কর্ণফুলী টানেল আমাদের আরেকটি মাইলফলক
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
মানবতার উন্নয়ন কতটুকু হয়েছে সেখানে প্রশ্ন থেকেই যায়। কিন্তু কাঠামোগত উন্নয়ন যে আমাদের দেশে বেশ ভালই হয়েছে সেটা জোর গলায় বলতে পারি। এইতো কয়েক মাস আগে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেল। যেটি আমাদের গর্বের একটা অংশ। মেট্রো রেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। আরো অনেক কিছু থাকতে পারে সে বিষয়ে যেতে চাচ্ছি না।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমরা চাই না আমরা চাই মানবতার উন্নয়ন। পরিবার নিয়ে সম্মানের সাথে ডাল ভাত খেয়ে যেন বেঁচে থাকতে পারি এটাই আমাদের চাওয়া। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে মধ্যবিত্ত শ্রেণী। আমরা দিনমজুরের কাজও করতে পারি না আবার স্বল্প আয়ে ঠিকমত চলতেও পারছি না। যাইহোক আমরা শুধু ভালো থাকতে চাই এটুকুই আমাদের চাওয়া পাওয়া। বাকিটুকু দেখে নেবে আমাদের দেশের নীতি নির্ধারক মহল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল এখন পর্যন্ত নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আছে। যতদিন পর্যন্ত যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে না দেয়া হবে ততদিন সিকিউরিটি তারাই দেখবে। ইতিমধ্যে দুইটি টিউবের মধ্যে একটি টিউব উদ্বোধন করা হয়েছে। অপরটি ডিসেম্বরের মধ্যেই হয়ে যাওয়ার কথা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হতে পারে।
ফেব্রুয়ারিতে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলে আমাদের গর্ভের আরেকটি অংশের সূচনা হবে। কর্ণফুলী টানেল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীর তলদেশ দিয়ে অপর প্রান্তে আনোয়ারায় গিয়ে উঠেছে। ৩.৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ কর্ণফুলী টানেল আমার দেশের প্রথম টানেল। শুধু তাই নয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেও নদীর তলদেশ দিয়ে স্থাপিত প্রথম টানেল।
কর্ণফুলী টানেল সম্বন্ধে আগে থেকে জানতাম কিন্তু পতেঙ্গায় সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গিয়ে দেখতে পাব এটা ধারণা করিনি। পতেঙ্গায় যাওয়ার সময় যখন সিএনজি নতুন এই সড়ক দিয়ে যাত্রা শুরু করলো তখনই ড্রাইভার সাহেবের কাছে জানতে পারলাম এটা টানেলের সংযোগ সড়ক। তাই সৈকতে যাওয়ার আগেই টানেলের সামনে একটু যাত্রা বিরতি করেছিলাম।
জনসাধারণের জন্য প্রবেশ নিষেধ তাই সামনে এগোতে পারলাম না। পতেঙ্গা সৈকত থেকে সামান্য কিছু দূরে টানেলের সম্মুখভাগ শুরু। পেছনে কিছুটা দূরে লাল যে অংশটা দেখা যাচ্ছে সেটি টানেলের মুখ। এবারের মত দেখার সৌভাগ্য হলো না। শুধু আমার নয় বাকি সবারই একই অবস্থা। তাই সবাই এখানে দাঁড়িয়ে স্মৃতিটাকে ধরে রাখার জন্য ফটোগ্রাফি নিতে শুরু করেছে আমিও কিন্তু বাদ যাইনি।
আমার বাকি কলিগ দুইজন সেখানে দাঁড়িয়ে সেলফি নিতে ব্যস্ত। ওদের মত আমারও এখান থেকে যেতে ইচ্ছা করছিল না এখনো নতুন সবকিছু ঝকঝকে পরিষ্কার। সম্পূর্ণ এলাকাটা অনেক প্রশস্ত রাস্তাঘাট ও নতুন নতুন স্থাপনা দেখে ভালই লাগলো। চায়না যে কোম্পানি প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে তাদের থাকার জন্য বেশ কিছু স্থাপন আছে। সেদিকটাও অনেক সুন্দর।
যাইহোক দেশে এগিয়ে গেলে আমরাও এগিয়ে যাব। আমাদের দেশের এই ধরনের অর্জন গুলো ভাবতেও অনেক ভালো লাগে। এখন শুধু ভাবছি নিজেরা কিভাবে ভালো থাকতে পারবো। পতেঙ্গা সৈকতে এসে কর্ণফুলী টানেল দেখতে পারবো আগে কল্পনাই করিনি। অন্যরকম একটি অভিজ্ঞতা হল। তবে উদ্বোধন হওয়ার পর একবার আসতেই হবে দেশের প্রথম বলে কথা
নতুন যে সংযোগ সড়ক সেটি কণফুলী টানেল হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে সংযুক্ত হবে। আমরা কর্ণফুলী টানেলের সামনে দাঁড়িয়ে টানেল পিছনে ফেলে একটি সেলফি নিয়েছিলাম। সামনে সংযোগ সড়কের দৃশ্যগুলি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। কোথাও কোন ময়লার ছিঁটে ফোঁটা নেই। কতদিন যে এরকম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে সেটাই প্রশ্ন। আমাদের যা স্বভাব সচেতনতা আমাদের একদমই নাই। আবারো একটু বলে রাখি আমাদের পেছনে যে লাল অংশটা দেখা যাচ্ছে সেটি টানলের টিউবের মুখ।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | পতেঙ্গা, চট্রগ্রাম |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনি একদম ঠিক বলেছেন। উর্ধ্বগতির এই বাজারে আমাদের ঠিকে থাকাটাই অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও চলতে হবে। আমাদের দেশে অবকাঠামোগত ভালোই উন্নয়ন হচ্ছে তাহলে। নতুন একটা মাইলফলকের অপেক্ষায় আমরা 🌼
আপনার কথার সাথে আমি একদম একমত, অবকাঠামো গত উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন ভীষণ জরুরি। আমরা মধ্যবিত্তরা এখন এমন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি ঠিকমতো পরিবারের ভরণ পোষণ চালাতে পারছি না। দিন দিনই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের নাজেহাল করে দিচ্ছে। আমরা এত উন্নয়নের চাইতে দুবেলা দু'মুঠো খাবার খেয়ে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে চাই। আপনার কর্ণফুলী টানেলে ভ্রমণ দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই ছবিগুলো সহ আপনার সামগ্রিক অনুভূতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।