প্রসঙ্গ : গ্রামে অতিবাহিত হওয়া একটি অসাধারণ সুন্দর মুহূর্ত সভা এবং মেলা//10% beneficiary to @shy-fox
আমি মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান আশিক। বাংলাদেশ থেকে আপনাদের মাঝে।সকলকে জানাই শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটি সকল ভাই ও বোনেরা এবং এই কমিউনিটির সকল মডারেটর এবং ফাউন্ডার। আশা করি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে গ্রামে অতিবাহিত হওয়া একটি অসাধারণ সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করব। সভা এবং মেলায় কাটানো আমার সময়।
সভা এই শব্দটা একদম আমার কাছে নতুন। আমি প্রথমে মনে করেছিলাম এটা মনে হয় মেলার মত হবে। আমি গ্রামে তেমন একটা সময় কাটানো হয় নি ছোটবেলা থেকেই। সভা হচ্ছে মাহফিল। যা গ্রামের ভাষায় সভা বলা হয়। আমি শহরে বড় হয়েছি। বর্তমান কিছুদিন হলো পার্বতীপুরে থাকি। বাসা থেকে তেমন বের হওয়া হয় না। আর দিনাজপুরে আমি মেচে থাকি এবং সেখান থেকে লেখাপড়া করি।তো আমার পরীক্ষা শেষ আমি বাসায় বেড়াতে গেছি। আমার ফুফা সকালে আমাদের বাসায় ঘুরতে এসে হঠাৎ বলে আব্বু চলো আমাদের বাসা থেকে ঘুরে আসো। আমি বললাম কেন ফুবা কোনো কোন দরকার নাকি। বললো না চলো ঘুরে আসো আমার বাসা থেকে আর আমাদের এলাকায় আজকের সভা আছে। আমি বললাম ফুফা সভা কি।ফুফা বললো চলো গেলে বুঝতে পারবা। আমি আর বেশি কথা না বলে রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম। আমার পৌছাতে পৌছাতে ১২টা বেজে গেল। আমার ফুফার বাসা পার্বতীপুর থেকে একটু গ্রামের ভিতরে। আমি যাওয়ার পর আমার ফুফু আমাকে দেখে মহাখুশি। ফুফু এর সাথে একটু কথা বলে। আমাকে বলল যা হাতমুখ ধুয়ে গোসল করে আয় এসে খেতে বসে রান্না করেছি তোর জন্য। আমারও বেশ ভালই খুদা লেগেছিল। গিয়ে গোসল করে এসে খেতে বসলাম। অনেক কিছু রান্না করেছিল সবকিছুই আমার প্রিয় ছিল।
খাওয়া-দাওয়া শেষে ফুফুর সাথে বসে একটু গল্প করলাম অনেকদিন দেখা নাই তাদের সাথে। অনেকক্ষণ কথা বলার পর রুমে গেলাম একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। তারপর বিকেল হতেই আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে বের হলাম সভা দেখার জন্য। গিয়ে দেখি অনেকটা মেলার মত এবং সাইডে মাহাফিল হচ্ছে। ওখানে গিয়ে গ্রামের মানুষজন আনন্দ দেখে অনেক ভালো লাগলো। তারা সবাইকে অতি সহজে আপন করে নিতে পারে। ওখানে আমার আঙ্কেল ছিল সাগর। তাদের সাথে অনেক কথা হলো আড্ডা হলো।
সেখানে দেখি লটারি হচ্ছে ডিম নিয়ে। 5 টাকার লটারি কাটলে তিনটা ডিম বাঁধবে যার কপালে আছে। আমি প্রথমবারের কাটায় আমার তিনটা ডিম বেধে গেছে আমি তো মহা খুশি। কারন আমার কপাল তেমন একটা ভাল না।
আমি লটারিতে জীবনে কোন কিছু পায়নি। লটারির ওখানে সবাই অনেক আনন্দ নিয়ে লটারি কাটছিল। আমার বেশ ভাল লাগল বিষয়টা। আমাদের শহরে বড় বড় মাহাফিল হলেও আমার কোনদিন যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তো আমার বেশ ভালো লাগতেছিলো জায়গাটা। এভাবেই আড্ডা দিতে দিতে বিকাল পার হয়ে গেল।
সন্ধ্যার একটু পর মাহফিল শুরু হলো। এদিকে সাইডে অনেক দোকান দিয়েছিল। অনেক খাবারের দোকান ছিল। মনে হয় একদম জমজমাট হয়ে গিয়েছিল। গিয়ে অনেক খাওয়া-দাওয়া ঘুরাঘুরি করলাম। সময়টা যেন রঙিন আনন্দের সাথে কেটে যাচ্ছিল।
