উদ্দেশ্য কাজীর মসজিদ দর্শন || 10% beneficiary to @shy-fox.
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
আমার বাড়ি থেকে মসজিদের দূরত্ব কম করে হলেও ৩০ কিলোমিটার। যেহেতু অনেক দূরে যেতে হবে তাই জুম্মার নামাজ শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগেই রেডি হয়ে রওনা দিলাম। এখন যে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম সে মসজিদের নাম কাজীর মসজিদ। লোকমুখে শোনা যায় এই মসজিদটি ভেসে উঠেছে এখনও এই মসজিদকে ঘিরে উৎসুক জনতার অনেক ধরনের গল্প আছে। আমিও সেরকম টাই শুনেছিলাম তাই অনেক দিন থেকেই ইচ্ছে ছিল এই মসজিদটি দর্শন করার। সেখানে গিয়ে জুমার নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যেই শুক্রবার দিনটা বেছে নিয়েছি। কারণ শুক্রবারে নাকি অনেক দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এখানে আসে সেটিও দেখার ইচ্ছা ছিল।
এরকম জায়গায় জুম্মার নামাজের সময় লোকজন অনেক বেশি হয়। তাই দেরি করে গেলে অনেক সময় জায়গা পাওয়া যায়না। সেকারণেই দ্রুতবেগে বাইক চালিয়ে পৌঁছার চেষ্টা করলাম। কাছাকাছি গিয়ে দেখি একদম মেটোপথ কোথাও কোথাও দুইজমির মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা। এই জায়গাটায় এসে খুব বিরক্ত লাগলো আগে জানতে হয়তো আসতামই না।
ফটোগ্রাফি টা দেখে বুঝতেই পারছেন মসজিদটি কেমন জায়গায় হতে পারে। মসজিদের চারিদিকে শুধু চাষাবাদী জমি এখনো সেখানে যাওয়া রাস্তা ঘাটের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। সরু রাস্তার উপর দিয়েই যেতে হয়। পেছনের বিল্ডিংটা নতুন সংস্করণ কথা বলে জানতে পেরেছিলাম এখন থেকে ৭-৮ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। আমি গাড়ি পার্কিং করে ভেতরে ঢুকলাম। গিয়ে দেখি বাইরে থেকে প্রচুর লোক এসেছে সবাই ক্যামেরা হাতে নিয়ে ফটোগ্রাফি তুলতেই ব্যস্ত। কয়েকজনের মুখে শুনতে পারলাম মসজিদটি অনেক আগে মাটির নিচ থেকে ভেসে উঠেছে। আবার কেউ কেউ বলছে আমার দাদার মুখে শুনেছিলাম তারা দাদাও নাকি এই মসজিদের সঠিক ইতিহাস জানে না। এই রকমের নানান ধরনের কথাবার্তা কানে ভেসে আসছিলো।
একেবারে সামনের দিকে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ সেই আগের পুরনো মসজিদ। এখন অবশ্য দুইটা গম্বুজ বৃদ্ধি করে গম্বুজের সংখ্যা পাঁচটা করা হয়েছে। পেছনের অংশটা কাজ করার সময় সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই সংস্কারটুকু করা হয়। এখানে এসে প্রচুর মহিলা মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করলাম। তারা অনেক দূর দূরান্ত থেকে এসেছে পুরনো সেই মসজিদে নামাজ পড়ে দান-খয়রাত করলে নাকি মনের ইচ্ছা পূরণ হয়। হয় নাকি ? প্রশ্নটা মনের মধ্যে থেকেই গেলো।
আমার উদ্দেশ্য নামাজ পড়ার সাথে সাথে ভালো করে একটু দেখে নেয়া এবং এর সঠিক ইতিহাস জানা। আর তাই আমি নিচ তলা দোতলা ভালো করে ঘুরে ফিরে দেখছি আর কিছু কিছু ফটোগ্রাফি করছি। আমার মত এখানে অনেকেই এই কাজটি করছে। আমি এখন যে জায়গায় আছি এটা সম্পূর্ণ নতুন সংস্করণ আমি এখনো কাঙ্ক্ষিত সেই পুরনো বিল্ডিংটাতে যাইনি।
জুমার নামাজ শেষ করে খুব তাড়াতাড়ি করে আমি সামনের অংশটায় ঢোকার চেষ্টা করলাম। কারণ পুরুষদের নামাজ শেষ হয়ে গেলে সেখানে কালো পর্দা দিয়ে ঘেরাও করে মহিলাদের নামাজের সুযোগ করে দেয়া হয়। প্রথমে ঢুকেই সামনের অংশটায় দাড়ালাম। প্রথম ফটোগ্রাফিতে সামনের দিকে সরু গলি দেখা যাচ্ছে ওই দিক দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। একদম মাথা নিচু করে ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলাম। কষ্ট হচ্ছিল তবুও দেখার উদ্দেশ্য নিয়ে যেহেতু এসেছি কষ্ট করে ঢুকলাম। ঢুকে আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম অনেক পুরু দেওয়াল দিয়ে বানানো ভেতরে এক কাতারের একটি মসজিদ। সর্বসাকুল্যে ১৬ জন লোক দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারবে বারান্দার পেছনের অংশটা নতুন সংস্করণ।
