বছরের একটা মৌসুমে আমাদের প্রত্যেকের পিকনিক খাওয়ার ধুম লেগে যায়। কেউ বাড়িতে কেউবা নিজ শহরের আশেপাশে কোন লোকেশনে কেউ আবার দূরে কোথাও গিয়ে বনভোজন করে আসে। আমরাও তার ব্যতিক্রম নই এবার সিদ্ধান্ত নিলাম শহরের বাইরে একটু দূরে কোথাও গিয়ে বনভোজন করে আসবো। সময়টা একেবারে শীতের শুরুতে সম্ভবত নভেম্বর মাস কি ডিসেম্বর মাস হবে সবার সাথে বসে কথা বললাম বাইরে কোথাও পিকনিকে গেলে কেমন হয়।
আমার বাবা-মা বয়স্ক মানুষ মা কিছুটা শক্ত সামর্থ হলেও বাবা এক্সিডেন্ট এর পর অনেক দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তাই বেশি দূরে না গিয়ে কাছাকাছি রংপুরে আশেপাশে কথা ঘুরে আসলে মন্দ হয় না। তাই পরিকল্পনামতো রংপুরের খুব কাছেই দিনাজপুর রোডে পাগলাপীর থেকে ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে একটি পিকনিক স্পট রয়েছে স্পট টির নাম ভিন্নজগৎ। সেখানে পরিবারের লোকজন নিয়ে চলে গেলাম কিছুটা অবকাশ যাপনের জন্য। দুপুরে খাওয়ার জন্য আমরা কোন রান্নার আয়োজন করি নি আগে থেকেই অর্ডার করা ছিল যাবার সময় বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে গিয়েছি আর সাথে কিছু নাস্তা।
আমরা গাড়ী নিয়ে গিয়েছিলাম পিকনিক স্পটের সামনে গিয়ে টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকে পড়লাম। এখানকার ভিতরের পরিবেশটা খুবই ভালো চারদিকে সবুজের সমারোহ আর মাঝে মাঝে অনেকগুলো ভাস্কর্য ফুলের বাগান বাচ্চাদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। আমার মেয়েতো ভিতরে ঢুকে নাচতে শুরু করলো তার পিছনে একটা বড় ডেকোরেটরের ভাস্কর্য। তার এই ভালোলাগার দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দি করার জন্য আমি চট করে মোবাইল ফোনটা হাতে নিলাম।
আজকের দিনটা ছিল চকচকে রোদ্রউজ্জল রোদের উত্তাপ টা আজকে অনেক বেশি তাই ভিতরে ঢুকে গাছের নিচে ছায়া দেখে বসার জন্য জায়গা নির্ধারণ করলাম। বড়দের বসার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়ে আমরা সবাই হাঁটতে চলে গেলাম। এখানকার এরিয়াটা অনেক বড় ভালো করে দেখতে গেলে চার-পাঁচ ঘণ্টা লেগে যাবে তাছাড়া আজকে সূর্যের প্রচণ্ড তাপ কিছুক্ষণ হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম।
![20220225_153215.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVn41ZPry7jBih1MYQpcSDo988vQSLFcJN3oJ21tqGUzU/20220225_153215.jpg) | ![20220225_153517.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmPebjoZpvR6nZZTSGTc7CrheLZqn23WoM4FjT2sy1WreX/20220225_153517.jpg) |
![20220225_153414.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbLXeBbQ4kTTQj9ZUa2y744vXy46rvy9rsSgRjCFd81CU/20220225_153414.jpg) | ![20220225_152952.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbCgr9xX2ExxqbnYATbb3GVSKgveD4WuXMYyngcvPuH43/20220225_152952.jpg) |
![20220225_152657.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmNe94R3gd26c2iH7NoNy6RkxjDaX5fAb9ejKpmg1jfpTP/20220225_152657.jpg) | ![20220225_151835.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmPobaawY9nau4FvDMkVFZvJEfu6sYT3FRM25fVph8tPDQ/20220225_151835.jpg) |
কৃত্তিম উপায়ে করা হলেও এখানে আশেপাশের সৌন্দর্য গুলোকে কৃত্রিম মনে হয় না সব কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মতই লাগে। আমি বেশ কয়েকটি লেক আছে লেকের উপরে ব্রিজ করে অপরদিকে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। আবার কোথাও লেকের পাশ দিয়ে সুন্দর সাজানো গোছানো বাগান আছে তার সাথে অনেক সুন্দর সুন্দর পশুপাখি ভাস্কর্য করা হয়েছে। কিছুদূর হাঁটতে হাঁটতে আমরা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বড় বড় কয়েকটি ডাইনোসরের ভাস্কর্য দেখতে পেলাম সাথে আবার একটা ডিম থেকে মাথা বের করে দেওয়া ডাইনোসরের বাচ্চা দেখে খুব ভালো লাগলো। এখানে একটা মোটামুটি বড় আকারের প্লানেটরিয়াম করা হয়েছে । আমাদের সৌরজগতের সৃষ্টি কিভাবে হয়েছে কিংবা পৃথিবীসহ বাকি গ্রহ উপগ্রহ নক্ষত্র কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে এখানে কতগুলো গ্যালাক্সি আছে সবকিছু বিস্তারিত দেখানো হয়। এদিকে দুপুরে খাবার সময় এসেছে বাকিরা সবাই অপেক্ষা করছে তাই সময় স্বল্পতার কারণে প্লানেটরিয়াম দেখা হলো না।
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
লোকেশন | w3w location |
ফটোগ্রাফার | মাইদুল ইসলাম |
