চাঁদ রাতে চাঁদ দেখতে যাওয়ার স্মৃতিমন্থন || 10% beneficiary to @shy-fox.
হ্যালো আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
রমজান মাসের বিশটি রোজা পার হলেই আমরা দিন গুণতে থাকি কবে ঈদ আসবে। আর তখন থেকেই ঈদের পরিকল্পনা শুরু হয়ে যায়। ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য প্রথমে আমাদের নতুন কাপড়ের বিষয়টা মাথায় চলে আসে। বড় বড় শপিং মল সহ প্রত্যেকটা দোকানেই ভিড় লেগে যায় ঈদের কেনাকাটা করার জন্য।
ঈদের আনন্দ আসলে অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। তারপরেও এর পরিপূর্ণ আনন্দ শুরু হয় ঈদের আগের দিন চাদ দেখা থেকে। ঈদের আগের দিন শেষ রমজানের ইফতারের কিছুক্ষণ আগে থেকেই চাঁদ দেখার জন্য মনটা ছটফট করতে থাকে। তাই ইফতার করার পর পরই খুব দ্রুত নামাজ আদায় করে চাঁদ দেখার জন্য বেরিয়ে পড়ি। এটা অবশ্য আমার ছোটবেলার কথা বলছি। এখন আর চাঁদ দেখার এরকম আগ্রহ বা আনন্দ কোনটাই চোখে পড়ে না। আধুনিকতার এই যুগে সবাই চাঁদ দেখা কথা ভুলে গিয়েছে হয়তো কখনো টিভিতে একটু শুনে আগামীকাল ঈদ।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | w3w location |
আমার ছোটবেলায় আমরা ঈদের চাঁদ দেখার জন্য ইফতার করতে বসি ছটফট করতাম কখন ইফতার শেষ করে নামাজ পড়ে চাঁদ দেখতে যাব আর চাঁদ দেখার পর পকেটে করে নিয়ে যাওয়া পটকা ফুটাতাম। ঈদের আগের রাতে চাঁদ দেখার পর পটকা ফোটানোর জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতাম। আরেকটা আনন্দের বিষয় ছিল চাঁদ দেখে এসে টিভিতে রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ গানটি শোনা।
আজকে হঠাৎ করে অনেকদিন পর আমার এই পুরনো স্মৃতিগুলো কথা মনে পড়ে গেল। তাই অনেক কৌতুহলী হয়ে আমার এক বন্ধুকে ফোন করলাম আজকে নদীর পাড়ে চাঁদ দেখতে যাব। এখন শহরের অবস্থা এমন হয়েছে আশেপাশে অনেক বিল্ডিং হওয়ার কারণে ঠিকমতো চাঁদ দেখা যায় না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ফাঁকা জায়গায় গিয়ে ঈদের বাঁকা চাঁদ দেখব। ফাঁকা জায়গা খুঁজতে আমরা নদীর দিকটায় বেছে নিলাম। কারণ এখানকার পরিবেশটা অনেক ভালো এই চিন্তা করে ইফতারের কিছুক্ষণ আগেই আমরা নদীর পারে চলে গেলাম।
ইফতারের পর আমি অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম কিন্তু চাঁদের দেখা পেলাম না। চাঁদ দেখার ইচ্ছা আমার আজকে আর পূরণ হলো না। কারণ আকাশে অনেক মেঘ ছিল। আর শেষ বিকালে এসে কিছুটা গুড়িগুড়ি বৃষ্টিও হয়েছে। তারপর অনেকক্ষণ সেখানে বসে ছিলাম বসে থাকতে আমার ভালই লাগছিল। দিনটাও অনেক ঠান্ডা ছিল তাই নদীর পাড়ে চায়ের দোকানে বসে চা খেয়ে কিছুক্ষণ থাকার পর সিদ্ধান্ত নিলাম বাড়িতে গিয়ে রমজানের ওই রোজার শেষে গান শুনতে থাকি।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | w3w location |
আসলে চাঁদ রাতে বাড়িতে অনেক কাজ থাকে বাজারেও কোন কিছু কেনাকাটার বাকি থাকলে সেরে নিতে হয়। রাত পোহালেই যেহেতু ঈদ আর তাই ঈদ আয়োজন এর কোন কমতি থাকলে চাঁদ রাতেই সব করে ফেলতে হবে। চাঁদ রাত বলতে আমরা ঈদের আগের দিন রাতকে বুঝিয়ে থাকি। আজকে আমি সন্ধ্যা বেলা চাঁদ দেখতে এসে ব্রিজের পাশে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম এখানে বসে থাকত আমার খুব ভালো লাগছিল। আরো কিছুক্ষণ থাকার ইচ্ছা ছিল কিন্তু বাকি কাজগুলো রাতেই করে ফেলতে হবে তাই আর বেশিক্ষন বসে থাকতে পারলাম না।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | w3w location |
ব্রিজ পার হয়ে শহরের দিকে চলে আসলাম আজকে রাতে শহর টা অনেক ভালো লাগছে। চাঁদরাতে ঈদ কে বরণ করে নেওয়ার জন্য শহরটা অনেক সুন্দর করে সেজে উঠেছে। শহরের জিরো পয়েন্ট দিয়ে সব সময়ে যাতায়াত করি কিন্তু এই জায়গাটা এত ভালো কখনো লাগেনি। ঈদের আগের এই চাঁদ রাতে শহরের এই জায়গাটা দেখে খুব ভালো লাগলো। শুধু এই জায়গা নয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোকে রঙিন আলোয় রাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।
