||আবারো মনে পড়ে গেল ছোটবেলার গল্প||১০%@shy-fox এর জন্য

আমার বাংলা ব্লগের সকলসদস্যবিন্দু আমার নতুন একটি ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম !
আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে।আজ রবিবার, এপ্রিল ১৪/২০২৪

book-1822474_1280.jpg
Source


হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি । আজকে আমি আপনাদের সাথে ছোটবেলার কিছু গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।হঠাৎ ছোটবেলার সেই কথাটি মনে পড়ে গেল ।অনেক বছর আগের কথা যখন আমি ক্লাস ফোরে পড়তাম তখন অনেক ছোট ছিলাম। আমরা একসঙ্গে দল বেঁধে স্কুলে যেতাম। আমি রিমি ,মিতা, নিপা আমাদের চারজনার অনেক মিল ছিল। আমরা যেখানে যেতাম দল বেঁধে একসঙ্গে যেতাম ।বিশেষ করে যখন আমের সময় হতো আমগুলো যখন মোটা মোটা হয়ে যেত ,ঝড় হওয়ার আগেই আমরা চারজন রেডি আম কুড়ানোর জন্য। অনেক সময় ভোর বেলায় আম কুড়াতে যেতাম ।তখন সকালে তেমন একটা ঠিক পেতাম না ।আমাদের মধ্যে সবথেকে নিপা বেশি চালাক ছিল। সে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আমাদেরকে আম কুড়ানোর জন্য ডাকতে আসতো। অনেক সময় যখন হালকা হালকা বৃষ্টি পড়তো তখনও আমরা আম কুড়াতে যেতাম। তখন অনেক ছোট ছিলাম তাই আম কুড়ানোর অনেক নেশা ছিল। এখন বড় হয়ে সেগুলো আর তেমন একটা ভালো লাগে না ।অনেক সময় আম কুড়াতে যেয়ে আম পেতাম না ।আমাদের আগে আগেই অনেকেই আম কুড়াতে চলে যেত । সকালে একটু দেরি হলে গেলে তেমন একটা আম পেতাম না। আম কুড়িয়ে আমরা যখন স্কুল যেতাম তখন স্কুল বেগে করে আম নিয়ে যেতাম। নিয়ে যেয়ে আমরা একসঙ্গে শুকনো ঝালের গুড়া লবণ এবং আম একসঙ্গে মিশিয়ে খেতাম ।তখন যে কি ভালো লাগতো হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না। সেই মুহূর্তটা আমার আজও মনে আছে।

children-5833685_1280.jpg
Source


স্কুল ছুটি হওয়ার পর পরে আমরা খেলার জন্য মাঠে চলে আসতাম ।আমাদের বাড়ির পাশে একটা ছোট মাঠ ছিল সেই মাঠে অনেক শিশু বাগান ছিল ।সেখানে আমরা অনেক বাচ্চারা খেলা করতাম। বিশেষ করে গাদি খেলা খেলতাম ।অনেক সময় আমরা টায়ার চালিয়েও বেড়াতাম। আমি তেমন একটা টায়ার চালাতে পারতাম না । টায়ার চালাতে গেলে যখন লাঠি দিয়ে টায়ার মারতে যেতাম তখন টায়ার আগে থেকেই চলে যেত। অনেক চেষ্টা করে কয়েকবার পারতাম কিন্তু আমার সাথীরা অনেক টায়ার চালাতে পারতো। আমার আম্মু তেমন একটা খেলতে যেতে দিত না। খেলা খেলতে গেলে আমার আম্মু আমাকে অনেক বকা দিত। সব থেকে ভালো লাগতো যখন মাঠের ফসল কেটে ফেলত এবং মাঠ অনেক ফাঁকা থাকতো। গরমের সময় আমরা সেখানে একসঙ্গে বসে লুডু বা কিতকিত খেলা খেলতাম। এখন তেমন একটা কারেন্ট যায় না কিন্তু আগে অনেক কারেন্ট যেত। তখন আমরা একসঙ্গে অনেকেই মিলে বসে থাকতাম। এখনকার দিনে ছেলে মেয়েরা তেমন একটা খেলা খেলে না ।সব সময় ঘরে বন্দী জীবন কাটায় ।কিন্তু আমরা আগেকার দিনে অনেক মজা করেছি। এখন হয়তো সেই দিনটা আর ফিরে পাবো না। এখনকার বাচ্চারা সব সময় ফোনে গেম খেলে থাকে। কিন্তু তখন তেমন একটা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিল না ।তাই সব সময় বাচ্চারা খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। এখনকার বাচ্চারা বাইরে খেলা না খেলে সব সময় ফোন নেওয়ার জন্য বায়না করে। ফোন থাকার কারণে যেমন মানুষের সুবিধা হচ্ছে তেমন অসুবিধাও হচ্ছে। বাচ্চারা ফোনে সব সময় গেম খেলছে তারা তেমন একটা পড়াশোনা করতে চাচ্ছে না ।কিন্তু আগেকার দিনের বাচ্চারা যেটুকু সময় পড়তে হবে সেটুকু সময় পড়ে তারপর খেলা খেলতো।

