মিটিং শেষে ফ্যাক্টরি ভিজিটের অপূর্ব সুযোগ ||প্রথম দিন||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_23-01-05_23-15-42-568.jpg

আগের দিন খুব বেশি ঘোরাঘুরি হয়ে গিয়েছিল তাই ঘুমাতে অনেক রাত হয়। সকালবেলা উঠতেই ইচ্ছা করছিল না বিছানা ছেড়ে। ভালোভাবেই টের পেলাম রাত্রে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া উচিত ছিল। কিন্তু অনেকদিন পর সুযোগ পেয়েছিলাম পাহাড় ও সমুদ্র দেখার। সেই সুযোগটা কোনভাবেই হাতছাড়া করতে মন সায় দেয়নি। পাহাড় ও সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গা থেকে ঘুরে আসতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতেও অনেক দেরি হয়ে যায়।

ক্লান্ত চোখ দুটোকে কোন রকমে টেনে খুলতে পারলাম। তখনও চোখে ঘুম ঘুম ভাব মনে হচ্ছে আবার ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু ঘুমানোর আগে সুযোগ কোথায় এতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। সাড়ে সাতটা বাজে ঠিক ৮:৩০ মিনিটে কোম্পানির গাড়ি এসে হোটেলের সামনে দাঁড়াবে। ঠিকমত আয়েশ করে নাস্তা পর্যন্ত খেতে পারবো না মনে হচ্ছে।

ঠিক সেরকমটাই হল গোসল করে নাস্তা করতে না করতেই রুমে খবর চলে আসলো গাড়ি অলরেডি হোটেলের সামনে। তাড়াহুড়ো করে নাস্তা শেষ করলাম। নাস্তা শেষ করে তাড়াতাড়ি হোটেলের লবিতে চলে আসলাম। এখানেই সবার রিপোর্টিং করার কথা। তারপর আরএম স্যার সহ সবাই গাড়িতে গিয়ে উঠবো।

20230103_212749.jpg

আহ্ এত তাড়াতাড়ি নাস্তা করে আসলাম, তাড়াহুড়ার কারণে খেয়েও শান্তি পেলাম না। অথচ লবিতে এসে দেখলাম আমি ছাড়া আর কেউ নেই। গাড়ি নিচে এসেছে শুনে আমিও জলদি বের হয়ে আসলাম। যাইহোক ক্ষতি তো কিছু হয়নি কমপক্ষে বলতে পারব সবার আগে এসেছি।

20230103_212548.jpg

অল্প কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর এক এক করে সবাই আসতে শুরু করল। আমার পরে আমার সহকর্মী পার্শ্ববর্তী জেলার এরিয়া ম্যানেজার রশিদ ভাই পিছনে পিছনে চলে আসলো। তারপর আমাদের টিমের সঙ্গে নতুন যুক্ত হওয়া আল শাফি সেও কিছুক্ষণ পর লবিতে চলে আসলো। আমরা তিনজন মিলে এই মুহূর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য একটি সেলফি নিয়ে নিলাম।

20230103_212834.jpg

প্রায় পাঁচ মিনিটের মত অপেক্ষা করার পর প্রথমে আর এম স্যার চলে আসলো। তারপরেই রংপুর সদরের দুজন এরিয়া ম্যানেজার আমাদের মাঝে চলে এলেন। বয়স বেড়ে গেলে যা হয়, তাই প্রতিযোগিতায় আমাদের সাথে পেরে উঠছে না হা হা হা। একেকজনের একে মন্তব্য তাই যে পক্ষে ভোট বেশি পড়ল তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরো একটি সেলফি নেওয়া হল।

20230103_212341.jpg

মোটামুটি বেশ কয়েকজন চলে এসেছে একটি গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার মত হয়েছে। তাই আবারও সকলে মিলে একটা সেলফি নিয়ে স্মৃতি গুলোকে সংরক্ষন করলাম। এখানে আমরা রংপুর বিভাগের টিম ছাড়াও রাজশাহী বিভাগের আর এম কয়েকজন ম্যানেজার আমাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল।

20230103_205531.jpg

বাজেট মিটিং এর পাশাপাশি এখানে রিফ্রেশমেন্ট ট্রেনিং এর ব্যবস্থাও ছিল। সেদিনের ট্রেনিং এর উপর যা যা টপিক ছিল তারউপর শেষে একটি পরীক্ষা নেয়া হয়। ভাইভাতে যারা ভালো করে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। শুধুমাত্র নতুন যারা জয়েন করেছিল তাদেরকেই ভাইভাতে ডাকা হয়েছে। তাই এবারের মত আর কোন পুরস্কার পাওয়া হলো না।

ট্রেনিংয়ে যেসব বিষয়ের উপর আলোচনা হয় ইতিমধ্যে সবগুলো বিষয়ের উপর আমার খুব ভালোভাবে আগেই জানা ছিল। তাই মনে মনে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলাম একটি হলেও পুরস্কার পাবো। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমার ডাক পড়েনি, এটা ছিল শুধুমাত্র নতুনদের জন্য।

20230103_221940.jpg

যাইহোক মিটিং এর যাবতীয় কর্মকাণ্ড শেষ করে ছেড়ে দেওয়ার আগে আমাদের ফ্যাক্টরি ভিজিটের কথা জানানো হয়। এটা নিয়ে আমি অনেক এক্সাইটেড ছিলাম কারণ প্রথমবার আমার কোন ফ্যাক্টরি ভিজিট। আমাদের ফ্যাক্টরিতে জীবন রক্ষাকারী পণ্যের উৎপাদন হয়। হ্যাঁ এটা একটি ঔষধ কোম্পানিতে ভিজিটের কথা বলছি।

