বর্ষণমুখর একটি দিন
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
আমার ওই মার্কেটের কলিগ অনেক বড় একটা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। জড়িয়ে পড়েছে বললে ভুল হবে সে নিজেই ওই কাজের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। গত মাসে ক্লোজিং করার সময় সে দুইটি কিস্তিতে কোম্পানির একাউন্টে অনলাইন করেছিল। পর্যায়ক্রমে প্রথমবার ৫০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয়বার ৬০ হাজার টাকা। অনলাইন করার পর ব্যাংক থেকে যে কাস্টমার কপি পাওয়া যায় সেটি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেই।
যথারীতি আমি ডকুমেন্টসগুলো হেড অফিসে পাঠিয়ে দিয়ে ক্লোজিং সম্পন্ন করেছি। কিন্তু মাস শেষে যখন কোম্পানির একাউন্টস অফিসার ব্যাংক থেকে স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করে তখন থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। স্টেটমেন্টে দেখা যায় আমার ওই কলিগ দুই কিস্তিতে যথাক্রমে ৫ হাজার ও ৬ হাজার টাকা অনলাইন করেছিল। এখন এই সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব আমার কাছে। আমি বিভিন্ন সময়ে বলেছিলাম আমার অধীনস্থ ৫-৭ জন কলিগের সমস্ত দায়িত্ব আমাকেই নিতে হয়। এই লোক যত বড় দুর্নীতি করেছে এখন কিভাবে এটা সামলে নেবো তা নিয়ে ভাবছি।
যাইহোক সকালবেলা প্রচন্ড গরমের মধ্যে বের হয়ে একটি রিকশা নিয়ে স্ট্যান্ডে চলে এলাম। সকাল বেলায় একটু তাড়াতাড়ি বের হলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচ পাওয়া যায়। তাছাড়া আবার অটো রিক্সাতেও আমি যেতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু আমার তাড়াহুড়া ছিল তাই বাসে উঠে পড়লাম। বাসে ওঠার কিছুক্ষণ পর আকাশে মেঘ জমতে শুরু করলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই হালকা বৃষ্টি তারপর গরম কিছুটা কমে গেল সকলের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম এখন বাস থেকে নামার পালা।
বাস থেকে নেমে আমি সরাসরি রিপোর্টিং প্লেসে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজকে সে আসেনি, আমার অফিসের ডিপো ইনচার্জ একটি ভুল করেছে। তাকে এই অপকর্মের বিষয়ে কিছুটা জানিয়ে রেখেছিল। যাই হোক আমি রিপোর্টিং প্লেসে আমার কলিগকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে শুরু করি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে আমি তার বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। বাইরে খুঁজতে খুঁজতে যোহরের আযান দিয়ে দিল। নামাজ আদায় করে কলিগের বাসায় যাব।
নামাজ শেষ হতে না হতেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর বৃষ্টি কিছুটা কমে গেলে দৌড়ে একটি চায়ের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেই। সেখানে বসেই কয়েক কাপ চা খাওয়া হয়ে গেল। তবুও বৃষ্টি ছাড়ার কোন নাম গন্ধই নেই। ক্রমেই বৃষ্টি যেন আরো বাড়ছে সেই সঙ্গে আমার মানসিক চাপও বেড়ে যাচ্ছে। অনেকগুলো টাকা আত্মসাতের ব্যাপার। কিন্তু বৃষ্টি না ছাড়লে কিছুতেই যেতে পারছিনা তাই বৃষ্টি ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ সময় পেরিয়ে গেল আর বসে থাকা যায় না। প্রচন্ড বৃষ্টিতে কোন প্রকার অটো বা রিক্সা চলতে দেখছি না।
কিছুদূর সামনে একটা অটো রিক্সা লক্ষ্য করলাম এখন দেখি সেটাতে যাওয়া যায় কিনা। বৃষ্টি কিছুটা কমার জন্য অপেক্ষা করছি এই অবস্থায় বের হলে একেবারে কাকভেজা হয়ে যাব। আবার মনের মধ্যে দুশ্চিন্তা হচ্ছে যদি বাসায় গিয়ে তার দেখা না পাই তাহলে অনেক বড় সমস্যা সৃষ্টি হবে। কয়েকবার ফোনে চেষ্টা করার পরেও কোন লাভ হলো না। আসলে দুর্নীতিগ্রস্ত লোকদের স্বভাব এমনই হয়। তারা সব সময় পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আদৌ কি তারা পালিয়ে বাঁচতে পারে ?