children-1822704_1280.jpg

Source


একদিন দুপুরবেলায় আমরা স্কুল থেকে বাড়ি এসে গোসল করার জন্য পুকুরে যায় ।এমনিতেই আমরা সব সময় পুকুরে গোসল করতাম । বাড়িতে তেমন একটা গোসল করতাম না ।এখন যেমন মোটর হয়েছে তখনকার দিনে তেমন একটা মোটর ছিল না। বড় ছোট সবাই পুকুরে গোসল করতো। পুকুরে গোসল করার মজা আলাদা ।একসঙ্গে মিলে যেমন গোসল করা যায় তেমনি সাঁতারও কাটা যায় ।এখনকার বাচ্চারা হয়তো অনেকেই সাঁতার কাটতে পারে না। আমার পুকুরে সাঁতার কাটতে অনেক ভালো লাগতো ।এপার থেকে ওপারে সাঁতার কাটার আমরা প্রতিযোগিতা দিতাম ।এতক্ষণ ধরে আমরা গোসল করতাম যে আমাদের গায়ে অনেক ময়লা লেগে যেত। যখন বাসায় যেতাম তখন আম্মু অনেক বকুনি দিত। বলতো কি অবস্থা করেছিস মাথায় তো অনেক নোংরা লেগে গিয়েছে ।তখন আবার আম্মু কলের পানি দিয়ে গোসল করিয়ে দিত ।একদিন আমরা সবাই মিলে পুকুরে গোসল করতে গিয়েছি ।গিয়ে আমরা ডুব মেরে থাকতাম আর বলতাম দেখব কে কতখন পানির ভেতর ডুব মেরে থাকতে পারে। একদিন আমরা সবাই মিলে ডুব মেরেছি মেরে সবাই পানি থেকে উঠে পড়েছি ।কিন্তু আমাদের ভেতর নিপা এখনো পানির ভেতর থেকে ওঠেনি ।তখন আমাদের অনেক ভয় লেগে গেল। তখন আমরা ডুব মেরে নিপাকে খুঁজতে শুরু করি ।খুঁজতে খুঁজতে আমরা খুঁজে পাই না ।তখন অনেক চিন্তিত হয়ে যায় আমরা বাসায় যেয়ে বড়দের কে ডেকে আনি। এনে বলি আমরা সবাই পানি থেকে উঠে পড়েছি কিন্তু এখনো নিপা পানি থেকে ওঠেনি ।তখন সবাই মিলে নিপাকে খুঁজতে শুরু করে। খুঁজে খুঁজে তখন দেখে পায়ের সাথে নিপার হাত বাধে ।তখন পানি থেকে তুলে দেখি নিপা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। অনেক পানি খেয়ে ফেলেছে তখন মাথার উপর নিয়ে অনেক ঝাকুনি দেয়। পেটে হাত দিয়ে অনেক চাপ দেয়, চাপ দেওয়ার পর নিপার পেট থেকে অনেকগুলো পানি বের হয়। অনেকক্ষণ পর নিপার জ্ঞান ফেরে ।নিপা অনেক অসুস্থ ছিল তখন নিপাকে সবাই মিলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল । আসলেই এ ঘটনাটা আমাদের আজও মনে আছে। হয়তো আল্লাহর রহমতে নিপা সেদিন বেঁচে গিয়েছিল। আশা করি আপনারা আমার গল্পটি পড়ে দেখবেন।

🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹

আশা করি আমার ছোটবেলার গল্প আপনাদের ভালো লাগবে । আজকে এই পর্যন্ত শেষ করছি অন্য দিন নতুন কিছু নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হব।

ফটোগ্রাফার@mdemaislam00
ফটোগ্রাফি ডিভাইসvivo12a
Sort:  
 last year 

ছোট বেলার রঙিন মুহূর্ত গুলোর কথা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে ৷ শৈশবের সেই দিন গুলো কতই না রঙিন ছিলো ৷ আম কুড়নোর সুখ , নদী কিংবা পুকুরে সবাই মিলে স্নান করা ,, এসব যেনো আজ কেবল স্মৃতির পাতায় রঙিন এক টুকরো সুখ ৷ যাই হোক , আপনার ছোট বেলার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ শেষমেষ নিপাকে খুজে পেয়েছেন এবং তিনি বেঁচে ফিরেছেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

তুমি এখনো ছোট আছো বোন হয়তো মা হয়ে গেছো কিন্তু আমার দৃষ্টিতে এখনো সেই ছোট্ট বাচ্চা। তোমার জন্ম হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত সবকিছুই স্মরণে আছে আমার। হাফপ্যান্ট পোরে দৌড়িয়ে বেড়াতে চোখের সামনে। তবে তার মধ্যে যে অনেক স্মৃতি রয়েছে এটা সত্য। যাই হোক ভালো লাগলো লুডু খেলা আর কিততির খেলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে দেখে।

 last year 

পুরা গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু।চার বান্ধবীর ভীষণ ভাব ছিলো।এক সাথে আম কুড়াতেন , খেলা করতেন, কুড়ানো আম আবার মরিচের গুড়া দিয়ে স্কুলে নিয়ে গিয়ে খেতেন কতোই না মধুর স্মৃতিচারণ করছেন আপু।ভয়ংকর ছিলো পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ডুব দিয়ে আর ওঠেনি আপনার বান্ধবী নিপা।অজ্ঞান হয়ে গেছে। ভাগ্যিস আপনারা বড়দের কে ডেকে এনেছিলেন। নইলে তো বাঁচানো সম্ভভ হতো না। অনেক দুষ্টু মিষ্টি ও ভয়ংকর শৈশবের কথা মনে করে পোস্ট টি লিখে আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 last year 

নিপা যে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছিল এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো। আসলে গ্রাম অঞ্চলে এভাবেই অনেক ছোট বাচ্চারা পানিতে ডুবে মারা যায়। যাহোক তোমার ছোটবেলার দারুন একটি গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার। ছোটবেলার চমৎকার একটি স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

ছোটবেলার দিনগুলো অনেক রঙিন ছিল। কোনো চিন্তা ছিল না ভাবনা ছিলনা সমানতালে শুধু আনন্দ করে বেরিয়েছি। এখন সেই দিনগুলোকে অনেক মনে পড়ে। আপনার ছোটবেলার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ ছোটবেলার স্মৃতিচারণ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.33
JST 0.034
BTC 110941.96
ETH 4291.49
SBD 0.84