চাঁদ রাতে আমরা যে পরিমাণ আনন্দোৎসব করতাম এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে সেটা আর বিশেষ করে চোখে পড়ে না। আমাদের সময় ঈদের দিনের চেয়ে কোন অংশে কম ছিলনা চাঁদ রাতের আনন্দ। আমার মনে আছে এমনও চাঁদ রাত গেছে আমার যে রাতে শপিং করে এসে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমাতাম। আনন্দ এতটাই ছিল রাত কখন ভোর হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি আসলে আমাদের আনন্দ করার জায়গা টাও অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। স্মার্টফোন ইন্টারনেটের এই সময়ে এসে জাগতিক আনন্দগুলো যেন সবাই ভুলেই গিয়েছে।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন ভাই। পাড়ার সকলে একত্রিত হয়ে চাঁদ দেখার জন্য রাস্তার এক সাইডে দাঁড়িয়ে পড়তাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বেশিরভাগ সময়ই আকাশ মেঘলা থাকার জন্য চাঁদ দেখতে পেতাম না। অনেকেই ইয়ার্কি করে বলতো চাঁদ দেখেছি সবাই দেখার আশা করতাম কিন্তু দেখতে পেতাম না। খুব ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর পোস্ট দেখে।
আমারও আজকে একই রকম অবস্থা আকাশ মেঘলা থাকার কারণে চাঁদ দেখতে পেলামনা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভাইয়া আপনি আজকে চমৎকার ভাবে চাঁদ রাতে চাঁদ দেখতে যাওয়ার স্মৃতিমন্থন অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
আমার পোস্টটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।
ভাই ছোটবেলার স্মৃতি মনে করে দিলেন ভাই। ছোটবেলায় এরকম আনন্দ টা অনেক কাজ করতো। তবে আসলে বড় হওয়ার পর যেন আনন্দে চলে গেছে। ছোটবেলায় এরকম সবাই মিলে বড় আপুদের সাথে চাঁদ দেখতে যেতাম। তবে সেই আনন্দটা এখন আর নেই। খুব ভালো লাগলো আপনি বন্ধুর সাথে নদীর পাড়ে চাঁদ দেখতে গেছেন। আশেপাশের পরিবেশ টা অনেক সুন্দর ভাই। খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝেই ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আসলে ভাই আনন্দের জায়গাটাই এখন বদলে গেছে। ছোটদের মাঝে সেই আগের মত চাঁদ দেখার আমেজ খুঁজেই পাওয়া যায় না।
আপনার এই পোস্ট দেখে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল ভাইয়া। ছোটবেলায় এই দিনটার জন্য অনেক অপেক্ষা করতাম যখন এদিন চলে আসত তখন দৌড় দিয়ে চলে যেতাম নদীর ধারে। নদীর ধারে গিয়ে চাঁদ দেখতেন সকলে মিলে অনেক সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করতেন কিন্তু এখন অনলাইনের যুগে আর এরকম কেউ দেখতে চায় না। তবে আপনার এই পোস্ট দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই ছোটবেলায় এই মধুর স্মৃতিগুলো জড়িয়ে আছে।
পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল ভাইয়া ছোটবেলায় আমরা এভাবে চাঁদ দেখার জন্য উৎফুল্ল হয়ে উঠতাম। অনেক বছর হলো ঈদের চাঁদ তেমন দেখা হয় না তবে এবার ইফতার করার পর সালাত আদায় করে বাইরে আকাশের দিকে তাকাতেই ঈদের চাঁদের দেখা পাই। ধন্যবাদ গুছিয়ে আপনার কথাগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য
আমার এলাকায় দাঁড়িয়ে এখন আর চাঁদ দেখা যায় না ভাই। তাই চাঁদ দেখতে এলাকার বাইরে চলে গিয়েছিলাম।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া প্রযুক্তি যত আধুনিক হচ্ছে আমাদের আনন্দের পরিমাণটাও ততবেশি কমে যাচ্ছে। ছোটবেলায় আমরা দেখতে পেতাম সবাই চাঁদ দেখার জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আর কেউ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে না সবাই তাকিয়ে থাকে মোবাইল অথবা কম্পিউটার এর দিকে চাঁদের সংবাদ এর জন্য।
আসলেই আমাদের আনন্দ জায়গাটা অনেক ছোট হয়ে এসেছে।
ঈদ এর চাঁদ দেখার অন্য রকম এক্টা আনন্দ ছিলো। এখন কারো মাঝেই সে আনন্দ দেখা যায় না। এখন কেউ আর চাঁদ দেখে না, চাঁদ উঠেছে কিনা সে খবর শোনে।
আপনি নদীর পাড়ে চাঁদ দেখতে গিয়েছেন শুনে খুব ভালো লাগলো। আকাশ মেঘলা থাকায় চাঁদ দেখতে পেলেন না শুনে একটু খারাপ লাগলো।
যথার্থই বলেছো "এখন কেউ আর চাঁদ দেখে না, চাঁদ উঠেছে কিনা সে খবর শোনে।" অথচ আমাদের ছোটবেলায় চাঁদ রাতে চাঁদ দেখা থেকেই ঈদের আনন্দ শুরু হতো।