রোদের প্রচন্ড উত্তাপের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বেশিদুর হাঁটতে পারলাম না খুব ক্লান্ত লাগছিল। তাই আর ঘোরাঘুরি না করে যোহর এর নামাজ আদায় করে খাবার খেয়ে নিলাম খাবারের প্যাকেট আমরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটু বিশ্রাম নিয়ে ছোটরা শিশু পার্কে কিছুক্ষণ খেলাধুলা করল। তারপর উড়োজাহাজের মডেলে বানানো গাড়িতে পুরো ভিন্নজগৎ ঘুরে দেখল। অনেকদিন পর বাইরে ঘুরতে এসে আমরা প্রকৃতির খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলাম। আমরা যেখানে খেতে বসেছিলাম তার চারপাশে অনেক গাছপালা ছিল মনে হচ্ছিল আমরা যেন কোন বনের ভেতর বসে আছি। একসঙ্গে এতগুলো কাক আমরা সচরাচর দেখতে পাই না আমাদের খাবারের গন্ধ শুরু থেকেই কাকগুলো ভিড় করে কা- কা -কা করছিল। আমরা কখন উচ্ছিষ্ট কিছু খাবার ফেলে দেবো সেই খাবারের আশায় কাকগুলো অপেক্ষমান। অনেক সময় কাটালাম আনন্দ করলাম হৈ-হুল্লোড় করলাম এবার বাড়ি ফেরার পালা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লাম। কিছুক্ষণ এখানে সবুজ প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম শহরের কোলাহল ছেড়ে অনেক দূরে এরকম নিরিবিলি পরিবেশ ছেড়ে যেতে মন চাইছিলো না কিন্তু দিন শেষে বাড়ি ফিরতেই হবে।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
![3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmeNW8WGqB2SscxBbm243ErNeLe1aTY8yLYdZGXGZgGfeS/3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif)
পরিবারের সাথে ঘুরাঘুরি করতে বেশ ভালোই লাগে। আপনি খুবই আন্দদের সাথে মুহূর্ত গুলো কাটিয়েছেন ভাই। ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে অসাধারণ ছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে আপনার প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেল। এখনকার দিনে পিকনিকে গেলে বয়স্ক বাবা মা কে কেও কেউ সাথে নেয় না। সেখানে আপনি তাদের কথা চিন্তা করে কাছে কাছে পিকনিক স্পট ঠিক করেছেন। খুবই ভালো লাগলো বাবা-মার প্রতি আপনার এই ভালোবাসা দেখে। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
ফ্যামিলি নিয়ে বনভোজন এটা আসলে অনেক ভালো একটি দিক। কেননা মন-মানসিকতা ফ্রেশ করার জন্য বনভোজন একদম যথাযথ একটি প্লান । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এই কামনা করি সব সময়।
বনভোজনের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি খুবই সুন্দর সময় পার করেছেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দময় মুহূর্ত পালন করলেন। খুবই সুন্দর জায়গা এবং ফটোগ্রাফি গুলো আমার খুব ভাল লাগল। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।
পরিবারের সদস্যদের সাথে কোথাও ঘুরতে যাবার মজাটাই অন্যরকম থাকে। আপনি আমাদের মাঝে সেই অনুভূতিটি খুবই সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন। আপনি যে ছবিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনারা বনভোজনের দিনে কতটা মজা করেছিলেন।
মাঝেমাঝেই পরিবারকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খেলেও মনটা ভালো হয়ে যায় । আপনি পরিবার কে নিয়ে পার্কে ছোটখাটো একটি পিকনিক এর মাধ্যমে ভালোই উপভোগ করেছেন , আপনার ছোট মেয়েকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে সে অনেক উপভোগ করেছে । আপনি বাবা মাকে নিয়ে একটি পিকনিক স্পটে ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন দেখি যদি ভালো লাগলো । আপনার বাবা মায়ের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি ভাইয়া । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে মুহূর্তটুকু শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ❤️
পরিবারের সাথে সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন ভাই দেখে বোঝা যাচ্ছে। আমি নিজে ভিন্নজগতে গিয়েছিলাম এর আগে অনেক ছোটবেলায় ক্লাস ফোর ফাইভ এ।আপনি খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুব সুন্দর করে সবকিছুর বর্ণনা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করছেন। পরিবারের সাথে কাটানো সময় গুলো অনেক ভালো লাগে। এরকম সুন্দর সুন্দর কিছু মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল
ভাই আপনার জন্য।
"জগৎ"টাইতো ভিন্ন ছিল
সাথে ছিল ভিন্ন আয়োজন।
প্রফুল্ল হোক সবার মন,
কারন এটি "বনভোজন"।
লেখার ধারাবাহিকতা সুন্দর ছিল।
মাঝে মাঝে পরিবারের সকলের সাথে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে।আর যদি সবাই মিলে পিকনিকে যাওয়া হয় তাহলে তো কথাই নাই। ভিন্ন জগৎ পার্ক ভালোই। আমি দিনাজপুর স্বপ্নপুরীতে গিয়েছিলাম।যাই হোক ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।