হঠাৎ দাওয়াত // ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_22-03-12_22-08-46-616.jpg
আমি আজ একদম পাড়াগাঁয়ের একটা মার্কেটে কাজ করতে গিয়েছিলাম সেখানে কাজ করতে আমার দুপুর গড়িয়ে গেল। আমি জোহরের নামাজ আদায় করে স্বাভাবিকভাবেই দুপুরে খাওয়ার জন্য একটা ব্যবস্থা খুঁজছিলাম। খাওয়া সন্ধান করতে বাজারটির এদিক ওদিক হাটাহাটি করতেছি। এসব বাজারে সাধারণত খাওয়ার খুব একটা ভালো ব্যবস্থা নাই। কোনোরকমে যেন চালিয়ে নিতে পারি তাই এই খোঁজাখুঁজি।

বাজার হাঁটতে-হাঁটতে আমি একটি খাবার জন্য হোটেল খুজছিলাম এমন সময় আমি একজন পরিচিত্ লোকের দেখা পেলাম। তিনি হঠাৎ করেই দুপুরে আমাকে খাওয়ার দাওয়াত দিল। আজ শাবান মাসের ৮ তারিখ রমজানের আগে শাবান মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে হালুয়া-রুটি দিয়ে মিলাদ মাহফিল হয়। শহর অঞ্চলে এখন আর খুব একটা এরকম মিলাদ-মাহফিল দেখা যায় না কিন্তু গ্রামীণ অঞ্চলগুলোতে এখন ওই প্রচলন এখনো রয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম তিনি আমাকে হালুয়া রুটি খাওয়ার জন্য দুপুরে দাওয়াত দিয়েছেন। দাওয়াত খেতে এসে বুঝতে পারলাম হালুয়া-রুটি পাশাপাশি ভাতের ব্যবস্থাও করেছে।

আগেই বলে রাখা ভালো আমি এখানকার খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করতে পারছিনা কারন আমাদের খাবারের মেন্যুতে গরুর মাংস ছিল। আমি কলিজা ভুনা ও হালুয়া-রুটি খাওয়ার পর গরুর মাংসের ভুনা, হাঁসের ডিম, সিদ্ধ আলুর ভর্তা, ডাল, সাদা ভাতের আয়োজন সবমিলিয়ে খাওয়া টা খুব ভালো হয়েছে। পেট ভরে খাওয়া দাওয়ার পর কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে বাড়ির পেছনের দিকটা একটু হাঁটতে বের হলাম। হাঁটতে বের হয়ে আমার চোখ কপালে উঠে গেল পিছনের দৃশ্য গুলো এত চমৎকার যেটা আমি ভিতর থেকে কল্পনাও করিনি। আমি সামনে এগিয়ে গিয়ে আমার ফোনটা বের করে ঝটপট কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। এখন আমি আমার করা কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করতে চলেছি।

20220312_171335.jpg
20220312_171302.jpg

বাড়ির পেছনের দিকে বের হতেই দেখি দুই দিকে অনেক বড় দুইটি পুকুর তার মাঝখান দিয়ে রাস্তা চলে গেছে সামনের ধান ক্ষেতের দিকে। পুকুরের মাঝখানে রাস্তার দুই পাশে আম, জাম গাছ, চালতা গাছ, জামের গাছ সহ ভেষজ গাছ লাগানো আছে দেখে পরিবেশটা খুব ভালো লাগলো। পুকুর পাড়ে একটি বাঁশে দিয়ে বানানো টং পাতা আছে গ্রামের বাড়ীতে এই ধরনের টং গুলোতে বসে থেকে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। আমি কিছুক্ষণ টং এ বসে থেকে সেই ভালোলাগা অনুভূতিগুলো গ্রহণ করি।

20220312_220504.jpg

20220312_165945.jpg

20220312_165921.jpg

গ্রামের বাড়িতে পুকুরে মাছ গোলাভরা ধান হাঁস মুরগি থাকবে না তা কি হতে পারে। এখানে প্রত্যেকটি বাড়িতে প্রচুর দেশি হাস দেখতে পাওয়া যায় ভালো হাসগুলোকে পুকুরে সাঁতার কাটতে দেখে খুব ভালো লাগলো। পুকুরের ওইপারে বাড়িওয়ালাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে মাছ পাহারা দেওয়ার জন্য জানতে পেরে খুব ভালো লাগলো।

