সেদিন ছিল সম্ভবত পূর্ণিমার পরের দিন। কিন্তু আকাশ ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার রৌদ্রজ্জ্বল চকচকে। ঈদুল আযহার দুই দিন আগে গ্রামে গিয়েছিলাম ঈদ উদযাপন করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু এবারে ঈদে প্রচন্ড গরমের কারণে কোথাও ঘুরে খুব একটা শান্তি পাওয়া যায়নি। তাছাড়া আবার মনের মধ্যে একটা ভয় ও উৎকণ্ঠা ছিল চারিদিকে সবার অসুস্থ হওয়া দেখে।
বিকালে আকাশে হালকা মেঘ লক্ষ করলাম দুই একবার মেঘের গর্জন শোনা গেল। এতটুকুই যা তারপর আবার সেই আগের মত অবস্থা প্রচন্ড গরমে ঘরে টিকতে পারছি না। গ্রামের ফাঁকা জায়গার কোন অভাব নেই চারিদিকে সবুজের সমারোহ। শেষ বিকালে হঠাৎ মনে হল গাছের পাতা একটু নড়ে উঠলো। এরকমটা দেখে ইচ্ছা করলো কাউকে সাথে নিয়ে একটু বাইরে গিয়ে ঘুরে আসতে। এমনটা ভেবে রাশেদকে ডেকে তৈরি হতে বললাম চল বাইরে একটু ঘুরে আসি। ওকে বললাম এত গরমের মধ্যে ঘরে বসে থাকতে আর ইচ্ছা করছে না। মাত্র কয়েক দিনের জন্য গ্রামে এসেছি একটু এদিক ওদিক ঘুরে না বাড়ালে কেমন হয়।
রাশেদ হচ্ছে আমার গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী ও এখানে থেকেই লেখাপড়া করে। আর বাড়ির টুকিটাকি কাজে সহায়তা করে। আমরা এখানে আসলে আমাদের প্রত্যেকটা কাজে সে অনেক সহযোগিতা করে। বলতে পারেন ওর জন্য নিজেদের কোন কাজই করতে হয় না। যাই হোক ওকে সাথে নিয়ে আমি ঘুরতে বের হয়ে গেলাম। গ্রামার আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে আজকে বেশ ভালোই লাগছিল। অন্যান্য দিনের চেয়ে আজকে আবহাওয়া কিছুটা ঠান্ডা ছিল।
এরকম রৌদ্রজ্জ্বল চকচকে দিনে পড়ন্ত বিকেলের দৃশ্য আমার কাছে সব সময় খুব ভালো লাগে। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য আমাকে বারবার মুগ্ধ করে দেয়। আমি যেন প্রকৃতির মাঝে একদম হারিয়ে যাই। পড়ন্ত বিকেলের দৃশ্য এমনিতেই অসাধারণ কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে আজকে একটু বেশি সুন্দর।
পড়ন্ত বিকেলে সূর্যের লাল আভা চারপাশের পরিবেশকে একেবারে রক্তিম করে তুলেছে। বন্যার পানি অনেকটা নেমে গিয়েছে কিন্তু জমিতে এখনো হালকা কিছু পানি রয়েছে। সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে তখন লালা আভা গুলো পানির উপর পড়ে অন্যরকম এক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে। সূর্য সেই লাল আলোকছটা টুকরো টুকরো কালো মেঘের উপর পড়েছে। প্রকৃতির এই অপরূপ বৈচিত্র দেখে কিছুক্ষণের জন্য হলেও হারিয়ে গিয়েছিলাম। আসলে আমাদের শহুরে জীবনে প্রকৃতির এরকম সৌন্দর্য আমরা খুব একটা অবলোকন করতে পারি না। এটা শুধু একমাত্র গ্রামীণ জনপদেই সম্ভব।
প্রকৃতির মাঝে আমরা এতটাই মিশে গিয়েছিলাম যে কখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়েছে বুঝতেই পারিনি। আসল অনেকদিন পর গ্রামে এসে সবুজের মাঝে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াতে বেশ ভালই লাগে। সন্ধ্যার আকাশ বরাবরই খুব সুন্দর। তাছাড়াও এর সঙ্গে যোগ হয়েছে চাঁদনী রাতের আলো। আজকের পরিবেশটা এতই মনোরম ছিল আর বাসাতেই ফিরতে ইচ্ছা করছিল না। তাই অনেকক্ষণ ধরে বাইরে হেঁটেছি আর প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করেছি।
 |
 |
 |
 |