আমি আমার সেই কলিগের দেখা পেয়েছিলাম কিনা ? বা দেখা হওয়ার পরে সেই টাকাগুলো কি উদ্ধার করতে পেরেছিলাম ? ম্যানেজমেন্ট তার ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নিল ? সবকিছুর উত্তর হয়তো আমার নিজেরও জানা নেই। তবুও যতটুকু আমি করতে পেরেছি তা অন্যদিন শেয়ার করব।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
---|---|
ফটো | @mayedul |
লোকেশন | w3w location |
আপনি আপনার কর্তব্য পালনে বাধ্য দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া আজকে সকালে রোদের ঝলকানো খুব বেশি ছিল কিন্তু হঠাৎ করে পরে খুব বৃষ্টি হয়েছে।বৃষ্টি মুখর দিন আমার খুবই ভালো লাগে। আপনার এতগুলো প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় আমিও রইলাম ভাইয়া।
কি সমস্যা সমাধান করতে আমার আসলেই ঘাম ছুটে গিয়েছিল।
বাস্তবতার সাথে খাপ খাইয়ে কর্মব্যস্ততায় দিন পার করে চলছি আমরা সবাই।। সবকিছুর মূলেই রয়েছে আমাদের প্রশান্ত এবং ভালো থাকার অর্থ।। যাহোক বৃষ্টি যেন এখন সোনার হরিণ মাঝে মাঝে দেখা মেলে।। ছোটবেলায় একটা সিনেমা দেখেছিলাম সিনেমার নাম ছিল হঠাৎ বৃষ্টি।। সেই সিনেমাটার কথা এখন খুব করে মনে পড়ে আমাদেরও একই অবস্থা হঠাৎ বৃষ্টি দু এক মিনিট তারপরে আবার প্রখর রোদ্দুর।।
পরিবেশ পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন আমাদের এর মাঝেই এডজাস্ট করে চলতে হয়।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া আসলে আবহাওয়া যে হারে পরিবর্তন হচ্ছে শুধু বাংলাদেশ নয় সারা পৃথিবীতে কিছু করার নাই এটা প্রকৃতির নিয়ম আমাদেরকে এর সাথেই তাল মিলিয়ে চলতে হবে
অবহাওয়ার এই বিরুপ প্রতিক্রিয়ার জন্য অনেকাংশে আমরা নিজেরাই দায়ী।
এই দিকেও সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি কমেন্ট টা লেখার সময় টা তেও মুষল ধারে বর্ষণ হচ্ছে। রাতের বেলা বৃষ্টি ভালই লাগে। আর বেশ ভালো রকমের টাকা এদিক সেদিক করেছে তো দেখি। পরবর্তী তে কি হলো সত্যিই জানতে ইচ্ছে করছে।
ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে তার পাশে শুন্য বসিয়ে টাকার অংক বৃদ্ধি করে অফিসে জমা দিয়েছে। এসব চিন্তা করতেi আমাদের বুকে ওঠে। আর এরা অনায়াসেই এসব করে ফেলছে।
আসলে ঠিকই বলেছেন দুর্নীতিগ্রস্ত লোকগুলো পালিয়ে বেড়ায়। পালাতে তো পারেনা নিজেকে আরো বিপদের সম্মুখে ঠেলে দেয়। যাইহোক আপনি আপনার দায়িত্বের প্রতি অটল আপনার পোস্ট পড়ে বেশ বুঝতে পেরেছি। তবে পোস্টের মধ্যে একটা খটকা লেগেছে বিষয়টা হলো, কোথাও লিখেছেন ৫০ হাজার ও ৬০ হাজার আবার নিচে লিখেছেন পাঁচ ও ছয় হাজার সেটা আমি বুঝতে পারিনি। যাই হোক চেক করে দেখবেন।
হ্যাঁ আপনি একদম ঠিক দেখেছেন এই দুর্নীতিটাই সে করেছে। টাকার ফিগারের পাশে একটি করে শূন্য যোগ করে দিয়েছিল।
কর্তব্য কখনো হেলা করা ঠিক না আপনি সঠিক কাজটি করেছেন ভাই ৷
যা হো ভাই এবার আসলে আবহাওয়ার কোনো ঠিক নেই ৷মাঝে মধ্যে রোদ তো পরে বৃষ্টি ৷আর বৃষ্টির সময় কিন্তু চা ক্ষেতে ভালোই লাগে ৷
প্রচন্ড চাপে ছিলাম তাই বসে থাকার উপায় নেই।
ভাইয়া আপনার কলিগ কত বড় টাউট, ৫০,৬০ এর জাগায় ৫,৬ হাজার টাকা জমা দিয়েই ক্লোজ করে দিলো। আর আপনি লক্ষ করেন নি ৫ এবং ৬ এর পরে কয়টা শূন্য হা হা হা। দেখি পরের পর্বে কি আসে । ধন্যবাদ।
না না বুঝতে ভুল করেছেন।
ব্যাংকে ৫০০০ ও ৬০০০ টাকা জমা করে ডান দিকে শূন্য বসিয়ে ৫০০০০ও ৬০০০০ টাকার কপি জমা করেছে। আর কথায় লেখার সময় শেষে ty যোগ করেছিল।
দেখেন কি রকম বাটপার।