20220312_220401.jpg

20220312_170743.jpg

এই কিছুদিন আগে ধানের চারাগুলো রোপন করা হয়েছিল তখন গাছগুলো ছিল নিস্তেজ মলিন। আর এখন তারাগুলো গাঢ় সবুজ রং ধারণ করেছে। পুরো মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ সবুজ প্রকৃতির মাঝে কখন যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম বুঝতেই পারিনি। অনেকক্ষণ সেখানেই বসে থাকতে হঠাৎ বুঝতে পারলাম অনেক দেরি হয়ে গেছে।

20220312_171754.jpg

20220312_170235.jpg

দূর থেকে দেখতে পারলাম কয়েকটা মোটরসাইকেলে করে লোকজন আসছে আমি কৌতুহলবশতঃ সামনে এগিয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম ধান ক্ষেতের মাঝখানে মোটরসাইকেল যাওয়ার মত রাস্তা আছে নাকি কিন্তু গিয়ে দেখলাম ভিন্নচিত্র। রাস্তাটি মোটেও কোন ধুলাবালি যুক্ত কাঁচা রাস্তা নয় এটা রীতিমতো পাকা রাস্তা। সবুজ ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা এরকম ভাবতেই ভালো লাগে।

20220312_170800.jpg

20220312_170824.jpg

আশেপাশে যত দূর চোখ যায় শুধু ধানক্ষেত আমি জানতে পারলাম এখানে সব ধান ক্ষেতের মাঝখানে রাস্তাগুলো আছে সবগুলোই পিচঢালা পথ। তার মানে বোঝা যায় এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটামুটি ভালই আমি যদি সাইকেল আরোহীকে এদিকে আসতে দেখলাম জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম তারা এই রাস্তা দিয়ে হাটে যাচ্ছে। এখানে সবুজ প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় কাটাতে পেরে আমার খুব ভালো লাগলো। গ্রামের শান্ত নিবিড় দূষণ ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশের মধ্যে কিছুটা সময় কাটাতে পেরে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা প্রশান্তি কাজ করছে। শহরের যান্ত্রিক পরিবেশের মধ্যে থাকতে থাকতে আমরা কেমন যেন যন্ত্রের মত হয়ে গেছি। মাঝেমধ্যে শহর থেকে দূরে নিরিবিলি সবুজ প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে পারলে খারাপ লাগে না। আমার মনের মধ্যে কেমন যেন একটি ফ্রেসনেস চলে আসে। দিনশেষে সবুজের মধ্যে থেকে মনটাকে একটু চাঙ্গা করে নিয়ে বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করলাম।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A 10
ফটোগ্রাফারমাইদুল ইসলাম
লোকেশনw3w location

3q52Dkr5nBe3kDiHrk4F3qdzX6E5VuVcCcF7TDQDco37AUsMDxK7aJ1v5hKA8jfHHgL9ABnDXogr1.gif

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Sort:  
 2 years ago 

বাহ এইরকম হঠাৎ দাওয়াত পেলে মন্দ হয় না। খাবারের আইটেমগুলো বেশ ভালো ছিল। এবং আপনি যে ফটোগ্রাফি করেছেন দারুণ হয়েছে। এককথায় অসাধারণ। কী সুন্দর ফসলের খেত দুপাশে ধানের খেত মাঝ দিয়ে সরু রাস্তা অসাধারণ বলা যায়। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।

 2 years ago 

জি ভাই খাবারটা বেশি হয়ে গিয়েছিল ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

অতিথি আপ্যায়ন এবং আপ্যায়িত হতে আমার খুবই ভালো লাগে অনেক আনন্দ উপভোগ করি আপনি হঠাৎ দাওয়াত পেয়ে খুবই আনন্দ উপভোগ করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য

 2 years ago 

গ্রামীণ প্রকৃতির সৌন্দর্য গুলো আমার খুব ভালো লাগে।

 2 years ago 

গ্রামের ছবিগুলা দেখতে বেশ ভালো লাগছে।চির সবুজের দেশ।পুকুর পাড়ে টং এর দৃশ্যটা দেখতে ভালো লাগে।মাঝে মাঝে এই জায়গায় বসতে ভালো লাগবে মনে হচ্ছে। ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

পুকুরপাড়ে টং না থাকলে গ্রামের বাড়িতে যেন চলেই না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

হঠাৎ দাওয়াত , মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। সাথে একটা সমস্যার সমাধান। আপনার ছবিগুলো দেখার মত ছিল। বর্ণনার সাথে যা জীবন্ত হয়ে উঠেছে। ভাল

 2 years ago 

পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 68034.95
ETH 3846.82
USDT 1.00
SBD 3.66