সেখান থেকে বেরিয়ে এসে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলাম। ভিন্ন ভিন্ন লোকের কাছে ভিন্ন রকম মন্তব্য শুনতে পেলাম। তবে এখানে বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তি রশিদ দিয়ে টাকা কালেকশন করছেন উনার কাছ থেকে একটি তথ্য জানতে পারলাম। মসজিদটি কম কম করে হলেও ১০০০ - ১২০০ বছরের পুরনো কেউ মসজিদ সম্বন্ধে সঠিক ইতিহাস জানে না বলেই লোকমুখে প্রচার হয়েছে মসজিদে ভেসে উঠেছে। আমার কাছে এই যুক্তিটা একটু বিশ্বাসযোগ্য মনে হল। ওনার কাছ থেকে কথা বলার পর বেরিয়ে যাওয়ার পথে এক ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো। তিনিও একই রকম বক্তব্য শেয়ার করলেন উনার কাছে আমি জানতে পারলাম আজ থেকে ১৫ বছর আগেও এখানে তেমন লোকের যাতায়াত ছিল না। এলাকার কিছু লোক ভেতরে এসে নামাজ পড়তো হাতেগোনা কয়েকজন। মসজিদের পুরনো দেওয়াল গুলোর বাইরে যে কুঠুরি ছিল সেখানে অনেক সাপের গর্ত ও বিভিন্ন প্রকারের পাখির বাসা ছিল সেখানেই পাখিরা ডিম ও বাচ্চা দিত। মসজিদের নতুন সংস্করণ অল্প কয়েক বছরের। এখন এখানে প্রতি সপ্তাহে প্রচুর মানতের টাকা খাসি, মুরগি সহ নানা ধরনের জিনিস জমা হয়।
ছুটির দিনে বাইরে এসে ঐতিহাসিক এই নিদর্শন দেখে আমার বেশ ভালই লাগলো। বেশি ভালো লাগলো অনেক পুরনো দিনের এই মসজিদটি সংস্কার করে এখনো সেখানে নামাজ আদায় করতে দেখে। আমার ধারনা এই মসজিদটি কোন খলিফাদের আমলের হতে পারে। যাই হোক এত কিছু না ভেবে আমি নামাজ পড়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | w3w location |
মসজিদটা দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে। এরকম জায়গায় নামাজ পড়তে ভালো লাগে। তবে আসলে মসজিদ নির্মাণের আসল ঘটনাটা কি সেটাও তো জানা যেত তাহলে ভালো হতো। আসলে গ্রামের মানুষের রকমই একটা জিনিসের বিভিন্ন রকম উপমা দিয়ে থাকে। তবে সঠিক টা জানা থাকলে খুব ভালো লাগতো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
সামনের পুরনো মসজিদটি আমার কাছেও মনে হয়েছে কোনো খলিফাদের আমলের হবে। কারো কাছে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলো না।
কোন বিশ্বস্ত সূত্র থেকে মসজিদটির ইতিহাস জানতে পারলে ভালো হতো। তবে এই ধরনের একটি মসজিদ আমি আমাদের এলাকায় দেখেছি। অনেক পুরু দেওয়ালের মসজিদ। কিন্তু ভেতরে খুব অল্প জায়গা। এই ধরনের মসজিদগুলি অনেক আগে নির্মিত। ভাল একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মসজিদটি তাই নির্ভরযোগ্য কোন জায়গা পাইনি সঠিক তথ্য নেয়ার জন্য। যার কারণেই এই মসজিদটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আর মসজিদের ভেতরে মাত্র ১৬ জন লোক একসাথে নামাজ পড়তে পারে।
আপনি জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য বাইকে করে চলে গেলেন এই মসজিদ, আপনার ফটোগ্রাফি দেখে এবং লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছে এটি ওই এলাকার বিখ্যাত কোন মসজিদ, খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্টের মাধ্যমে নতুন মসজিদ সম্পর্কে জানতে পারলাম।
ওই এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল অনেক পুরনো একটি মসজিদ দেখা। ধারণা করা যায় সেটা ১০০০-১২০০ বছর পুরনো। আমার মনে হয় কোন খলিফাদের আমলের হবে পেছনের অংশটা সংস্কার করা হয়েছে।
