সূর্যের আলো দেখে মনে হচ্ছে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_22-07-18_23-02-16-954.jpg

এই ফটোগ্রাফি গুলো বেশ কিছুদিন আগে ঈদে গ্রামে থাকার সময় করেছিলাম। সেদিন দুপুরবেলা খাওয়ার পরে বিছানায় শুয়ে রেস্ট নিচ্ছিলাম। শুয়ে থাকতেই চোখটা ধরে এসেছিল। আমার আরাম কে হারাম করে দিয়ে কারেন্ট চলে গেল। প্রচন্ড গরমে আর ঘরে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই ঘর থেকে বের হয়ে সোজা পুকুর পাড়ে চলে গেলাম। বিকালে বাইরে পুকুর পাড়ে গাছের নিচে বসে থাকলে হয়তো কিছুটা বাতাস পাওয়া যাবে এই আশায়। বাতাস খুব একটা না থাকলেও ঘরের চেয়ে এখানে কিছুটা ভালো বোধ করলাম। কিন্তু সূর্যের প্রচণ্ড তেজ। শেষ বিকালে সূর্যের তির্যক রশ্মি যেন সবকিছু ভেদ করে গায়ের উপর এসে পড়ছে।

20220718_225401.jpg
20220716_223422.jpg

একেবারে পড়ন্ত বিকেল বেলা গাছের ফাঁক দিয়ে কোনরকম সূর্য দেখা যাচ্ছিল। কোনরকমে বললে ভুল হবে মনে হচ্ছে আগুনের ফুলকি বেরোচ্ছে। ঠিক যেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। কিন্তু এই সময়ে গরমের মধ্যে ঘরে বসে থাকার চেয়ে বাইরে গ্রামের রাস্তা ধরে হাঁটতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করলাম। যদিও প্রচন্ড গরমের মধ্যে সিদ্ধান্তটা অনেক কঠিন ছিল। আমিও এই মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করার উদ্দেশ্যেই বিশেষ করে হাঁটতে শুরু করলাম। পুকুরের উপর সূর্যের তীব্রতা দেখে কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে দুপুরের দিকে কেমন ছিল। হ্যাঁ সেদিন দুপুরবেলা প্রচন্ড গরমের মাঝে একদমই ঘরে বসে থাকা যাচ্ছিল না। তারমধ্যে আবার লোডশেডিং নামের মহাবিপদ তো আছেই।

20220716_223320.jpg
20220716_223257.jpg

পুকুরের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি ফসলের ক্ষেতের দিকে চলে গেল সেই দিক দিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। শেষ বিকালে গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হাটার মজাটাই আলাদা। পায়ের স্যান্ডেল জোড়া হাতে নিয়ে সবুজ ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটছে। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি যেটা বলে বোঝানো অসম্ভব। আমরা শহরে থাকতে থাকতে নিজেরাও অনেকটা যান্ত্রিক হয়ে গিয়েছি। প্রতিদিন সকালে উঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো অব্দি প্রত্যেকটা মুহূর্ত ঘড়ির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। শহরের রাস্তায় হাঁটতে গেলে এরকম ভালো লাগার অনুভূতিগুলো কাজ করে না। যেরকমটা আমি জমির আইল ধরে সবুজ ঘাসের উপর হেটে পেয়েছিলাম।

20220716_224119.jpg
20220716_224157.jpg
20220716_223112.jpg

একদম সূর্য ডুবার আগ মুহূর্ত এখন পর্যন্ত পশ্চিম আকাশ কি রকম রুদ্র মূর্তি ধারণ করে আছে। গোধূলি লগ্নে এরকম দৃশ্য আমার সব সময় খুব ভালো লাগে। কিন্তু বর্তমানে সারাদিনের প্রখর রোদের কারণে জীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন সূর্যের আলো দেখলেই ভয় লাগে। সে যাই হোক গোধূলি লগ্নে বাইরে আছি আর সেই সেই দৃশ্যগুলো স্মৃতির পাতায় স্থান পাবে না তা কি করে হয়। এই সময়ে আমাদের আকাশে দুটি দৃশ্য চোখে পড়ে। একদিকে আকাশের লাল আভা পুরো আকাশটাকে রক্তিম করে রাখে। আবার অন্যদিকে মেঘের উপর হালকা আলোকছটা সে এক পাগল করা দৃশ্য।

