প্রকৃতির মাঝে কিছু রেনডম ফটোগ্রাফি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_22-07-07_20-37-09-708.jpg

প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ট হওয়ার উপক্রম। সেটা আমার মত আপনারাও হয়তো কিছুটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। শুধু যে গরম তা নয় এর সাথে যোগ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এই গরমের মধ্যে শেষ ভরসা হচ্ছে ফ্যান। যদি সেটাও ঠিক মত চালাতে না পারি তাহলে এই গরমের মধ্যে ঘরে টিকে থাকাই মুশকিল। কিছুটা প্রশান্তি খুঁজতে বাইরে বেরিয়ে পড়লাম কিন্তু কোথাও বসে তেমন শান্তি পেলাম না। মনে মনে ভেবে নিলাম এই পরিস্থিতিতে শান্তির একমাত্র জায়গা নদীর পাড়। নদীর পাড়ে গেলে হয়তো সেখানকার ঠান্ডা বাতাসে কিছুটা প্রশান্তি পাওয়া যাবে।

এই মুহূর্তে আমি গ্রামে আছি। ফটোগ্রাফি গুলো গ্রামে আসার ৩-৪ দিন আগে করা। এখানে আসার আগে ভেবেছিলাম সবকিছু ঠিকমতো ম্যানেজ করে নেয়া যাবে হয়তো। তাই আগে থেকে আগে থেকে সেরকম পরিকল্পনা করেই এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে নেট সমস্যার কারণে কিছুই করতে পারছি না। আজকে বাসা থেকে অনেক দূরে এসে এই ফটোগ্রাফি পোস্টটি শেয়ার করার প্রয়াস করছি। এখন ভাবছি এভাবেই যে কয়েকটাদিন থাকবো চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

20220708_003804.jpg
20220708_003726.jpg

Location

নদীর পাড়ে একদম তীর ঘেঁষেই খড়কুটো নামের এই রেস্টুরেন্টের অবস্থান। বর্ষা মৌসুমে দেখে মনে হয় একদম পানিতে ভাসমান এই রেস্টুরেন্ট। আমি প্রতিনিয়তই এই পথ দিয়ে যাতায়াত করি কিন্তু কেন জানি কখনো এখানে বসা হয়নি। রেস্টুরেন্টের পাশ দিয়ে বাক নেয়া যে বাঁধের অংশটুকু আছে সেখানেই সবসময় বসতে আমি বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। আপাতদৃষ্টিতে পানিতে ভাসমান এই রেস্টুরেন্ট দেখে খানিকটা বসতে ইচ্ছা করলো। কাঠ, বাঁশ ও টিনের তৈরি এই রেস্টুরেন্টটি দূর থেকে দেখতে খুব ভালো লাগে। ঠিক তেমনি ভাবে এখানে বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতেও খুব একটা খারাপ লাগলো না। শুকনা মৌসুমে যখন নদী কিছুটা দূরে চলে যায় তখন অবশ্য এখানে বসে থাকতে খুব একটা ভালো লাগে না।

20220707_202912.jpg
20220707_202839.jpg

Location

বহু বছর পর কাটাযুক্ত এই গাছটি দেখে একদম ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় মাঠে খেলতে গিয়ে এই গাছের কত কাটা পায়ে ফুটেছিল। আর বাসায় এসে সুইয়ের মধ্যে স্যাভলন লাগিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সে কাঁটা বের করেছি।আসলে অনেক আনন্দের ছিল সেই সব দিনগুলি। খড়কুটো রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে নদীর পাড়ে ব্লক দিয়ে যে বাঁধের অংশটা ছিল সেখানেই এই গাছটির দেখা মিলল। ছোটবেলায়ও এই গাছের সঠিক নাম জানতাম না আর এখন পর্যন্ত জানতে পারিনি। গুগলে সার্চ দিয়ে এই গাছটির নাম জানতে পারলাম "katabegun"। কাঁটাযুক্ত এই গাছটির মধ্যে টকটকের লাল রঙের খুব সুন্দর ফল আসে। আমরা ছোট বেলায় খেলার সময় এই ফলগুলো দিয়ে ডিম বানাতাম। আহ্ স্মৃতিগুলো আর মনে করতে চাই না।

20220707_202534.jpg
20220707_202352.jpg
20220707_202438.jpg
20220707_202604.jpg
20220707_202231.jpg

Location

খেয়া পারাপারের কষ্টের কিছুটা অবসান ঘটানোর জন্য ভাসমান একটি ব্রিজ করা হয়েছে। ব্রিজটা দেখে খুব ভালো লাগলো খেয়ার নৌকার জন্য আর বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। নিচে সারিবদ্ধ ভাবে অনেকগুলো ড্রাম বেঁধে তার উপরে বাসের চাটাই দিয়ে এই ব্রিজ করা হয়। ভাসমান ব্রিজগুলোর সুবিধা এগুলো পানির লেভেলের সঙ্গে উঠানামা করে। ভাসমান ব্রীজের উপর দিয়ে হাঁটার সময় দেখলাম এক জেলে ভাই কিছুক্ষণ আগে মাছ ধরে আসার পর একটি নৌকা বেঁধে রেখেছিল। হঠাৎ করে দেখে নৌকাটি খুব ভালো লাগলো তাই এই আলোকচিত্র।

20220707_203214.jpg
ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A-10
ফটো@mayedul
লোকেশনw3w location