আজ বাইরে এসে হাঁটতে হাঁটতে এশার আজান দিয়ে দিল কিছুক্ষণের জন্য নামাজ পড়তে মসজিদে ঢুকেছিলাম। নামাজ শেষ করে বাইরে আসতেই হঠাৎ আকাশের দিকে চোখ পড়ল। এটা বলে বোঝাতে পারবো না সেদিন চাঁদনী রাতের আকাশ কতটা সুন্দর ছিল। ফটোগ্রাফিতে আসলে রাতের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয় না। এটা শুধুমাত্র সামনে থেকেই উপভোগ করা যায়। তারপরেও আমি চেষ্টা করেছি যতটুকু সম্ভব ভালোভাবে চাঁদনী রাতের ফটোগ্রাফি করা যায়। যদি আমার কাছে মনে হচ্ছে আমার সব চেষ্টাই বিফলে গেছে। আমি কোনভাবেই রাতে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পারিনি আর এটা সম্ভবও নয়। এশার নামাজ পড়তে রাত অনেকটা গভীর হয়ে গিয়েছিল তাই চারিদিকে এত অন্ধকার। শহরের লোকজনের কাছে খুব একটা রাত নয় কিন্তু গ্রামে দশটা বাজতেই মনে হয় অনেক রাত। তবুও আমি আশা করছি আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের ভালো লাগবে।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।


আপনার গ্রামের ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি, সূর্যাস্তের ছবি এবং চাঁদের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলেই ভাই প্রচন্ড গরম হলেও গ্রামীণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবসময় মন কেড়ে নেয়।
সেদিন সন্ধ্যাবেলায় আপনার গ্রামে ঘোড়ার অনুভূতি ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। পড়ন্ত বিকালের সূর্যের লাল আভা ছবিটির ফটোগ্রাফি সত্যিই মনমুগ্ধকর দেখতে অনেক ভালো লাগছে। সব মিলিয়ে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো
অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
গোধূলি লগ্নে সূর্য অস্ত যাওয়ার দৃশ্য আমার কাছে সবসময় খুব ভালো লাগে।
প্রকৃতপক্ষে এ রকম দৃশ্য গ্রামে বেশি দেখা যায়, কেননা গ্রাম অঞ্চলে কিছু ফাঁকা জায়গা রয়েছে এবং গাছপালার মধ্যবর্তী অবস্থানে অথবা কোন লেকের ধারে এই দৃশ্যগুলো বেশ ফুটে ওঠে। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি উপহার দেওয়ার জন্য।
শহরের মধ্যে এই ধরনের দৃশ্য দেখতে পাওয়া অসম্ভব।
এই দৃশ্যগুলো শুধুমাত্র গ্রামীণ পরিবেশ ও যেকোনো জলাশয়ের পাশেই ফুটে ওঠে।
আপনার সাথে আমিও একমত এবং আমার অনেক ভালো লাগে এরকম ফটোগ্রাফি করতে ধন্যবাদ আপনাকে
সন্ধ্যাবেলার খুবই সুন্দর কিছু দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করে আমাদের মাথায় তুলে ধরেছেন দৃশ্য গুলো দেখে একদম মুগ্ধ হয়ে গেলাম
সন্ধ্যা বেলার এই দৃশ্যগুলো আমার কাছে সব সময় খুব ভালো লাগে।
সন্ধ্যেবেলা সত্যিই অনেক বেশি রোমাঞ্চকর হয়ে থাকে বিশেষ করে নদীর পাড়ে গিয়ে শেষ বিকেলের সূর্য দেখতে খুবই ভালো লাগে যেটা আমি গতকাল অনুভব করেছি। আপনার এই সুন্দর মুহূর্ত দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুবই চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন সূর্য অস্ত যাওয়ার দৃশ্য সমুদ্র কিংবা নদীর পাড়েই বেশি ভালো লাগে।
বর্তমান সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তের দৃশ্য সত্যিই উপভোগ্য ।আকাশের লালচে আকার যেটা দেখতে খুবই ভালো লাগে। এই ধরনের দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না বর্তমান খুবই বেশি দেখা যাচ্ছে অনেক ভালো ফটোগ্রাফি করেছেন।
সন্ধ্যার সময় ডুবন্ত সূর্যের লাল আভা পশ্চিম আকাশকে রক্তিম করে রাখে।
আর সেটা দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে যায়।
সন্ধ্যাবেলায় আকাশের দৃশ্য দেখতে খুবই ভালো লাগে। সূর্যি মামা অস্ত যাওয়ার সময় আকাশের রং সূর্যি মামার সাথে অনেকটা লাল হয়ে যায়। চারদিকের পরিবেশ টাও খুবই ভালো লাগে। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক এই সময় আমাদের পরিবেশের সৌন্দর্য অনেকটা বৃদ্ধি পায়।
অসাধারণ কিছু সন্ধ্যাকালীন দৃশ্য ও রাতের চাঁদের দৃশ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি মুগ্ধ হলাম ।।শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।
চাঁদনী রাতে বাইরে হাঁটতে অসাধারণ অনুভূতি হয়।