তাই স্বাভাবিকভাবেই এখানে একটু অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোন জার্মস ভিতরে যেতে না পারে। ভেতরে যাওয়ার আগে এপ্রন সহ মাথা থেকে পা অবদি ঢেকে নিলাম। দুঃখিত আমি এখানে প্রোডাকশনের কোন ফটোগ্রাফি দিতে পারলাম না। কারণ ভেতরে প্রবেশের পূর্বেই আমাদের বলে দেয়া হয়েছিল এখানে কোন ভিডিও করা যাবে না।

ভিডিও তো অনেক দূরের কথা কোন প্রকার ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করাও যাবে না। তাই প্রথম দিকে ভিতরে যাওয়ার সময় কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম।

20230103_221853.jpg

প্রথমেই একটি বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করলাম। এখানে বেশ কিছু ইউনিটে প্রোডাকশন চলছে। প্রথমত আমরা জেনারেল গ্রুপ, ইঞ্জেক্টাবল আইটেম, জেলাটিন ক্যাপসুল, এবং সেফালস্পরিন গ্রুপের মেডিসিন প্রোডাকশন দেখে নিলাম। এখানে এসব গ্রুপের মেডিসিন তৈরির পাশাপাশি QC ল্যাবে কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। একটি প্রোডাক্ট বাজারজাত করার আগে অনেকগুলো পর্যায় পাড় করে আসতে হয়।

এখন আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম পেনিসিলিন বিল্ডিং যাওয়ার জন্য। এখানে নামাজ ও বিকালে নাস্তার জন্য কিছুক্ষণ ব্রেক চলছে। এই ফাঁকে আমরাও দাঁড়িয়ে আছি আর খোশ গল্প করছি। মেডিসিন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে সেফালস্পরিন ও পেনিসিলি বিল্ডিং অবশ্যই আলাদা হতে হবে। আলাদা না হলে প্রোডাক্ট এর মান নিয়ন্ত্রণ ঝুঁকিপূর্ন হতে পারে।

এটি ছিল এলবিয়ন গ্রুপের দুটো ঔষধ কোম্পানির একটি অংশ। পরের দিন দ্বিতীয় ফ্যাক্টরি ভিজিট করা হবে যেটার কাজ চলমান আছে। প্রথম ফ্যাক্টরি বহাল তবিয়তে থাকার পরেও দ্বিতীয় ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করার যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত কারন আছে। এর মূল উদ্দেশ্য কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A-10
ফটো@mayedul
লোকেশনপতেঙ্গা, চট্টগ্রাম

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif


আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"


https://steemitwallet.com/~witnesses




VOTE @bangla.witness as witness
witness_proxy_vote.png
OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

আপনার ফ্যাক্টরি ভিজিটিং সম্পর্কে পড়ে অনেক ভালো লাগল। আর এটা সত্যি এক জায়গায় যাবার সময় তারাতাড়ি করে খাওয়া দাওয়া করা মুশকিল। যাইহোক আপনি তো সবারই আগে গিয়েছিলেন এটাই বড় কথা। ফাঁকে ফাঁকে দাঁড়িয়ে খোশ গল্প করা ভালোই লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

হা হা হা! দেরি হয়েছে ভেবে তাড়াহুড়া করতে সবার আগে পৌঁছে গিয়েছি।

 2 years ago 

আসলে রাত্রিবেলা যদি ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণে না হয় তাহলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে অনেক বেশি দেরি হয়ে যায় এ যেন উড়তেই মন চায় না। তবে এটা ভেবে একটু হাসি পাচ্ছিল যে আপনি এত তাড়াহুড়ো করে নিচে নামলেন অথচ নিচে গিয়ে দেখলেন কেউ নেই হাহাহা। অবশেষে সকলে আসার পরে তাদের সঙ্গে সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন এবং নতুনদের জন্য ভাইবা শেষে পুরস্কার এর ব্যবস্থা ছিল এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো এতে করে তারা অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হবে।

 2 years ago 

ঠিক ভাই আগের দিন ঘুরাঘুরি বেশি হয়ে গিয়ে সে কারণে ঘুমাতেও অনেক দেরি হয়। এরকম হলে কি আর বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করে সকালে।

 2 years ago 

এমনিতেই শীতকালে সকালবেলায় উঠতে মন চায় না। আর রাতে ঘুম না হলে তো একেবারেই না।অনেক দেরি হয়ে যায় রাতে ঘুম না যাওয়ার ফলে সকালে উঠতে। নতুনদের জন্য তো দেখছি ভাইবা শেষে পুরস্কার এর ব্যবস্থা করেছেন এটা দেখে খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনি মনে হয় একটু বেশি তাডাহুড়া করে ফেলেছিলেন তাই নিচে কেউ ছিল না। ধন্যবাদ আমার কাছে কিন্তু আপনার পোস্ট পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

প্রথম ভেবেছিলাম আমি মনে হয় সবার শেষে পৌঁছাব।
এসে দেখি আমার আগে কেউ পৌঁছাতে পারেনি।

 2 years ago 

রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে সারাদিন কাজে মনোযোগ আনা মুশকিল হয়ে যায়। আপনি দেরি ভেবে সবার আগেই লবিতে কোলে এসেছেন জেনে মজা পেলাম। আপনি ঔষধ ফ্যাক্টরি খুব আনন্দের সাথে ভিজিট করেছেন বোঝা যাচ্ছে। আপনাদের ছবিগুলো সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58067.54
ETH 2469.39
USDT 1.00
SBD 2.40