন আচার-আচরণ দেখে শাওনকে সবাই অনেক ভালোবাসে। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীরাও শাওনের সাথে ভালো ব্যবহার করে থাকে । শাওনরা এক ভাই এক বোন ছিল তার বাবা দিনমজুরির কাজ করত। দিনমজুরির কাজ করে শাওনের বাবা সংসার চালাত ।প্রতিদিন যাক তাদের দিনটা ভালই কাটছিল। হঠাৎ একদিন সবকিছু থমকে গেল।
হঠাৎ একদিন শাওনের বাবা মারা গেল ।আর আপনারা হয়তো জানেন পরিবারের প্রধান মারা গেলে তার পরিবারের অবস্থা কেমন হয় ।শাওনের বাবা যখন মারা গেল তখন শাওন গ্লাস ফোরে পড়তো ।তখন শাওনের বয়স বা কতটুকু হবে বলেন ।এমন সময় বাবা মারা গেলে মনে হয় মাথার উপর থেকে ছাদ সড়ে গিয়েছে ।শাওনের বোন শাওনের থেকে বড় ছিল ।শাওনের বাবা মারা গেলেও শাওন কিন্তু হাল ছাড়িনি ।তার লেখাপড়া সে চালিয়ে গিয়েছে ।সে বাড়িতে বাড়িতে টিউশনি করতো ।আর শাওনের মা মানুষের বাড়িতে কাজ করত। কাজ করে তাদেরকে বড় করেছে ।যাদের বাড়িতে কাজ করতো সেই ভদ্রমহিলা অনেক ভালো ছিল ।ভদ্রমহিলা শাওনের মাকে প্রতিদিন ভাত দিত। তার বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য ।আসলেই এমন মানুষ হয়তো পৃথিবীতে খুব কম পাওয়া যায়। সব থেকে শাওনদের একটু বেশি কষ্ট হয়ে যেত ঈদের সামনে। ঈদের সামনে তারা তেমন একটা পোশাক কিনতে পারত না ।আপনারা হয়তো সবাই জানেন বাবা না থাকলে তাদের কতটা কষ্ট হয় ।ঈদের আগে শাওনের বোনের বিয়ে হয়ে গেল। শাওনের বোন দেখতে অনেক সুন্দর ছিল তাই আল্লাহর রহমতে তার অনেক ভালো জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। তার বোনকে নিয়ে তাদের আর কোন টেনশন ছিল না।
শাওন অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করার পর আজকে শাওন টিচার হয়েছে। আসলেই শাওন অনেক আগ্রহী ছিল সেজন্য সে পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। এমন কষ্ট করে হয়তো কোন ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করে না। আসলেই জীবনে কোন কিছু করতে হলে পরিশ্রম ছাড়া কোনদিনও সফলতা অর্জন করা যায় না ।পরিশ্রম করলে ঠিক একদিন তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে। শাওন যদি তখনকার অবস্থা ভেবে তার লেখাপড়া ছেড়ে দিত। তাহলে হয়তো সে এত দূর এগোতে পারত না। সে অনেক পরিশ্রম করেছিল বলেই আজকে সে টিচার হয়েছে। তার মা অনেক খুশি, তার মা তার জন্য অনেক গর্ব করে। তার বাবা মারা যাওয়ার পর শাওনের জন্য তার মার মুখের হাসি ফুটেছিল আবার নতুন করে ।শাওনের কাছে এখন কত টাকা পয়সা কিন্তু তখন এমন অবস্থা ছিল কয়েক বেলা না খেয়েই কাটিয়ে দিত। এখন তাদের আর কোন কষ্ট নেই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছে তারা।
আজকে আপনি অনেক সুন্দর একটা গল্প লিখেছেন। গল্পটা আমার কাছে সত্যি খুব ভালো লেগেছে। গল্পের শেষটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আসলে কেউ সারা জীবন বেঁচে থাকে না এই পৃথিবীতে। একদিন না একদিন সবাইকেই ছেড়ে যেতে হবে। আর তাই ভেঙে না পড়ে শক্ত হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে আমাদেরকে। যেন আমরা ভালো থাকতে পারি, আর ফ্যামিলির সবাইকেউ ভালো রাখতে পারি। শাওন ও ঠিক তেমনটা করেছে। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। আর এখন সে শিক্ষক, কথাটা ভাবতেই তো ভালো লাগতেছে। তার মা তো তাকে নিয়ে গর্ব অবশ্যই করবে।
আমাদের জীবনে অনেকেই নতুন করে আসবে, আবার অনেকেই আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে। ছেড়ে চলে গেলে ভেঙে গেলে চলবে না। আমাদেরকে অবশ্যই শক্ত করতে হবে নিজেদের। আর সামনের দিকে এগিয়ে চলতে হবে। যেন আমরা ভালো কিছু অর্জন করে বাকিদের খুশি রাখতে পারি। শাওনের সফলতা দেখে অনেক ভালো লেগেছে। সে পেরেছে নিজের মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে। হাজারো কষ্টের পর যখন এরকম সফলতা পাওয়া যায়, তখন তার থেকে আনন্দ কোন কিছুতে পাওয়া যায় না।
দারুন একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার গল্প পড়ে মুগ্ধ হলাম। খুব চমৎকার ভাবে গল্পটা লিখেছেন শাওনের। গল্প পড়ার মধ্য দিয়ে বেশ অনেক কিছু জানা যায় ঠিক তেমনি জানতে পারলাম।
শাওনের জীবনের গল্প পড়ে বুঝতে পারলাম, শাওন খুবই পরিশ্রমি ও ভালো মানুষ ছিলেন। যার কারনে সে কঠিন অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে লেখাপড়া চালিয়ে আজ সে সফল হয়েছে। যদিও বা তার মা অন্যের বাসায় কাজ করে তাদের পরিবার চালিয়েছে। অন্যদিকে আবার শাওন টিউশনি করে তার লেখাপড়া চালিয়ে শেষ পর্যন্ত টিচার হয়েছে। সত্যিই শাওনের জন্য গর্ববোধ করা যায়। শাওনের মত ছেলে যদি প্রতিটি ঘরে ঘরে থাকতো, তাহলে লেখাপড়া হীন বখাটে ছেলেগুলোকে আর রাস্তায় দেখা যেত না। যাইহোক আপু, শাওনের জীবনের গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো, শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।