আমি এমন আনন্দ প্রথমে মেলায় পাইনি। গ্রামের মানুষজন এর মধ্যে অনেক মিল আছে। যা আজকাল শহরে দেখা যায় না। শহরের মানুষ যে যার যার মত কেউ কারোর দিকে খোঁজ নেয় না। তবে গ্রামে সবার মধ্যে মনের আন্তরিকতার রয়েছে। যা প্রথম থেকে বরাবরই আমার ভালো লাগে। তারপর বেশ ঘোরাঘুরি করে খাওয়া দাওয়া করলাম।
এশার নামাজের পর পুরাপুরিভাবে মাহফিল শুরু হয়ে গেল। আমরা গিয়ে বসে মাহফিল শুনা শুরু করলাম। শুনতে-শুনতে কখন যে রাত ১ টা বেজে গেছে তা খেয়ালই করিনি। বাইরে বের হয়ে দেখি চারিদিকে শুধু কুয়াশা।
অসাধারণ মুহূর্ত কাটলো মেলায়। কমবেশি অনেকের সাথে মোটামুটি পরিচয় ছিল। আরো অনেকের সাথে পরিচিত হলাম ফুফাতো ভাইয়ের মাধ্যমে। অনেক খাওয়া-দাওয়া আড্ডা যেন সময়টা নিজেই বের হয়ে গেল। আসলে আনন্দর সময় টা বেশিক্ষণ থাকলে মনে হয়না যে সময় আছে। সময় কোন দিক দিয়ে পার হয়ে যায় তা বোঝা মুশকিল। অবশেষে মাহফিল শেষে তবারক নিয়ে আমরা যে যার বাসায় চলে গেলাম।
এমন সুন্দর মুহূর্ত গুলো ছবি বাঁধাই ফেম হয়ে থাকে এবং স্মৃতির কোনায় স্মৃতির পাতা হয়ে থাকে। সময় তো সময়ের মতো চলে যায়। শুধু রয়ে যায় স্মৃতি।
এই ছিল বন্ধু আজকে গ্রামে অতিবাহিত একটি অসাধারণ সুন্দর মুহূর্ত। যা ভোলার মত নয়। আশা করি আমার সুন্দর মুহূর্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের ভালো লাগবে।
লোকেশন টা গুগল ম্যাপে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই লোকেশন টা লিখে দিলাম। |
---|
আশা করি যে যেখানেই আছেন ভালো আছেন সুস্থ আছেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। সবার প্রতি দোয়া এবং ভালোবাসা অবিরাম।
কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মো: আশিকুজ্জামান আশিক।বাংলাদেশ থেকে। আমি একজন ছাত্র। দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে লেখাপড়া করি।আমি সব সময় কথায় না কাজে বিশ্বাস করি।আর আমি স্বাধীন প্রিয় মানুষ।মনের বিরূদ্ধে কোনো কাজ করি না।নতুন নতুন বিষয় জানতে ও শিখতে খুব আগ্রহী আর নতুন কোন কিছু শিখতে পারলে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।আমার সখ বই পড়া,গান শুনা এবং ঘোরাঘুরি যা আমার বেশ ভালো লাগে।
শীতের সময় এলেই গ্রাম অঞ্চলে এই সভা গুলো শুরু হয়ে যায়।এখন খুব কম হয় আমাদের দিকে।অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টি গুছিয়ে লিখেছেন শুভ কামনা।রইলো।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য।
গ্রামগঞ্জে প্রায় প্রতিবছরই সভা-সমাবেশ হয়ে থাকে। গ্রামীণ সভাগুলোতে গ্রামের লোকজন অনেক উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করে থাকে। আপনার শহরে থাকেন এজন্য সভা সমাবেশ গুলোর বিষয়ে তেমন একটা ধারনা নেই। গ্রামীণ সভায় আপনি অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গ্রামীণ সভা গুলো অনেক আনন্দ এবং মজা হয়। যার কোন তুলনা নাই। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যর জন্য।
শীতের এই মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের এই সভাগুলো অনেক মিস করি। আজকে আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে দেখেওলাম। কত রকমের মিস্টি জিলাপি থাকে আহ! অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন বোঝায় যাচ্ছে।
জি অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি যা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।