একদম সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলাম নদীর পাড়ে। গোধূলি লগ্নে ফটোগ্রাফি করতে আমার বেশ ভালই লাগে। এই মুহূর্তটা আকাশের লাল আভা পুরো পরিবেশকেই রঙিন করে তোলে। কিছুক্ষণ নদী অববাহিকায় থেকে নদীর শীতল হাওয়ায় শরীর যেমন সতেজ হয়েছে। মনটা তার চেয়েও বেশি সতেজতা অনুভব করছে। আসলে শহুরে কোলাহল থেকে কিছুটা প্রশান্তির জন্য আমি সবসময় নদীটাকেই বেছে নেই।

প্রচন্ড গরমের মাঝে কিছুদিন থেকেই বেশ অস্থিরতা অনুভব করছি। এই গরমের মাঝে কারেন্ট না থাকলে জীবন যেন একেবারে থমকে যায়। সেই সাথে গ্রামে এসে নেট সমস্যার কারণে একেবারে আপনাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি। আরো কয়েকটা দিন গ্রামে থাকতে হবে তাই বলে তো আর সবকিছু থেকে বিরত থাকা যায় না। বিশেষ করে আমার বাংলা ব্লগ পরিবার থেকে দূরে থাকাটা অনেক কষ্টদায়ক। তাই বাসা থেকে অনেক দূরে এসে কষ্ট করে হলেও এনগেজমেন্ট ঠিক রাখার চেষ্টা করতে হবে।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Sort:  

Building a better world through information ℹ🛡🤝

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি প্রকৃতির খুব সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। নদীর পাড়ে সন্ধ্যাবেলার সূর্যাস্তের ছবিটি বেশ সুন্দর ছিল। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইল।

 2 years ago 

প্রকৃতির সৌন্দর্য কোনভাবেই বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আর সূর্যাস্তের দৃশ্য সব সময় আমার কাছে খুব ভালো লাগে।

 2 years ago (edited)

আসলেই গরমে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই গরমে একমাত্র প্রশান্তির নিয়ে আনে ফ্যান।‌‌ রংবেরঙের রেস্টুরেন্টটি অনেক সুন্দর লাগছে । আর কাঁটাযুক্ত কাজটিও অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আর পোস্টে ভিজিট করে সুন্দর মন্তব্য করেছেন। কাটাযুক্ত গাছটি এখন আর চোখেই পড়ে না। অথচ আমরা ছোটবেলায় এই গাছগুলোর জন্য মাঠে খেলতে পারতাম না।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

প্রকৃতির মাঝে কিছু রেনডম ফটোগ্রাফি দেখতে খুবই অসাধারণ ভালো লাগলো। আপনি খুব অসাধারণ করে থাকেন আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি সুন্দর করে সাজিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভকামনা রইলো।

 2 years ago 

প্রকৃতির এই সৌন্দর্য সবসময় আমাকে মুগ্ধ করে। আমার পোস্টে ভিজিট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

প্রকৃতিকে সামনে রেখে খুব সুন্দর কিছু দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করেছেন আপনি এবং এগুলো অনেক ভালো লেগেছে আমার।ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

আসলে প্রকৃতি বিভিন্ন সময়ে এত সুন্দর করে নিজেকে সাজিয়ে রাখে সেটা দেখে ফটোগ্রাফি না করে উপায় নেই।

 2 years ago 

এটা ঠিক বলেছেন কিছু সময় ফটোগ্রাফি না করলে মনে হয় মিস করেছি, ধন্যবাদ আপনাকে ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই। এই গরমে যদি আবার লোডশেডিং হয় ঘরে টেকা যায় না। এজন্য বাইরে বের হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন রাস্তা থাকে না। বাইরে গিয়ে প্রকৃতির র‍্যানডম ফটোগ্রাফি গুলো ভালো করেছেন। আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে ভাসমান সেতুটা।

 2 years ago 

প্রচন্ড গরমে কয়েকদিনের লোডশেডিং আমাদের জীবন একদম অতিষ্ট করে তুলেছিল।

 2 years ago 

লোড সেডিং টা অনেকটাই কমে এসেছে আমাদের এখানে। এই গরমে লোডশেডিং হলে খুবই সমস্যা পরতে হয়। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আসলে অনেক সুন্দর ছিল। এসব রেনডম ফটোগ্রাফি দেখতে খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম।

 2 years ago 

প্রথমেই ঈদের শুভেচ্ছা জানাই 🕌
ঈদ মোবারক 🤗
প্রতিটি ছবি এবং বর্ননা খুব সুন্দর ছিল।
কাটা বিশিষ্ট ঐ ফলটি নিয়ে আমরাও খেলা করেছি একটা সময়ে। পানির উপর ভাসমান রেস্টুরেন্ট বেশ চমৎকার ছিল।
আর শেষের ছবিটা অসাধারণ হয়েছে।
আপনার ঈদ খুব ভালো কাটুক দোয়া রইল।

 2 years ago 

বন্যার সময় এই রেস্টুরেন্টের আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
সূর্যাস্তের মুহূর্তে সূর্যের লাল আভা দিয়ে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আমার তো সবসময় খুব ভালো লাগে।

 2 years ago 

প্রকৃতির মাঝে কিছু রেনডম ফটোগ্রাফি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে নৌকা ও নদীর দৃশ্য।। সুন্দর উপস্থাপন করেছেন শুভকামনা রইল

 2 years ago 

নৌকা ও নদীর দৃশ্য দেখতে আমার কাছেও খুব ভালো।
আসলে আমরা সবসময় ভালোলাগা থেকেই ফটোগ্রাফি করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61159.70
ETH 2631.81
USDT 1.00
SBD 2.63