20220716_223928.jpg
20220716_223625.jpg
20220716_223556.jpg

হাঁটতে হাঁটতে একেবারে বাজারে চলে এসেছিলাম কিছুক্ষণ পরেই মাগরিবের আযান হয়ে যাবে। তাই বাজারের পাশে মসজিদের দিকে চলে আসলাম। এদিকটায় আসতেই আজান হয়ে গেল কিছুক্ষণ পরেই অন্ধকার নেমে আসবে। কিন্তু তারপরেও আকাশের অবস্থা দেখেন কিরকম হয়ে আছে। যাইহোক গ্রামের রাস্তাঘাট এখন আর আগের মত নেই। গ্রামের আকাবাকা রাস্তাগুলো এখন পাকা হয়ে গেছে। সন্ধ্যা বেলায় গ্রামের লোকজন খুব দ্রুতই তাদের কর্মব্যস্ততা সেরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়। আমিও সেরকমটাই লক্ষ্য করলাম।

দিনশেষে বলতে হয় এই যে আমরা প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবের কারণে এত কষ্ট করছি এটা আসলে আমাদেরই কর্মফল। সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করছি আমরা নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস করে। যার ফলশ্রুতিতে অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই আছে। যত দিন যাচ্ছে পৃথিবীর উষ্ণতা যেন বেড়েই চলেছে। আমরা যদি এখনও এই বিষয়ে সচেতন না হই তাহলে পৃথিবী হয়তো একদিন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজ বাড়িতে এবং আশেপাশের ফাঁকা জায়গায় প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করা। পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য বৃক্ষরোপনের কোন বিকল্প নেই। নির্দ্বিধায় বারবার বলতে চাই গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A-10
ফটো@mayedul
লোকেশনw3w location

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি ছবিগুলো খুব সুন্দর হয়েছে সূর্যের আলো দেখে যেন সত্যি মনে হচ্ছে অগ্নিওগিরি, সন্ধ্যার সময় গুলো আমার খুবই ভালো লাগে কারণ এই সময় সূর্য অস্ত যায় এবং চমৎকার একটি আলোর সৃষ্টি হয় আকাশে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই মনে হচ্ছে আগ্নেয়গিরির সাথে বসবাস করছি।

 2 years ago 

যদিও আজ কয়দিন যাবত খুব বেশি গরম পড়তেছে তবে প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই সুন্দর ছিল। বিশেষ করে রোদ্র উজ্জ্বল দিনের প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো খুবই মনোমুগ্ধকর। আপনার ফটোগ্রাফার গুলো দেখে সত্যি খুব ভালো লাগলো। এত অসাধারণ ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

এটা ঠিক যে রৌদ্রজ্জল দিন না হলে সন্ধ্যায় এরকম দৃশ্য দেখা যেত না।

 2 years ago 

আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে আপনার সূর্যের ফটোগ্রাফি গুলো। খুব সুন্দরভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এত সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

সূর্যের তীব্রতা দেখে বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছি।
মনে হচ্ছে গায়ের মধ্যে জ্বালা করছে।

 2 years ago 

আসলে প্রাকৃতিক পরিবেশ এতটাই রুক্ষ হয়ে গেছে যে মনে হচ্ছে আমরা যেন কোন মরুর দেশে বাস করছি প্রচন্ড তাপমাত্রা আর এতটাই গরম যে কেউ ভেবে নেবে যে চলছে এখন গ্রীষ্মকাল।।

 2 years ago 

একদমই ঠিক কথা এরকম দৃশ্য গ্রীষ্মকালেই মানায় কিন্তু বর্ষাকালে এসে এটা একদম অপ্রত্যাশিত।

 2 years ago 

সূর্যের আলো দেখে সত্যিই মনে হচ্ছে অগ্নি ইস্ফুলিঙ্গ আপনার এই ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। কিছু কিছু ফটোগ্রাফি আছে যেগুলো দেখলে মন ভালো হয়ে যায় আপনার ফটোগ্রাফি গুলো ঠিক তেমন শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমার কাছে বারবার মনে হয় সূর্যের আলো যেন চারদিকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় ছড়িয়ে পড়ছে।

 2 years ago 

গোধূলি সন্ধ্যার সূর্যের ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে ।।আপনি ঠিকই বলেছেন মনে হচ্ছে অগ্নিস্ফুঙ্গ।। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

প্রচন্ড গরম ও সূর্যের তীব্রতা দেখে বেশ ভয়ে আছি।
এ অবস্থায় সূর্যের আলোকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বলা ছাড়া আর কিছুই মাথায় আসছিল না।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 57941.45
ETH 2579.63
USDT 1.00
SBD 2.39