আমাদের দেশে এরকম অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে আসলে। আমাদের এলাকায় এরকম একটা মসজিদের কথা শোনা যায়। যদিও আসলে কতটুকু সত্য এটা বোঝা মুশকিল। তবে আল্লাহর ঘর নামাজ পড়তে হবে। এটাই আসলে মূল উদ্দেশ্য। আপনার মাধ্যমে খুব সুন্দর একটি ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারলাম ভাই। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মসজিদ সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়ার জন্য।
অনেক পুরনো মসজিদ একদম প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে তাই গ্রামের এই সমস্ত লোকের কাছে সঠিক তথ্য পাওয়া খুব মুশকিল।
মসজিদ সম্পর্কে আরো একটু ভালো তথ্য জানা দরকার ছিল। যাক আপনি আপনার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। আর বেশ দূরে কষ্ট করে গিয়েছেন আমাদের পুরো বিষয়টি দেখানোর জন্য। আপনার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
এটাই তো প্রবলেম সঠিক তথ্য জানার কোন উপায় খুঁজে পাইনি। সে কারণেই মিশ্র কিছু ধারণার সৃষ্টি হয়েছে কেউ বলে মাটির নিচ থেকে ভেসে উঠেছে আবার কেউ বলে ১২০০ বছরের পুরনো।
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর করে কাজির মসজিদের ফটোগ্রাফি করেছেন। আমার তো দেখে খুবই ভালো লাগলো। মসজিদটি দেখে বেশ বড়সড় মনে হচ্ছে। যাইহোক আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া কাজীর মসজিদ সম্পর্কে ধারণা টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল
মসজিদটি বেশ বড় তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আমি দেখতে গিয়েছি পুরনো সেই ছোট মসজিদেটি যেটা সামনের দিকে। একসাথে মাত্র ১৬ জন লোক নামাজ পড়তে পারে। তথ্য নিয়ে যেটা জানতে পারলাম মসজিদটি ১০০০-১২০০ বছরের পুরনো।
মসজিদের ফটোগ্রাফি দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাই। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে বর্ণনা দিয়েছেন। আপনার পোস্টগুলো আমি ফলো করি। কাজীর মসজিদ দর্শন এর অভিজ্ঞতা শেয়ারের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।
সামনের দিকে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এক কাতারের মসজিদটি দেখার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। পেছনের অংশটা একেবারেই নতুন।
যুক্তিতে বস্তু মিলে তর্কে বহুদূর। তবে আপনার বাড়ি থেকে প্রায় 30 কিলোমিটার দূরে এই তথ্যবহুল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য গিয়েছেন। এবং যতটুকু সম্ভব হয়েছে জানার চেষ্টা করেছেন এবং আমাদেরকে জানিয়েছে। অসাধারণ ছিল, পরিশেষে একটা কথা বিশ্বাসযোগ্য যে এটা অনেক পুরনো এবং কোন অলি গণের আমলের। আমাদের সাথে আপনার মনের ভাবগুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
সবার সঙ্গে আলোচনা করেও সঠিক কোন তথ্য পেলাম না। কেউ বলে মসজিদটি ভেসে উঠেছে আবার কেউ বলে ১২০০ বছরের পুরোনো সঠিক তথ্য নেওয়ার কোনো উপায় খুঁজে পাইনি।
নামাজ হলো দর্শন হলো
দেখে ভরিলো মন,
সুন্দর সুন্দর ছবি এনে
করলেন প্রদর্শন।।
কাজির মসজিদ বাড়ির কাছে
দেরিতে ভ্রমণ
অনেক আগে দেখতে পার
তেন করিয়ে গমন।
পুরনো মসজিদের ভিতরে মাথা নিচু করে কষ্ট করে ঢুকে দেখলাম সে মসজিদটি এক কাতারে কোন রকমে ১৫-১৬ জন লোক নামাজ পড়তে পারে
মসজিদটির নাম শুনেই বুঝা যায় যে ,এটা পারিবারিক মসজিদ ছিল ।এটা কোন জামে মসজিদ ছিল না। হয়তো বা নাও হতে পারে ।তবে আমার ধারণা এটা পারিবারিক মসজিদ ছিল।
হতেও পারে আবার নাও হতে পারে কারণ অনেক পুরনো মসজিদ। সেখানকার খাদেমের কাছে জানতে পারলাম ১০০০-১২০০ বছর আগের মসজিদ। আমার মনে হয় কোন খলিফাদের আমলের হবে।